সাপ্তাহিক চলনবিল বার্তা, সংখ্যা ২৩ বৃহস্পতিবার ২১ মার্চ ২০২৪ ০৭ চৈত্র ১৪৩০ ১০ রমজান ১৪৪৫ হিঃ

Spread the love

হে ঈমানদারগণ, যারা ঈমান এনেছ! তোমাদের উপর রোজা ফরয করা হল যেরূপ ফরয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর, যেন তোমরা মুত্তাকী হতে পার। – সূরা বাকারা,রুকু-২৩,আয়াত-১৮৩

২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে চলনবিল বার্তার পরবর্তী বিশেষ সংখ্যার জন্য শীঘ্র লেখা পাঠান।

ভারতীয় নাগরিকত্ব আইন: মুসলিমরাই মূল টার্গেট

ডেস্ক রিপোর্ট ঃ ফের ভারতের সিএএকে তোপ দাগলেন মার্কিন সিনেটর। তার কথায়, ভারতীয় মুসলিমদের বিপাকে ফেলবে সিএএ। রমজান মাসেই এই আইন কার্যকর হওয়ায় গোটা বিষয়টা আরও খারাপ হয়ে উঠছে। প্রসঙ্গত, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন কার্যকর হওয়ার পরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল আমেরিকার পররাষ্ট্র দপ্তর। কয়েকদিনের মধ্যেই ফের তোপ দাগলেন মার্কিন সিনেটর।

গত সোমবার সিএএ কার্যকরের বিজ্ঞপ্তি জারির পরেই বিশেষ বার্তা দেয় আমেরিকা। পররা দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ‘গত ১১ মার্চ সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে সেটা নিয়ে আমরা গভীরভাবে চিন্তিত। ভারতে কীভাবে এই আইন কার্যকর হবে, সেদিকে কড়া নজর রাখছি। গণতন্ত্রের মৌলিক অধিকারগুলোর মধ্যে অন্যতম ধর্মীয় স্বাধীনতা আর সকল সম্প্রদায়ের সমানাধিকার।’ তবে আমেরিকার এই মন্তব্যের পালটা বার্তা দিয়ে ভারত জানায়, ভুল তথ্যের ভিত্তিতে এমন অযৌক্তিক বার্তা দিচ্ছে আমেরিকা।
কিন্তু ভারতের এই বার্তার পরেও বদলায়নি মার্কিন প্রশাসনের মনোভাব। সোমবার ডেমোক্র্যাট এমপি বেন কার্ডিন একটি বিবৃতি দিয়ে বলেন, “বিতর্কিত সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন পাশ করেছে ভারত সরকার, সেটা নিয়ে আমি খুবই চিন্তিত। এই আইনের ফলে খুবই সমস্যায় পড়তে পারেন ভারতীয় মুসলিমরা। কারণ মুসলিমরাই এই কালাকানুনের মূল টার্গেট। তাছাড়া রমজান মাসেই এই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। তাতে বিষয়টা আরও খারাপ হচ্ছে। আগের তুলনায় ভারত-আমেরিকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও মজবুত হচ্ছে। কিন্তু ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের মানবাধিকার যেন সুরক্ষিত থাকে, সেটাও লক্ষ্য রাখা উচিত আমাদের এই সহযোগিতার ক্ষেত্রে। সূত্রঃ ইনকিলাব।

ডেঙ্গু মোকাবিলায় সব হাসপাতাল প্রস্তুত রাখার নির্দেশ

ডেস্ক রিপোর্ট ঃ ডেঙ্গু রোগীদের যথাযথ ও সময়মতো চিকিৎসাসেবা দিতে দেশের সব হাসপাতাল প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। গতমঙ্গলবার (১৯ মার্চ) ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া নির্মূলে করণীয় বিষয়াদি নিয়ে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়রের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা জানান।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের সব হাসপাতালগুলো যেন প্রস্তু রাখা হয়। রোগীরা যখন ডেঙ্গু আক্রান্ত হন বা জ্বর হয় তারা যেন অতি দ্রæত হাসপাতালে আসেন। অনেক সময় দেখা যায় অনেক দেরিতে আসেন। তখন কিছু করা যায় না। এই ম্যাসেজগুলো আমরা দিচ্ছি। ডেঙ্গু র প্রজনন ও বিস্তার কীভাবে হয় সে বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে আমরা প্রিভেনশন নেব প্রতি ওয়ার্ডে। সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন।
জিম্মিদের ছাড়াতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে

ডেস্ক রিপোর্ট ঃ বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ ও তার নাবিকরা এক সপ্তাহের বেশি সময় পার হলেও সোমালিয়ান জলদস্যুদের থেকে মুক্ত হয়নি। গত মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে কথা বলছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাত থেকে নিরাপদে নাবিকদের ফিরিয়ে আনার সব প্রচেষ্টা চলছে। তবে সবকিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না। এ বিষয়ে গণমাধ্যমকেও সতর্কভাবে সংবাদ প্রচারের আহ্বান জানান তিনি। এ সময় তিনি আরও জানান, এখন থেকে দুবাই ছাড়াও আরব আমিরাতের অন্য শহরেও জনশক্তি রফতানি করতে পারবে বাংলাদেশ।

প্রসঙ্গত, গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগরে সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়ে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ। ৫৫ হাজার মেট্রিকটন কয়লা বহনকারী জাহাজটির ২৩ জন নাবিকই বাংলাদেশি। এরই মধ্যে সোমবার (১৮ মার্চ) জিম্মি দশা থেকে জাহাজটি উদ্ধারে সোমালিয়ার পুলিশ এবং আন্তর্জাতিক নৌবাহিনীর সম্মিলিত দল প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানা যায়। যদিও জাহাজটির মালিকপক্ষ এ ধরনের অভিযানের সাথে একমত নয়।সূত্রঃ জনকণ্ঠ।

এবার ঈদের ছুটি ৬ দিন হতে যাচ্ছে

ডেস্ক রিপোর্ট ঃ এবার ঈদুল ফিতরে টানা ৬ দিন ছুটি পাওয়ার সম্ভাবনা সরকারি চাকরিজীবীদের। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঈদুল ফিতরের দিন সাধারণ ছুটি থাকে। আর ঈদের আগের দিন ও পরের দিন নির্বাহী আদেশে ছুটি দেয় সরকার।কর্মকর্তারা জানান, প্রতি বছর ঈদের আগে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে ছুটির একটি তালিকা প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হয়। মন্ত্রিসভা থেকে সেই তালিকা অনুমোদনের পর প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এ বছর এখনো তালিকা পাঠানো হয়নি, তবে প্রস্তুতি চলছে। সূত্রঃ জনকণ্ঠ।

তাড়াশের বিশিষ্ট বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সোবহান আর নেই

লুৎফর রহমান, তাড়াশ ঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সোবহান গত রবিবার রাত্রী ৩ ঘটিকার সময় নিজ বাস ভবনে ইন্তেকাল করেছেন ( ইন্না লিল্লাহি — রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল (৮০) বছর। তিনি তাড়াশ উপজেলার মাগুড়াবিনোদ ইউনিয়নের মাগুড়া মুকুন্দ গ্রামের বাসিন্দা। বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সোবহানকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অনার প্রদানের মধ্যে দিয়ে সমাহিত করা হয়েছে।
তার নামাজে জানাজায় উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডাঃ আব্দুল আজিজ ,উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান মনি,উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিত কুমার কর্মকার, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম আব্দুর রাজ্জাক, সাবেক চেয়ারম্যান মো. আতিকুল ইসলাম বুলবুল, পৌর মেয়র মো. আব্দুর রাজ্জাক, মাগুরাবিনোদ ইউনিয়নে ইউপি চেয়ারম্যান মেহেদি হাসান ম্যাগনেটসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও ধর্মপ্রাণ মুসুল্লীগণ।রবিবার ( ১৭ মার্চ ) বাদ জোহর মাগুড়া মুকুন্দ মাদ্রাসা মাঠে অনুষ্ঠিত জানাযার নামাজের পূর্বে রাষ্ট্রের পক্ষে গার্ড অফ অনার প্রদান করেন তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুইচিং মং মারমা ও তাড়াশ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.নজরুল ইসলামসহ চৌকস পুলিম সদস্যেও একটি টিম। জানাজা শেষে সামাজিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। মৃত্যুকালে ২স্ত্রী, ৩ ছেলে,৩ মেয়ে সহ অসংখ্য আত্বীয় স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

প্রস্তাব দিয়েছিল,আমি গ্রহণ করিনি : মেজর অব. হাফিজ
ডেস্ক রিপোর্ট ঃ গণমাধ্যমে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান সাথে বিএনএম যোগ দেয়ার নিউজের ছবি প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর অব. হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘এটা তো গোপন করার কিছু নয়। আমাকে অ্যাপ্রোচ করেছিল, আমি গ্রহণ করিনি। সাকিব আল হাসান দেশের গৌরব, তিনি এখানে কিছু করতে পারেনি। তবে অন্য কোথায় যোগ দিয়েছে।’মেজর অব. হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘দেশে গণতন্ত্র নেই, দেশে নোংরা রাজনীতি বিরাজমান। নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে অনেক নোংরা খেলা খেলে থাকে, যে দলই সরকারের থাকে। রাজনীতিতে কোনো শর্টকার্ট বলতে কিছু নেই। সাধারণ মানুষের সঙ্গ ছাড়া রাজনীতিতে টিকে থাকা যায় না।’
তিনি বলেন, ‘সরকারের পক্ষে যারা যোগাযোগ করেছে তাদের বলেছি, ৩২ বছরের রাজনীতিক জীবনে দল পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। আমি রাজনীতি থেকে অবসর নিতে চাই। আমার সাথে সামরিক বাহিনীর কয়েকজন বারবার অফার নিয়ে আসেন, সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নির্দেশে। সামরিক বাহিনীর কয়েকজন অবসরপ্রাপ্ত সদস্য সাকিব আল হাসান হাসানকে আমার কাছে নিয়ে আসেন। আমি তখন বলি, তুমি বিশ্বমানের খেলোয়ার। তুমি রাজনীতি করবে কিনা সেটি তোমার ব্যাপার। সাকিব তার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নির্বাচনের আগে সাবেক তথ্য মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ঘোষণা দিলেন আমি বিএনএম পার্টিতে যোগ দেবো- ওই মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে আমি এখানেই সংবাদ সম্মেলন করেছিলাম। সূত্রঃ নয়া দিগন্ত।

তাড়াশের নওগাঁ মাজার দানবাক্সে ১১ লাখ টাকা জমা

তাড়াশ প্রতিনিধি ঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শাহ শরিফ জিন্দানী (রহ.)-এর ওরস উপলক্ষে দানবাক্সে প্রায় ১১ লাখ টাকা জমা পড়েছে। গত বৃহস্পতিবার ওরস শুরু হয়। শুক্রবার বাদ জুমা বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে বার্ষিক এ আয়োজন সমাপ্ত হয়। শনিবার ওরস উপলক্ষে মেলা অনুষ্ঠিত হয়। ওরসের দানবাক্সে জমা হওয়া টাকা গতকাল গণনা শেষে স্থানীয় একটি ব্যাংকের শাখায় জমা দেওয়া হয়। দানের টাকা গণনার সময় উপস্থিত ছিলেন মাজার কমিটির সভাপতি ও ইউএনও সুইচিং মং মারমা। ইউএনও দুপুরে বিষয়টি সাপ্তাহিক চলনবিল বার্তাকে বলেন, গত বছর জমার পরিমাণ ছিল ৩১ লাখ ৩৬ হাজার ২৯৫ টাকা। এ বছর প্রাপ্ত টাকার পরিমাণ কম। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, রমজান মাসে ওরস হওয়ায় ভক্তসমাগম কম ছিল। ভারতের আজমির শরিফের পীর খাজা মঈনুদ্দিন চিশতী (রহ.)-এর আধ্যাত্মিক গুরু নওগাঁর হাজী শাহ শরিফ জিন্দানী (রহ.)-এর মাজারে প্রতিবছর তিন দিনব্যাপী ওরস অনুষ্ঠিত হয়। ওরসে সিরাজগঞ্জ, পাবনা, নাটোর, বগুড়াসহ বিভিন্ন জেলার হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে।

তাড়াশে এক বছর ধরে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার পদশূন্য

হাদিউল হৃদয় ঃ দীর্ঘ এক বছর ধরে সিরাজগঞ্জের তাড়াশে উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা না থাকায় উপজেলার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন, পেনশন ভোগী, অফিসের আনুষঙ্গিক বিলসহ নানা কাজে সেবা নিতে আসা সরকারি-কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং জনসাধারণ পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে। এদিকে এক বছর ধরে উপজেলার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা সপ্তাহে দু-এক দিন অফিস করছেন। তাও নিয়মিত না। এ কারণে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তাকে না পেয়ে দূর-দূরান্ত থেকে কাজ করতে আসা লোকজন ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা অভিযোগ করে বলছেন, টাকা ও সময় খরচ করে অফিসে এলেও কোনো জরুরি কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না।
তাড়াশ উপজেলার হিসাবরক্ষণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১৬ মার্চ মো.জিয়াউর রহমান নিয়মিত উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা হিসেবে তাড়াশ থেকে অন্যত্র বদলি হয়ে যান। আর বদলির পর শাহজাদপুর উপজেলার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. মোখলেছুর রহমান তাড়াশ অফিসের অতিরিক্ত দায়িত্ব পান। পাঁচ মাস থাকার পর তিনিও চলে যান। এরপর অতিরিক্ত দায়িত্বে আসেন রাজশাহী থেকে মো.রফিকুল ইসলাম। তিনিও দুই মাস দায়িত্বে থাকার পর চলে গেলে নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা তাড়াশ উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার অতিরিক্ত দায়িত্ব পান মো. রবিউল হক। তিনি এখন সপ্তাহে মাত্র এক দিন তাড়াশে অফিস করেন।
অথচ এ অফিসে প্রতি মাসে ১ হাজার ২০০ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন-ভাতাসহ যাবতীয় কাজ করতে হয়। আবার পাঁচ শতাধিক পেনশন ভোগীকে আসা মাত্রই সেবা দিতে হয়। এজন্য ওয়ান স্টপ সেবা চালু আছে। কিন্তু বাস্তবে নিয়মিত কর্মকর্তা না থাকায় সম্মানিত পেনশন ভোগীরা ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। পাশাপাশি এ উপজেলার সব অফিসের যাবতীয় সরকারি বিল-ভাতা, ঠিকাদারি বিল, নতুন পেনশনের আনুতোষিক বিল, পেনশন চালুকরণ, ভ্রমণ ভাতা, বদলি বিলসহ নানা ধরনের বিল উপজেলার হিসাবরক্ষণ অফিস থেকেই পরিশোধ করা হয়।
ভোগান্তিতে পরা বারুহাস ইউনিয়ন এলাকার মো.রাশিদুল ইসলাম জানান, একটি বিল করতে তিনি দেড়শ টাকা ব্যয় করে এ অফিসে তিন দিন এসেছেন। কিন্তু কর্মকর্তা না থাকায় কাজ করতে পারেননি। অর্থের পাশাপাশি সময়ও নষ্ট হচ্ছে।পেনশন ভোগী আমিরুল ইসলাম বলেন, পেনশন-সংক্রান্ত কাজে এসে কর্মকর্তা না থাকায় বাড়ি ফিরে যেতে হচ্ছে। এ অবস্থা শুধু রাশিদুল বা আমিরুল ইসলামের নয়। উপজেলার শত শত কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সাধারণ জনগণের।তাড়াশ উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা মো. রবিউল হকের মূল দায়িত্ব নাটোর জেলার নলডাঙ্গা উপজেলার হিসাবরক্ষণ অফিসে। তার বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জে। বাস করেন রাজশাহী শহরে। তাই তাড়াশে সপ্তাহে এক দিন অফিস করলেও তার পক্ষে সব কাজ করা সম্ভব হয় না। তারপরও তিনি দাবি করেছেন ভোগান্তি কমাতে অল্প সময়ে অনেক কাজ করেন।এ প্রসঙ্গে রাজশাহী বিভাগীয় হিসাব নিয়ন্ত্রক মো. কামরুজ্জামান বলেন, দু-এক মাসের মধ্যেই নিয়মিত তাড়াশ উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা পোষ্টিং দেয়া হবে। সূত্রঃ কালবেলা

তাড়াশে এনজিও সমন্বয় সভায় ইউএনও-র অশোভন আচরণ

মোহসীন আলী : সিরাজগঞ্জের তাড়াশে এনজিও সমন্বয় মিটিং ডেকে কর্মকর্তাদের অপমান করে রুম থেকে বের করে দিলেন ইউএনও সুইচিং মং মারমা। ঘটনাটি ঘটেছে ২০ মার্চ বুধবার সকালে উপজেলা পরিষদের হলরুমে। জানা যায়, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের স্বাক্ষরিত চিঠিতে ওই দিন সকাল ১০টায় এনজিও সমন্বয় মিটিং ডাকে। ৩১ টি এনজিওকে চিঠি দিয়ে ডাকলে সকাল ৯ টার মধ্যে ৫টি ও সকাল ১০টার মধ্যে আরও ৫টি এনজিওর কর্মকর্তা উপস্থিত হন। সাড়ে ১০টায় ইউএনও হলরুমে প্রবেশ করে উগ্র মেজাজ দেখিয়ে এনজিও কর্মকর্তাদের বলেন, আমি যেমন তেমন ইউএনও না। আপনারা কোন এনজিও আমার কাছে কোন সহযোগিতা পাবেন না। কোন বিষয়ে প্রত্যয়ণ ও পাবেন না। উপস্থিত এনজিও কর্মকর্তাগন কোন কথার সুযোগ না পেয়ে তার কার্যালয়ের রুমে গেলে তিনি তাদেরকে ভাষা খারাপ করে রুম থেকে বের করে দেয়।এ ব্যাপারে পরিবর্তন এনজিওর পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক রাজু বলেন, আমাদের সাথে ইউএনও যে আচরণ করেছেন তা সভ্য সমাজের জন্য কাম্য নয়।
নারী ও শিশু কল্যাণ ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি লুৎফা খাতুন বলেন,আমরা যারা উপস্থিত ছিলাম তাদের সাথে এ ধরনের আচরণ করায় আমরা মর্মাহত। যারা মিটিং এ আসেন নাই তারাই মানষিক চাপ থেকে বিরত আছেন।এনডিপির ব্যবস্থাপক মাহফুজ হোসেন বলেন, আমরা মানষিক চাপে আছি। যারা মিটিং এ আসেন নাই তাদের সাথে এ রকম আচরণ করলে মেনে নিতাম। কিন্তু আমরা গিয়ে ই ভুল করছি। এ ব্যাপারে এনজিও প্রতিনিধিগন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান মনির কাছে গিয়ে বললে তিনি সান্তনা দিয়ে বিষয়টি দেখবেন বলে জানিয়েছেন। এ সম্পর্কে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসককে জানালে তিনি বলেন, তাড়াশ ইউএনও লোক হিসেবে ভাল। আশা করি কোন সমস্যা হবে না।

 

তাড়াশে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস পালিত

লুৎফর রহমান ঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪ তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস পালিত হয়েছে।
গত রবিবার (১৭ মার্চ) উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে দিবসটি পালন উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও র‌্যালী শেষে পরিষদ অডিটোরিয়ামে পুরস্কার বিতরণী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুইচিং মং মারমার সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আব্দুল আজিজ। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন তাড়াশ উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মোঃ মনিরুজ্জামান, তাড়াশ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিত কর্মকার,তাড়াশ পৌরসভার মেয়র মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ আনোয়ার হোসেন খান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রভাষক মর্জিনা ইসলাম, উপজেলা স্বাস্থ্য ও প প কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ মনোয়ার হোসেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আব্দুস সালাম, ওসি মোঃ নজরুল ইসলাম , বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম আব্দুর রাজ্জাক, মাগুরা বিনোদ ইউপি চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান ম্যাগনেট প্রমুখ।

তাড়াশে ভুট্টাক্ষেত থেকে নবজাতক উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ভুট্টাক্ষেত থেকে এক মেয়ে নবজাতককে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়নের চড়হামকুড়িয়া গ্রামের পূর্ব পাশের ভুট্টাক্ষেতে। উদ্ধারকৃত নবজাতককে চিকিৎসার জন্য তাড়াশ ৫০ শয্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসার পর নবজাতককে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে নেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।
এ বিষয়ে এলাকাবাসী জানায়, গত মঙ্গলবার (১২ মার্চ) সকালে উপজেলার মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়নের চড়হামকুড়িয়া গ্রামের শামীম রেজার স্ত্রী লাবনী খাতুন ছেলেকে নিয়ে বোরো ধানের জমি দেখতে যান। এ সময় বোরো ধানের জমির পাশে ভুট্টাক্ষেতে তার ছেলে বাচ্চার কান্নার শব্দ শুনতে পায়। বিষয়টি লাবনীকে বললে তিনি ভুট্টাক্ষেতে গিয়ে নবজাতককে দেখতে পান। পরে তিনি বাড়ি ফিরে স্বামীকে বিষয়টি জানালে তার স্বামী শামীম রেজাসহ এলাকার লোকজন ভুট্টাক্ষেত থেকে মেয়ে নবজাতককে উদ্ধার করে তাড়াশ ৫০ শয্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে।
তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুইচিং মং মারমা বলেন, শিশুটিকে দত্তক নেওয়ার জন্য অনেকেই আবেদন করেছেন। জেলা প্রশাসকের নির্দেশ মোতাবেক শিশুটিকে রাজশাহী সোনামনি নিবাসে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

রমজান বলে–
গুরুদাসপুর ও তাড়াশে লেবুর দাম আকাশ ছোঁয়া
গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি ঃপবিত্র রমজান মাস সামনে রেখে নাটোরের গুরুদাসপুরে লেবুর দাম বেড়েছে বহুগুণ। অভিযোগ রয়েছে রমজানকে সামনে রেখে ব্যবসায়ীরা অন্য পণ্যের সাথে রোজাদারদের জন্য অতি প্রয়োজনীয় লেবুর দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।
ব্যবসায়ীদের দাবি, লেবুর মৌসুম না থাকায় এবং সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে। উপজেলার চাঁচকৈড় বাজারে ১ কেজি লেবু ১২০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ গত সপ্তাহে এই লেবু ৬০-৭০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। প্রায় ৮ কিলোমিটার ব্যবধানে নাজিরপুর এবং কাছিকাটা বাজারেও ওই একই মূল্য ১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
লেবু বিক্রেতা আত্তাব ও রেজাউল প্রামানিক জানান, লেবুর মৌসুম কেবল শুরু হচ্ছে। এরমধ্যেই আবার রমজান মাস। চাহিদাও বেশি। এজন্য দামও বেড়েছে। একই বাজার পরিস্থিতি বিরাজ করছে তাড়াশ বাজার্ওে। এখানে শুধু লেবু নয়, রমজানে সব জিনিষেরই দামই চড়া। তাড়াশে অনেকদিন যাবৎ কোনো বাজান মনিটরিয় নাই। এ বিষয়ে গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা আক্তার বলেন, এ ব্যাপারে বাজার মনিটরিং করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

যে মুক্তিযোদ্ধা প্রথম আসেন আশানবাড়ী গ্রামে একক ছবি সোবহানের মাঝখানে
(অতি সম্প্রতি প্রয়াত মরহুম বীরমুক্তিযোদ্ধা মরহুম আব্দুস সোবহান স্মরণে স্মৃতিচারণমূলক নিবন্ধ পূণঃ মূদ্রিত)
আবদুর রাজ্জাক রাজু
ইতোমধ্যে মুক্তিযুদ্ধ শেষ হয়ে গেছে । খুব সম্ভবত: ১৯৭২ এর জানুয়ারী মাসের প্রথম দিকে। শীতকাল চলছে। আমি জামা-লুংগি ও গরম কাপড় পড়ে গ্রামের পাশের কাঁচা সড়ক পথ হয়ে তাড়াশ রওয়ানা হয়েছি সবেমাত্র। গ্রামের মফিজ তালুকদার মামার বাড়ীর দক্ষিণে আসানবাড়ী কবরস্থানের পূর্ব-উত্তর কোনে মাঠের মধ্যে সামনাসামনি মুখোমুখি সাক্ষাৎ পেলাম তাড়াশের বিশিষ্ট সাহসী মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সোবহান ভাইয়ের। তাড়াশ থেকে ধীর গতিতে এদিকেই তিনি হেঁটে হেঁটে আসছেন। আমাদের গ্রামে এইমাত্র ঢুকতে যাচ্ছেন তিনি। দিব্যি গাজী সৈনিকের বেশে তিনি আমাদের গ্রামে বেড়াতে এসেছেন বলে জানালেন। তার বাড়ী তাড়াশের মাগুড়া মুকুন্দ গ্রামে। তিনি বয়সে আমার বেশটা বড়। সোবহান ভাই একজন প্রকৃত নির্ভেজাল মুক্তিযোদ্ধা । ভারতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। খাকী পুলিশী পোশাকে কাঁধের পেছনে চায়নিজ রাইফেল ঝোলানো। কেবল মুখে মোচ আছে। দাঁড়ি তখনো উঠে নাই। কালো চুল মাথায়। বুকে ও মাজার সাথে বন্দুকের গুলির চেইন বা ফিতা বাধা। সব মিলে তাকে দেখে আমার চোখে বাঙ্গালীর জাতীয় কবি নজরুলের সৈনিক জীবনের ছবিটা ভেসে উঠল। অনেকটা সেরকমই লাগছে দেখতে। সালাম দিয়ে জিঞ্জেস করলাম, ভাই কেমন আছেন। মনে হল অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধার ন্যায় তিনিও তাড়াশের কৃতি নক্ষত্র, গর্ব।

অবশ্য এর আগেই অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে তাকেও তাড়াশে দেখেছি ও কথা হয়েছে। সোবহান ভাই আমাকে বললো, কোথায় যাচ্ছিস। চল আমার সাথে। তোদের গ্রামে একটু ঘুরে আসি। তুই আমার সাথে থাকবি। আমি তার বেশটা ছোট বলে তিনি আমাকে ‘তুই’ সম্বোধনে ডাকতেন বরাবরই।যাহোক ,তার এ প্রস্তাবে ভুলে গেলাম তাড়াশ যাবার কথা। তার আহবানে সাড়া দিয়ে ওর সাথে গোটা গ্রামে এক চক্কর ঘুরে এলাম। আসানবাড়ী গ্রামটি একটি পুকুরের তিন পাড়ে বসতি। খুব ছোট্ট্র গ্রাম। গ্রাম ঘুরে বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে কিছু লোকের সাথে কথা বললেন সোবাহান ভাই। তাদের কুশলাদি জানলেন। যুদ্ধকালীন সময়ে কেমন ছিল এ গ্রামের লোকজন তারও খোঁজ নিলেন।
ঘোরাঘুরি শেষে আমার সাথে এসে মফিজ উদ্দিন তালুকদার মামার বৈঠকখানায় বসলেন। এর মধ্যে বেশ কিছু লোক জমে গেল। তাকে এক নজর দেখার আগ্রহ অনেকের। কথা বললেন তাদের সাথেও। মূল প্রসঙ্গ ছিল এ গ্রাম থেকে কেউ শান্তি কমিটি, রাজাকার বা জামাত মুসলিমলীগে কাজ করতো কিনা। জবাবে সবাই বললো না- তেমন কেউ এ গ্রামে নেই। যদিও মুক্তিযুদ্ধের প্রবল সমর্থক এবং কর্মী থাকলেও এখান থেকে সরাসরি কেউ মুক্তি বাহিনীতেও যোগ দেয় নি। তখন তিনি আমার দিকে তাকিয়ে স্মিত হাসি দিলেন। সে হাসির অন্তর্নিহিত অর্থ অন্য কেউ তেমনটি না বুঝলেও আমি তা অনুধাবন করতে পেরেছিলাম। বিশেষ স্মরণযোগ্য, সোবাহান ভাই-ই সর্বপ্রথম সদ্য স্বাধীনতা যুদ্ধ ফেরত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আশানবাড়ী গ্রাম পরিদর্শন করেন। সেটা একটা স্মৃতিবহ ব্যাপার হয়ে আছে বটে। আজো তাড়াশের পথে প্রান্তরে তার সাথে আমার সাক্ষাৎ হলে সেই স্মৃতিময় দৃশ্য মনের কোনে ভেসে ওঠে।
( নিবন্ধটি ২৯ জুলাই ২০২০ সংখ্যা “সাপ্তাহিক চলনবিল বার্তা” পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত ও পরবর্তীতে লেখকের ২০২৩ সালে প্রকাশিত “মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিময় দিনগুলি” বইয়ে অন্তর্ভূক্ত । )

চলনবিলের মুচিদের জীবন জীবিকা
মোহাম্মদ জাকির হোসেন

মুচি সম্প্রদায় আদিবাসীদের মত ধর্মের দিক থেকে হিন্দুদের অনুসারী। বিগত আশির দশক থেকে দেখা গেছে- এ কম্যুনিটির পেশা হচ্ছে গ্রামগঞ্জে পরিত্যক্ত হাজামজা পুকুরে জন্মানো বেতের ঝাড় কেনা-। আর তা কেটে শুকিয়ে পারিবারিক কাজে ব্যবহৃত নানা ধরনের জিনিসপত্র তৈরি করা। এসব জিনিসপত্র বিক্রির লভ্যাংশ দিয়ে সংসার পরিচালনা করা। বেত দিয়ে ধামা,কাঠা,সের,পোয়া,পাতি,ইত্যাকার সাংসারিক কাজে ব্যবহার করার মত নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তৈরি করা ও বাজারজাত করা। তখনকার দিনে ধামা প্রায় ১০ কেজি ধান, চাল ও অন্যান্য শস্য পরিবহন করা – কাঠাও তেমনি ধামা বিক্রি হত ৮ ( ১০ টাকা কাঠা ৫ টাকা) ৭ টাকা সের রান্নার চাউল মাপার আসবাব। ২/৩ টাকা পাতি ছেলের মুড়ি খাওয়ার আসবাব এক টাকায় বিক্রি হতো। এর স্বল্প মূল্যে বিক্রির লভ্যাংশ দিয়েই তাদের সংসার চলত।
নাটোর সদর উপজেলার পার হালসা গ্রামের বাসিন্দা মদনচন্দ্রের সাথে কথা হল তাদের বর্তমান জীবন জীবিকা প্রসঙ্গে। মদনচন্দ্র সাপ্তাহিক চলনবিল বার্তাকে জানালেন, বর্তমানে আমাদের দিনকাল খুব অভাব অনটনের মধ্যেই অনাহারে চলছে।বড়াইগ্রাম উপজেলার মহেন্দ্র বলেন, আমার পরিবারের মন পেশা বেতের নানা ধরনের জিনিসপত্র তৈরি ও বিক্রি করা। এছাড়া ভাঙ্গা ধামা-কাটা মেরামত করা। এ কাজ করার জন্য বিভিন্ন মহল্লায় ঘুরে ঘুরে কাজ করা। এ কাজের মজুরিও কম।
গুরুদাসপুর উপজেলার নিশিকান্ত জানান, তার পরিবারের মূল পেশা বেতের জিনিসপত্র তৈরি করা। এছাড়া ছাগলের বাচ্চাকে খাসি ও এঁড়ে গরুকে বলদ বানানোর জন্য কাজ করা। বর্তমান যান্ত্রিক যুগে এখন আর আমাদের দিয়ে এ কাজ করানো হয় না। পশু ডাক্তার এখন মেশিনের সাহায্যে এ কাজ করে থাকেন। যদিও এটা অনেকটা ব্যয় বহুলও বটে। তদুপরি সাধারণ জনগণের তাদের উপর আস্থা রয়েছে।
বড়াইগ্রামের নৃপেন্দ্রনাথ বলেন, আমাদের মূল পেশা হচ্ছে মৃত গরু ছাগলের চামড়া খুলে নিয়ে বিক্রি করা। আগে মৃত গরু ছাগল নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হতো অথবা মাঠে পরিত্যাক্ত নর্দমায় ফেলে দিত। আমরা খবর পেলেই বা দৃষ্টি অগোচর হলেই তড়িঘড়ি করে তার চামড়া খুলে নিতাম। মজার ব্যাপার ছিল, এ চামড়া খোলার সময় অন্য মহল খবর পেলে সেখানে হাজির হত। দেখা যেত চামড়া খুলতে হয়তো দুই এক মিনিট সময় বাকি আছে এ মুহূর্তেই হাজির হওয়া মুচিকে সমান ভাগ দেওয়া লাগতো। এটা আমাদের নিয়ম নীতিমালা। তিনি দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে সাপ্তাহিক চলনবিল বার্তাকে জানান, বাবু এখন গরু ছাগল আর মরে না। নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া বা নর্দমায় ফেলে দেওয়া হয় না। আমরা চামড়া খুলে নেওয়া পওেন ঝাঁকে ঝাঁকে শিয়াল কুকুর সেখানে হাজির হত ক্ষুদা নিবারণের জন্য। দেশ স্বাধীন হবার পরেও শকুন দেখা যেত। এখন কালে ভদ্র চোখে পড়ে না। এখন শকুন, শিয়াল কুকুরের স্থান মানুষই দখল করে নিয়েছেন। মানুষ এখন মৃতপ্রায় গবাদী পশুকে জবাই করে গোস্ত খ চ্ছেই এছাড়া পায়ের ক্ষুর সিংও ভক্ষণ করছেন। শিয়াল, কুকুর, শকুনের আস্থা এখন মানুষের উদরে।
চলনবিলের বিভিন্ন উপজেলায় সরজমিনে ঘোরে দেখা গেছে, প্রায় সহ¯্রাধিক হতদরিদ্রদের বাপ দাদার পেশা লাটে উঠেছে। বর্তমান বৈজ্ঞানিক যুগে তাদের তৈরি বেতের সামগ্রী আর সমাজে চলে না। এখন প্লাস্টিক মেলামাাইনের েেচাখ ধাঁধানো আসবাবপত্র তাদের স্থান কেড়ে নিয়েছে। তারা এখন বাপ দাদার পেশা ছেড়ে রিক্সার ঢালানো, দিনমজুরের কাজ, এছাড়া অনেকে ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী ও সচেতন ব্যক্তিদের অভিমত হচ্ছে, দারিদ্র সম্প্রদায়ের দিকের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নেক দৃষ্টি দান একান্ত প্রয়োজন।

লেখক ঃ বিশিষ্ট প্রবীণ সাহিত্যিক ও সাংবাদিক। প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, চলনবিল প্রেস ক্লাব, গুরুদাসপুর, নাটোর।
তাড়াশে শিমুল গাছ যাচ্ছে হারিয়ে

তাড়াশ প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে সৌন্দর্য বিলানো শিমুল গাছ হারিয়ে যাচ্ছে। অথচ আগে বেশিরভাগ বাড়িতে এ গাছের দেখা মিলত। বিশেষ করে গ্রামের লোকজনের বাড়িতে।
এদিকে রাজশাহী সামাজিক বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রফিকুজ্জামান শাহ্ জানিয়েছেন, শিমুল গাছ কেবল সৌন্দর্যই বিলায় না, রয়েছে নানা উপকারিতা ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব। এ গাছের সব অংশের ভেষজগুণ রয়েছে। লেপ, তোষক ও বালিশ তৈরিতে শিমুল তুলার জুড়ি নেই। কিন্তু অন্যান্য গাছের মত এ গাছ কেউ শখ করে লাগায় না। আবার এখনো যে ২ থেকে ৪টি গাছ রয়ে গেছে কোন যতœ নেওয়া হয়না। ফলে সারাদেশে থেকে শিমুল গাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।
তাড়াশ পৌর এলাকার আসান বাড়ী গ্রামের শিহাব সরকার নামে একজন কৃষক বলেন, আমাদের বাড়িতে একটি বিশাল আকৃতির শিমুল গাছ ছিল। সেই গাছের তুলায় লেপ, তোষক, বালিশ ভরা হত। সারা বছর লেপ বাদে শিমুল তুলার বালিশ ও তোষক ব্যবহার করতাম বাড়ির সবাই। যা ছিল খুবই আরামদায়ক। এখন শিমুল তুলার পণ্য ব্যবহার করা আমাদের সাধ্যের মধ্যে নাই। শিমুল তুলার একটি বালিশের দাম ৭০০ টাকা। লেপ ভরতে গেলে ৩ হাজার টাকার বেশী গুণতে হয়। প্রায় ২০ বছর আগে বাড়ির গাছটি কেটে বড় ভুল করে ফেলেছি। এ গ্রামের ফারুক হোসেন নামে আরেকজন কৃষক বলেন, আমার বাড়িতেও একটি শিমুল গাছ ছিল। কিন্তু এ গাছের গুরুত্ব বুঝতে না পেরে ২ বছর আগে কেটে ফেলেছি। এ গ্রামে আর শিমুল গাছ নাই।
তাড়াশ বাজারের লেপ, তোষকের দোকানদার মোস্তফা ও বাশার আহাম্মেদ বলেন, প্রসিদ্ধ নওগাঁ হাট ও সলঙ্গা হাট ছাড়া শিমুল তুলা পাওয়া যায়না। তাও চাহিদার তুলনায় পরিমাণে খুব কম। এছাড়া এখনো যাদের বাড়িতে গাছ আছে তারা দুই থেকে তিন বছরের তুলা সংগ্রহ করে বাড়িতে রেখে দেন। এরপর দোকানে এনে বেচে দেয়। বাড়ির তুলা ২ থেকে ৩ কেজির বেশি পাওয়া যায়না। এই ২ জন লেপ, তোষকের ব্যবসায়ি আরো বলেন, ১৫ বছর আগে ১ কেজি শিমুল তুলার দাম ছিল ৩০ টাকা। ৫ বছরের ব্যবধানে ১৫০ টাকা হয়ে যায়। বর্তমান দাম ৫০০ টাকা কেজি।
সরেজমিনে তাড়াশ থেকে কুন্দইল যাওয়ার পথে দিঘী সগুনা গ্রামের মোশারফের বাড়ির সামনে সড়কের জায়গাতে দেখা মেলে ১টি মাঝারি আকৃতির শিমুল গাছের। দূর থেকেই নজর কেড়ে নিচ্ছে এ গাছটির সৌন্দর্য। গাছের এডাল থেকে ওডালে লাফিয়ে পড়ছে বুলবুলি ও শালিক পাখি শিমুল ফল খাওয়ার জন্য। এ সড়ক দিয়ে যাতায়াতের সময় অনেক পথচারি তাকিয়ে থাকেন গাছটির দিকে। দীঘি সগুনা গ্রামের বাসিন্দা সগুনা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি সদস্য সেন্টু তালুকদার বলেন, আমাদের গ্রামে আগে বেশ কয়েকটি শিমুল গাছ ছিল। এখন একটিও নেই। সড়কের জায়গার গাছ না হলে এ গাছটিও হয়ত কেটে ফেলা হত।
জানা গেছে, শিমুল গাছের প্রায় সব অংশই কাজে লাগে। এর ছাল, পাতা ও ফুল গবাদিপশুর প্রিয় খাদ্য। তাছাড়া শিমুলের মূল বিভিন্ন রোগের ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা যায়।এ প্রসঙ্গে উপজেলা বন কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, বিশেষ করে ইউক্যালিপটাস গাছের আগ্রাসনে শিমুল গাছ হারিয়ে যেতে থাকে। এ গাছ বাঁচিয়ে রাখতে গ্রামের লোকজনকে সচেতন হতে হবে। বাড়ির পরিত্যক্ত জায়গাতে শিমুল গাছ অযতেœ বেড়ে ওঠে। পাশাপাশি সরকারিভাবে সড়কের দু’পাশ ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ গাছ বপন করা যেতে পারে

শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন জরুরি

তামাক ব্যবহারজনিত মৃত্যু রোধে শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের কোন বিকল্প নেই। অগত (১৮ জানুয়ারি) রাজধানীর বিএমএ ভবনে অনুষ্ঠিত “তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণ: অগ্রগতি, বাধা ও করণীয়” শীর্ষক সাংবাদিক কর্মশালায় এ বিষয়ে আলোচনা করেন বক্তারা। ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে) এর সহায়তায় তামাকবিরোধী গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্স (আত্মা) এ কর্মশালার আয়োজন করে। কর্মশালায় প্রিন্ট, টেলিভিশন এবং অনলাইন মিডিয়ায় কর্মরত ২৮ জন সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন।
কর্মশালায় জানানো হয়, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া সংশোধনী বর্তমানে মন্ত্রিসভার অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। তবে কোম্পানিগুলো খসড়ায় অন্তর্ভুক্ত বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ধারা যেমন, ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বাতিল, ই-সিগারেট ও ভেপিং পণ্য নিষিদ্ধকরণ, বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্য বা প্যাকেট প্রদর্শন বন্ধ এবং খুচরা বা খোলা তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় নিষিদ্ধকরণ প্রভৃতি বাদ দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এক্ষেত্রে বিভ্রান্ত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তামাক নিয়ন্ত্রণে বৈশ্বিক সর্বোত্তম নীতিগুলো পর্যালোচনার ভিত্তিতেই স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ খসড়া সংশোধনীতে এসব প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করেছে। তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপমুক্ত থেকে খসড়া সংশোধনীটি দ্রæত পাশ করতে হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সদ্য প্রকাশিত (২০২৪) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তামাক কোম্পানির অব্যাহত হস্তক্ষেপ সত্তেও বিশ্বব্যাপী তামাকের ব্যবহার উল্লেখযোগ্যহারে কমেছে। বর্তমানে (২০২২) বিশ্বে প্রতি ৫ জনে ১ জন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন, যা পূর্বে (২০০০) ছিল ৩ জনে ১ জন। বাংলাদেশেও তামাকের ব্যবহার কমেছে। তবে এখনো ৩৫.৩ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ (৩ কোটি ৭৮ লক্ষ) তামাক ব্যবহার করেন এবং তামাকের কারণে প্রতিদিন গড়ে ৪৪২ জন মানুষ মারা যায়। এই ভয়াবহ ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।

তাড়াশে খালের মাটি ধসে কৃষকের ক্ষতি

গোলাম মোস্তফা ঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে বৌরো মৌসুমে খালের পানির সেচ সুবিধার জন্য সগুনা ইউনিয়নের বিন্নাবাড়ী আমতলা কাটা খাল ভায়া কুন্দইল সেতু খাল খনন করা হচ্ছে। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কার্যাদেশ অনুযায়ী এ খনন কাজের আরম্ভ ও শেষ করতে পারেনি। বিশেষ করে কার্যাদেশের ৫ মাস পর খনন কাজ শুরু করায় খালের পাড়ের মাটি ধসে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
সগুনা ইউনিয়নের কাটাবাড়ী গ্রামের কৃষক আইয়ূব আলী বলেন, খালের ধারে সারে তিন বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করা ছিল আমার। তার মধ্যে প্রায় ১২ কাঠা জমির ফসল পাড়ের মাটির নিচে পড়ে গেছে। কুন্দইল গ্রামের দক্ষিণ পাড়ার এরশাদ আলী বলেন, খালের পাড়ের ছোট-বড় অসংখ্য মাটির চাপ জমির মধ্যে ধসে পড়েছে। আমি জমির মধ্যে থেকে মাটির চাপগুলো তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছি। এ গ্রামের রসুল নামে আরেক জন কৃষক বলেন, আমি আবাদি জমি থেকে ধান গাছ তুলে সরিয়ে নিয়েছি। নয়ত সব মাটি চাপা পড়ে যেত। ভুক্তভোগী কৃষকরা অসহায়ত্ব প্রকাশ করে বলেন, দুই মাস আগে এ খালটি খনন করা হলে কৃষকের কোন ক্ষতি হতো না।
এদিকে উপজেলা প্রকৌশলী মো. ফজলুল হক বলেন, ২০২৩ সালের আগষ্ট মাসের ২০ তারিখে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আকাশ ট্রেডাসের সত্ত¡াধিকারী মো. আনোয়ার হোসেনকে বিন্নাবাড়ী আমতলা কাটা খাল ভায়া কুন্দইল সেতু খাল খননের কার্যাদেশ দেওয়া হয়। কার্যাদেশ দেন সিরাজগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে। এ কার্যাদেশ অনুযায়ী ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসের ১ তারিখে খনন কাজ আরম্ভ হওয়ার কথা ছিল ও ৩১ জানুয়ারি ২০২৪ সালে কাজটি শেষ হওয়া কথা ছিল। কিন্তু মৌখিকভাবে বার বার তাগাদা দেওয়ার পরও ঠিকাদার কাজ আরম্ভ করতে সময় ক্ষেপন করতে থাকেন। পরে তাকে ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসের ১৩ তারিখে একটি শতর্কীকরণ পত্র দেওয়া হয় সিরাজগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে। অনুরূপ আরো একটি পত্র ২০২৪ সালের ফেব্রæয়ারি মাসের ১১ তারিখে দেওয়া হয় উপজেলা প্রকৌশল দপ্তর থেকে।
উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে সারাদেশে পুকুর, খাল উন্নয়ন প্রকল্প (১ম সংশোধিত) (আইপিছিপি) প্রকল্পের আওতায় তাড়াশ উপজেলার সগুনা ইউনিয়নে ১. ক) বিন্নাবাড়ী আমতলা-কাটা খাল ভায়া কুন্দইল সেতু খাল খনন করা হচ্ছে। এ কাজের প্রাক্কলিত মূল্য ধরা হয়েছিল ১ কোটি, ৯৬ লাখ ২৫ হাজার ৩৩৬ টাকা। চুক্তি মূল্য ১ কোটি ৮৬ লাখ ৪৪ হাজার ৬৯ টাকা। এ খালে ১৪ টি রেফারেন্স বেড বøক ও ১৪ টি টেম্পোরারি বেঞ্চ মার্ক নির্মান করার কথা রয়েছে কাজের নথিতে। কাজটি ২৬‘শ মিটার।
সরেজমিনে গতকাল সোমবার দুপুরে দেখা গেছে, ভেক্যু মেশিন দিয়ে বিন্নাবাড়ী আমতলা কাটা খাল ভায়া কুন্দইল সেতু খাল খনন করা হচ্ছে। খালের মাটি অনেক মাটি ধসে ধসে পড়ছে বোরো ও ভট্টার জমির মধ্যে। ২৬ মিটার খনন কাজের প্রায় ১৮শ মিটার খনন করা হয়ে গেছে। এক কৃষক খালের মাটির দুশ্চিন্তায় মাথায় হাত দিয়ে বসে আছেন। অপর দুই জন কৃষক জমির মধ্যে ধেকে মাটির চাপ সরানোর চেষ্টা করছেন।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আকাশ ট্রেডাসের সত্ত¡াধিকারী মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ব্যস্ততার কারণে আমি বিন্নাবাড়ী আমতলা কাটা খাল ভায়া কুন্দইল সেতু খাল কার্যাদেশ মোতাবেক শুরু করতে পারিনি।এ প্রসঙ্গে সিরাজগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, খালের তলা গভীর করে খনন করা হচ্ছে পানি ধরে রাখার জন্য। ফলে মাটি বেশি পড়ছে খাল পাড়ে। অতিরিক্ত মাটি বেচে সরকারি খাতে টাকা জমা করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

চলনবিলের তাড়াশে পাখির বিচরণ বেড়েছে

বিশেষ প্রতিনিধি ঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা চলনবিল অধ্যূষিত। বর্ষাকালে এ বিলের বিপুল জলরাশি ও মিঠা পানির মাছ লোকজনের হৃদয় কেড়ে নেয়। বিলের পানি কমতে থাকলে ও শীতের শুরুতে দেখা মেলে বিভিন্ন প্রজাতির দেশি ও অতিথি পাখির। তারপর বিলের বুকের দিগন্ত মাঠ জুড়ে হলদে সরিষা ফুলের শোভায় চোখ ভরে যায়। বিশেষ করে বোরো মৌসুমে ধান রোপনের সময় ক্ষেতের পোকা মাকড় খাওয়ার জন্য সাদা বক পাখির ঝাঁক কৃষিশ্রমিকদের সাথে সাথে ঘুরে বেড়ায়। এ যেন প্রকৃতির মাঝে পাখপাখালি ও মানুষের এক সঙ্গে মিলেমিশে বসবাস!
এদিকে চলনবিল আগের মত পানিতে টইটুম্বুর হয়ে ওঠেনা। পানিতে তেমন মাছের দেখা মেলেনা। বিলে শামুকখোল, বালিহাঁস ও বক পাখিসহ নানা প্রজাতির পাখির দেখা মেলে। বস্তুত চলনবিলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ক্রমশই হারিয়ে যাচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, তাড়াশ পৌর এলাকার কোহিত গ্রামের মাঠে মাঠে বোরো ধান রোপন করা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক ও কৃষিশ্রমিকরা। কৃষক ক্ষেতে পানি সেচ দিচ্ছেন। কৃষিশ্রমিকরা ধান রোপন করছেন। একই ক্ষেতে সাদা বক পাখির ঝাঁক পোকা মাকড় ধরে ধরে খাচ্ছে ও উড়ে উড়ে বেড়াচ্ছে।
কহিত গ্রামের কৃষক জাহিদুল ইসলাম বলেন, এ বছর অসংখ্য বক পাখি দেখা যাচ্ছে চলনবিলের মাঠে মাঠে। পাখিগুলো ক্ষেতে ধান রোপন শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সাথেই থাকে। সদ্য রোপন করা ক্ষেতে পাখি পড়লে ধানের চারার কিছুটা ক্ষতি হয় বটে। কিন্তু হই-হই শব্দ করে কিংবা ঢিল ছুড়ে তাড়িয়ে দিতে চাইলেও যেতে চায়না। ধান লাগানো শেষ হলে পাখিরাও উড়ে যায় খাবারের সন্ধানে অন্য মাঠে।স্থানীয় স্বাধীন জীবন নামে একটি জীব বৈচিত্র প্রকৃতি সংরক্ষণ কাজের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক নাছিম বলেন, বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট পাখিদের অবাধ বিচরণের জন্য
সারাদেশে যথারীতি ব্যাপক জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। এখন লোকজন বেশ সচেতন। আগের তুলনায় পাখি শিকারীদের দৌড়াত্ম্য কমে এসেছে।
তাড়াশ ডিগ্রি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক মর্জিনা ইসলাম বলেন, চলনবিলের মৎস্য সম্পদ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য মহা বিপদজনক চায়না দুয়ারী জাল। বেশিরভাগ জালে মাছের চেয়ে অন্যান্য জলজ প্রাণীই আশঙ্কাজনকহারে মারা পড়ে। চলনবিলের উড়ন্ত পাখি বেঁচে গেলেও হুমকির মুখে জীববৈচিত্র্য।এ প্রসঙ্গে উপজেলা বন কর্মকর্তা মো. কামরুজামান বলেন, চলনবিলে পাখি শিকারীদের দৌড়াত্ম্য নেই। এ জন্য মানুষের কাছাকাছি নির্ভয়ে থাকছে পাখি।

নিষ্ঠুর প্রতিদান
আবদুর রাজ্জাক রাজু
সবকিছুর বিনিময় সুন্দর শান্তিপূর্ণ বা সন্মানজনক হয় না হতে পারে বিশাল মহৎ কাজ মানুষের-মানবতার জন্য বিনিময়ে পাথর কিংবা জুতা নিক্ষেপ জুটতে পারে।
কঠিন কষ্টকর যন্ত্রনাদায়ক হয় – অনেক বিনিময় শ্রম-মেধা-রক্ত-সাধনা দিয়ে নিবেদিত হলেও প্রতিদান আসতে পারে দারুন আঘাত দিয়ে প্রচন্ড বেদনাসহ – পাহাড়সম যাতনা,লাঞ্ছনা।
পৃথিবীতে নজির রয়েছে ইতিহাসে মানবিক হিতকর কাজের জন্য অনেক মনীষিরা পেয়েছেন জুলুম আর নিপীড়ণ এমনকি জীবন দিয়েও চরম মূল্য দিতে হয়েছে মানুষের জন্য ভাল কাজ করে, পরার্থে নিজেকে
উৎসর্গ করে, বিলিয়ে দিয়ে।
যেমনঃ মুহম্মদ (স.), যীশু, সক্রেটিস এমনি অসংখ্য মহামানব মানব জাতির সেবা উৎকর্ষ ও কল্যাণে যাঁরা জীবন উৎসর্গ করেছেন কতই যে অপরিসীম অত্যাচার,নির্যাতন এবং নিষ্ঠুরতা সইতে হয়েছে তাঁদের নির্মমভাবে।
এমনকি আপন পরিবার এবং ঔরষজাত সন্তানের আচরণও প্রায়শঃ বিব্রতকর ও চরম অকৃতজ্ঞতার পর্যায়ে পৌছে। তাই কোরআনে বলা হয়েছেঃ “কোন উত্তম কিছু করে প্রতিদানের প্রত্যাশা না করাই ভাল। কেননা, সব ভাল
কাজের পুরস্কার তো রয়েছে মহান আল্লাহর কাছে।”

শেষের পাতার ফিচার
তাড়াশে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মনোয়ারার আকুতি-মিনতি বক্স

গোলাম মোস্তফা, বিশেষ প্রতিনিধি ঃ আকাশে মেঘ ডাকলে আমার খুব ভয় করে। চোখে দেখিনা, ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে আমার কী হবে। গত শুক্রবার রাতে যতক্ষণ মেঘ ডেকেছে, আমি বসে বসে কেঁদেছি। বিশেষ করে রাতে যখন কেউ আশ পাশে থাকেনা। আমাকে কোথাও থাকতে দিন। আমি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি। যতদিন বাঁচব, নামাজে বসে দোয়া করব আপনাদের জন্য।
(১৭ এপ্রিল) রবিবার ইফতারের কিছু সময় আগে কেঁদে-কেঁেদ এসব কথা বলছিলেন, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ঠিকানাহীন এক অসহায় নারী। তার নাম মনোয়ারা বেগম (৫১)। জন্মেছিলেন সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার দেশীগ্রাম ইউনিয়নের সিলনদহ গ্রামে। তার বাবার নাম আব্দুল আজিজ। মায়ের নাম জামেলা খাতুন। বিয়ে হয়েছিল শাহজাদপুর উপজেলার তালগাছি গ্রামের জসিমদ্দীর সাথে। এখন তার বাবা-মা ও স্বামী কেউ বেঁচে নেই।
মনোয়ারা খাতুন বলেন, আমার ১৩ বছর বয়সে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীতা দেখা দেয়। চোখ ভালো থাকতে বাবা মারা যান। তারপর মায়ের সঙ্গে তাড়াশ শহরে চলে আসি ও ভিক্ষা করে খেতে শুরু করি। এরই মধ্যে আমার বিয়ে হয়ে যায়। বিয়ের পর মা মারা গেলে স্বামীর সঙ্গে দেশীগ্রাম গুচ্চ গ্রামে থেকেছি বেশ কয়েক বছর। তারপর স্বামী মারা গেলে পাশের সলঙ্গা থানার আমশরা গ্রামের মামাত ভাই দুলাল মিস্ত্রীর বাড়িতে যাই। কিন্তু সেখানে বেশী দিন রাখেন নাই আমাকে। এখন আমি বাসস্ট্যান্ড এলাকার একটি বন্ধ দোকানের বারান্দায় থাকছি। এর পরের গন্তব্য জানা নেই। আমাকে একটি নির্দিষ্ট স্থানে থাকার জায়গা করে দেন। আমি সারা জীবন দোয়া করব।
বাসস্ট্যান্ড এলাকার স্থানীয় দোকানদার মজনু পারভেজ বলেন, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মনোয়ারা খাতুন ১০ দিন যাবৎ আমার দোকানের সাথের মহসীনের বন্ধ দোকানের বারান্দায় রয়েছেন। আমরা সবাই মিলে তাকে মসারি, তোষক ও লেপ কিনে দিয়েছি। এখানকার মা হোটেল থেকে তাকে খাবার দেওয়া হচ্ছে। পায়খানা-প্রসাবের প্রয়োজন পড়লে উপজেলা মসজিদের পায়খানাতে নিয়ে যাচ্ছেন কেউ সঙ্গে করে। কিন্তু রাতে তো কেউ থাকিনা। তখন তার খুব কষ্ট হয় এভাবে এখানে থাকতে। দোকানটি বন্ধ রয়েছে জন্য সে না হয় এখন বারান্দায় থাকছেন। কিন্তু দোকান খুললে তখন কোথায় যাবেন। তাছাড়া ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে কি করবেন। দ্রæততম সময়ের মধ্যে তার একটি থাকার জায়গা করে দেওয়া প্রয়োজন।এ প্রসঙ্গে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা এ কে এম মনিরুজ্জামান বলেন, ইউএনও স্যার ও এসিল্যান্ড সারের সঙ্গে কথা বলে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মনোয়ারা বেগমের জন্য কিছু করার চেষ্টা করা হবে।

গুরুদাসপুরে পিতাকে বাঁচাতে ছেলের লিভার দান 

গুরুদাসপুর প্রতিনিধি ঃ নাটোরের গুরুদাসপুরে ছেলের দেওয়া লিভারে প্রাণ ফিরে পেলেন লিভার সিরোসিস রোগে আক্রান্ত বাবা মো. বেলাল হোসেন। তিনি উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের এবং শ্রীপুর-চরপিপলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তিনি প্রায় আড়াই বছর ধরে লিভারের ওই জটিল রোগে ভুগছিলেন। এ রোগ থেকে পরিত্রাণ পেতে লিভার প্রতিস্থাপন করার পরামর্শ দিয়েছিলেন ভারতের চেন্নাইয়ের চিকিৎসকরা। লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য দাতা খুঁজে পাওয়া কঠিন ও কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাড়ায়। বেলাল হোসেনের এই দুঃসময়ে ঢাল হয়ে দাড়ায় তার ছেলে জাকির হাসান। নিজের জীবনের ঝুকি নিয়ে বাবাকে প্রাণে বাঁচানোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি। জাকির রুয়েট থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে ওয়ালটনে উচ্চ বেতনে চাকরি করেন। সামনে তার আরো উজ্জ্বল ভবিষ্যত। কিন্তিু সব আশা আকাংখা পিছনে ফেলে বাবার জীবন রক্ষায় নিজের জীবনের দুস্প্রাপ্য অঙ্গ লিভারের উল্যেখযোগ্য অংশ বাবাকে দেন।
সম্প্রতি ভারতের চেন্নাইয়ের একটি হাসপাতালে বাবা ও ছেলের সফলভাবে অপারেশন সম্পন্ন হয়। তারা এখন ঝুঁকিমুক্ত। পরিবারের জন্য বাবারা সমসময়ই সুপার হিরো। কিন্তু সন্তানরাও পরিবার ও সমাজের কাছে কখনো কখনো হিরো হয়ে ওঠে। তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ জাকির হাসান। এ বিষয়টি নিশ্চিত করে স্থানীয় খুবজীপুর ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম দোলন বলেন- হাসান প্রমাণ করলেন সদিচ্ছা ও ভালোবাসা থাকলে জন্মদাতা পিতার জন্য ছেলেরা অনেক কিছু করতে পারা যায়। সমাজে পিতার জন্য জাকির হাসানের এই অবদান সত্যিই বিরল।

সিংড়ায় চলনবিলে সরকারী খাল দখলমুক্ত

সিংড়া প্রতিনিধি ঃ ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিপ্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপির পুর্ব ঘোষিত “জাল যার জলা তার” শ্লোগান বাস্তবায়নে নাটোরের সিংড়ার চলনবিলের তিশিখালী মাজার সংলগ্ন সরকারী খাল স্থানীয় প্রভাবশালীদের কাছ থেকে দখলমুক্ত হওয়ায় মাছ ধরলো হিজলী,সাতপুকুর,ডাহিয়া সহ প্রায় ১০ গ্রামের কয়েক শত মানুষ। গত রবিবার (১৭ মার্চ) ও সোমবার (১৮ মার্চ) টানা দুইদিন ধরে মাছ ধরার উৎসবে নেমে উল্লাস প্রকাশ করেন দিনমজুর, মৎস্যজীবি ও খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ।
এর আগে গত রবিবার (১৭ মার্চ) বেলা ১১ টায় স্থানীয় প্রভাবশালীদের দেওয়া বাঁধ অপসারন করে খাল অবমুক্ত করে সর্বসাধারণের মাছ ধরার জন্য উন্মুক্ত করেন উপজেলা প্রশাসন। খাল দখলমুক্ত করতে নেতৃত্ব দেন, সিংড়া উপজেরা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা শাহাদত হোসেন ও বিএডিসি সিংড়া জোনের সহকারী প্রকৌশলী মানিক রতন। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আল আমিন।
গত সোমবার (১৮ মার্চ) দুপুরে তিশিখালীর মাজার সংলগ্ন মরাবান গঙানদীর ওই খালে গিয়ে দেখা যায় কয়েক হাজার সাধারণ মানুষ মাছ ধরার উৎসবে মেতেছে। কেউ ঝাঁকি জাল, কেউ চাক, পলো আবার কেউ টানা জাল দিয়ে মাছ ধরছেন। উন্মুক্ত খালে বোয়াল, শোল, রুই, মাগুর সহ দেশী প্রজাতির মাছ ধরতে পেরে খুশি হয়েছেন মাছ শিকারে আসা মৎস্যজিবী, দিন মুজুর ও সাধারন মানুষ। হিজলী ও সাতপুকুরিয়া গ্রাম থেকে আসা কয়েকজন মাছ শিকারী বলেন, সরকারী খাল দখলমুক্ত করে সবার জন্য উন্মুক্ত করায় উপজেলা প্রশাসন ও আমাদের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপির কাছে আমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমরা সবাই খুশি। এটা যেন সারা বছরই উন্মুক্ত থাকে এটাই আমাদের দাবি।

তাড়াশ প্রাণিসম্পদ দপ্তরে চিকিৎসক নেই দীর্ঘদিন

স্টাফ রিপোর্টার ঃসিরাজগঞ্জের তাড়াশে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরে চিকিৎসক নেই দুই বছরের অধিক সময় ধরে। বিশেষ করে করোনা মহামারির পর গবাদিপশুর জরুরি ওষুধ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এ কারণে সরকারিভাবে ভেটেরিনারি চিকিৎসা ব্যবস্থা একেবারে বন্ধের উপক্রম হয়ে পড়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন প্রাণিসম্পদ দপ্তরের এফএআই ওরাফেল আহাম্মেদ। এদিকে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা না পেয়ে ভেটেরিনারি ফার্মেসী থেকে অসুস্থ গরু-ছাগলের চিকিৎসা নিচ্ছেন গেরস্তরা। এতে গুণতে হচ্ছে বাড়তি টাকা। তারপরও মিলছেনা সঠিক চিকিৎসাসেবা। অপরদিকে গরুর ক্ষুরা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিচ্ছে। এ যেন মরার উপর খাড়ার ঘা।
তাড়াশ পৌর এলাকার কাউরাইল গ্রামের রেজাউল করিম ও তার স্ত্রী রিনা খাতুন বলেন, গরুর অসুস্থ বাছুর অটোভ্যানে নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলাম। কিন্তু ডাক্তার ও ওষুধ না পেয়ে ভেটেরিনারি ফার্মের্সীর দোকানদানকে দিয়ে বাছুরের চিকিৎসা ও ওষুধ নিতে হল বাধ্য হয়ে। পৌর এলাকার সোনাপাতিল গ্রামের আনছের আলী নামে একজন গেরস্ত বলেন, আমার গরুর ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত। সকালে হাসপাতালে এসেছি। এখন বেলা ১১ টার মত বাজে। কিন্তু কোন চিকিৎসা পাচ্ছিনা।
গত সোমবার সকালে দেখা গেছে, একটি অসুস্থ ছাগলের চিকিসাসেবা দিচ্ছেন ওসমান গনি নামে একজন ব্যক্তি। সে যুব উন্নয়ন থেকে গবাদিপশুর চিকিৎসার প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন মাত্র।
তাড়াশ প্রাণিসম্পদ দপ্তরের এফএআই ওরাফেল আহাম্মেদ বলেন, চিকিৎসক হিসাবে বিবেচনা করলে এখন একজনও নেই। এমন পরিস্থিতির মধ্যে রায়গঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. অলিউল ইসলামকে তাড়াশ উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের অতিরিক্ত দায়িত্বে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি কোন কোন সপ্তাহে অফিস করেননা। রায়গঞ্জেই থেকে যান। বিশেষ করে, করোনা মহামারির পর থেকে গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির রোগব্যাধির চিকিৎসায় অত্যাবশ্যকীয় বেশ কয়েক ধরনের ওষুধ দেওয়া হচ্ছেনা প্রাণিসম্পদ দপ্তরে। ভুক্তভোগী গেহরস্ত ও খামারিদের শান্তনা দেওয়ার মত যৎসামান্য কৃমিনাশক ওষুধ রয়েছে। কিন্তু গবাদিপশুর আঠালী পোকা মারা ওষুধ, এছাড়া বিভিন্ন প্রকার রোগবালাইয়ের সিরাপসহ অন্যান্য কোন ওষুধ নেই । চলতি অর্থ বছরে খুবই অল্প ওষুধ দেওয়া হয়েছে । এত কম ওষুধে চিকিৎসাসেবা চালিয়ে নেওয়া সম্ভব না।প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ দপ্তরের ভেটেরিনারি সার্জন, ইউএলএ, ভিএফএ, এফ.এ.(এ.আই), অফিস সহকারী, পিয়ন, ড্রেসার ও অফিস সহায়কের পদের আরও নয়জন কর্মকর্তা-কর্মচারির পদ শূন্য রয়ে গেছে।রায়গঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. অলিউল ইসলাম বলেন, সপ্তাহে একদিন অল্প সময়ের জন্য হলেও তিনি তাড়াশে অফিস করেন। সিরাজগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পাদ কর্মকর্তা ডা. মো. ওমর ফারুক বলেন, সচিব স্যার এসেছিলেন সিরাজগঞ্জে। আমি তার কাছে তাড়াশ প্রাণিসম্পদ দপ্তরের নানাবিধ সমস্যার কথা তুলে ধরেছি। তিনি সমাধানের আশ^াস দিয়ে গেছেন।

তাড়াশের বেল যাচ্ছে ঢাকা

স্টাফ রিপোর্টার ঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে মহিষলুটি বাজারের আড়ত থেকে ঢাকা শহরে যাচ্ছে পুষ্টি গুণে ঠাসা বেল ফল। বিশেষ করে রমজানের শুরুতে এ ফলের চাহিদা বেড়েছে। মহিষলুটি আড়তের দুই ট্রাক বেল কিনছেন ঢাকা শহরের ব্যবসায়িরা প্রতিদিন।
পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়ালের বিড়াইনগর ইউনিয়নের বিড়াইনগর গ্রামের আলামিন হোসেন নামে একজন ব্যক্তি তাড়াশে বেলের আড়ত গড়ে তুলে ব্যবসা করছেন দেড় যুগেরও অধিক সময় ধরে।সরেজমিনে দেখা গেছে, মহিষলুটি বেলের আড়তে কাজ করছেন ব্যবসায়ি আলামিনসহ আরো ১৬ জন শ্রমিক। আড়তের একস্থানে বেলগুলো জড়ো করে রাখা হয়েছে। ব্রাস দিয়ে মেজে ও পানি দিয়ে ধুয়ে ৬ জন বেল পরিস্কার করছেন। অন্যরা সেগুলো পাটের বস্তায় ভরে মাপ জোখ করছেন। তারপর যথারীতি ঢাকার ব্যবসায়িদের কাছে বেচে দিচ্ছেন। পরে তারা খুচরা বেচার জন্য নিয়ে যাচ্ছেন ঢাকা শহরে।
ব্যবসায়ি আলামিন হোসেন বলেন, সিরাজগঞ্জসহ আশ পাশের নাটোর, পাবনা ও বগুড়া জেলার বেল আসে আমার আড়তে। এ চার জেলায় অন্য কোথাও বেলের আড়ত নাই। আগে এক ট্রাক বেল যেত প্রতিদিন ঢাকা শহরে। কিন্তু রোজার শুরুতে চাহিদা বাড়ছে। এখন দেড় থেকে দুই ট্রাক অবদি বেল কিনছেন ঢাকার ব্যবসায়িরা। প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে আড়তে কেনাবেচা। পাবনা জেলার সাথিয়া উপজেলার করমজা ইউনিয়নের পার করমজা গ্রামের খাদেম আলী নামে একজন ব্যক্তি বলেন, আমার বাড়িতে ১টি বেলের গাছ রয়েছে। ৯০ কেজি বেল তাড়াশের আড়তে বেচে দিলাম দুই হাজার ৮০০ টাকায়।
নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলার ডাহিয়া উইনিয়নের বর গ্রামের কোরবান হোসেন বলেন, আমার বাড়ির পরিত্যক্ত আঙিনায় দুইটি বেলের গাছ রয়েছে। নিজেদের খাওয়ার পরও ১০ থেকে ১২ হাজার টাকার বেল বেচা যায় প্রতিবছর।
ব্যবসায়ি আলামিন হোসেন আরো বলেন, আমি মূলত পাইকারি ব্যবসা করি। ফেব্রæয়ারি মাস থেকে বেলের কেনাবেচা শুরু হয়েছে। চলবে এপ্রিলের শেষ পর্যন্ত। দিন যত যাবে বেলের দামও বাড়তে থাকবে। এদিকে আশরাফ হোসেন ও জামিরুল ইসলাম নামে ঢাকা শহরের দুই জন ব্যবসায়ি বলেন, তাড়াশের মহিষলুটি আড়তের বেল কিনে ব্যবসা করছি প্রায় আট বছর যাবৎ। এখন এ ব্যবসাতেই আমাদের জীবন জীবিকা নির্ভর।জানা গেছে, বেলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও পটাশিয়াম রয়েছে।এছাড়া বিভিন্ন খনিজ ও ফাইবারসহ পুষ্টি পদার্থ থাকায় এ ফল হজমের জন্য ভালো।
এ প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, পুষ্টি গুণে ঠাসা বেল ফলের এক গøাস সরবত গরমে নিমেষেই প্রাণ জুড়িয়ে দেয়। তাছাড়া কাঁচা বেল চাকা চাকা করে কেটে রোদে শুকিয়ে বেলশুট তৈরি করে ঘরে রেখে পানিতে ভিজিয়ে খাওয়া যায়। মরিমাণ মত সন্ধ্যায় বেলশুট পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে খেলে পেটের সমস্যার ক্ষেত্রে খুব কার্যকর।

তাড়াশে জমজমাট বউ মেলা

বিশেষ প্রতিনিধি ঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে নওগাঁ ইউনিয়নের নওগাঁয় হযরত শাহ্ শরীফ জিন্দানী (রহঃ) মাজার শরীফ চত্বরে বউ মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। চৈত্র মাসের প্রথম বৃহস্পতি ও শুক্রবার দুই দিন ব্যাপী ওরস শরীফ শেষে (১৬ মার্চ) শনিবার এ মেলার আয়োজন করেন মাজার কমেটি।
বিশেষ করে নারীরা যাতে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী ও গৃহস্থালী সরঞ্জামাদী অবাধে কেনাকাটা করতে পারেন সেজন্য এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে বহু যুগ ধরে। সরেজমিনে শনিবার দুপুরে বউ মেলায় হাজারো মানুষের উপস্থিতি চোখে পড়ে। অনেককে কেনাকেটা শেষে বাড়ি ফিরে যেতে দেখা গেছে রাস্তায়। এ মেলায় যেন গৃহবধূদের ঢল নেমেছে। তাছাড়া শিশু, কিশোরী, যুবতী থেকে শুরু করে উৎসুক জনতার কোন কমতি ছিলনা। বিশেষ করে শিশু-কিশোরীদের হাতে হাতে দেখা মেলে বিভিন্ন ধরনের খেলনা। নওগাঁ ইউনিয়নের মাটিয়া মালিপাড়া গ্রামের গৃহবধূ দিপালী রানী বলেন, এ মেলাতে প্রতিবছর আসেন। এখন হাটে-বাজারে বাঁশ ও বেতের গৃহস্থালী জিনিসপত্র তেমন পাওয়া যায়না। কিন্তু নওগাঁর বউ মেলায় সবই পাওয়া যায়। তাছাড়া দামেও একটু কমে পাওয়া যায় মেলা থেকে জিনিসপত্র কিনলে। মেলা থেকে বেতের ঢাকি ও পাতি কিনেছেন তিনি। নওগাঁ গ্রামের গৃহবধূ রোজিনা খাতুন বলেন, আমার দুই মেয়েকে নিয়ে মেলায় এসেছি। মেলায় ঘুরতে বেশ ভালো লাগছে। ছোট মেয়ের জন্য মাথার রানী টুপি ও বড় মেয়েকে চুড়ি-মালা কিনে দিয়েছি। মেয়েরা খুব খুশি মেলায় আসতে পেরে।
এদিকে আজগর আলী নামে একজন বাঁশ-বেতের তৈজসপত্রের দোকানদার বলেন, এবারের বউ মেলাতে নারীদের উপস্থিতি বেশী। মূলত তারা বাড়ির নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে মেলায় এসেছেন। আমাদের বেচাকেনাও ভালো হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে নওগাঁ মাজার কমিটির মোতয়াল্লি আব্দুল হাই সরকার দৈনিক ইত্তেফাককে বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় ওরস শরীফে লোকজন কম এসেছেন। কিন্তু বউ মেলা জমজমাট হয়ে উঠেছে। গৃহবধূরা স্বাধীনভাবে তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কিনছেন।

উল্লাপাড়ায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর গণসংযোগ

জি এম স্বপ্না, সলঙ্গা থেকেঃ আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে প্রার্থীরা জনগনের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে শুরু করেছেন। সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলা পরিষদ (সলঙ্গার একাংশ ) নির্বাচনে মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে যে কয়জন প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছ,তার মধ্যে আওয়ামী পরিবারের সন্তান,শিক্ষানুরাগী,তারুণ্যের অহঙ্কার সবিতা প্লাবনী সুইটি’র নাম জোরে সোরে উচ্চারিত হচ্ছে। ভোটারদের সাথে সুসম্পর্ক তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শান্তি ও উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে সহযোগী নেতাকর্মীদের নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন, গ্রাম ও ওয়ার্ড পর্যায়ে গণসংযোগ, মতবিনিময়,উঠান বৈঠক অব্যাহত রেখেছেন।
সেখানে তিনি জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা এবং বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরছেন।ইতিমধ্যেই তিনি নিজেকে উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়ে জনগনের দ্বারে দ্বারে গিয়ে দোয়া,আশীর্বাদ ও ভোট চাচ্ছেন। ছাত্র জীবন থেকেই যিনি ছিলেন নিরহঙ্কার, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারী,সৎ ও ত্যাগী একজন নারী। তৎকালিন সময়ে তিনি ছিলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজ শাখার সংগ্রামী ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক।
ইতিমধ্যেই তিনি পোস্টার,লিফলেট, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শুভেচ্ছা বিনিময় এবং সামাজিক,সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান,সভা সমিতিতে উপস্থিত হয়ে বিভিন্ন প্রতিশ্রæতিসহ ভোটারদের মন জয়ের চেষ্টা করছেন। ভোটাররা বলছেন,বিগত দিনগুলোতে অনেক জনপ্রতিনিধি এসেছেন। তরুণ প্রজন্মের কাছে সবিতা প্লাবনী সুইটি’র ব্যাপক সাড়া পেয়েছেন। তার জনসংযোগে ভোটারদের মনে ইতিবাচক সাড়া ও ভালোবাসার আবেগ সৃষ্টি হয়েছে।তাই তার আচরনে মুগ্ধ উল্লাপাড়াবাসী। আমরা তরুণ,সুশিক্ষিত ও মেধাবী নারী নেতৃত্বের অধিকারী সবিতা প্লাবনী সুইটি’কে এবার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দেখতে চাই।
প্রার্থী সুইটি বলেন, উপজেলা মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে আমি একজন প্রার্থী। আমি আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসা চাই। নির্বাচিত হলে আপনাদের সাথে নিয়ে উল্লাপাড়াকে স্মাট উল্লাপাড়া হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।বৃহত্তর উল্লাপাড়ার পশ্চিমাঞ্চলের একজন নারী হিসেবে আমাকে মূল্যায়ন করবেন বলে আমি আশাবাদী।

উল্লাপাড়ায় দলিল লেখক সমিতির নামে সিন্ডিকেট বন্ধ

উল্লাপাড়া প্রতিনিধি ঃ সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় সাব-রেজিস্ট্রার অফিস থেকে দলিল লেখক সমিতির নামে টাকা আদায় ও সমবায় কার্যক্রম বন্ধ করেছেন সিরাজগঞ্জ-৪ (উল্লাপাড়া) আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম।
গত সোমবার (১১ মার্চ) অফিস চলাকালীন তিনি সাব রেজিস্ট্রার অফিস পরিদর্শন করেন এবং অফিস চত্বরে দলিল লেখক সমিতির সভাপতিসহ সদস্যদের উপস্থিতিতে সমিতির নামে টাকা আদায় ও সমবায় কার্যক্রম করার সিন্ডিকেট বন্ধ ঘোষণা করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানজিদা সুলতানা, সাব রেজিস্ট্রার ফারহানা আজিজ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফয়সাল কাদের রুমি, সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফাসহ অন্যরা।

রায়গঞ্জে গাছ কাটা নিয়ে রশি টানাটানি

রায়গঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলা চত্বরে ২য় দফায় কম বয়সি ছায়া দানকারী রকমারি ফলজ গাছ বিক্রির হটকারী সিদ্ধান্ত। পরিবেশবাদী সুশীল সমাজের বিপত্তির মুখে ঝুলে আছে গাছ কাটার সিদ্ধান্তটি।জানা যায়, উপজেলা চত্বরে বেশ কিছু পুরাতন ও মরা ঢুড়া গাছ কর্তনের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়। টেন্ডারের মাধ্যমে গাছগুলি ৭ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেওয়া হয়। উপজেলা চত্বরের চার পাশে ছায়া দানকারী এখনো অনেক ফলজ, বনজ ও ঔষধি গাছ রয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ গাছ রয়েছে কম বয়সি।
উপজেলা গাছ বিক্রয় কমিটির ২য় দফায় উপজেলা চত্বরে ছায়া দানকারী আমের মুকুলে ভরে ওঠা কম বয়সী গাছগুলি বিক্রয়ের জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের সামনে কম বয়সী চারা গাছগুলিতে রঙ্গে বেরঙের নয়নাভিরাম আমের মুকুল এখন গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে।
গাছগুলির গোড়ালি গুলোতে উপজেলায় বিভিন্ন অফিসে সেবা নিতে আসা আগত জনসাধারণের বসার জন্য গাছের গোড়ালি গুলো ইট সিমের দ্বারা বেধে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই কম বয়সী গাছগুলি কর্তনের পিছনে কোন যুক্তি নেই। এমনটা মনে করছেন এলাকার পরিবেশবাদী সুশীল সমাজ ও উপজেলা বাসী।এবিষয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিরাজগঞ্জ জেলা কমিটির আহ্বায়ক সিনিয়র সাংবাদিক দীপক কুমার কর বলেন, গাছ আমাদের বিনামূল্য অক্সিজেন দেয় ছায়া দেয় ফলজ গাছগুলো আমাদের পুষ্টির যোগান দেয় কাজেই কম বয়সী ফলজ গাছ গুলো বিক্রিয় সিদ্ধান্তের প্রতি তীব্র নিন্দা জানান।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ হাসান খানের সাথে একাধিক বার মোবাইল ফোন যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট ইমরুল হোসেন ইমন তালুকদার জানান, উপজেলা ক্যাম্পাস শোভা বর্ধন করা জন্য ২য় দফায় গাছগুলো কর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং গাছগুলো নাম্বার করনের কাজ শেষ হয়েছে।

সলঙ্গায় চোরাচুরির হিড়িক
সলঙ্গা প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলাসহ তিনটি উপজেলায় অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে চোরের উপদ্রব। রাত নামলেই এখন উপজেলাগুলিতে কোথাও না কোথাও ঘটছে একাধিক চুরির ঘটনা। খোয়া যাচ্ছে সেচ পাম্প, বাসাবাড়ির মালামাল আর কৃষকের গবাদিপশু। চোরেরা হানা দিচ্ছে ছোটখাটো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও। এমনকি রেহাই পাচ্ছে না মসজিদ, মন্দির। চোরের এমন উপদ্রবে আতঙ্ক বিরাজ করছে এই এলাকার জনমনে। হয়রানি এড়াতে অধিকাংশ ঘটনায় মামলা হয় না থানায়।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার রাতে উপজেলার সলঙ্গা থানার আমশড়া গ্রামের সিরাজগঞ্জ জেলার এশিয়ান টিভির স্টাফ রিপোর্টার জিন্নাহ ফারুকের ছোট ভাই জাহাঙ্গীর আলমের প্রায় ৯ হাজার টাকা মূল্যের দুইটি বকনী বাছুরসহ খরের পালার অর্ধেক খর চুরি হয়েছে। একই রাতে একই থানার ইছিদাহ গ্রামের প্রায় এক লক্ষ টাকার পরিমাণে একটি ষাড় গরু চুরি হয়। এর কয়েক দিন আগে সোমবার রাতে সোলাইমান হোসেনের বাড়িতে সিঁধ কেটে দশ হাজার টাকা নিয়ে গেছে। তাড়াশ উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়নের ঝুরঝুরি গ্রামের মতিন আকন্দের সেচ পানির মোটর খুলে নিয়ে যায় চোরেরা। একই রাতে ওই উপজেলায় আলীর গোয়ালঘর থেকে চুরি হয় একটি গরু। এছাড়া উল্লাপাড়া উপজেলার ১নং রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নে চৈত্রহাটি মন্দিরে একাধিকবার চুরির ঘটনা ঘটেছে।স্থানীয়রা বলছেন, মাদকের অবাধ বিস্তারের কারণে দিনদিন উঠতি বয়সী তরুণরা আসক্ত হচ্ছে। নেশার টাকার জোগান দিতেই জড়িয়ে পড়ছে চুরিসহ নানা অপরাধ কর্মকান্ডে।সলঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, চুরি-ডাকাতি রোধে পুলিশ জোরালোভাবে কাজ করে চলছে।

উল্লাপাড়ায় কৃষক সমাবেশ

ডাঃ আমজাদ হোসেন মিলন ঃ সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় আজ সোমবার বিকেলে গ্রীন বাংলা এগ্রোভেট লিঃ এর আয়োজনে বোরো ধান আবাদকারী শতাধিক কৃষক নিয়ে সমাবেশ করা হয়েছে।সদর উল্লাপাড়া ইউনিয়নের গজারিয়া এলাকায় সবুজ ট্রেডার্সের মালিক জহুরুল ইসলামের উপস্থাপনায় কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. আকমাল হোসেন।
প্রধান আলোচক হয়ে বক্তব্য রাখেন গ্রীন বাংলা এগ্রোভেটের নর্থ জোনের ডেপুটি সেলস ম্যানেজার অনুপ কুমার রায়।
আরো বক্তব্য রাখেন, বগুড়া জোনের এরিয়া সেলস ম্যানেজার মোস্তফা কামাল , উল্লাপাড়ার মার্কেটিং অফিসির আঃ খালেক , ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন বকুল, সাংবাদিক সাহারুল হক সাচ্চু , উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা সরোয়ার হোসেন , উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু ইউসুফ , গোলাম মর্তুজা প্রমুখ।প্রধান আলোচক বোরো ধানের সবচেয়ে বেশী ক্ষতিকর মাজরা পোকা দমনে এবং অনান্য ফসলের পোকা দমনসহ নানা উপকারিতায় গ্রীন বাংলা এগ্রোভেটের কীটনাশকের ব্যবহার বিধি ও শতভাগ কার্যকারিতা তুলে ধরেন।
উল্লাপাড়ায় ভোক্তা অধিকার দিবসপালন

উল্লাপাড়া প্রতিনিধি ঃ সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ি, ভোক্তার স্বার্থে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করি’ ¯েøাগান নিয়ে বিশ্বভোক্তা অধিকার দিবস উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভা হয়েছে। গত শুক্রবার (১৫ মার্চ) উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে সকাল ১০টায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সানজিদা সুলতানার সভাপতিত্বে এই সভা হয়।
এতে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান (অস্থায়ী) মনিরুজ্জামান পান্না, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা, বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সস্পাদক জাহিদুজ্জামান কাকন প্রমুখ।

বেলকুচিতে জাতীয় শিশু দিবস পালন

শরদিন্দু মজুমদারঃ অগত ১৭মার্চ তারিখ সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে জেলা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষাব্যুরো ও পরিবর্তন সংস্থার আয়োজনে জাতীয় শিশু দিবস পালন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে ভাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নের আউট অব স্কুল চিলড্রেন এডুকেশন প্রোগ্রামের চন্দনগাতি শিখণ কেন্দ্রে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগীতা, ছড়া-কবিতা প্রতিযোগীতা, নাচ ও গানের এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বঙ্গবন্ধুু শেখ মুজিবর রহমান ছিলেন একজন অসামান্য নেতা তিনি ছিলেন একজন স্বপ্নদ্রষ্টা। শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর অনেক ভালোবাসা ছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান শিশুদের প্রতি অত্যন্ত ¯েœহশীল ছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন যে , শিশুরাই দেশের ভবিষ্যৎ। তিনি শিশুদের শিক্ষা ও উন্নয়নের জন্য অনেক পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। উক্ত অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুু শেখ মুজিবর রহমান সম্পর্কে আলোকপাত করেন উপজেলা প্রোগ্রাম ম্যানেজার শরদিন্দু মজুমদার। তিনি শিশুদের উদ্দেশ্যে বলেন, আজ বাংলাদেশে বিশেষ দিন। প্রতি বছর ১৭ মার্চ বাংলাদেশে দিনটি বিশেষভাবে পালিত হয়।এসময় উপস্থিত ছিলেন উক্ত প্রোগ্রামের উপজেলা প্রোগ্রাম ম্যানেজার শরদিন্দু মজুমদার, প্রোগ্রাম সুপারভাইজার মো: নূরুল ইসলাম, মো: মনিরুল ইসলাম, স্থানীয় সমাজ সেবক মো: আরমান আলী, অন্যান্য গন্যমান্য ব্যক্তি এবং শিক্ষণ কেন্দ্রর শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীবৃন্দ।

উল্লাপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী ও শিশু দিবস উদযাপন

ডাঃ আমজাদ হোসেন ঃ সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী এবং জাতীয় শিশু দিবস ২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে গত রোববার (১৭ মার্চ) সকালে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, র‌্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানজিদা সুলতানা।
এসব আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান (অস্থায়ী) মনিরুজ্জামান পান্না, সহকারী পুলিশ সুপার (উল্লাপাড়া সার্কেল) অমৃত সূত্রধর, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রীবলী ইসলাম কবিতা, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াসমিন, মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আসিফ মোহাম্মদ সিদ্দীকুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফয়সাল কাদির রুমি, সাধারণ সস্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা প্রমুখ

 

 

 

 

 

 

 

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD