গুরুদাসপুর প্রতিনিধি : বিস্তীর্ণ ঐতিহাসিক চলনবিলের মাঠ জুড়ে রসুন আর সরিষার আবাদ। তারই মাঝ দিয়ে কৃষকের উৎপাদিত ফসল ঘরে তোলার রাস্তা। সেই রাস্তা নষ্ট করে অবৈধভাবে পুকুর খনন করে চলছে মাটি বিক্রির ব্যবসা।নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার খুবজীপুর ইউনিয়নের পিপলা গ্রামের মাঠের চিত্র এটি। গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে রাতের আঁধারে চুপিসারে শ্রমিক দিয়ে ওই পুকুর খনন করছেন উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা রাজিব।
শুক্রবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পিপলা মাঠ জুড়ে গজিয়ে উঠেছে রসুনের গাছ। মাঝে মধ্যে সরিষার হলুদ ফুলের নয়নাভিরাম দৃশ্য। তার মাঝেই ২০-২৫ জন শ্রমিক অন্তত ৫ বিঘা জমিতে কোদাল দিয়ে মাটি কেটে খনন করছেন অবৈধ পুকুর। খননের মাটি বহন করা হচ্ছে অনুমোদনহীন শ্যালোচালিত ট্রলি করে। ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি ওজনের কারণে রাস্তাটি দেবে গিয়ে খানাখন্দে ভরে গেছে। চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে রাস্তাটি।
স্থানীয়রা জানান,- পিপলা গ্রামের মুর্শিদ আলী প্রামানিক তার ভাই মামুনের জমিতে উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা রাজিব দলীয় প্রভাব বিস্তার করে এলাকাবাসীর নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে পুকুর খনন করছেন। রাজিব উপজেলা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক ও মুর্শিদ আলীর শ্যালক।কৌশল পাল্টে রাতের আঁধারে এস্কেবেটর(মাটি কাটার যন্ত্র)এর পরিবর্তে শ্রমিক দিয়ে মাটি কেটে পুকুর খনন করছেন তারা। এতে মাঠজুড়ে জলাবদ্ধতা দেখা দিবে বলে কৃষকরা অভিযোগ করছেন। সরকারী দলের প্রভাবে পুকুর খনন হচ্ছে বলে এলাকাবাসী প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছে না।
ঘটনাস্থলে গিয়ে কথা হয়,- জামাত আলীর ছেলে মুর্শিদের সাথে। তিনি দম্ভভরে জানান,প্রশাসনের অনুমতি রয়েছে। তবে তিনি প্রশাসনের অনুমতিপত্র দেখাতে পারেননি। পরে তার শ্যালক গুরুদাসপুর উপজেলা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক রাজিব জানান,উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মৌখিক নির্দেশনা রয়েছে। তবে নতুন নয়,পুরনো পুকুর সংস্কার করা হচ্ছে।গুরুদাসপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিয়ার রহমান বাঁধন বলেন,ছাত্রলীগ কোন অন্যায় সমর্থন করে না। কারো ব্যাত্তিগত অপকর্মের দায় ছাত্রলীগ নেবে না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তমাল হোসেন জানান-‘ প্রশাসন থেকে কাউকে পুকুর খননের অনুমতি দেয়া হয়নি। গুরুদাসপুরে কোন পুকুর খনন করতে দেয়া হবে না। খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবেন বলে জানান তিনি।