সাপ্তাহিক চলনবিল বার্তা, সংখ্যা ২৭ বুধবার ১ মে ২০২৪ ১৮ বৈশাখ ১৪৩১ ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

Spread the love

কোটেশনঃ 
“বই হচ্ছে শ্রেষ্ঠ আত্মীয়, যার সঙ্গে কোনদিন ঝগড়া হয় না, কোনদিন মনোমালিন্য হয় না”। – প্রতিভা বসু

নওগাঁ মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনি

(গুরুদাসপুরের রবিউল ইসলামের মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বগাঁথার গল্প কথা)

মোঃ আবুল কালাম আজাদ

১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ডাকে যখন মহান মুক্তিযুদ্ধে যান তখন রবিউল ইসলামের বয়স ১৬ বছর। বড়াইগ্রাম পাইলট হাইস্কুলের এসএসসি পরিক্ষার্থী রবিউল। এই প্রতিবেদক তাঁর কাছে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের ইতিহাস জানতে চাইলে তিনি বয়সের ভারে স্মৃতি থেকে হারিয়ে যাওয়া কাহিনি যতটুকু মনে পড়েছে স্মৃতি হাতরিয়ে শুনান। প্রিয় পাঠক , আসুন শুনি বীর মুক্তিযোদ্ধা রবিউল ইসলামের মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বগাঁথার গল্প-কাহিনী।
নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ রবিউল ইসলাম। উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের খাঁকড়াদহ গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম। পিতা- মৃত রজব আলী,মাতা মৃত আবিরজান। ৩ ভাই ১ বোন। ভাইদের মধ্যে রবিউল ইসলাম ২য়। বড়ভাই মরহুম আব্দুল বারী বড়াইগ্রাম পাইলট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং বড়াইগ্রাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের স্বীকৃতি সনদ নম্বর ০১৬৯০০০০৫৩৬ এবং গেজেট নম্বর ১৪৭।
“১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণে উদ্বুদ্ধ হয়ে গুরুদাসপুর থানার ওসি সাহেবের প্রচেষ্টায় থানার আম বাগানে প্রথম অস্ত্র প্রশিক্ষন গ্রহণ করি। এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহে। এরপর পিতা-মাতাকে ছেড়ে মাতৃভূমিকে স্বাধীন করার লক্ষ্যে উচ্চতর অস্ত্র প্রশিক্ষণের জন্য ভারতে গিয়ে আশ্রয় নেই। জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে কিংবা মাঝামাঝি সময়ে ভারতে প্রশিক্ষণ শেষ করে নাটোরের বীর মুক্তিযোদ্ধার নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা নাটোরে ঢুকে পড়ি।
দেশে ঢুকেই দেখা হয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মেজর ওমর ফারুক (রুটিয়ার) নেতৃত্বে কিছুসংখ্যক মুক্তিযোদ্ধার সাথে। মেজর ওমর ফারুকের সাথে যোগদান করার পর লালপুর থানার পদ্মার চরে পাক হানাদারের সাথে সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করি। সেখানে সাফল্যের সাথে যুদ্ধে জয়লাভ করি। পরের দিন দিবাগত রাত্রিতে মাত্র সাতজন মুক্তিযোদ্ধা মেজর ওমর ফারুকের কাছ থেকে বিভক্ত হয়ে নাটোর মহকুমার বড়াইগ্রাম থানার দিকে মার্চ করি। অক্টোবর মাসের দিকে চাটমোহর থানার বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে অবস্থান করে চাটমোহর থানার অষ্টমনিষা মির্জাপুরে অধিনায়ক আব্দুল লতিফ মির্জার দলের সাথে যোগ দিয়ে তাঁর নেতৃত্বেই চলতে থাকি। বেশ কিছুদিন সিরাজগঞ্জ মহকুমার কামারখন্দ থানার ভদ্রঘাটে রাজাকারদের সাথে সম্মুখ যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে কয়েকজন রাজাকার হতাহত হয়। এরপর আমরা তাড়াশ থানার নওগাঁ হাটের আশেপাশে আশ্রয় নেই। ভোরে আমরা মুক্তিযোদ্ধারা ফল-ইন হয়ে পিটি-প্যারেডের জন্য প্রস্তুত হয়েছি। প্রাথমিক পর্যায়ে র‌্যাকি করার জন্য পিটি প্রায় শেষের দিকে। এমন সময় বিভিন্ন গোয়েন্দারা সংবাদ দিল , শত্রুবাহিনীর পাকসৈনিকরা আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের চারিদিক দিয়ে ঘিরে ফেলেছে।
বাঁশির বিপদ সংকেত বেজে উঠলো ! সাথে সাথে আমরা প্রস্তুত। কমান্ডার নির্দেশ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা সামান্য সংখ্যক অস্ত্র নিয়েই নিজ নিজ বাংকারে গিয়ে এম্বুস নিয়ে যুদ্ধের মোকাবেলা করার জন্য গুলি লোড করে প্রস্তুত।প্রথমে হানাদার বাহিনী গুলি করে। অতি ভয়ানক যুদ্ধ চলছে। শত্রুবাহিনীর ভারী ভারী হাতিয়ার। মেশিনগান, রকেট লাঞ্ছার, বোম অফুরন্ত গোলাবারুদ। আমাদের সীমিত অস্ত্র। আমরা জীবন বাজী রেখে আল্লাহর নাম স্মরণ করে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছি। গোলাবারুদের ধোঁয়ায় অন্ধকার হয়ে গেছে। চারিদিকে কিছুই দেখা যাচ্ছেনা। কে কোথায়,কী অবস্থা ধারণ করেছে । মনে হচ্ছে যেন সব শেষ।
গুলীর শব্দে কানের পর্দা যেন ফেটে গেছে। শুধুমাত্র ঝনঝনানী শব্দ। হঠাত একটা গুলী আমার পাশ দিয়ে গিয়ে প্লাটুন কমান্ডার আব্দুস সালামের পাঁজরে লেগে পড়ে যান। কিছুক্ষণ পর পরই আমাদের চিকিতসক এসে চিকিতসার ব্যবস্থা নেয়। বেশ কয়েক ঘন্টা খেয়াল নেই, কত ঘন্টা হবে একটানা যুদ্ধ চলছে। যুদ্ধের গতি আস্তে আস্তে থেমে যায়। কিছুক্ষণ পর হানাদার বাহিনীর কয়েকজন সদস্যকে বন্দি করা হয়। তাদের মধ্যে একজন সম্ভবত মেজর বা ক্যাপ্টেন ছিল। সে বলতে ছিল লতিফ মীর্জা কেয়া চিজ হায়? তার সখ ছিল লতিফ মীর্জাকে দেখবে। বার বার একই কথা-লতিফ মীর্জা কেয়া চিজ হায়?
হানাদার বাহিনী ঐ কমান্ডার-মেজরকে লতিফ মীর্জার সম্মুখে নেয়া হলে মীর্জা আব্দুল লতিফ সাহেব বলে উঠলেন, লতিফ মীর্জা এইছা চীজ হায়,বলেই হাতের এসএলআর এর ট্রিগার টিপে গুলী করে খতম করে দিলেন। হানাদার অমনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লো। অন্য আরো দুইজন ছিল বালুচ সৈন্য । তারা বুঝালো, তাদেরকে পাঠিয়েছে শান্তি রক্ষার জন্য। এদেরকে ২-৩ দিন রাখার পরে শিতলাই নামক স্থানে এক পুকুর পারে নিয়ে বেয়নেট দিয়ে খোঁচায়ে খোঁচায়ে হত্যা করা হয় এবং কিছুসংখ্যক হানাদারকে স্থানীয় জনগণ মেরে ফেলে।
এই যুদ্ধ পরিচালিত হয় সাব সেক্টর কমান্ডার আব্দুল লতিফ মীর্জা, সোহরাব হোসেন সরকার এবং আমজাদ হোসেন মিলনসহ তিনজন কমান্ডারের নেতৃত্বে। ত্রীমুখী অভিযান চালানো হয়। এই যুদ্ধ বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের অন্যতম একটি স্মরণীয় বড় যুদ্ধ। বৃহত্তম সফল যুদ্ধ। এ যুদ্ধ-রনাঙ্গনে আল্লাহর রহমতে পবিত্র ভূমি বুড়া পীরের স্থানে কোন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন নাই। কিছু মুক্তিযোদ্ধা আহত হয়েছিলেন,কিন্তু পাকিস্থানী হানাদার বাহিনীর একজনকেও জীবন্ত ফিরে যেতে দেওয়া হয় নাই।
আমাদের এই সফলতম মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল ১৯৭১ সালের ১১ নভেম্বর। এই যুদ্ধ অত্যন্ত সফল এক সার্থক ও ফলপ্রসূ যুদ্ধ। দিবসটি স্মরণ করে রাখতে নওগাঁ জিন্দানী মহাবিদ্যালয়ে একটি স্মৃতি¯¢ম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতি বছর ১১ নভেম্বর ৬-৭ উপজেলার সমস্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে নওগাঁয় জনতা-মুক্তিযোদ্ধা দিবস উদযাপন করা হয়। দিবসটিতে নওগাঁয় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও স্বজনদের মিলনমেলায় পরিণত হয়। চলে মুক্তিযোদ্ধদের বিজয়ের বীরত্বগাঁথা গর্বের স্মৃতিচারণ।
নওগাঁযুদ্ধ সংঘটিত হওয়ার পর আমাদের সর্বাধিনায়ক জনাব মোঃ আব্দুল লতিফ মির্জা সমস্ত মুক্তিযোদ্ধাদের দ্রæত অত্র স্থান ত্যাগ করার নির্দেশ দিয়ে বলেন, পরাজিত হানাদার বাহিনী বিমান হামলা চালাতে পারে।আমরা বেশকিছু মুক্তিযোদ্ধারা নাটোর মহকুমার (বর্তমান জেলা) বড়াইগ্রাম থানার জোনাইল এলাকায় আশ্রয় নেই এবং বিভিন্ন এলাকায় পাক হানাদার বাহিনির বিরুদ্ধে অপারেশন চালাই।
জোনাইল থাকাকালীন ভারতীয় ছত্রী সৈন্য সঙ্গে করে পাবনার চাটমোহর থানায় পাকিস্তানের মিলিশিয়া সৈন্যদের ক্যাম্পে গেরিলা কায়দায় মাঝে মাঝে হামলা করতাম। ছত্রী সৈন্যদের সাথে থেকে রাতে রাতে থেকে থেকে মিলিশিয়া হানাদার বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করতাম। একদিন যুদ্ধ চলাকালীন আমার পাশে ২ জনের পর আব্দুস সাত্তার নামের একজন মুক্তিযোদ্ধার মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়। গুলিবিদ্ধ আব্দুস সাত্তার বড়াইগ্রাম থানায় রাজাকার ছিল। পরে আত্মসমর্পণ করে আমাদের সাথে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন।
১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাক মিলিশিয়াদের সাথে যুদ্ধ করতে হয়। এর পুর্বে আমরা সন্ধান পাই যে, হাঁসমারি গ্রামের হামিদ নামের এক ব্যক্তির নিকট একটা রাইফেল আছে। সন্ধান পেয়ে ঐ রাইফেল উদ্ধার করতে যাই আমি, আব্দুস সাত্তার,সোলেমান ও শাহাদত হোসেন। রাত ১টার দিকে দাদুয়া বিলের মধ্যে নৌকা নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকি। অপেক্ষায় থাকাকালীন ভোরের বেলা উঠার সময় হঠাত করে হাঁসমারি গ্রাম থেকে আমাদের লক্ষ্য করে একটা গুলি করে। আমরাও পাল্টা গুলি করি। গোলাগুলি চলতে থাকে। আমরা চারজন কুলাতে না পেরে পিছু হটে আসি। আমরা অনুভব করি এটা রাজাকারের গুলি না, পাকবাহিনীরা গুলি করেছে। আমরা গুলি করতে করতে বড়াইগ্রাম থানার কচুগাড়িগ্রামে পৌঁছাই। কিন্তু তাতেও আমাদের নিরাপদ নয়। কচুগারি গ্রামে পৌঁছিলে কান্নাকাটি শুনতে পেলাম। আমাদের লক্ষ্য করে যে গুলি ছোঁরা হয়েছে ওটাই গ্রামের একজনের লেগেছে। গ্রাম ছেড়ে একটু দূরে গেলেই দেখতে পেলাম কচুগাড়ি গ্রামে আগুন দিয়েছে। এমনি করে বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধ করে আল্লহর রহমতে মানুষের দোয়া ও অংশগ্রহণে দেশ স্বাধীন করেছি। তাইতো আজ আমরা শত্রুমুক্ত স্বাধীন বাংলা দেশের লালসবুজের স্বাধীন পতাকা ও মানচিত্র নিয়ে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে গর্বের সাথে স্বাধীন নাগরিক হিসেবে পরিচিত।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহবানে দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধের পর লক্ষ প্রাণ ও সম্ভ্রমের বিনিময়ে ১৬ ডিসেম্বর পাক হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে বিজয় অর্জিত হলেও ১৮ ডিসেম্বর গুরুদাসপুর থানা আমরা বীর মুক্তিযোদ্ধারা বিজয়ের বেশে অবরোধ করে শত্রুমুক্ত করেছি। আজ আমরা স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক। জয় বাংলা । জয় বঙ্গবন্ধু।”

লেখক : বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক ও সাংবাদিক। উপদেষ্টা, চলনবিল প্রেস ক্লাব, গুরুদাসপুর, নাটোর।

রায়গঞ্জের চার জয়িতার সাফল্য গাঁথা
গোলাম মোস্তফা
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে চারজন পিছিয়ে পড়া নারী জীবনে সংগ্রাম করে সব বাধা বিপত্তি কাটিয়ে সফল হয়েছেন। এ সফলতায় তারা ২০২৩ সালে জয়িতার সম্মাননা পেয়েছেন। যাদের জয়িতা হওয়ার পেছনে রয়েছে দুঃখ কষ্টের করুণ কাহিনি !
চান্দাইকোনা ইউনিয়নের ফুলজোড় নদীপাড়ের একটি গ্রাম বেড়াবাজুয়া। এ গ্রামে জয়িতা মোছা. হাফিজা খাতুনের বাড়ি। তার স্বামীর নাম. মো. হায়দার আলী। তিনি একজন সফল জণণী। জয়িতা হাফিজা খাতুন বলেন, ১৯৮৬ ছিল তার বিয়ে হয় বেড়াবাজুয়া গ্রামের সরকার বাড়ির ছেলে ও সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা মো. হায়দার আলী সরকারের সাথে। পরপর তিন মেয়ের জন্ম হয় তাদের সংসারে। সবকিছু ভালোই চলছিল। ২০১০ সালের ১৩ মে চারদিকে অন্ধকার করে দিয়ে স্বামী হায়দার আলী সরকার স্ট্রোক করে মারা যান। তারপর বহু কষ্টে বড় মেয়ে উম্মুল মাফরুহা সুমী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিতে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর শেষ করে একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করছেন। মেঝো মেয়ে রওনক জাহান স্বর্ণা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফারসী ভাষায় স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর শেষ করে বিদেশী একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মজীবন শুরু করেছেন। ছোট মেয়ে ইসমেত জাহান সিঁথি ঢাকায় ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটিতে কম্পিউটার অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিষয়ের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। সংগ্রামী ও সফল মা হিসাবে তিনি এখন সবার কাছে আদর্শ।
জয়িতা মোছা. ময়না খাতুনের বাড়ি পূর্ব ফরিদপুর। তার স্বামী মো. আব্দুল মতিন শেখ। তিনি সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখেছেন। ময়না খাতুন বলেন, আমি দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহন করি। মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করার আগেই বাবা-মা বিয়ে দিয়ে দেয়। নতুন সংসারে আসার পর কিছু বুঝে উঠতে পারছিলামনা কী করব। এর মধ্যে কোলজুড়ে আসে দুটি সন্তান। একটি ছেলে ও একটি মেয়ে। তখন হতে চিন্তা করতে থাকি আমার মত যেন আমার সন্তানদের এরকম হতে না হয়। তার জন্য আমাকে একটা করতে হবে। আমি এক দিন জানতে পারি গুডনেইবারস বাংলাদেশ নলকা সিডিপিতে কমিউনিটি হেল্থ ওয়ার্কার পদে কিছু সংখ্যক লোক নেওয়া হবে। আমি আবেদন করি ও এখানে কাজ করার সুযোগ পাই। এখান হতে প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ করা শুরু করি। আস্তে আস্তে আমার দক্ষতা ও পরিচিতি বাড়তে থাকে। উঠান বৈঠকের মাধ্যমে আমার চার পাশে যারা রয়েছেন তাদের বিভিন্ন পরামর্শ ও চিকিৎসা সেবা পরামর্শ দিয়ে আসছি। এতে করে এলাকার বাল্য বিবাহ, শিশু শ্রমের হার অনেক কমেছে। প্রসবকালীন মৃত্যু, শিশু মৃত্যুর হার নেই বললেই চলে। এলাকার সবাই শিশু বিবাহের কুফল সম্পর্কে অনেক সচেতন। তারা এখন আর ১৮ বছরের আগে কন্যা সন্তানের বিয়ে দেন না।
মোছা. মর্জিনা খাতুনের বাড়ি রয়হাটি গ্রামে। তার স্বামীর নাম মো. সবুজ। তিনি অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী। মর্জিনা খাতুন বলেন, বাল্যকালে ছিল দু’চোখ ভরা স্বপ্ন আর ভালো কিছু করার আকাঙ্খা। কিন্তু সেই স্বপ্ন ধুলোয় মিশে যেতে খুব একটা সময় লাগেনি। ৫ম শ্রেণিতে উঠতে না উঠতেই আমার বিয়ে দিয়ে দেয় বাবা-মা। চলে আসি শ্বশুর বাড়িতে। তারপর থেকে নতুন করে কষ্ট বাসা বাধতে শুরু করে। শ্বশুর বাড়িতে ক’দিন যেতে না যেতেই আমার স্বামীকে পরিবার থেকে পৃথক করে দেন। তারপর জীবনে অনেক সংগ্রাম করে বর্তমানে আমরা স্বচ্ছল। আমি প্রথমে ৬০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহন করি গুড নেইবারস ফারমারস্ সমবায় সমিতি থেকে। সেখান থেকেই মূলত আমাদের উত্থান। ঋণ নিয়ে আমরা পরিকল্পনা মোতাবেক একটি পাওয়ার লুম (বিদ্যুৎ চালিত তাঁতের মেশিন) কিনি যার মূল্য ছিল ৭৫ হাজার টাকা। মেয়ে দুইটাকে স্কুলে ভর্তি করি। বড় মেয়ের বয়স ২০ বছর ও ছোট মেয়ের ১৫ বছর। বড় মেয়ে এইচএসসি পাশ করে ডিগ্রিতে ভর্তি আছে। ছোট মেয়েও স্কুলে অধ্যয়নরত। আমাদের তাঁতের ব্যবসার প্রসারের জন্য পরবর্তিতে আরো ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা রায়গঞ্জ গুড নেইবারস ফারমারস্ সমবায় সমিতি থেকে পূনরায় ঋণ নেই। এখন আমরা ৬ টি পাওয়ার লুমের মালিক। প্রতিটি পাওয়ার লুমের দাম ৭৫ হাজার টাকা। এতে করে আমাদের ৬ টি পাওয়ার লুমের দাম পড়েছে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। সাথে একটি গাভীও কিনেছি। গর্বের সাথে বলতে পারি এখন আমাদের অধিনে ৬ জন কর্মচারীর কর্মসংস্থান হয়েছে। প্রতি সপ্তাহে তাদের ৩ হাজার করে বেতন দিতে পারি। তাদের বেতন দিয়েও আমাদের প্রতি মাসে ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা লাভ হয়। ছেলে মেয়েদের নিয়ে এখন বেশ ভালো আছি এখন।
মোছা. শাহানা ইয়াসমিন তুলির বাড়ি রনতিথা গ্রামে। তার স্বামীর আব্দুল্লাহ আল সুমন। তিনি শিক্ষা ও চাকরির ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী নারী। শাহানা ইয়াসমিন তুলি বলেন, নবম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত অবস্থায় আমার বিয়ে হয়। সম্পূর্ণ নতুন একটি জায়গায় পরিবেশ আমার অনুক‚লে ছিলনা। ছাত্রী হিসাবে ভালো ছিলাম ও বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী ছিলাম। কিন্তু বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর মানসিক অস্বস্তির কারণে আমি বিদ্যালয়ের পাঠ গ্রহন থেকে বিরত ছিলাম। তারপরও নিজের প্রচেষ্টায় আমি বাড়িতেই পড়াশোনার কাজ চালিয়ে যেতে থাকি ও এসএসসি পরিক্ষায় অংশ গ্রহন করে ৩.০৬ (জিপিএ) পাই। আমি যখন বিএসএস ১ম বর্ষের ছাত্রী তখন আমার প্রথম সন্তানের জন্ম হয়। ১ম বর্ষের পরিক্ষার সময় আমার সন্তানের বয়স খুবই অল্প ছিল। সে বুকের দুধের উপর নির্ভরশীল ছিল। তাকে রেখে পরিক্ষা দিতে যাওয়া আমার জন্য খুবই কষ্টকর ছিল। আবার বিএসএস ৩য় বর্ষের পরিক্ষার সময় আমার স্বামী সড়ক দূঘটনার স্বীকার হন। ঐ সময় দুশ্চিন্তা ও মানসিক বিপর্যস্ততা নিয়েই আমি পরিক্ষায় অংশ গ্রহণ করি। সাংসারিক ঝামেলায় আমি বাড়িতে থেকেই সহপাঠীদের সাহায্য নিয়ে তাদের থেকে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে আমি আমার পড়ালেখার কাজ চালিয়ে যেতে থাকি। এত প্রতিক‚লতা সত্বেও বিএসএস পরিক্ষায় আমি প্রথম বিভাগ অর্জন করি। এমএসএস পরিক্ষায় আমি দ্বিতীয় বিভাগ অর্জন করি। বর্তমানে আমি ধানগড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষিক হিসাবে কর্মরত আছি।
জয়িতা ওমেলা বেগমের বাড়ি গ্রামসোনাই গ্রামে। স্বামীর নাম মগরব আলী। নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করা নারী তিনি। ওমেলা বলেন, আমার স্বামী মগরব আলীর বাড়ি-ভিটা কিছুই নাই। মা-বাবা ভেবেছিল পরিশ্রম করে মেয়েকে খাওয়াতে পারবে। কিন্তু বিবাহের পর আসল চেহারা প্রকাশ পায়। সে কোনো কাজ করে না। অত্যন্তে কষ্টের দিন কাটতে লাগলো। বাবার বাড়ি নিকটে হওয়ায় অনেক সময় খাবার এনে খেয়েছি। স্বামী সারাদিন আড্ডা মেরে বাড়ি ফেরে। চাল-ডাল বাড়িতে কিছুই নেই। একথা বললে আমাকে শারীরিক নির্যাতন শুরু করে। এছাড়া আমি দেখতে কালো হওয়ায় স্বামী আমাকে ভালবাসতো না। অকারণে শারিরীক নির্যাতন করতো, অনেক সময় সহ্য করতে না পেরে বাবার বাড়ি চলে যেতাম। ইতিমধ্যে সংসারে ২টি সন্তান আসে আমাদের পরিবারে। তাদের খাওয়ার যোগাতে আমাকে হিমশিম খেতে হয়েছে। বাধ্য হয়ে ইট ভাটার কাজে বেছে নেই। দৈনিক ২০০ টাকা মুজুরী দিয়ে কোনোভাবে জীবন চালিয়ে যাচ্ছি। স্বামী কাজের কথা বলতেই আমাকে মেরে রক্তাক্ত করে। সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে মন চাইতো। শুধু সন্তানদের দিকে তাকিয়ে বেঁচে আছি। এভাবে চলতে চলতে ২০০ টাকা দিন মাটি কাটার কাজ শুরু করি। এ কাজ থেকে প্রাপ্ত মুজুরী দিয়ে সংসার চালিয়েছি। আবার ২টি সন্তানকে পড়ালেখা শিখিয়েছি। মেয়েকে এসএসসি পর্যন্ত পড়িয়ে বিবাহ দিয়েছি। ছেলে বর্তমানে ৮ম শ্রেণিতে পড়ছে। স্বামী শারিরীক ও মানসিকনির্যাতন সহ্য করেও সংসারের হাল ধরে রেখেছি। বর্তমান আমার অবস্থা পূর্বের চেয়ে কিছুটা ভাল। পূর্বের জীবনের কথা ভুলে আমি নতুন করে আগামী দিনের আশায় জীবন-যাপন করছি। স্বামীকে নেশার পথ থেকে ফিরিয়ে এনেছি। সেও বর্তমান গরু পালন করে কিছুটা রোজগার করছে। আট জনের সংসার ভালই চলছে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা খাদিজা নাছরিন সাপ্তাহিক চলনবিল বার্তাকে বলেন, সংগ্রামী জয়িতারা আমাদের গর্ব। তারা সমাজের নির্যাতিত অন্যান্য নারীদের জীবনের সফল হওয়ার প্রেরণাও বটে। গোলাম

লেখক ঃ বিশিষ্ট তরুণ সাংবাদিক। সভাপতি, তাড়াশ মডেল প্রেস ক্লাব। মোবাঃ ০১৭৪৮৯৭২৭৩৬

খরা
আবদুর রাজ্জাক রাজু

‘করোনা’ গেল ‘ডেঙ্গু’ আছেই – আবার এল ‘খরা’
তীব্র তাপের অগ্নি শিখায় – পুড়ে যাচ্ছে ধরা।
বৃষ্টিও নাই পানিও নাই- আকাশে নাই মেঘ
উঠছে পারদ সেলসিয়াসে -তাপ মাত্রার বেগ।
বৃষ্টির জন্য পড়ে নামায – তবু বৃষ্টি নাই
¯্রষ্টা কেন দেয় না সাড়া- বুঝতে হবে তাই।
অনাবৃষ্টির চেয়েও মানুষ- বড়ই ভয়ানক
ইউক্রেন আর গাজায় চলে- মৃত্যু মিছিল শোক।
এই মানুষে নেয় না শিক্ষা- আল্লাহর গজব থেকে
অমানুষের বইছে বন্যা – মনুষ্যত্ব রেখে ।
মানুষের পাপে জরাজীর্ণ – এই পৃথিবী আজ
তাই তো বৃষ্টির হাহাকারে- মাথায় পড়ে বাজ।
এই গরম তো গরমই নয়- এই তাপ নয় তাপ
জাহান্নামের আগুনের সাথে – করলে পরিমাপ।
মানুষেরই কর্ম ফলে – যত আপদ মছিবত
মুখে শুধু তওবা নয় কো – দরকার শুদ্ধতার শপথ।

আজ মহান মে দিবস

স্টাফ রিপোর্টার ঃ মহান মে দিবস আজ। বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দিন। ১৮৮৬ সালের এই দিনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকরা ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। ওইদিন তাদের আত্মদানের মধ্য দিয়ে শ্রমিক শ্রেণীর অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য শ্রমিকদের আত্মত্যাগের এই দিনকে তখন থেকেই সারা বিশ্বে ‘মে দিবস’ হিসেবে পালন করা হচ্ছে।
মহান মে দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো.সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। মহান মে দিবস উদযাপন উপলক্ষে জাতীয় পত্রিকাসমূহ বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলেতে দিনটি উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠান ও টকশো সম্প্রচার হবে।

যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে নজিরবিহীন বিক্ষোভ

ডেস্ক রির্পোট ঃ এর আগে এরকম বিক্ষোভ দেখেনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ। বাইরের একটি ইস্যু নিয়ে উত্তাল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। ধর্ম-বর্ণ সব ভুলে শিক্ষার্থীরা এক কাতারে। প্রতিদিন হাজার হাজার শিক্ষার্থী বিক্ষোভ করছেন। তাদের দাবি একটাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইসরায়েলনীতি বদলাতে হবে। যত দ্রæত এটির উদ্যোগ নেয়া হবে তত ভালো। না হলে বিক্ষোভ আর বাড়বে। এদিকে সুত্র বলছে, বিক্ষোভের কারনে বদলে যেতে পারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইসরাইল নীতি।
জানা যায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এখন ফিলিস্তিনের পক্ষে এবং ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল। ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কিত কোম্পানি এবং ব্যক্তিদের বয়কট করার আহ্বান জানাচ্ছেন দেশটির সবচেয়ে নামজাদা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীরা। শিক্ষকরাও সমর্থন দিচ্ছেন তাদের। দাবি আদায়ে অনড় শিক্ষার্থীরা অস্থায়ী তাঁবু বসিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অচল করে দিচ্ছেন। আন্দোলন ক্রমশই জোরালো হচ্ছে, ছড়িয়ে পড়ছে নতুন নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নজিরবিহীন এই ছাত্র বিক্ষোভ দীর্ঘ মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের ইসরায়েলনীতি বদলে দিতে পারে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রই ইহুদিবাদী দেশটির বড় পৃষ্ঠপোষক, অস্ত্রদাতা এবং আর্থিক সহায়তাকারী। তবে তরুণ প্রজন্মের আন্দোলনে তাতে পরিবর্তন আসতে পারে।
ছাত্র বিক্ষোভ প্রথম শুরু হয়েছিল নিউইয়র্কের কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে। এরপর থেকে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানেও ছড়িয়ে পড়ে। লস অ্যাঞ্জেলেস, ক্যালিফোর্নিয়া এবং আটলান্টায় বিভিন্ন ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে ২৫টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ চলছে। আন্দোলন চলছে ফ্রান্স ও অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশেও। সূত্র ঃ যায় যায় দিন

 

নেতানিয়াহুর গ্রেপ্তার আশঙ্কা

ডেস্ক রির্পোট ঃ গাজায় নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের মামলায় চলতি সপ্তাহের মধ্যেই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হতে পারে। নেদারল্যান্ডসের হেগে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) এই রায় ঠেকাতে উঠে পড়ে লেগেছে ইসরায়েল। রায়ের সময় ঘনিয়ে আসায় এখন কূটনৈতিকভাবে শেষ চেষ্টা চালাচ্ছেন নেতানিয়াহু। ফোন করেছেন বাইডেনকে। কিন্তু এখনও যুক্তরাষ্ট্র তেমন কোনো সাড়া না দেওয়া ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কিছু ইসরায়েলি।
ইসরায়েলের অনেক বিশ্লেষকের দাবি, প্রধান মিত্র হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র চুপ থাকতে পারে না। ইসরায়েলকে আইসিজের রায় থেকে বাঁচানোর এখনই সময়। রায় দিয়ে দিলে তা হবে ইসরায়েলের মর্যাদার ওপর বড় আঘাত। খবর টাইমস অব ইসরায়েল ও জেরুজালেম পোস্টের। আইসিজের রায় নিয়ে চিন্তিত নেতানিয়াহু সর্বশেষ প্রকাশ্য বিবৃতি দেন গত শুক্রবার। এতে তিনি বলেন, আইসিজের আসন্ন সিদ্ধান্ত ‘বিপজ্জনক নজির’ স্থাপন করতে পারে।
একটি সংবাদপত্রের বিশ্লেষক বেন ক্যাসপিট লিখেছেন, নেতানিয়াহু ‘অস্বাভাবিক চাপের মধ্যে’ রয়েছেন। কারণ, তাঁর ও অন্যান্য ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের ট্রাইব্যুনালের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এটি হলে ইসরায়েলের আন্তর্জাতিক মর্যাদায় ওপর বড় আঘাত আসবে। ক্যাসপিট আরও বলেন, বিশেষ করে পরোয়ানা ঠেকাতে নেতানিয়াহু টেলিফোন করে বাইডেনকে খুব করে বলেছেন।
ইসরায়েলি গণমাধ্যম হারেৎজের বিশ্লেষক আমোস হারেল লিখেছেন, আইসিজের প্রসিকিউটর করিম খান চলতি সপ্তাহে নেতানিয়াহু, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট এবং সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব স্টাফ হারজি হালেভির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে পারেন। এই ধারণা সামনে রেখেই কাজ করছে ইসরায়েল সরকার। সূত্র ঃ সমকাল

কিশোরগ্যাং মদদদাতাদের তালিকা হচ্ছে

ডেস্ক রির্পোট ঃ কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে নতুন কৌশল নিয়েছে র‌্যাব-পুলিশ। গ্যাং সদস্যদের চেয়ে আশ্রয়-প্রশ্রয়দানকারীদের দিকে বেশি নজর দিতে যাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ডিএমপির পক্ষ থেকে এই মুহূর্তে গ্যাংয়ের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতাদের তালিকা প্রণয়নের কাজ চলছে। এতে আরও প্রায় দুই সপ্তাহ সময় লাগবে। এরপরই তালিকা ধরে অভিযান শুরু হবে। তবে গ্যাং সদস্যদের বিরুদ্ধে বড় অভিযান চালাবে না ডিএমপি। অন্যদিকে কঠোর হস্তে কিশোর গ্যাং দমনের সুপারিশ করেছে সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটি।
ডিএমপির সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, কিশোর গ্যাং নিয়ে কোনো আইন নেই। তবে শিশু আইন আছে। শিশু আইনে ১৮ বছরের কম বয়সি কেউ অপরাধ করলে তাকে সাধারণ কারাগারে পাঠনো যায় না। এমনকি তাকে সাজাও দেওয়া যায় না। তাকে পাঠাতে হয় কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে। দেশে মাত্র তিনটি কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্র আছে। দুটি ছেলেদের জন্য এবং একটি মেয়েদের। কিন্তু ওই কেন্দ্রগুলোতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থাপনা নেই। তাদের গ্রেফতার করেই কিশোর অপরাধ দমন সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।সূত্র ঃ যুগান্তর।

বিদ্যুতের দেনা ছাড়িয়েছে ৪১ হাজার কোটি টাকা

ডেস্ক রির্পোট ঃ সরকারের কাছে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের দেনা দিনে দিনে বাড়ছে। সরবরাহ করা বিদ্যুতের দাম নিয়মিত পরিশোধ না করায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি এমন প্রতিষ্ঠানের কাছে সরকারের দেনা ৪০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এমন অবস্থায় চলতি মওসুমের সামনের সময়ে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ ঠিক রাখতে ডলার সংস্থানের নিশ্চয়তা চাইছেন বেসরকারি বিদ্যুকেন্দ্রের মালিকরা। গতকাল সমন্বয় সভা থেকে তারা এই দাবি জানিয়েছেন। জ্বালানি আমদানিতে পর্যাপ্ত ডলার সংস্থান না হলে সামনে পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে- এমন আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন তারা।
দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পর্যাপ্ত সক্ষমতা থাকা সত্তে¡ও জ্বালানি সংকটের কারণে চাহিদা মোতাবেক বিদ্যুৎ সরবরাহ ঠিক রাখা যাচ্ছে না। ডলার সংকটের কারণে এই খাতের ভোগান্তি আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ বিষয়ে বেসরকারি খাতের বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইন্ডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসারস এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ইমরান করিম বলেন, গতকাল আমাদের একটি সমন্বয় সভা হয়েছে। সেখানে ডলার সাপোর্টে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য জ্বালানি প্রয়োজন। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ডলার সহযোগিতা পেলে বিদ্যুৎ সরবরাহ ঠিক রাখা সম্ভব হবে। সূত্র ঃ মানবজমিন।

বিএনপি’র বহিষ্কৃত নেতারা নির্বাচনে অনড়

ডেস্ক রির্পোট ঃ বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না বিএনপি। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ভোট করছেন দলের বিভিন্ন পর্যায়ের ৭৬ নেতা। এরই মধ্যে ভোট বর্জনের দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেয়ায় ৭৬ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। নির্বাচনে অংশ নেয়াদের মধ্যে ৩০ জন চেয়ারম্যান পদে, ২৫ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে এবং সংরক্ষিত নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন ২১ জন। এর বাইরে বিভিন্ন সময়ে দল থেকে বহিষ্কৃত, অন্য দলে যোগ দেয়া এবং দলীয় নেতাদের আত্মীয়-স্বজনরাও রয়েছেন।
উপজেলা নির্বাচন বর্জন এবং নির্বাচনে দলীয় নেতাদের প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে বিএনপি’র বেশকয়েক নেতার সঙ্গে কথা হয়। তারা বলেন, তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মতামত নিয়েই নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এরপরও অনেকেই দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। তাই দল বাধ্য হয়ে বহিষ্কারের মতো কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যাতে ভবিষ্যতে কেউ দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করতে সাহস না পায়। তবে দল কী করছে- সেটা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন না বহিষ্কৃত নেতারা। তারা নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন এবং বিজয়ী হওয়ার জন্য কাজ করছেন। সূত্র ঃ মানবজমিন।

 

তাড়াশে আবারো দুই রাতে ৮টি গরু চুরি

স্টাফ রিপোর্টারঃ তাড়াশ উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে গরু চুরিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ড অব্যাহতভাবে চলছেই। থেমে নেই বিশেষ করে গরু চুরি। একের পর এক গরু চুরির ঘটনা ঘটে চলেছে বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে।

উল্লেখ্য, মাত্র গত সপ্তাহে উপজেলা সদরে থানার অদূরবর্তী পৌর শহরের দক্ষিণপাড়া হতে ২টি ও সগুনা ইউনিয়নের লালুয়ামাঝিড়া গ্রাম হতে ৪টি গরু চুরি হলে স্থানীয় পুলিশ অপরাধ প্রতিরোধে বিজ্ঞপ্তি প্রচারের মাধ্যমে রেড এলার্ট জারী করে। কিন্তু তাতে কোন ফল হচ্ছে বলে মনে হয় না। বিশেষ করে গরু চুরি অব্যাহতভাবে চলছেই। গত ২৭ এপ্রিল শনিবার দিবাগত রাতে উপজেলার বারহাস ইউনিয়নের সান্দুরিয়া গ্রামে মোকছেদ আলীর পুত্র মোক্তার হোসেনের গোয়াল ঘর থেকে একযোগে ৫টি গরু নিয়ে যায় চোরেরা। এরপরের ঘটনা তাড়াশ সদর নিকটবর্তী ভাদাশ গ্রামে। ২৮ এপ্রিল রোরবার রাতের বেলা উক্ত ভাদাশ গ্রামের এবাদত আলীর ৩টি গরু চোরেরা নিরাপদে নিয়ে ভেগে পড়ে। তাড়াশ থানা কর্তৃক অতি সম্প্রতি গ্রাম-পাড়া-মহল্লায় পাহাড়া জোড়দার করার পরামর্শমূলক প্রচার পত্র দেয়া হলেও সেটা তেমন কোন কাজে আসছে না বলেই উপরোক্ত ধারাবাহিক ঘটনা থেকে প্রতীয়মান হচ্ছে। তাই সংশ্লিষ্ট আইন শৃংখলা কর্তৃপক্ষের এব্যাপারে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেয়া জরুরী বলে এলাকাবাসী মনে করে।

আবদুর রাজ্জাক রাজু
মে দিবস স্মরণে

এই পৃথিবীর সব কিছুতে
তাদের হাতের ছোঁয়া
তারাই গড়ে ঘরবাড়ি সব
ভেঙ্গে ইটের খোয়া।

তাদের শ্রমেই গড়ে তোলে
যত অট্টালিকা
তাদের হাতে জ্বলে উঠে
ইট ভাটার ওই শিখা।

তারাই বুনে সকল ফসল
ওরাই আবার কাটে
ঝাড়াই-মাড়াই করে তারাই
তুলে ঘরের পাটে।

এই জগতের যত নির্মাণ
স্থাপনা – প্রাসাদ
সব কিছুতেই স্পর্শ তাদের
কোথাও নেই বাদ।

শহর – নগর – গ্রাম -পল্লি
যেখানেতেই যাবে
তাদের হাতের স্মৃতি চিহ্ন
সবখানেতে পাবে।

এই ভূবনের বিনির্মাণে
তাদের কর্ম ছাড়া
কোন শিল্পই সম্ভব নয় কো
কারো পক্ষে পারা।

শ্রম আর শ্রমিক চিরকালই
অতীব মহান
মে’ দিবসে স্মরণ করি
তাদের অবদান।

তাড়াশ উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ৪
ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৮ জনের মনোনয়ন দাখিল

তাড়াশ প্রতিনিধি ঃ আগামী ২১ মে দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী রবিবার (২১ এপ্রিল) ছিল মনোনয়ন জমা দানের শেষ দিন। এ দিন পর্যন্ত অনলাইনের মাধ্যমে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ৪ জন এবং পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থী মনোনয়ন জমাদান করেছেন। এবারের ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও তাড়াশ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ মো. মনিরুজ্জামান মনি, তাড়াশ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও গত উপজেলা নির্বাচনের আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী সঞ্জিত কর্মকার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক সংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ম. ম. আমজাদ হোসেন মিলনের বড় মেয়ে হোসনেয়ারা পারভীন লাভলী, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. ফরহাদ আলী বিদ্যুৎ।
পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও তাড়াশ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মো. আনোয়ার হোসেন খান, তাড়াশ উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আব্দুল খালেক পিয়াস, তাড়াশ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ম. ম. আমজাদ হোসেন মিলনের ছোট ছেলে ম ম জর্জিয়াস মিলন রুবেল মনোনয়ন দাখিল করেছেন।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দাখিল করেছেন বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও তাড়াশ উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক মর্জিনা ইসলাম, তাড়াশ উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মনোয়ারা খাতুন মিনি, তাড়াশ উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার, তাড়াশ উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি শায়লা পারভীন ও নওগাঁ ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমা খাতুন।তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা সুইচিং মং মারমা জানান, এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়ন দাখিলের শেষ তারিখ ছিল ২১ এপ্রিল রবিবার। শেষ সময় পর্যন্ত অনলাইনের মাধ্যমে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ৪ জন, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জনের মনোনয়ন জমা পেয়েছি।

তাড়াশে হিটস্ট্রোকে প্রতিদিনই মরছে মুরগী

সাব্বির আহম্মেদ ঃ তাড়াশ এলাকার মুরগীর খামারী মো. শামিম হোসেন প্রায় ১০ বছর যাবত মুরগীর খামার পরিচালনা করে আসছেন। কিন্ত গত ঈদের পরে থেকে এ অঞ্চলে তাপমাত্রা অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে। এতে তিনি খামারের প্রায় ৩০০ মুরগী নিয়ে বিপাকে পড়ে গেছেন। আর এ সময়ে তিনি যে বিপাকে পড়েছেন এত বিপাকে আর আগে পড়েননি বলে মন্তব্য করেন। কারণ চলমান তীব্র গরমে হিটস্টোকে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিনই তার খামারে প্রায় দুই থেকে আড়াই কেজি ওজনের ২-৩ টি করে ব্রয়লার ও লেয়ার মুরগী স্টোক করে মারা যাচ্ছে। এ ভাবে গত দশ দিনে তার অন্ততঃ ১০-১৫টি মুরগী মারা গেছে। আরো অন্ততঃ ৩০-৩৫ টি মুরগী অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে। যদিও মুরগী রক্ষায় খামারের দরজা জানালা খোলা রাখার সাথে সাথে নানা উদ্দ্যোগ নিয়েছেন তাতেও তেমন ফল পাচ্ছেন না এ খামারী। আর এ অবস্থা শুধু খামারি শামিমেরই নয় বতর্মান সময়ে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ সহ আশেপাশের অঞ্চলে বহু খামারির একই অবস্থা। এ রকম পরিস্থিতির মুখোমুখি তাড়াশের মাধাইনগর এলাকার খামারী আরমান আলী জানান, গরমের কারণে খামারের মুরগী রক্ষাই কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই পুঁজি বাঁচানোর জন্য মুরগী বিক্রি করা ছাড়া গত্যন্ততর নাই।
তাড়াশ উপজেলা প্রাণী সম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার আটটি ইউনিয়ন এবং একটি পৌর এলাকায় মোট ১৫০ টি নানা জাতের মুরগীর খামার রয়েছে। এ ছাড়া তাড়াশ এলাকার আশে- পাশে আরো অন্ততঃ সাড়ে তিন শ খামার চালু আছে। যাতে হাজার হাজার মুরগী লালন পালন করছেন খামারিরা। বয়ে যাওয়া প্রবল তাপদাহে লেয়ার, ব্রয়লার, প্যারেল, সোনালী জাতের মুরগীর মাংশের উৎপাদনে ছন্দপতন ঘটেছে। তাড়াশ এলাকার খামারি গোলাম হাফিজ, আকবর হোসেন, মহিদুল ইসলামসহ অনেকেই বলছেন, তাঁদের মুরগীর খামার গুলোতে প্রতিদিনই হিটস্টোকে দুই- একটি করে মুরগী মারা যাচ্ছেই। এ ভাবে প্রতিদিন মরা অব্যহৃত থাকলে তাঁরা সর্বশান্ত হয়ে পড়বেন।এ প্রসঙ্গে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা তাড়াশ উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. অলিউল ইসলাম খামারে পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা, খামারে মুরগী ঘন না রাখা, সূর্যের আলো যেন সেডে না ঢোকে সে ব্যবস্থা, মুরগীকে দিনের শীতল সময়ে অল্প অল্প করে খাবার ও পানি দেওয়া, টিনের চালে চটের বস্তা ভিজিয়ে দেওয়া, সিলিং ফ্যান ব্যবহারের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

তাড়াশের রানীরহাটে ক্লিনিক সিলগালা

লুৎফর রহমান ঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার রানীরহাট বাজারে অভিযান চালিয়ে নাজমা ক্লিনিক এন্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্স নবায়ন ও বিভিন্ন অনিয়ম থাকায় সিলগালা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
গত সোমবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. খালিদ হাসান এ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচানা করেন । ভ্রাম্যমান আদালত সূত্রে জানা গেছে, পাবনা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনার যৌথ অভিযানে উপজেলার তালম ইউনিয়নের রানীরহাট দানেশ খাঁন নিউ মার্কেটে নাজমা ক্লিনিক এন্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক লাইসেন্স নবায়ন ও বিভিন্ন অনিয়ম থাকায় সিলগালা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এ সময় পাবনা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)’র সহকারী পরিচালক সাধন চন্দ্র সূত্র ধর, উপ-সহকারী পরিচালক মো: মনোয়ার হোসেন ও মো. মোক্তার হোসেন, তাড়াশ উপজেলা পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মনোয়ার হোসেন, তালম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল খালেক, ইউপি সদস্য গোলাম মোস্তফা, তাড়াশ প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক হাদিউল হৃদয় উপস্থিত ছিলেন।এ প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা সহকারি কমিশনার মো. খালিদ হাসান বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইসেন্স নবায়ন ও বিভিন্ন অনিয়ম থাকায় ওই প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করা হয়েছে।

তাড়াশে উপ-নির্বাচনে আতিয়া বিজয়ী
শফিকুল ইসলাম: সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা আসনে উপ-নির্বাচনে মোছাঃ আতিয়া পারভীন বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন। তার নির্বাচনী প্রতীক ছিল তালগাছ। উপ-নির্বাচন গত রবিবার (২৮ এপ্রিল) সকাল ৮টা থেকে বিরতিহীন ভাবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ব্যালটের মাধ্যমে ৪টি কেন্দ্র ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। মোট ভোট কাস্ট হয়েছে ২০৫২ (৪৬℅+)। নষ্ট ভোট ৪১ টি।
এতে মোছাঃ আতিয়া পারভীন তালগাছ প্রতীকে ১১৪৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধি মৃত নারী সদস্যা ফিরোজার ছেলের বউ মোছাঃ ফেরেজা খাতুন মাইক প্রতীকে প্রতিদ্বন্ধিতা করে ৮৬৪ ভোট পেয়েছেন।
এ বিষয়টি তাড়াশ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মেহরাজুল হাসান নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ৪টি কেন্দ্রে ভোট সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ভোটের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কেন্দ্রগুলোতে নিবার্হী ম্যাজিষ্টেট দায়িত্ব পালন করেছেন।

সাড়া মাস জুড়েই তাড়াশে থাকে হনুমান

বিশেষ প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে দলছুট একটি মুখপোড়া হনুমান লোকালয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। গত সোমবার প্রেসক্লাব মোড়ের দোকানের চালের উপর এ হনুমানটির দেখা মেলে। এদিকে এক মাসের ব্যবধানে তাড়াশ সদরে চারটি হনুমান দেখা গেল, নাকি এক হনুমানকেই মাসে চার বার চোখে পড়ল তা নিয়ে আছে ভিন্ন মতামত স্থানীয়দের।
তাড়াশ পৌর শহরের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, মাস খানেক আগে একটি দশ চাকার পাথর বোঝাই ট্রাক কেন্দ্রীয় ঈদগাহ্ মাঠে এসেছিলো। ভারত থেকে আসা পাথর বোঝাই ট্রাকে হনুমানটি এসেছে বলে তার ধারণা।
অপরদিকে তাড়াশ প্রেসক্লাবের কেয়ারটেকার আব্দুল মজিদ বলেন, কয়েকদিন পর পর হনুমান দেখতে পাওয়া যায়। এক মাসে চারটি হনুমান দেখা গেল। হনুমানটিকে কাছ থেকে দেখা যায়, চোখ দিয়ে পানি ঝড়ছে। হয়ত খাওয়ার না পেয়ে শুকনো হয়ে গেছে। তাছাড়া লোকজন ভীর জমাচ্ছে হনুমানটিকে দেখার জন্য। ভয়ে স্থির থাকতে পারছে না কোথাও। কখনো দোকান কিংবা বসত বাড়ির চালে, কখনো গাছে উঠে পড়ছে। এ প্রসঙ্গে উপজেলা বন কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান চলনবিল বার্তাকে বলেন, মুখপোড়া হনুমানটিকে ধরা গেলে বনে ছাড়া হবে।

তাড়াশে বেড়েছে খাবার স্যালাইনের চাহিদা

সাব্বির আহম্মেদ ঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে গত কয়েক দিনের তীব্র তাপদাহে খাবার স্যালাইনের চাহিদা ব্যাপক ভাবে বেড়েছে। চলমান তাপদাহে তাড়াশে গড় তাপমাত্রা বিরাজ করছে ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর এ রকম অসহনীয় গরমের মধ্যেই চলছে বোরো ধান কাটা ও মাড়াই। আর প্রচন্ড তাপদহে খোলা মাঠে, উঠানে কাজ করতে গিয়ে ঘাম ঝড়ছে কৃষি শ্রমিদের। এ কারণে তাঁরা শরীরের লবণ- পানির ঘাটতি মেটাতে পান করছেন খাবার স্যালাইন।
এতে করে উপজেলার ঔষধের দোকানে,টং ও মুদি দোকানে খাবার স্যালাইনের চাহিদা গত ১৫ দিনে অনেক গুন বেড়েছে। তাড়াশ উপজেলার মাঝদক্ষিনা এলাকার টং দোকানদার আব্দুল খালেক জানান, তাঁর এলাকায় তীব্র তাপদাহের কারণে মাঠে কাজ করা কৃষি শ্রমিক, ভ্যান- অটো চালক, হাট- বাজারের দোকানদারসহ কর্মজীবি মানুষের মাঝে খাবার স্যালাইনের চাহিদা আগের তুলনায় অনেক বেশি বেড়ে গেছে। বিশেষ করে দুপুর ও সন্ধ্যায় তাঁর টং দোকানটিতেই প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ পিছ খাবার স্যালাইন বিক্রি হচ্ছে। যা ১৫ দিন পূর্বেও ৫ থেকে ৮ টির বেশী ছিলনা। আর শুধু আমার দোকানেই নয় উপজেলার সকল দোকানেই খাবার স্যালাইন বিক্রি বেড়েছে। তবে দাম বাড়েনি।খাবার স্যালাইন পান করা প্রসঙ্গে তাড়াশ ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কর্মকর্তা ডা. মো. মনোয়ায় হোসেন বলেন, ঘামে শরীর থেকে লবণ পানি বের হয়ে যায়। এ জন্য খাবার স্যালাইন খেলে শরীর ভাল থাকবে। পাশাপাশি তিনি মানহীন, মেয়াদর্ত্তীন খাবার স্যালাইন পান করা থেকে সবাইকে বিরত থাকতে বলেন।

তাড়াশে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তালমের রাহেলা

গোলাম মোস্তফা, তাড়াশ ঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে সমিতি থেকে টাকা তুলে বিস্তীর্ণ মাঠের কৃষিশ্রমিক ও পথচারীদের পানি খাওয়ার নলক‚প স্থাপন করে মানবতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন খেটে খাওয়া রাহেলা খাতুন। ছয় বছর আগে কুন্দাশন সড়কের সিংড়াগারি এলাকায় নলক‚পটি বসিয়ে দেয় তিনি। রাহেলার বাড়ি তালম ইউনিয়নের কুন্দাশন গ্রামে। তার বাবার নাম মৃত আব্দুর রহিম।
জানা গেছে, রাহেলা খাতুন ৩০ বছর আগে তালাকপ্রাপ্ত হন। তারপর দুই শিশু সন্তান নিয়ে কুন্দাশন গ্রামে চলে আসেন। এখন তার দুই ছেলে রুবেল ও রফিকুল মা’কে রেখে আলাদা থাকেন। রাহেলার বয়বৃদ্ধ মা ছালেহা বেওয়া ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী নাতী সুজনকে নিয়ে তার বসবাস। সংসার চলে দিন মজুর খেটে।
রাহেলা খাতুন (৫২) দৈনিক ইত্তেফাককে বলেন, কুন্দাশন সড়ক দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় দেখে “ একদল কৃষিশ্রমিক বোরো ধান কাটা শেষে দুপুরে সড়কের সিংড়াগারি এলাকার বট গাছের ছাঁয়ায় বসে ভাত খাচ্ছে। এমন সময় পথচারী এক নারী কৃষিশ্রমিদের কাছে পানি খেতে চায়। দেড় মাইল দূরে কুন্দাশন গ্রাম ও দুই মাইল দূরে রানীহাট থেকে পানি বয়ে এনে খেতে হয় কৃষিশ্রমিকদের। এ কারণে পানি দিতে চায়না। তখন এক বয়স্ক কৃষিশ্রমিক নিজের ভাগের পানি থেকে পথচারী নারীকে একটু পানি খেতে দেয়। মূলত পানির জন্য কাড়াকাড়ি তার হৃদয়ে দাগ কাটে। তিনি আশা সমিতি গুল্টা শাখাতে ভর্তি হন ও দুই হাজার টাকা জমা দিয়ে ১৮ হাজার টাকা ঋণ নেয়। সেই টাকায় কুন্দাশন সড়কের সিংড়াগারি এলাকায় নলক‚প স্থাপন ও নিজ গ্রামের কুন্দাশন কওমি মাদ্রাসাতে একটি মাইক কিনে দেয়। পরে এক বছর কিস্তি টেনে সমিতির ঋণ পরিশোধ করে।রাহেলা খাতুন আরো বলেন, কত মানুষ নলক‚পের পানি খায়, ওজু করে নামাজ পড়ে, অনেক কৃষিশ্রমিক গোসল করে। এতেই আমার সুখ।
কুন্দাশন গ্রামের কাজী মো. মিল্লাত হোসেন বলেন, তাপদাহ চলছে। কাঠফাটা রোদের মধ্যে ধান কাটছে বহু কৃষিশ্রমিক। আমাদের গ্রামে অনেক কৃষক রয়েছেন যারা ২০ থেকে ৩০ বিঘা, কিংবা তারও বেশী জমির মালিক। তারা কেউ কৃষিশ্রমিকদের পানির ব্যবস্থা করেনি। অথচ অতি দরিদ্র রাহেলা খাতুন পানি খাওয়ার নলক‚প বসিয়ে দিয়েছে!কুন্দাশন গ্রামের কৃষিশ্রমিক ইউনুছ আলী বলেন, কুন্দাশন মাঠের কৃষি জমির আশপাশে নলক‚প নেই। বোরো ধান কাটতে-কাটতে পানির জন্য বুক ফেটে যেত। রাহেলার নলক‚পে পানির কষ্ট থেকে মুক্তি মিলেছে আমাদের।
কুন্দাশন গ্রামের ভ্যানচালক রুবেল হোসেন বলেন, রোদে আধা ঘন্টা থাকলে পানির পিপাসা লেগে যায়। রাহেলার নলক‚পে তাদের পিপাসা মেটে।সরেজমিনে দেখা যায়, রানীহাট-চান্দাইকোনা আঞ্চলিক সড়কের জাঙ্গাল এলাকা থেকে কুন্দাশন গ্রামীণ সড়কটি কুন্দাশন গ্রামের দিকে গেছে। এ সড়কটির দুই পাশে বিস্তীর্ণ মাঠে মাঠে বোরো খেত। রাহেলার নলক‚পে কৃষিশ্রমিক, ভানচ্যালকসহ পথচারীরা পানি খাচ্ছেন। নলক‚পটির সাথে একটি জগ লোহার শিকল দিয়ে এমনভাবে রাখা হয়েছে যাতে সহজে কেউ নিয়ে যেতে না পারে। স্থানীয় কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে ২২ হাজার ৫০২ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছেন কৃষক। এসব জমির ধান কাটতে বহু সংখ্যাক কৃষিশ্রমিকের প্রয়োজন হয়। কৃষিশ্রমিকদের জন্য জমিতে নির্দিষ্ট জায়গায় নলক‚প স্থাপনে কৃষকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন।
এদিকে উপজেলা নাগরিক আন্দোলনের আহবায়ক আব্দুর রাজ্জাক রাজু বলেন, কৃষিশ্রমিক ও পথচারীদের পানি খাওয়ার নলক‚প স্থাপন করে মানবতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন রাহেলা খাতুন। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ মাঠে মাঠে নলক‚প স্থাপনের প্রকল্পের কথা ভেবে দেখতে পারেন।অপরদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, একজন মানুষের প্রতিদিন ৬ থেকে ৭ গøাস পানি পান করা উচিত। কৃষিশ্রমিকদের শরীর থেকে অনেক ঘাম ঝরে। তাদের পানি আরো বেশি পান করা প্রয়োজন। নয়ত প্রখর রোদ ও পানি শুন্যতায় হিট স্টোকের ঝুঁকি রয়েছে।এ প্রসঙ্গে উপজেলা জনস্বাস্থ্য বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (অতিরক্তি দায়িত্ব) মো. আল আমীন বলেন, সংশ্লিষ্ট ঊর্দ্ধত্বন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে কৃষি জমির মাঠে নলক‚প স্থাপনের প্রকল্প গ্রহনের সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে।

চলনবিল অঞ্চলে তাপপ্রবাহে জনজীবন বিপর্যস্ত

মোঃ আনোয়ার হোসেন সাগর : বৈশাখের শুরুতেই মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে চলায় যমুনাপাড়ের শহর সিরাজগঞ্জের জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। গত বুধবার ( ২৭ এপ্রিল) সকাল থেকেই ভ্যাপসা গরম পড়তে থাকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে সূর্যের প্রখরতা। এতে পুরো জেলায় তীব্র উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে।
ফলে নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষেরা পড়েছে চরম বিপাকে। নির্মাণ শ্রমিক, মাটিকাটা শ্রমিক, তাঁত শ্রমিক, রিকশা শ্রমিকদের গরমে হা-হুতাশ করতে দেখা গেছে। একটু কাজ করার পরই হাঁপিয়ে পড়ছেন তারা।কথা হয় সিরাজগঞ্জ তাড়াশ উপজেলার ফুটপাতের ক্ষুদ্র ফল, সবজি ও কাপড় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে। তারা বলেন, প্রচন্ড গরমে মানুষ অতিষ্ঠ। দোকানে আসছে না ক্রেতারা। ঠিকমতো বেচাকেনাও হচ্ছে না। তার ওপর প্রচন্ড সূর্যের উত্তাপে ফুটপাতে বসে থাকাও যাচ্ছে না। বৈশাখের শুরু থেকেই যে তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য করাই দায়। তাড়াশ আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, গত বুধবার সকালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলনবিল অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে চলছে। এ অবস্থা আরও সপ্তাহখানেক চলতে পারে।

দীর্ঘ অনাবৃষ্টির কারণে চলনবিলের বিভিন্ন উপজেলায় ইস্তেস্কার নামাজ

তাড়াশ

সাব্বির আহম্মেদ ঃ সারাদেশের ন্যায় সিরাজগঞ্জের তাড়াশেও তীব্র তাপ দাহে জন জীবন অতিষ্ট। তাই শনিবার সকালে মহান রবের কাছে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনায় উপজেলার মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়নের হামকুড়িয়া গ্রামের ঈদগাহ মাঠে আয়োজন করা হয় ইস্তিকার নামাজের।
বিশেষ ওই নামাজে ইমামতি করেন স্থানীয় দোবিলা ডিগ্রী কলেজের অধ্যাপক মাওলানা আব্দুস সামাদ। এতে অংশ নেন এলাকার প্রায় পাচঁ শতাধিক মুসুল্লি সহ আলেমা ওলামাগণ । নামাজ শেষে মুসুল্লিরা বিশেষ দোয়ায় অংশ নেন। তারা দোয়া করেন আল্লাহর কাছে তাপপ্রবাহ কমিয়ে বৃষ্টির জন্য। পাশাপাশি প্রাকৃতিক এই দুর্যোগ থেকে প্রাণীকূল রক্ষায় আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করেন। হামকুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জহুরুল ইসলাম জানান, প্রায় দেড়মাস যাবত বৃষ্টির দেখা নেই। চলনবিল অধুষ্যিত তাড়াশে তাপপ্রবাহ ভয়াবহ মাত্রায় উঠেছে। তাই এখন আল্লাহর অনুগ্রহ ছাড়া আমাদের বাঁচার উপায় নেই। তাই আল্লাহর দরবারে পৃথিবীকে শান্তিময় করতে ইস্তিকার নামাজ শেষে দোয়া করা হয়।

চাটমোহর

চাটমোহর প্রতিনিধি ঃ পাবনাসহ উত্তরের জেলাসমূহে তীব্র তাপদাহ তাপসা গরম নাকাল জনজীবন। মাঠঘাট পুড়ে, আম, লিচু, ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গত শনিবার ২৭ এপ্রিল সকাল ১০ টায় চাটমোহর উপজেলার গুনাইগাছা ইউনিয়ন ও ভাঙ্গুড়া উপজেলার মন্ডতোষ ইউনিয়নে ৮ গ্রামের বোয়ালমারী দিগর ঈদগাহ ময়দানে বৃষ্টির জন্য মহান আল্লাহ দরবারে সাহায্য চেয়ে ইসতিস্কার নামাজ আদায় করেছে মুসল্লীরা। নামাজ শেষে আল্লাহর দরবারে হাত তুলে মুনাজাত করেন মুসল্লীরা। নামাজ ও মোনাজাত পরিচালনা করেন আলহাজ্ব মাও মোঃ আসাদুল্লাহ আনছারী।
এছাড়া ওই দিন সকাল ১০টায় বোয়ালমারী দিগর ঈদগাহ ময়দানে জলেশ্বর, পাইকপাড়া, বোয়ালমারী, মন্ডতোষ, কাদিপাড়া, চক মইচাট, টুনিপাড়া, গজারমারা ও মল্লিকচক গ্রামের মুসল্লীরা অংশগ্রহণ করে।

শাহজাদপুর

শাহজাদপুর প্রতিনিধি ঃ সারাদেশে টানা তাপপ্রবাহের ফলে তীব্র তাপপ্রবাহ থেকে রক্ষায় বৃষ্টি চেয়ে সিরাজগঞ্জে ইস্তিস্কার নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিরা। গত বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বেলা ১১ টার দিকে জেলার শাহজাদপুর উপজেলার পোতাজিয়া ইউনিয়নের নুকালি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ও কায়েমপুর ইউনিয়নের ব্রজবালা ঈদগাঁ মাঠে এ নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। এই নামাজের আয়োজন করেন নূরানী ক্যাডেট মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মওলানা রাশেদুল হাসান রাশেদ সিদ্দিকী। এ সময় বিশেষ এই নামাজ আদায় করতে জড়ো হন বিভিন্ন এলাকার শতশত ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। নুকালি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নামাজের ইমামতি করেন মাওলানা রাশেদুল হাসান রাশেদ সিদ্দিকী ও ব্রজবালা ঈদগাঁ মাঠে ইমামতি করেন আলহাজ্ব মাওলানা ফখরুল ইসলাম সিদ্দিকী পরে তিনি আরবিতে খুতবা দেন। যেখানে তীব্র গরমের কথা উল্লেখ করে আল্লাহর কাছে বৃষ্টির প্রার্থনা করেন। আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মুসল্লিরা নামাজে অংশ নেন।

সলঙ্গা
সলঙ্গা প্রতিনিধি : হে আল্লাহ বৃষ্টি দাও ও মাবুদ প্রকৃতি ঠান্ডা করো। তোমার কাছে বৃষ্টি ফরিয়াদ করছি ওগো প্রভু। মাবুদ মাওলা অনাবৃষ্টি-খরা থেকে আমাদের রেহাই করো।ওগো দয়ার আল্লাহ তুমি আমাদের ইস্তেগফার কবুল কর। আমাদের মাফ করো। মেহেরবান খোদা তুমি আমাদের উপর খাস রহমত নাজিল কর। নামাজ শেষে এভাবে আল্লাহর দরবারে দু’হাত তুলে কান্নাকাটি করতে থাকেন সলঙ্গার মুসুল্লীরা। তীব্র তাবদাহে পুড়ছে সলঙ্গাবাসী। এতে জনজীবন ও প্রাণীকুল অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। বেশি কষ্টে আছে জীবিকার তাগিদে বাইরে থাকা মানুষগুলো। চলমান তাপদাহ থেকে রক্ষা পেতে এবং বৃষ্টির জন্য আল্লাহর দরবারে ইস্তেস্কার বিশেষ নামাজ আদায় করেন স্থানীয় মুসুল্লীরা। গত শনিবার (২৭ এপ্রিল) সকাল ১১ টায় সলঙ্গা ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সলঙ্গা ওলামা পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা মুফতী হাফেজ মাও: আব্দুর রউফ এর ইমামতিতে জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়।
ভাঙ্গুড়া

ভাঙ্গুড়া প্রতিনিধি ঃ তীব্র তাপদাহ থেকে মুক্তি পেতে বৃষ্টির জন্য পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ইস্তিসকার নামাজ আদায় ও বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত শনিবার (২৭ এপ্রিল) সকাল ১০ টার দিকে উপজেলার জয়রামপুর মাঠে ইস্তিসকার নামাজ আদায় করা হয়। বিভিন্ন গ্রাম থেকে আগত শত,শত মুসল্লিরা নামাজে অংশগ্রহণ করেন। নামাজ শেষে বিশেষ দোয়া পরিচালনা করেন উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা মহির উদ্দিন। নামাজ শেষে মুসল্লিরা মহান আল্লাহর দরবারে-চলমান তীব্র তাপদাহ থেকে মুক্তি চেয়ে রহমতের বৃষ্টির জন্য কান্নায় ভেঙে পড়েন। এদিকে একই সময় পৌরশহরের সরকারি ভাঙ্গুড়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ মাঠে ইস্তিসকার নামাজ আদায় করেন একদল মুসল্লি। এই নামাজে ইমামতি করেন ও দোয়া পরিচালনা করেন নৌবাড়ীয়া আহলে হাদিস জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা আব্দুল মমিন।

খরায় বোরো আবাদ নিয়ে উল্লাপাড়ার কৃষকরা চিন্তিত

ডাঃ আমজাদ হোসেন ঃ দেশের অন্যান্য এলাকার মতো সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়াতে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপদাহ। প্রচন্ড গরমে অনেক এলাকায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। ফলে বোরো ধান আবাদে অগভীর সেচ মেশিনগুলোয় পানি উঠছে কম। এতে সেচে সময় লাগছে বেশি। এতে বাড়ছে সেচ খরচ। কৃষক রয়েছেন দুশ্চিন্তায়। কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় এবার মোট ৩০ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। প্রায় সব মাঠেই ধানের ছড়া বেরিয়েছে।
কিন্তু চলমান তাপদাহে কৃষকের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। কারণ হিসেবে তারা জানান, একে সেচ মেশিন দিয়ে পানি উঠছে কম। এতে দীর্ঘ সময় মেশিন চালাতে হয় বলে সেচের খরচ বেড়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে কড়া রোদের কারণে জমিতে পানি দেয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তা শুকিয়ে যাচ্ছে। এতে ঘন ঘন সেচ দিতে হচ্ছে। নাগরৌহা গ্রামের কৃষক আ. করিম, শফিউদ্দিন সরকার, জাফর মিয়া, আ. কাদের মিয়া এমন তথ্য জানান। অন্যদিকে আঙ্গারুর কৃষক আবু সাঈদ, আলম হোসেন, ছোট বাখুয়ার জয়নাল মিয়াসহ বিভিন্ন এলাকার আরো কয়েকজন কৃষক বলেন, বোরো আবাদে জমিতে ধানগাছের গোড়ায় পানি থাকতে হয়। তবেই ভালো ফলন পাওয়া যায়। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে সেটা নিশ্চিত করা দুরূহ হয়ে পড়েছে। জমিতে ঠিকমতো সেচ দিতে না পারলে ফলন কম হতে পারে। এছাড়া তাপদাহ অব্যাহত থাকলে ছড়ার ফুল শুকিয়ে যেতে কিংবা ধানে চিটা হতে পারে।এসব বিষয়ে উপজেলা কৃষি বিভাগের উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা সরোয়ার হোসেন চলনবিল বার্তাকে জানান, সব মাঠেই বোরো ধান ভালো আছে। এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৯৫ হেক্টর বেশি জমিতে বোরোর আবাদ করা হয়েছে।উপজেলা কৃষি অফিসার সুবর্ণা ইয়াসমিন সুমী বলেন, বোরো ধানের পুরোপুরি থোড় ও ফুল বের হওয়া জমিতে পানি জমিয়ে রাখাটাই নিয়ম। বর্তমানে সব মাঠেই বোরোর ক্ষেতের মাটিতে রস আছে। এরপরও চাহিদা অনুসারে সেচ মেশিনগুলো চালিয়ে জমিতে পানি সরবরাহ ঠিক রাখাটা জরুরি।

রায়গঞ্জে ৪০ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ
রায়গঞ্জ প্রতিনিধি ঃ সিরাজগঞ্জ রায়গঞ্জ উপজেলার পাঙ্গাসী ইউনিয়নের নওদা শালুয়া-নলকা খাল সড়কে ব্রিজের একাংশ ধ্বসে গেছে। ভেঙে যাওয়া ব্রিজটিতে মানুষের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা নতুন করে নির্মাণের আশ্বাস দিয়ে থাকলেও বাস্তবে তার কিছুই হচ্ছে না।
এক মাসের বেশি সময় ধরে ভেঙে আছে ব্রিজের মাঝের একাংশ, কিন্তু দীর্ঘদিনেও ভাঙা জায়গায় মেরামত বা নতুন ব্রিজ নির্মাণের কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি কর্তৃপক্ষের। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করা হাট, বাজারের পথচারী ও শিক্ষার্থীসহ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের। বিকল্প সড়ক না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই ব্রিজ ব্যবহার করতে হচ্ছে।এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ব্রিজটি ৫ বছর আগে নড়বড় হয়ে গেলেও এবারের রমজানের শুরুতেই ব্রিজের একাংশ ভেঙ্গে যায়। এরমধ্যে দিনরাত্রীতে মাটি বহনকারী ট্রাক চলাচল করায় আরও দ্রæত ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর থেকে ওই রাস্তা দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে অটোরিকশা, ভ্যানসহ ছোটখাটো যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। বর্তমানে ভাঙা অংশের পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়তে থাকায় ওই ইউনিয়নসহ প্রায় ৪০টি গ্রামের মানুষ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বর্তমানে গ্রামের মানুষের সহযোগিতায় ব্রিজের ভেঙ্গে যাওয়া অংশে মাচাল বিছিয়ে ছোটখাটো যানবাহন চলাচল করছে। তবে খুঁটি এখনও নড়বড়ে ।পাঙ্গাসী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, ব্রীজটি অতি পুরানো। এমপিসহ উপজেলার সকল পর্যায়ের মানুষ জানে। তবে উদ্ধর্তন কতৃপক্ষ আশ্বস্ত করেছে। এসে দেখে গেছে। আশা করছি তারা দ্রæত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।এ বিষয়ে রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান বলেন, ব্রীজটি পরিদর্শন শেষে বাজেটসহ সার্বিক বিষয়াদী এলজিইডি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। জনভোগান্তী রোধে নতুন করে এটি দ্রæতত নির্মাণ করা হবে।স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) রায়গঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. আব্দুল লতিফ বলেন, ইতিমধ্যে ওই ব্রিজটির যাবতীয় তথ্যাদি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আশা করছি দ্রæত বাস্তবায়ন হবে।
আলোকিত শেরপুর এর মহতী কাজ
মোল্লা রানা : তীব্র দাবদাহে যেন সারা দেশ পুড়ছে। দিনদিন তাপমাত্রার পারদ উপরের দিকে উঠছে। গরম ও অস্বস্তিতে হাঁসফাঁস অবস্থা মানুষের। প্রখর তাপে বিপর্যস্ত জনজীবন। বিশেষ করে নাভিশ্বাস উঠেছে শ্রমজীবী মানুষের। এমন অবস্থাতে “মানব সেবাই নিয়জিত আমরা” এই শ্লোগানকে সামনে রেখে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “আলোকিত শেরপুর” এর পক্ষ থেকে পিপাসার্ত শ্রমজীবি ও নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে দুপুর ১২টা থেকে ৪টা পর্যন্ত সুপেয় পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ করেছে। রোববার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে শহরের স্থানীয় ধুনটমোড় এলাকায় বিতরণ করা হয়। আলোকিত শেরপুরের সাধারণ সম্পাদক ও শেরপুর প্রেসক্লাবের দপ্তর সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ এর সভাপতিত্বে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উদ্বোধণ করেন মোহনা টেলিভিশন ও কালের কন্ঠ এর সিংড়া উপজেলা প্রতিনিধি সিংড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি মোল্লা মোঃ এমরান আলী রানা। এই মহতি উদ্যোগের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, গরম পরিস্থিতিতে আমাদের আশেপাশে অবস্থান করা শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষদেরকে ভুলে গেলে চলবে না। তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। বিশেষ করে সুপেয় খাবার পানি, স্যালাইন, প্রাথমিক ওষুধসহ যাবতীয় উপকরণ এসব মানুষের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য আহবান জানান।
আলোকিত শেরপুর এর সহ-সভাপতি মজিবর রহমান মজনুর পরিচালানায় বিতরণ অনুষ্ঠানে আলোকিত শেরপুর এর কোষাধ্যক্ষ আলহাজ¦ মজনু মিয়া, সদস্য ও দৈনিক দেশ বাংলা পত্রিকার শেরপুর উপজেলা প্রতিনিধি আবুল হোসেন প্রমূ

বেলকুচিতে পরিবর্তনের
মাসিক শিক্ষক সমন্বয় সভা
স্টাফ রিপোর্টার ঃ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের অধীনে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর সহায়তায় পরিবর্তন কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন আউট অব স্কুল চিলড্রেন এডুকেশন প্রোগ্রামের ৭০জন শিক্ষকদের নিয়ে গত ২৩-২৪ এপ্রিল ২০২৪ দুইদিন বেলকুচি উপজেলা মৎস্য ভবনের ট্রেনিং রুমে এক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম দিন উদ্বেধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পরিবর্তন সংস্থার পরিচালক আবদুর রাজ্জাক রাজু। উপস্থিত ছিলেন উক্ত প্রোগ্রামের উপজেলা পপ্রোগ্রাম ম্যানেজার, শরদিন্দু মজুমদার, প্রোগ্রাম সুপার ভাইজার মো: মনিরুল ইসলাম, মোছা: খাদিজা খাতুন ও মো: কবির হোসেনসহ শিক্ষন কেন্দ্রের শিক্ষকবৃন্দ। সভাপতি শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা হলেন সমাজ উন্নয়নের অগ্রপথিক, আপনরা দেশ ও জাতীকে এগিয়ে নিয়ে যাবার কারিগর। আপনাদের হাতে তৈরী হবে আগামী দিনের শিক্ষিত নাগরিক।

উল্লাপাড়ায় নামাজের জন্য পুরস্কার

উল্লাপাড়া প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় একটানা ৪০ দিন তাকবিরুল্লার সাথে নামাজ পড়ে সাত যুবক পেলো বাইসাইকেল, মোবাইল ও জায়নামাজ। উপজেলার দূর্গানগর ইউনিয়নের গাড়লগাতী গ্রামের জামে মসজিদে গত পহেলা রমজান থেকে এলাকার যুবকদের নিয়ে তাকবিরুল্লার সাথে ৪০ দিন নামাজ পড়া প্রতিযোগীতা হয়। গাড়লগাতী “জয়নাল আবেদীন-ফাতেমা” হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিম খানার প্রতিষ্ঠাতা মো: নায়েব আলীর উদ্যোগে এ প্রতিযোগীতা হয়।
গত শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বাদজুমা প্রতিযোগীতায় জয়ীদের মাঝে পুরুস্কার বিতরণ করা হয়। প্রথম পুরস্কার একটি বাইসাইকেল, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কার হিসেবে দুটি মোবাইল সেট এবং বাকি চারজনকে জায়নামাজ দেওয়া হয়।পুরুস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, গাড়লগাতী মসজিদের ইমাম মো: ফরিদুল ইসলাম, মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক মো.সাহেব আলী, সদস্য আবুল হোসেন, মো: মমতাজ হোসেন, শাহজাহান আলী, আক্কাস আলী।

তীব্র দাবদাহে সলঙ্গায় খাওয়ানো হল শরবত

জি,এম স্বপ্না ঃ তীব্র তাপদাহে ক্লান্ত পথচারী,ভ্যান চালক,যাত্রী ও শ্রমিকদের মাঝে সুপেয় পানি ও শরবত বিতরণ করা হয়। মানব সেবা মুলক সংগঠন “প্রিয় সলঙ্গার গল্প” ফেসবুক গ্রুপের উদ্যোগে গতকাল দুপুর ২ টায় পিপাসার্তদের মাঝে পানি ও শরবত বিতরণ করা হয়।“প্রিয় সলঙ্গার গল্প” ফেসবুক গ্রুপের চীপ এডমিন শাহ আলমের নেতৃত্বে সংগঠনের উপদেষ্টা,মডারেটর ও এক ঝাঁক তরুণদের নিয়ে সলঙ্গা বাজার ¯øুইচ গেট রিক্সা স্ট্যান্ড,নতুন ব্রীজ-ফাজিল মাদ্রাসা মোড়, থানা রোড, নিমগাছী রোড রিক্সা স্ট্যান্ডে ৩ শতাধীক পিপাসার্তদের সুপেয় পানি ও শরবত খাওয়ানো হয়।
“প্রিয় সলঙ্গার গল্প” ফেসবুক গ্রুপের এমন উদ্যোগকে প্রশংসা ও সাধুবাদ জানিয়েছেন অনেকেই। এক মোটর সাইকেল চালক বলেন, প্রচন্ড রোদে আমরা যারা রাস্তায় চলাচল করছি, প্রচন্ড খরা ও গরমে শরীর থেকে ঘাম আর লবনাক্ত পানি বের হওয়ার কারনে ক্লান্তিবোধ করছি,এ সময় ঠান্ডা শরবত পান করায় আমাদের তৃষ্ণা ফুরে গেল। তাই তাদের ধন্যবাদ জানাই।

সিংড়ার সংগঠনের কক্সবাজারে লিফলেট বিতরণ

সিংড়া প্রতিনিধি ঃ বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে পরিবেশ ও প্রকৃতি সুরক্ষায় জনসচেতনতার লক্ষে লিফলেট বিতরণ করেছেন পরিবেশ ও প্রকৃতি আন্দোলন নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। গত শনিবার (২৭ এপ্রিল) বেলা ১১টায় কক্সবাজারের কলাতলী, হিমছড়ি, ইনানী বিচে এসব বিতরণ করেন পরিবেশ ও প্রকৃতি আন্দোলনের সভাপতি মোল্লা মো. এমরান আলী রানা।
লিফলেট বিতরণকালে পরিবেশ ও প্রকৃতি আন্দোলন ও সিংড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি মোল্লা মোঃ এমরান আলী রানা বলেন, পরিবেশ ও প্রকৃতি সুরক্ষায় আমাদের সচেতন হতে হবে। একটি গাছ কাটার আগে অন্তত ৫ থেকে ১০টি সমকক্ষ গাছ লাগাতে হবে। প্রকৃতিতে আজ বিরুপ প্রভাব পড়েছে। আগের মত ব্যাঙের ডাক, ঝিঝি পোকার ডাক শোনা যায়না। তার মানে প্রকৃতি থেকে এসব প্রাণী আজ হারিয়ে নিজের জন্য এবং আপনার আমার সন্তানদের সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার জন্যই পরিবেশ ও প্রকৃতি সুরক্ষায় কাজ করে যেতে হবে।

গরমে ভাঙ্গুড়ায় এক আনসার কমান্ডারের মানবিকতা

ভাঙ্গুড়া প্রতিনিধি ঃ পাবনার ভাঙ্গুড়ায় তীব্র গরমে খেটে খাওয়া ৫ শতাধিক তৃষ্ণার্ত মানুষের মাঝে বোতলজাত পানি, স্যালাইন ও লেবুর শরবত বিতরণ করেছেন শেখ সাখাওয়াত হোসেন নামের এক ব্যক্তি। গত শনিবার(২৭ এপ্রিল) দুপুরে পৌরসভার শরৎনগর বাজার এলাকায় তার ব্যক্তিগত অর্থায়নে পানি, স্যালাইন ও শরবত বিতরণ করেন তিনি। সাখাওয়াত হোসেন ভাঙ্গুড়া উপজেলা আনসার কোম্পানী কমান্ডার হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে কর্মরত রয়েছেন। তার বাড়ি পৌর শহরের মাস্টার পাড়া মহল্লায়। তিনি ওই মহল্লার অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক মো.আব্দুস সামাদের ছেলে।
জানা গেছে, আনসার বাহিনীতে যোগদানের পর থেকেই সাখাওয়াত জনহিতকর বিভিন্ন কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছেন। কয়েক বছর আগে সাখাওয়াতের নেতৃত্বে আনসার সদস্যরা উপজেলার এক দরিদ্র কৃষকের ক্ষেতের পাকা ধান কেটে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে আলোচনায় আসেন। এছাড়া তার পরোপকারী নানা কাজের জন্য মানবিক আনসার কমান্ডার হিসেবে এলাকায় তার পরিচিতি রয়েছে।শেখ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আনসার সদস্যরা সব সময় দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করে থাকেন।তীব্র গরমে মানুষ কাহিল হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে খেটে খাওয়া মানুষেরা দুর্ভোগে পড়েছেন বেশি। তাই এসকল মানুষদের গরমে কিছুটা স্বস্তি দিতে তিনি এই উদ্যোগ গ্রহণ করেন।উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা মমতাজ মহল-জনহিতকর এমন কাজে সম্পৃক্ত রাখার জন্য সাখাওয়াতের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

তাড়াশের মেলায় অশ্লীল নৃত্য আটক পাঁচ

লুৎফর রহমান ঃ সিরাজগঞ্জরে তাড়াশ উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের বারুহাস মেলায় যাদু খেলার নাম করে অশ্লীল নৃত্য পরিবেশনকালে পাঁচ জনকে আটক করেছেন তাড়াশ থানা পুলিশ। গত বুধবার (২৪ এপ্রিল) বিকালে তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রাতে ওই মেলা থেকে তাদের আটক করা হয়।
জানা যায়, গত সোমবার থেকে বৃস্পতিবার পর্যন্ত বৈশাখী উপলক্ষে বাৎসরিক গ্রামীণ মেলাটি শুরু। আর মেলার শুরু থেকে সেখানে যাদু খেলার নামে অশ্লীল নৃত্য আয়োজন করা হয়। স্থানীয়রা বারবার প্রতিবাদ করলেও অশ্লীল নৃত্য বন্ধ হয়নি। এতে সামাজিক অবক্ষয়ের আশঙ্কা তৈরি হলে স্থানীয়রা প্রশাসনকে অবহিত করে। পরে তাড়াশ থানা পুলিশ গিয়ে ওই পাঁচ জনকে আটক করে।

রায়গঞ্জে বিট পুলিশিং মতবিনিময় সভা

রায়গঞ্জ প্রতিনিধি: রায়গঞ্জ থানা কতৃক আয়োজিত ৬নং ধানগড়া ইউনিয়নের অন্তরগত আটঘড়িয়া বাজারে গত ২৬ এপ্রিল শুক্রবার চার ঘটিকায় মাদক জঙ্গিবাদ,ধর্ষণ,বাল্যবিবাহ, কিশোর গ্যাং, চুরি, নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধ বিরোধী বিট পুলিশিং মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ইন্সপেক্টর( তদন্ত) মো: শাহ আলম, ধানগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মীর ওবায়দুল ইসলাম মাসুম, সাব ইন্সপেক্টর মো: খোরশেদ আলম, ইউপি সদস্য মোমিন তালুকদার, সাবেক ইউপি সদস্য মোকবুল হোসেন, ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি জয়নাল আবেদিন, মো: সোহেল রানা,সহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাচনে ৫ জনের মনোনয়ন বাতিল

উল্লাপাড়া প্রতিনিধি: আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দ্বিতীয় ধাপে সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিভিন্ন পদে ১৮ জন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দেন। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে ৪ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১ জন প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সিরাজগঞ্জ জেলা রিটার্নিং অফিসার যাচাই বাছাই শেষে ৫ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন। সিরাজগঞ্জ জেলা রিটার্নিং অফিসার ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) গণ মাধ্যমকে জানান, মনোনয়নপত্রের সঙ্গে আয়কর রিটার্ন ও সম্পদের বিবরণী না দেয়া এবং মামলার তথ্য গোপন ও হলফনামায় স্বাক্ষর না থাকায় পাঁচজনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।
মনোনয়ন বাতিলকৃতরা হলেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী আবু সাঈদ সরকার, এস এম তোফায়েল ইসলাম, আলমগীর হোসাইন, শরীফুল ইসলাম ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ঝর্ণা খাতুন। ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী আবু সাঈদ সরকার ও তোফায়েল ইসলাম এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ঝর্ণা খাতুন জানান, তারা আপিল করবেন। চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিলকারী ৬ জনের মনোনয়নপত্রই গ্রহণ করা হয়েছে।

 

 

 

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD