আবদুর রাজ্জাক রাজু
বরগুনার রিফাত আর নারায়নগঞ্জের নূসরাত
এই দুই নিষ্ঠুরতার মাঝে কতটুকইু বা তফাত
রিফাত-নূসরাত বা রূপাদের মর্মান্তিক পাশবিকতায়
আর কত অশ্রুপাত-যতই অবিরাম করূণ রোদন করুক
তাদের আপন-স্বজন-বন্ধুগণ কেঁদে বা শোকে মুহ্যমান হোক দেশবাসী
সহানুভূতির যতই বন্যা বয়ে দিক সবই নিষ্ফল
কেবলই মর্মস্পর্শী ভিডিও চিত্র, বিচারহীনতার
সংস্কৃতি ও মানবিক মূল্যবোধ ক্ষয়িষ্ণুতার চরম বিপন্নতা।
শুধু নিরাপত্তাহীনতার আশংকায় বা ভয়-আতংকের ফলে
কিংবা কেবল রাজনৈতিক আশ্রয়ে প্রশ্রয়ের কারণে
অথবা কোন পরাক্রম শক্তির বলয়ে থাকার হেতু
কুলাংগারদের বিরুদ্ধে মানুষ কোনো প্রতিবাদ থেকে
বিরত থাকে সেটাই সর্বাংশে সত্য এবং যৌক্তিক অজুহাত নয়।
আসলে ঈমান, মনুষ্যত্ব,নৈতিকতা ও আদর্শের একান্ত জায়গাটি
আজকে ক্রমশ ভঙ্গুর,দূর্বল ও নড়বরে হয়ে পড়ার জন্য
মানুষ তার চোখের সামনে পৈশাশ্চিক নির্মমতা দেখেও
এগিয়ে যেতে ভয় পায়-অথচ কিছু পরে তারাও এর
শিকার হতে পারে তখন তাদের সুরক্ষা দেবে কে?
প্রায় গোটা সমাজ আজ ছেয়ে গেছে নোংরা অশ্লীলতায়, কুফরীতে
ধর্ম ও মানবতার কথা মুখে বললেও ভেতরে বেমালুম বিবর্জিত , বিসর্জিত
ফলশ্রতিতে অন্যায়,অন্যায্য,অবিচার,ব্যভিচার,গুম,খুন,ধর্ষণ
চাক্ষুষ দেখেও প্রতিবাদ-প্রতিরোধের সাহস জোটে না
কেননা সরকার, রাষ্ট্র,বিচারালয় ও প্রশাসন সবাই ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে চলেছে
দেশটা যেন আজ একটি কসাইখানা।
এমন লোমহর্ষক ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় কেবলি নরম ধাঁচের
মানববন্ধন কালচারে সীমিত হয়ে গেছে যত সংগ্রাম
আন্দোলনের প্রচলিত ধারা এই ভোঁতা ও অশানিত ক্ষীণ
আওয়াজে শ্লোগানে সমাজের এই দুষ্ট ক্যান্সার দূর
হবে বলে কেউ বিশ্বাস করে না।
যতদিন এই মানুষরূপী পশুদের যথাযথ বিচার ও
শাস্তি কার্যকরী নিশ্চিত না হবে তত দিন মনে হয় চলবে এই জাহেলিয়াত যুগের
বর্বরতা-নৃশংসতা অবলীলাক্রমে, অদম্য , অপ্রতিরোধ্য গতিতে …।