বড়দিন: মিলন ও উৎসবের দিন
ফাদার উত্তম রোজারিও
প্রতি বছর ২৫ শে ডিসেম্বর সারা পৃথিবীতে খ্রীষ্টানুসারীগণ যীশু খ্রীষ্টের জন্মোৎসব মহাসমারোহে উদ্যাপন করে থাকেন। এ জগতে শান্তি ও ন্যায্যতার বাণী ঘোষণা করতে মহামানব যীশু খ্রীষ্ট আজ থেকে দু হাজার বছর আগে এ পৃথিবীতে আসেন। এ জগতে এসে তিনি মানুষের কাছে ভালবাসা, দয়া, ক্ষমা, শান্তি ও ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার কথা প্রচার করেন। তাঁর প্রচারিত বাণীতে বহু মানুষ বিশ্বাসী হয়ে তাঁর অনুসারী হয়ে উঠে। অন্যদিকে সেই সময়কার বেশ কয়েকজন সমাজনেতা ও ধর্মনেতা তাঁর বিরোধিতা করেন এবং তাঁকে ক্রুশারোপন করে হত্যা করেন। মত্যুর পর তৃতীয় দিবসে তিনি পুনরুত্থান করেন। পুনরুত্থানের ৪০ দিন পরে তিনি মহাগৌরবে স্বর্গারোহন করেন। খ্রীষ্টবিশ্বাসীরা তাঁকে প্রভু, গুরু ও মুক্তিদাতা বলেই সম্বোধন করেন।
প্রভু যীশুর জন্মোৎসবের দিনটিকে বাংলায় বড়দিন বলা হয়। যদিও ঘন্টার হিসেবে ২৫ শে ডিসেম্বর দিনটি বেশি বড় নয় কিন্তু অর্থ ও তাৎপর্যের দিক থেকে এই দিনটি খ্রীষ্টানুসারীদের কাছে খুবই বড় একটি দিন। তারা বিশ্বাস করেন যে, এই দিনে স্বয়ং ঈশ্বর মানবরূপে এ পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করেন। মানবরূপে জন্মগ্রহণের মধ্য দিয়ে মানুষের প্রতি ঈশ্বর তাঁর ভালবাসা প্রকাশ করেন এবং এর ফলে মানবসত্তার সাথে ঐশসত্তার মিলন সাধিত হয়। তাই যীশু খ্রীষ্টের জন্ম বারতা সকলের কাছে মিলনের আহŸান জানায়। মানুষ যেন পরস্পর মিলে মিশে, শান্তিতে ও আনন্দে জীবনযাপন করে-এই আহŸানই যীশু খ্রীষ্ট সব মানুষের নিকট করে থাকেন। তিনি চান জগতের প্রতিটি মানুষ যেন জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকল প্রকার ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে একে অপরকে ভালবাসে এবং দয়া, ক্ষমা, সততা, বিশ্বস্ততা ও ন্যায্যতায় জীবন যাপন করে।
বড়দিন উৎসব হল আনন্দের মহোৎসব। সারা পৃথিবীতে এই দিনটিকে কেন্দ্র করে নানা রকম উৎসব ও অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বড়দিনের প্রায় ১ মাস আগে থেকেই শুরু হয় বড়দিন উৎসব পালনের প্রস্তুতি। বাড়ি-ঘর, দোকানপাট, অফিস-আদালত, বাজার-ঘাটসহ সর্বত্রই নানা রকম আলোক সজ্জা করা হয়। নতুন রঙে ও নতুন ঢঙে সাজানো হয় সবকিছু। নাচ-গান, কীর্তন, বিশেষ খাবার-দাবার, নতুন পোশাক-আশাক ইত্যাদির মাধ্যমে খ্রীষ্টানুসারীগণ এই দিনে তাদের হৃদয়ের আনন্দ প্রকাশ করে থকেন।
বাংলাদেশে আজ থেকে প্রায় ৫০০ বছর পূর্বে পর্তুগীজ মিশনারীগণের মাধ্যমে সর্বপ্রথম খ্রীষ্টবিশ্বাস প্রচারিত হয় এবং কিছু মানুষ খ্রীষ্টবিশ্বাসে দীক্ষিত হয়। বর্তমানে এদেশে খ্রীষ্টবিশ্বাসীদের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার মাত্র ০.৩% হলেও তারা ধর্মবিশ্বাসে অত্যন্ত বিশ্বস্ত। প্রতি বছর তারা পৃথিবীর অন্যান্য খ্রীষ্টানদের মতোই মহানন্দে বড়দিন উৎসব পালন করে থাকেন। এ দেশীয় কৃষ্টি ও সংস্কৃতি অনুসারে তারা নানা রকম উৎসব ও অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দিনটি উদ্যাপন করে থাকেন। নি¤েœ এ দেশীয় খ্রীষ্টানুসারীদের বড়দিন উদ্যাপনের নানা দিক বর্ণিত হল:
১.বড়দিন উৎসবের প্রস্তুতি: বড়দিনের প্রায় এক মাস আগে থেকেই শুরু হয় উৎসব উদ্যাপনের নানা প্রস্তুতি। এই প্রস্তুতি দুই রকম: ক. বাহ্যিক প্রস্তুতি ও খ. আধ্যাত্মিক প্রস্তুতি। বাহ্যিক প্রস্তুতির মধ্যে রয়েছে গীর্জাঘর, বাড়ি-ঘর, দোকানপাট ও প্রতিষ্ঠান সাজানো গোছানো, নতুন পোশাক ও খাবার-দাবার সামগ্রি ক্রয় ইত্যাদি। আধ্যাত্মিক প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বড়দিনের এক মাস আগে থেকেই গীর্জায় গীর্জায় চলে বিশেষ প্রার্থনা। এই এক মাস সময়কালকে বলা হয় আগমনকাল। যীশুর আগমন বা জন্মদিন উপলক্ষ্যে খ্রীষ্টবিশ্বাসীরা পাপের পথ থেকে মন পরিবর্তন করেন, ঈশ্বরের কাছে পাপস্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং বড়দিনের আগে নয় দিন যাবৎ গীর্জায় গিয়ে বিশেষ নভেনা প্রার্থনা ও উপাসনায় অংশগ্রহণ করেন।
২. বড়দিনের সাজ-সজ্জা: প্রতি বছর বড়দিনে এদেশের প্রতিটি গীর্জাঘর বর্ণিল সাজে সজ্জিত করা হয়। গীর্জা চত্বর এবং খ্রীষ্টবিশ্বাসীদের বাড়ি ও পাড়া-মহল্লায় আলোক সজ্জা করা হয়। বড়দিনের একটি বিশেষ আকর্ষণ হল বড়দিনের তারা। যীশুর জন্মের সময় আকাশে একটি বড় তারা দেখা যায়। সেই তারাটির স্মরণে বড়দিনের সাজ-সজ্জার মধ্যে তারা অন্যতম। রঙিন কাগজ ও নানা রকম লাইটিং করে তারা সাজানো হয় এবং তা উঁচু স্থানে ঝুলিয়ে রাখা হয়। কোথাও কোথাও আবার বড়দিন উপলক্ষ্যে ক্রিসমাস ট্রি সাজানো হয়। শহর ও গ্রাম বাংলায় অনেক সময় ঘরের দেয়াল ও ফ্লোর বা আঙিনায় নানা রকম আলপনা করা হয়। ঘরের দেয়ালে ‘শুভ বড়দিন’ বা গবৎৎু ঈযৎরংঃসধং লেখা হয়। এছাড়া গোয়াল ঘরে যীশুর জন্মের কথা স্মরণ করে শিশু যীশু ও তাঁর মা-বাবার মূর্তিসহ গরু, ভেড়ার মূর্তি দিয়ে গোশালাও সাজানো হয়।
৩.বড়দিনের খাবার-দাবার: বড়দিন উপলক্ষ্যে বাংলাদেশী খ্রীষ্টান ভাই বোনেরা নানা রকম পিঠা তৈরী করে। পিঠা খেয়ে তারা আনন্দ করে। চাউলের গুড়ি দিয়ে এসব পিঠা বানানো হয়। বর্তমানে বড়দিন উপলক্ষ্যে অনেকে ছোট-বড় কেক তৈরী করে বা দোকান থেকে কিনে আনে। প্রতি পরিবারে বড়দিন উপলক্ষে মাছ-মাংস রান্না করা হয়। নানা প্রকারের মিষ্টিও পাওয়া যায় প্রতি বাড়িতে। মাংস, পোলাও, বিরিয়ানি, পিঠা, কেক, মিষ্টি ইত্যাদি দিয়ে এ দিন নানা ভোজ উৎসবে মেতে উঠে বাঙালী-আদিবাসী খ্রীষ্টান ভাই বোনেরা।
৪.বড়দিনের পোশাক পরিচ্ছদ: বড়দিন উপলক্ষ্যে ছোট-বড়, ধনী-গরীব প্রত্যেকেই নতুন পোশাক পরিধান করে। নতুন কেনা জুতা, মোজা, শার্ট, প্যান্ট, শাড়ি, ফ্রক, কামিজ, পাজামা ইত্যাদি পরিধান করে পরিবারের সদস্য-সদস্যাগণ গীর্জায় ও আত্মীয়-স্বজনসহ প্রতিবেশীদের বাড়িতে বেড়াতে যায়।
৫.বড়দিনের উপাসনা: বড়দিন উপলক্ষ্যে ২৪ ডিসেম্বর রাতে ও ২৫ ডিসেম্বর সকালে প্রতিটি গীর্জায় বিশেষ উপাসনা করা হয়। বড়দিনের উপাসনায় খ্রীষ্টভক্তগণ অংশগ্রহণ করেন সক্রিয়ভাবে। তারা এ দিন শিশু যীশুর অনুগ্রহ চেয়ে প্রার্থনা করেন।
৬.শুভেচ্ছা বিনিময়: বড়দিনের উপাসনা শেষ করে সাধারণত খ্রীষ্টভক্তগণ একে অপরের সাথে বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন হ্যান্ডশ্যাক বা কোলাকুলির মাধ্যমে। এ দিন বড়রা ছোটদের আশীর্বাদ দেন এবং ছোটরা বড়দের কাছ থেকে আশীর্বাদ গ্রহণ করে থাকে। প্রবীণ ও অসুস্থ যারা তাদের সাথে পরিবারের সদস্যসহ প্রতিবেশী ও আত্মীয় স্বজনেরা সময় কাটান। তাদের মঙ্গল কামনা করেন।
৭.বড়দিনের কীর্তন: বড়দিন উপলক্ষ্যে এ দেশীয় খ্রীষ্টানগণ কীর্তন গান ও নাচ করে থাকেন। নানা সুরে ও তালে কীর্তন গান গেয়ে ও গানের সাথে সবাই একসাথে নেচে তারা আনন্দ করে থাকেন। সাধারণত যীশুর জন্মের ঘটনাবলী সম্পর্কিত কথা বা বাণী দিয়ে এই কীর্তন গানগুলি রচনা করা হয়।
৮.বড়দিনের সামাজিকতা: বড়দিন উপলক্ষ্যে পারিবারিক ও সামাজিকভাবে নানা আনুষ্ঠানিকতার আয়োজন করা হয়। সমাজের সদস্য-সদস্যাগণ বড়দিন উপলক্ষ্যে একে অপরের বাড়িতে যান, গান-বাজনা করেন, পুরনো ভেদাভেদ ও দ্ব›দ্ব ভুলে পরষ্পরকে শুভেচ্ছা জানান এবং একসাথে খাওয়া দাওয়া করেন। বড়দিনের পরদিন থেকে নতুন বৎসরের প্রথম সপ্তাহ যাবৎ নানা সামাজিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এর মধ্যে বিবাহ ভোজ, বিবাহের জুবিলী উদ্যাপন, সামাজিক মিলন ভোজ, পোস্ট ক্রীসমাস গেদারিং, বড়দিন পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান ইত্যাদি অন্যতম।
বড়দিন হল পরিবারিক মিলন উৎসবের দিন। এদিন পরিবারের সদস্যরা একত্রে মিলিত হয় ও একসাথে আনন্দ করে। বড়দিন হল ক্ষমা ও ভালবাসার উৎসবের দিন। এ দিন সবাই পুরনো দ্ব›দ্ব ও মনোমালিন্য ভুলে একে অপরকে ক্ষমা করে, ভালবাসে ও শান্তিতে বসবাসের প্রতিজ্ঞা করে।
বড়দিনকে বলা হয় বড় হবার দিন। একে অপরকে ক্ষমা করে, একে অপরের কাছে ক্ষমা চেয়ে, পরষ্পরকে ভালবেসে ও পরষ্পরের প্রতি দয়া প্রদর্শন করে আমরা বড় হয়ে উঠতে পারি। তাই সকল খ্রীষ্টানুসারী ভাই-বোনকে আহŸান জানাই: আসুন আমরা প্রভু যীশুর শিক্ষানুসারে পরষ্পরকে ভালবেসে এবং একে অপরের প্রতি ক্ষমা, দয়া ও সহানুভূতি প্রদর্শনের মাধ্যমে এবারের বড়দিন উৎসবে বড় হয়ে উঠি। শিশু যীশুর অনুগ্রহ ও আশীর্বাদে প্রতিটি পরিবার, সমাজ ও দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হোক! ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সহনশীলতা বৃদ্ধি পাক! সকল প্রকার যুদ্ধ ও হানাহানি বন্ধ হোক! মানবিকতার ঐশ্বর্য্য সর্বত্রই ছড়িয়ে পড়–ক!
(লেখক: সহকারী প্রধান শিক্ষক, সেন্ট রীটাস্ হাই স্কুল, মথুরাপুর, চাটমোহর, পাবনা এবং সহকারী পাল-পুরোহিত, মথুরাপুর ক্যাথলিক চার্চ, চাটমোহর, পাবনা)।
চলে গেলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ শুকুর মাহমুদ শুকুরের
একজন কথা সাহিত্যিক ও আদর্শের সৈনিকের মহাপ্রয়াণ
আবদুর রাজ্জাক রাজু
শাহজাদপুরের সৈয়দ শুকুর মাহমুদের সাথে আমার কখন কীভাবে পরিচয় ঘটে তা সঠিক স্মরণে পড়ে না। তবে এটা ঠিক যে সিরাজগঞ্জের বা চলনবিলের কোন সাহিত্য আড্ডায় অন্তত: দুই হাজার সালের আগে তার সাথে সর্বপ্রথম সাক্ষাতের সূত্রে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। যদিও বয়সে তিনি আমার কয়েক বছরের বড় তবু পরিচয়ের প্রথম দিন থেকেই পরস্পরকে ‘ভাই’ বলে আমরা সম্বোধন করতাম। সম্পর্কের মূল সূত্র ছিল লেখালেখি, অন্য কিছু নয়। যেমন তার ব্যক্তি জীবনের গভীরে আমি যাইনি; তেমনি কখনো যাওয়া হয় নি তার শাহজাদপুরের বাসায় বা আস্তানায়। অবশ্য দু’একবার তিনি আমাদের তাড়াশ অফিসে এলেও আমাদের গ্রামের বাড়ি বা আমার পারিবারিক কোন সংশ্লিষ্টতা তার সাথে ছিল না।উল্লেখ্য,গত ২০ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখ দিবাগত রাতে তিনি ইন্তেকাল করেন।
উপরোক্ত প্রেক্ষাপটে তিনি আমার আপন বা আত্মীয় কেউ নন, কাছের মানুষও বলা যাবে না। তথাপি কত যুগযুগের বিদগ্ধ আপনজন সেই শুকুর ভাই প্রায়শ আমাকে ফোন করে নানান খোঁজ-খবর নিতেন। কুশলাদি বিনিময় শেষে শুধুমাত্র লেখালেখি নিয়ে কথা বলতেন। বিশেষ করে কখন কোন লেখা পাঠালেন বা পাঠাবেন তা জানিয়ে দিতেন। অর্থাৎ যোগাযোগের সিংহভাগ জুড়ে থাকতো সাহিত্য-সংস্কৃতি প্রসঙ্গ। তার প্রেরিত কোন লেখার কী উপজীব্য, সারমর্ম তা পূর্বেই ব্যাখ্যা করতেন, লেখাটা ছাপা হয়েছে না হবে তাও জানতে চাইতেন। লেখার প্রসঙ্গ, গাঁথুনি সেটা কবিতা না প্রবন্ধ, নিবন্ধ বা অন্য কিছু তাও বলতেন আগেভাগেই। সব মিলিয়ে এমন “লেখালেখির পাগল” মানুষ এ সময়ে সিরাজগঞ্জে কিংবা চলনবিলে আমি সচরাচর দেখি না। কলমের আঁচরে বুঁদ হয়ে এত নেশাগ্রস্থ সাহিত্য বাতিকগ্রস্থ ব্যক্তি বর্তমান আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে বিরল বলেই মনে হয়। তার জীবনের আদর্শ, স্বপ্ন, ব্রত, চেতনা, দর্শন, বিশ্বাস ও নিঃশ্বাস সবই লেখার জগত ঘিরে আবর্তিত হতো। তার সাথে দীর্ঘ যোগাযোগ ও ভাব বিনিময়ের সুবাদে দুটো জিনিস খুবই লক্ষণীয় এবং শিক্ষনীয়।
প্রথমত: তার জীবনীতে তিনি নিজেকে স্বল্প লেখাপড়া জানা বলে অভিহিত করেছেন। আর ছেলেবেলার অনেক অনাড়ম্বর,ক্ষুধা, দারিদ্র তথা সুযোগ-সুবিধাহীন কষ্টকর জীবনযাপনের চিত্র তুলে ধরেছেন। বর্ণনা করেছেন নিজেকে রাখাল বলে। আমরা পৃথিবীর অনেক মনিষীর জীবনী জানতে পারি যাদের প্রাতিষ্ঠানিক,আক্ষরিক ও শাস্ত্রীয় লেখাপড়া কারো সামান্য ছিল কারো বা ছিলই না। তারা ছিলেন ঐশী জ্ঞানে ও গুণে গুণান্বিত। ফলে তাদের চিন্তা, দর্শন ও সৃষ্টিশীলতার বিকাশ পরবর্তীতে মানব জীবনের আলোর পথ দেখিয়েছে। তাদের রচনা ও অবদান বিশ্বকে শিক্ষার ও জ্ঞান প্রজ্ঞার পথ প্রদর্শন করেছে। তারা প্রাকৃতিক জ্ঞানে সমৃদ্ধ হয়ে মানুষকে আনুষ্ঠানিক জ্ঞান চর্চার দিশা দিয়েছেন। যথার্থ এই আলোর পথের যাত্রী ছিলেন সৈয়দ শুকুর মাহমুদও। বিচিত্র বিষয়ে তার অসংখ্য লেখা পড়লে মনে সহসাই প্রশ্ন জাগে, কোন্ ডিগ্রী বা উচ্চ শিক্ষার বিদ্যাপীঠ পেড়িয়ে তিনি এতো অবারিত জ্ঞান-ভান্ডারের তথ্য উন্মোচন করতে পেরেছেন। কোন শিক্ষা দীক্ষার মন্ত্রে পারদর্শী হয়ে সার্থক সাহিত্যিকে পরিণত হয়েছেন। সমাজের কত অসঙ্গতি.অন্যায্যতা, অবিচার,অসমতা,অবক্ষয়, ধর্মীয় অবনমন, অনৈতিকতা ইত্যাকার বহু সামাজিক দৈন্যতার দৃষ্টিকোণ তিনি বর্ণনা করেছেন তার লেখার সারবস্তু বা ভিত্তি ভূমি হিসেবে। এখানে জিজ্ঞাসা জাগে, কোন বিদ্যা বলে তার দূরদৃষ্টি ও সৃজনশীলতা সমাজের এতো অতল গভীরে গিয়ে সমাজ মানসের চুলচেরা ব্যাখা বিশ্লেষণ করেছেন এবং নির্ভিক সাহসী চালচিত্র তুলে এনেছেন। এটা যে যাদুকরী জ্ঞানের সাহিত্য মনস্ক এক অলৌকিক কলকাঠির কারুকার্য, শৈল্পিক সুষমা, বাঙময় ঝর্নাধারা, এসবের উৎসমূল কোথায় – তা অবশ্যই কৌতূহলের বিষয়।
দ্বিতীয়টি হল শুকুর ভাইয়ের ধার্মিকতা, আদর্শ ও নীতি-নৈতিকতার মানদন্ড। বর্তমান সমাজ বাস্তবতায় বিভিন্ন ধরনের জ্ঞানী-বিজ্ঞানী বিশেষজ্ঞ নামীদামী লোকের অভাব নেই।প্রতিযোগিতাপূর্ণ শিক্ষায়-মেধায় ও প্রতিভায় সমাজ ভরপুর। ধর্মের লেবাস ও তথাকথিত সভ্যতার লৌকিকতার সর্বোচ্চ কভারেজ পরিদৃষ্ট হয়। শুধু ঘাটতি মানুষের মানবিকতার। প্রকৃত মানুষের। অর্থাৎ নামে, সুনামে, খ্যাতি-সুখ্যাতিতে দুনিয়ার ৮০০ কোটি মানুষ। কিন্তু সত্যকার মনুষ্যত্বপূর্ণ খাঁটি ও নির্ভেজাল মানুষের সংখ্যা বলতে কি নগণ্য। তা না হলে দেশে দেশে এত মারামারি, হানাহানি, যুদ্ধ, সংঘর্ষ, অশান্তি, অস্থিরতা, রক্তারক্তি ও মানুষ হত্যা কীভাবে চলছে। এমনকি আমাদের দেশেও আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক, সংস্কৃতি ও ধর্মীয় অঙ্গনে একই অবস্থা বিরাজ করছে।এর মধ্যে সব সেক্টরেই ভালো মানুষ, সৎ নীতিবান, আদর্শবান ও আসল ধার্মিক মানুষের বড় আকাল পড়ে গেছে। মানুষ শরীরে-সম্পদে সমৃদ্ধ হলেও আত্মিক অঙ্গনে বড়ই দুর্বল ও দূষিত, কলুষিত।এমতাবস্থায় সৈয়দ শুকুর মাহমুদ ভাই ব্যক্তি জীবনে বহু প্রতিবন্ধকতা ও প্রতিকূলতা সত্তে¡ও নিজে নীতিবান, আদর্শবান, সৎ ও নিষ্ঠাবান ধার্মিক থাকার চেষ্টা করেছেন। নীতি আদর্শের বুলি কেবলই তিনি মুখে বলেন নি, কলমে লেখেন নি- বাস্তব জীবনে আমলে আকীদায়ও তিনি প্রতিফলিত ও প্রতিবিম্বিত করেছেন কর্মে ও চিন্তার প্রতিটি স্তরে।ধার্মিকতা ও উদার মুক্ত প্রগতিশীলতার মিশেলে এমন অনন্য জীবন আমাদের তরুণ প্রজন্মের চলার পাথেয় হওয়া বাঞ্ছনীয়। আপাদমস্তক এমন আদর্শমন্ডিত একজন লেখক একালে পাওয়া দুস্কর। কেননা বর্তমানে আমাদের লেখক-বুদ্ধিজীবিরা তো বিভিন্ন দল ও মতে বিভক্ত। তার দৈনন্দিন উপার্জন চলতো সামান্য অফিসিয়াল কাগুজে ফর্ম বানিয়ে বিক্রয় বিতরণ আর মুক্তিযোদ্ধার ভাতার টাকায়। শুনেছি এ দু’টো খাত থেকেও তিনি হোঁচট খেয়েছেন, প্রতিহত হয়েছেন একমাত্র তার প্রতিভার কারণে। এতে বোঝা যায, তার জীবনযাপন মসৃণ ও নির্বিঘœ ছিল না। দুঃখ-দৈন্য-দারিদ্র ছিল আমৃত্যু সাথী। অর্থাভাবের দরুন মনোমুগ্ধকর অবিরাম লেখা সত্বেও একটি ভাল বইও তিনি প্রকাশ করে রেখে যেতে পারেননি। তবু তিনি নীতি-আদর্শ বিচ্যুত হন নি, মনোবল হারাননি। সর্বশেষ গত বছর তার একমাত্র ছেলে অনলাইন লেনদেনের বানোয়াট মামলার শিকার হয়ে কারাবন্দি হলে সম্ভবত: তিনি মনে হৃদয়ে আত্মায় ও ধ্যানে-জ্ঞানে বেশি আঘাত পান অর্থাৎ মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে আহত হন।অনুমান করি এ থেকে তার হৃদযন্ত্রের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। আর সেটাই তার মৃত্যুর আপাতদৃশ্য কারণ বলে মনে হয়। কিন্তু কত ব্যতিক্রমী এই আল্লাহওয়ালা মানুষটি , যে মৃত্যুও বেশ আগে এবং অব্যবহিত পূর্বে পরপর তার লেখা দুটো কবিতা ‘প্রত্যাশা’ ও ‘মেঘাচ্ছন্ন আকাশ’ কী বিস্ময়করভাবে তার জীবনের আশা-আকাংক্ষা ও শেষ বিদায়ের যাত্রা সম্পর্কে প্রায় স্পষ্ট সবুজ সংকেত দিয়ে গেছে তা এক অবাক করা ব্যাপার। এতে প্রতীয়মান হয়- কেবল পূণ্যবান খোদাভক্ত মানুষের জীবনে এমনটি ঘটতে পারে, সাধারণের জন্য যা অকল্পনীয়। তারা মৃত্যুর আগমন অগ্রে আলামত উপলব্ধি করতে পারে, তাকে আলিঙ্গনের শুভ অভিপ্রায়ও ব্যক্ত করতে পারেন। তাই পরিশেষে বললে বাহুল্য হবে না যে – এই ক্ষণজন্মা লেখক সাহিত্যিকের জীবন-সাহিত্য ও ধর্ম-কর্র্ম চর্চা-অনুশীলনে একাকার হয়ে গেছে যা আমাদের সমকালীন সমাজে তেমন একটা দেখতে পাওয়া যায় না। তার সকল প্রকার প্রকাশিত-অপ্রকাশিত লেখা নিয়ে “সৈয়দ শুকুর মাহমুদ রচনা সমগ্র” প্রকাশের উদ্যোগ নিতে কেউ এগিয়ে আসবেন সেই প্রত্যাশা রইলো। আমরা এই মহান লেখকের আত্মার শান্তি ও মাগফেরাত কামনা করি।
লেখক : সম্পাদক, সাপ্তাহিক চলনবিল বার্তা। তাড়াশ, সিরাজগঞ্জ।
সৈয়দ শুকুর মাহমুদ ঃ লেখার ভুবনে এক দৃষ্টান্তের বাতিঘর
অধ্যাপক ফজলুর রহমান ছবি
জীবন কর্মময় একথা প্রায়ই শোনা যায়-যদি তাই হতো কে আর বাঁচতে চাইতো। যদি তাই হতো তাহলে ঢাকা স্টেডিয়াম পাটের গুদামে পরিণত হতো। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের ঘনিষ্ট সাথী (বর্তমানে বিশিষ্ট ব্যাংকার) বন্ধু আকমল প্রায়-ই এরকম কথা বলতো- তার মানে একটু বেশী পড়লে, বেশী কাজের মধ্যে ব্যস্ত থাকলেই বলতো দোস্ত! আয় ঘুরে আসি। ঘুরে ফিরে ব্যস্ততম পৃথিবীতে মাঝে মধ্যে ফিরে দেখার যে একটা আনন্দ তা বন্ধু আকমলের কাছ থেকেই শেখা। এভাবে চলতে চলতে মনের মধ্যে এমন এক জানার আকাংখার উদ্ভব হয়েছে যে, মনে হয় সারা পৃথিবী আমার। যেখানে প্রয়োজন সেখানে যাব। যা দরকার তাই নেব। যা হোক গত ০২-০৮-২০১৮ ইং তারিখ রবিবার জš§াষ্টমীর ছুটি থাকায়- আমার প্রিন্সিপাল জনাব মোঃ জাফর ইকবাল স্যার আমাকে খুব সকালে ফোন দিয়ে বললো ফজলুর রহমান আজ ছুটির দিন, চলো সাহিত্যের ভুবনে একটু সময় ব্যয় করে আসি। তাঁর সফর সঙ্গী হয়ে এর আগে আরো অনেক জায়গায় গিয়েছি। কিছু দিন আগে ঐতিহাসিক চলনবিলের আদর্শ গ্রাম হুলহুলিয়া দেখে এলাম (সিংড়া,নাটোর)। গ্রাম দেখে চমকে গিয়েছিলাম। মনে হলো দেশের ইতিহাসে এরকম ব্যতিক্রমধর্মী গ্রাম আরো দু’ একটি আছে কিনা জানি না। গ্রাম দেখার পর আগ্রহ ভরে কিছু লিখতে বাধ্য হয়েছিলাম।
আজ ছুটির দিনে ঐতিহাসিক চলনবিলের সব চেয়ে কর্মব্যস্ততম জনপদ যমুনা, করতোয়া, ফুলজোড়, বড়াল, কনাই অববাহিকার বেষ্টনে বেস্টিত বিখ্যাত কবি, সাধক, তাপস ও অলি আউলিয়ার পূণ্যভ‚মি বৃহত্তর পাবনা জেলার শাহজাদপুর। এ জনপদটা এতো বিখ্যাত এজন্য যে, সাধক কুলের ওস্তাদ শামস্ তাবরিজ এখানে ঘুমিয়ে আছেন। বিশ্ব কবি রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর তাঁর গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলো অতিবাহিত করেছিলেন এই পূণ্যভ‚মিতে। আবার প্রখ্যাত সাহিত্যরতœ খ্যাত নজিবর রহমান এর জš§ও এখানে। যাহোক যার জন্য আজ লিখতে বসেছি, যাকে নিয়ে কিছু লিখতে উৎসাহ বোধ করছি। তিনি হলেন বিশিষ্ট কবি সৈয়দ শুকুর মাহমুদ। ১৯৫২ সালের ৯ই নভেম্বর বিখ্যাত সৈয়দ পরিবারে তাঁর জš§। তাঁর সম্পর্কে যতদুর জেনেছি তিনি নানা প্রতিকুলতার মধ্য দিয়ে শৈশব ও কৈশরের দিনগুলো অতিবাহিত করেছেন। তিনি কোন প্রতিষ্ঠানে পড়েন নি, যা একটু হাতে খড়ি তাঁর বাবার কাছে। লেখাপড়ার জন্য কোন শিক্ষকও ছিল না। তাঁর মানে দাঁড়ায় তিনি স্বশিক্ষিত। আমার জানা ছিল না চলনবিলে এত বড় একজন কবি, কথা সাহিত্যিক, মিষ্টভাষী, পন্ডিত আছেন, যিনি কিনা আবার স্বশিক্ষিত। আসলে সত্য কথা বলতে কি মহান সৃষ্টিকর্তা যাদের সরাসরি শেখান, যাদের সরাসরি লেখান, তাঁদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন হয় না। বাউল সম্রাট লালন, বিদ্রোহী কবি নজরুলসহ অনেক প্রখ্যাত সাধক ও লেখকরাই এর জলন্ত উদাহরণ।
সৈয়দ শুকুর মাহমুদের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার পর-তিনি আমার হাতে ১০টি কবিতার একটি পান্ডুলিপি দিয়ে আমাকে বললেন, প্রফেসর সাহেব কবিতাগুলো এক বিশেষ বইয়ের জন্য সিলেকশন দিতে চাচ্ছি; দেখুনতো কেমন হয়েছে। একজন নবীন লেখক হিসেবে হয়তো লেখার জগতে আমি একেবারে নবীন। তারপরেও যতটুকু বুঝলাম, একজন কবির লেখনি কত হৃয়দস্পর্শী ও গভীর হলে পাঠককে প্রতিটা লাইনে, প্রতিটা চরনে থমকে দিতে পারে। খ্যাতিমান লেখক হুমায়ুন আজাদ এর একটি কবিতা পড়েছিলাম। “শব্দ থেকে কবিতা”। আসলে এই শব্দগুলো মিলিয়েই তো কবিতা লিখতে হয়। শব্দের তাল লয় ঠিক থাকলে মনে হবে শব্দগুলো যেন কথা বলছে। যা মনের মধ্যে ভাব, আবেগ ও ভাবনার উদ্বেগ সৃষ্টি করতে পারে তাইতো কবিতা ! কবি সৈয়দ শুকুর মাহমুদ এর কবিতা পড়ে তাঁকে একজন প্রথিতযশা কবি হিসেবেই আমার মনে হয়েছে। একটা পড়ার পর আরেকটা পড়ার যে আবেগ, যে আকর্ষণ-এটাই শুকুর মাহমুদের লেখনির মধ্যে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন। এর মধ্যে তাঁর কিছু গুরুত্বপূর্ণ লেখা “অনাদরে কেন আজ মায়ের ভাষা, মানব সভ্যতা ও মানুষের ভাষা, রোহিঙ্গা মুসলিমদের আদি ইতিহাস, ভারত উপমহাদেশে মুসলিম শিক্ষা ও স্বাধীনতার সুচনা” ইত্যাকার প্রবন্ধ-নিবন্ধ। মানবতা ও বিবেক সহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ সময় উপযোগী লেখনি পাঠকদের মাঝে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে চলেছে। তাছাড়া নতুন লেখক ও কবি সৃষ্টির পিছনেও তিনি অনন্য অবদান রেখে চলেছেন। বাংলা সাহিত্যের প্রখ্যাত লেখক নজিবর রহমান সাহিত্যরতেœর ঘনিষ্ট আত্মীয় (নাতী) হলেও ইতোমধ্যে তিনি স্বনামে পরিচিতি লাভ করেছেন। শুধু শাহজাদপুর নয় গোটা চলনবিলের একজন বিশিষ্ট কবি, সাংবাদিক, লেখক ও গবেষক, বিশেষ করে কথা সাহিত্যিক হিসেবে আলাদা একটা জায়গা করে নিয়েছেন। আর একজন লোকের বড় গুণ তাঁর সৃজনশীলতা।লেখায় যেমন প্রকাশ পেয়েছে, তেমনি কথায়, আলাপচারিতায়, চেহারায় সত্যিই এক অসাধারন মানুষ কবি সৈয়দ শুকুর মাহমুদ। চেহারাতে যেন অধ্যক্ষ আব্দুল হামিদ টি.কে’র প্রতিচ্ছবি। সৈয়দ পরিবারে জš§ গ্রহণ করলেও সৈয়দ এর অহমিকা তাঁর মধ্যে লক্ষনীয় নয়। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধেও তিনি অবদান রাখতে পেরেছেন। তাই তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাও বটে।
আমরা তাড়াশ থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক চলনবিল বার্তা পত্রিকার মাধ্যমে প্রায়ই তাঁর লেখা পড়তে পাই। ভাল লাগে তাঁর রচনাবলী। আমাদের প্রত্যাশা ছিল, তিনি আরো অনেকদিন চলনবিলের মানুষের কাছে সাহিত্যের বিচিত্র পুষ্পমালা উপহার বিলিয়ে যেতে পারতেন। কিন্তু র্দুভাগ্য মহান সৃষ্টিকর্তা তাঁকে আর সে সময়টা দিল না। আমরা তাঁর আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। মালিক যেন তাঁকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করেন।
# অধ্যাপক ফজলুর রহমান: লেখক,কবি ও কলামিষ্ট, তাড়াশ মহিলা ডিগ্রী কলেজ, সিরাজগঞ্জ।
গাজা প্রস্তাব পাস হলেও যুদ্ধ বিরতি নেই
ডেস্ক রিপোর্ট : অবশেষে গাজা প্রস্তাব পাস হল জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে। কয়েক দফা বিলম্বের পর শুক্রবার প্রস্তাবটি ১৩-০ ভোটে পাস হয়। প্রস্তাবটিতে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা পাঠানোর দাবি জানানো হয়েছে।নিরাপত্তা পরিষদের মোট ১৫ দেশের মধ্যে ১৩টি প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দিলেও; যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া ভোটদানে বিরত ছিল।
এই প্রস্তাবের মাধ্যমে মূলত গাজায় অধিকহারে ত্রাণ সহায়তা সরবরাহ করার বিষয়টি বলা হয়েছে।গত ১৫ ডিসেম্বর মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রথম প্রস্তাবটি উত্থাপন করে। প্রস্তাবটির খসড়ায় গাজায় অনতিবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং মানবিক সহায়তা পাঠানোর কথা বলা হয়। যুক্তরাষ্ট্র ভেটো যাতে না দেয়, সেই নিশ্চয়তা পেতে কূটনৈতিক আলোচনা চলতে থাকে। এতে প্রস্তাবটির ভোটাভুটি কয়েক দফা পিছিয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রকে রাজি করাতে প্রস্তাবটি থেকে যুদ্ধবিরতি কথাটি পুরোপুরি বাদ দেওয়া হয়। এর বদলে শুধুমাত্র মানবিক সহায়তার কথা উল্লেখ করা হয়।এক সপ্তাহ ধরে ঝুলে থাকার পর প্রস্তাবটি পাস হলেও এতে যুদ্ধ থামানোর কোনও কথা না বলায়, এর মাধ্যমে গাজায় ইসরায়েলের বর্বর হামলা বন্ধ হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই।
এই প্রস্তাবে যুদ্ধবিরতির কথা না বলায় গাজায় ইসরায়েলের বর্বর হামলা চলতেই থাকবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।এ কারণে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসও পাসকৃত প্রস্তাবটি নিয়ে অসন্তুষ্টির কথা জানিয়েছে। সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন।
আওয়ামী লীগ- স্বতন্ত্র সংঘাত বাড়ছে
ডেস্ক রিপোর্ট : ১৮ই ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে শুরু হয়েছে দ্বাদশ নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা। চলবে আগামী ৫ই জানুয়ারি পর্যন্ত। তবে প্রচারণাকে ঘিরে দেশজুড়ে সহিংসতা শুরু হয়েছে বিশেষত আওয়ামীলীগ দলীয় ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে। পক্ষে-বিপক্ষে ভোট চাওয়া ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নির্বাচনী অফিসে আগুন, বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর, সমর্থককে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে, কুপিয়ে জখম করার মতো একাধিক ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচনী ক্যাম্প স্থাপন নিয়ে সংঘর্ষে রফিকুল ইসলাম (৫২) নামে একজনের মৃত্যুও হয়েছে। পেশিশক্তির এসব লড়াই নিয়ে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকেই এধরনের খবর আসছে। সূত্র: মানবজমিন।
মাঠ পর্যায়ে ভোটের ব্যালট পাঠানো শুরু
ডেস্ক রিপোর্ট : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যালট পেপার গত সোমবার থেকে মাঠ পর্যায়ে পাঠানো শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। এক্ষেত্রে দূরত্ব ও দুর্গম বিবেচনায় ১৩টি জেলার ব্যালট পেপার প্রথমে পাঠানো হয়েছে। গত রোববার ইসি’র সিনিয়র সহকারী সচিব (ক্রয় ও মুদ্রণ) মুহাম্মদ এনাম উদ্দীন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ব্যালট পেপার সংগ্রহের জন্য নির্দেশনা পাঠিয়েছিলেন। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, গতকাল পঞ্চগড়, গাইবান্ধা, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, মাগুরা ও রাঙ্গামাটি জেলার ব্যালট পেপার তেজগাঁওয়ের গভর্নমেন্ট প্রিন্টিং প্রেস থেকে; জয়পুরহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, ঝালকাঠি ও ভোলার ব্যালট পেপার বিজি প্রেস থেকে এবং বরগুনা, পটুয়াখালী ও নেত্রকোনার ব্যালট পেপার সিকিউরিটি প্রিন্টিং প্রেস থেকে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তাদের প্রতিনিধিরা বুঝে নিয়েছেন।ইসি’র নির্দেশনা অনুযায়ী, ব্যালট পেপার, পোস্টাল ব্যালট পেপার, পোস্টাল ব্যালট পেপারের সঙ্গে সম্পর্কিত ফরম এবং স্ট্যাম্প প্যাড জেলায় পৌঁছানোর পর সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ট্রেজারি শাখায় সংরক্ষণসহ সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। এ ছাড়া ব্যালট পেপার ও পোস্টাল ব্যালট পেপার সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে পৌঁছানোর পর ভালোভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কোনো অসঙ্গতি দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে অবহিত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এদিকে ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে ব্যালট পেপার ভোটের দিন সকালে কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছানো হবে। ইসি’র অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানিয়েছেন, ৩১শে ডিসেম্বরের মধ্যে ব্যালট পেপার ছাপানো শেষ করতে চান তারা। এক্ষেত্রে যে আসনে মামলা রয়েছে এমন ৪০টির মতো আসনের ব্যালট শেষের দিকে ছাপানো হবে। সূত্র: মানবজমিন।
তাড়াশ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সাইনবোর্ড নাই
স্টাফ রিপোর্টার : তাড়াশ উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সাইনবোর্ড না থাকায় এটার সঠিক পরিচিতি ও গুরুত্ব বুঝার উপায় নেই। এছাড়াও উক্ত শহীদ মিনারে নানা অব্যবস্থাপনাও বিদ্যমান বলে সরেজমিনে প্রতীয়মান হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০০৩ সালে তাড়াশ-রায়গঞ্জের তৎকালীন সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নান তালুকদার ও তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বোরহান উদ্দীন তাড়াশ উপজেলা ডাকঘরের দক্ষিন পাশে এ শহীদ মিনারের ভিত্তি প্রস্তর ফলক উদ্বোধন করেন। কিন্তু শুরু থেকেই শহীদ মিনারটি বিভিন্ন অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার শিকার। প্রথমত: এই শহীদ মিনারে ভিত্তি প্রস্তর থাকলেও এর ওপরের লেখাগুলো প্রায় মুছে গেছে বা অস্পষ্ট হয়ে পড়েছে। অপরদিকে এখানে কোন দৃশ্যমান সাইনবোর্ড না থাকায় এটা কোন প্রতিষ্ঠানের আওতাভুক্ত তা-ও বোঝা যায় না। এছাড়া শহীদ মিনারের পেছনে পশ্চিম পাশে পৌরসভার আবর্জনা দিয়ে নোংরা করে রাখা হয়েছে। এমনকি শুধু নির্ধারিত জাতীয় দিবস ছাড়া সাড়া বছর এই শহীদ মিনার অপরিস্কার ও অপরিচ্ছন্ন থাকে। পিছনে পুকুরের ধার বরাবর একটি প্রাচীর নির্মাণ খুবই জরুরী। বর্তমানে অবস্থিত চতুর্পাশের প্রাচীরও আর একটু উঁচু ও মজবুত করে তৈরি করা আবশ্যক এবং এই শহীদ মিনারের জন্য একজন তত্বাবধায়ক বা পাহারাদার নিয়োগ করা প্রয়োজন বলে এলাকাবাসী মনে করেন। আর শহীদ মিনারের পূর্ব পাশে সদরের প্রধান সড়ক ঘেঁষে মোটরসাইকেল বা ভ্যান গ্যারেজ যাতে না থাকে সেজন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা জারী করা উচিত বলে পর্যবেক্ষণ মহোদয়ের ধারণা।
১৫ বছরে ব্যাংক থেকে ৯২ হাজার কোটি টাকা লুট
ডেস্ক রিপোর্ট : বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) মনে করে, ২০০৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ১৫ বছরে বিভিন্ন আর্থিক অনিয়মের মাধ্যমে ব্যাংকিং খাত থেকে ৯২ হাজার ২৬১ কোটি টাকা লুট করা হয়েছে। এছাড়া বর্তমানে অর্থনীতিতে অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ যুক্ত হয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি একসঙ্গে এত চ্যালেঞ্জ আগে কখনো দেখেনি। গত ২৩ ডিসেম্বর সিপিডি’র ধানমন্ডির কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি ২০২৩-২৪: চলমান সংকট ও করণীয়’ শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। ব্রিফিংয়ে অর্থনীতির বিভিন্ন খাতের চিত্র তুলে ধরেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। আর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সিপিডি’র বিশেষ ফেলো মোস্তফিজুর রহমান, গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম ও জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান।
সিপিডি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, অর্থনীতি অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জের মধ্যদিয়ে যাচ্ছে। যা কমে যাওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না, এমনকি নির্বাচনের পরেও না। নীতি নির্ধারকদের প্রধান কাজ হওয়া উচিত বর্তমান অর্থনৈতিক বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করা। যেসব ক্ষেত্রে অর্থনীতির চাপ ঘনীভূত হচ্ছে সেগুলো হলো- রাজস্ব আহরণের ধীর গতি, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের উর্ধ্বগতি, ব্যাংকের তারল্য সংকট, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়া। ফাহমিদা খাতুন বলেন, দেশের ব্যাংক খাত এখন ব্যক্তিস্বার্থের হাতে কুক্ষিগত হয়ে গেছে। এ কারণে এই খাতে সংকট বাড়ছে। যারা এ খাত থেকে বড় বড় ঋণ নিচ্ছে, তারাই আবার ঋণ পুনঃতফসিলের নানা নিয়মকানুন তৈরিতে প্রভাব বিস্তার করছে। সূত্র: মানবজমিন।
তাড়াশে শুভ বড়দিন পালিত
লুৎফর রহমান,তাড়াশ : নানা উৎসব ও ভাবগাম্ভীর্য্যের মধ্য দিয়ে সিরাজগঞ্জের তাড়াশের ৪টি গীর্জায় খ্রিস্টান ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শুভ বড় দিন পালিত হয়েছে।
গত সোমবার ২৫ ডিসেম্বও সকালে উপজেলার গুল্টা মিশনে উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে বড়দিন উদযাপিত হয়। খ্রিস্টধর্মের প্রবর্তক যীশু খ্রিস্ট এইদিনে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে বেথলেহেম শহরে এক গোয়ালঘরে কুমারী মাতা মেরির কোলে জন্মগ্রহণ করেন।
এ উপলক্ষে গুল্টা মিশনে কেক কাটা প্রার্থনা নাচগানসহ নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে শুভ বড় দিন পালিত হয়। গুল্টা খ্রিস্টান পল্লীর চেয়ারম্যান লিখিল খাঁর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিরাজগঞ্জ-৩ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডাঃ আব্দুল আজিজ ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, তাড়াশ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিত কর্মকার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহিনুর আলম লাবু, উপজেলা ভাইস চেয়াম্যান আনোয়ার হোসেন খান, তালম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্বাসজ্জামান,ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল খালেক, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ আলী বিদুৎ .তাড়াশ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শামিউল হক শামীম, ছাত্রলীগের সভাপতি ইকবাল হাসান রুবেল, সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) সুলতান মাহমুদ, বাংলাদেশ খ্রিস্টান এসোসিয়েশনের সভাপতি মি. নিখিল খাঁ খাঁ, জেমস বিপ্লব এক্কা সহ বিভিন্ন গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে কেক কেটে জন্মদিন পালন করা হয়।
এ নির্বাচন কতটা টেকসই হবে, তা ভবিষ্যৎই বলবে
ডেস্ক রিপোর্ট : বাংলাদেশে আরেকটি একতরফা নির্বাচন হচ্ছে, যার ফলাফল ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতোই হবে। তবে তা কতটুকু টেকসই হবে, সেটি ভবিষ্যৎ ও ইতিহাস বলতে পারবে। এর ফলে দেশ অস্থিতিশীল পরিস্থিতির দিকে ধাবিত হবে। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে। অর্থনৈতিক অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা আরও কমে যাবে।গত শনিবার ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ আয়োজিত ‘আরেকটি সাজানো নির্বাচন: কূটনৈতিক ও নিরাপত্তাবিষয়ক ঝুঁকি’ শীর্ষক ওয়েবিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা।ওয়েবিনারে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমরা ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনকে কর্তৃত্ববাদী না বলে হাইব্রিড ডেমোক্রেটিক শাসনব্যবস্থা বলতে পারি। কারণ, ডেমোক্রেসির (গণতন্ত্র) সংজ্ঞায় বহুদলীয় অংশগ্রহণের কথা বলা আছে। সেই অংশগ্রহণ দেখাতে এবার সরকারি দলও ডামি প্রার্থী দিয়েছে। তার সঙ্গে কিছু পার্টিও নির্বাচনে অংশ নিয়েছে।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের ওপর মানুষের আস্থা আগেও ছিল না; মাঝে একটু হয়ে থাকলেও পরপর দুটি নির্বাচনের পর এখন তা-ও নেই। সরকার বলার চেষ্টা করছে, ভোটার এলেই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হয়। এ অবস্থায় এমনও কথা হচ্ছে, ভোট দিতে না এলে সামাজিক নিরাপত্তা সুবিধা কেটে দেওয়া হবে। এখন আমরা জানি না, ভোটের দিন কীভাবে মানুষকে উঠিয়ে নেওয়া হবে। লোকজনকে দেখাতে হবে বাইরে। আর ভেতরে যা হওয়ার হবে।সাখাওয়াত হোসেন বলেন, সরকার মনে করে দুটি নির্বাচন যেভাবে হয়েছে, আরেকটি সেভাবে হয়ে গেলেও সবাই মেনে নেবে। তিনটি দেশ তো আছেই তার সঙ্গে। আমেরিকাও হয়তো আসবে। তারা বোয়িং বিক্রি করতে চাচ্ছে, ড্রোন বিক্রিও করতে চাচ্ছে।
সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশে প্রকৃত গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা কখনোই ছিল না। নির্বাচিত বা অনির্বাচিত কর্তৃত্ববাদ সব সময় ছিল। কোনো ধরনের জবাবদিহি থাকে না। এরপরও নির্বাচন জরুরি। কারণ, একটি কর্তৃত্ববাদী শাসন দীর্ঘ সময় থাকলে নিপীড়ন-নির্যাতন বাড়ে। কর্তৃত্ববাদী শাসনে প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর ধীরে ধীরে কমতে থাকে। বাংলাদেশে ১৫ বছর ধরে এমন শাসন চলছে। তিনি বলেন, দেশের পরিস্থিতি যেদিকে এগোচ্ছে, তাতে আগামী দিনে অর্থনীতিতে বড় ধরনের সমস্যা দেখা দেবে। এর জন্য ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়ে আছে। রিজার্ভ কমে গেছে। ব্যবসায়ীরা এলসি খুলতে পারছেন না। ব্যাংকগুলোর অবস্থা ভালো নয়। পরিণতি না ভেবেই বড় বড় মেগা প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। আগামী বছর থেকে এসব প্রকল্পের ঋণের কিস্তি দিতে হবে। তখন অর্থনীতির অবস্থা আরও খারাপ হবে।ওয়েবিনারটি সঞ্চালনা করেন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী সাংবাদিক মনির হায়দার। ওয়েবিনারে সমাপনী বক্তব্য দেন কলামিস্ট জাহেদ উর রহমান।সূত্র: সমকাল।
রায়গঞ্জের কৃষিবিদ সুইট হলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী
মোঃ মুন্না হুসাইন,ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি: অবশেষে প্রতীক বরাদ্দ পেলেন সিরাজগঞ্জ-৩ (রায়গঞ্জ-তাড়াশ) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের সহ-সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন সুইট। গত বৃহস্পতিবার ২১ ডিসেম্বর সকালে জেলা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান তাকে ঈগল প্রতীক বরাদ্দ দেন। এ সময় সাখাওয়াত হোসেন সুইটের স্ত্রী মমতাজ বেগম, দুই সন্তান আব্দুল্লাহ আর-রাফী ও নাসিফ আহমেদ লাবিব ও তাড়াশ-রায়গঞ্জের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
ঈ্রতীক বরাদ্দের পর সাখাওয়াত হোসেন সুইট বলেন, হাইকোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চে রিট করার পর আমার মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আমি ন্যায় বিচার পেয়েছি। আমি দীর্ঘ দিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। দেশের বিভিন্ন এলাকার প্রত্যন্ত অঞ্চলে কৃষকদের সঙ্গে কাজ করেছি। আমাদের এই আসন (সিরাজগঞ্জ-৩) রায়গঞ্জ-তাড়াশ কৃষি অধ্যুষিত এলাকা। এখানকার মানুষের জীবন-জীবিকার একমাত্র অবলম্বন কৃষি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে রায়গঞ্জ-তাড়াশের মানুষের জন্য আমি কাজ করেছি, কৃষকদের সঙ্গে মিশেছি। এবারের নির্বাচনে দল আমাকে মনোনয়ন দেয়নি। তবে নেত্রী আমাকে স্বতন্ত্র ইলেকশন করার সুযোগ করে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, কৃষকরা আমাকে ভালোবাসে। এ এলাকার মানুষ আমাকে চায়। তাদের চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি। আমি স্বতন্ত্র নির্বাচন করলেও আওয়ামী লীগেরই লোক। দলের নেতাকর্মীরা আমার সঙ্গেই আছেন।আমি একজন জনপ্রতিনিধি না হয়েও রায়গঞ্জ ও তাড়াশ এলাকার প্রান্তিক জনগণের জন্য অনেক কাজ করেছি। তাই আগামী ৭ জানুয়ারি তাড়াশ-রায়গঞ্জের জনগণ ঈগল প্রতীকে ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করবেন বলে আশা করি।
তাড়াশে সাহিত্য সম্মেলন ও বই মেলার প্রস্তুতি সভা
আব্দুল কুদ্দুস তালুকদার : গত শনিবার ২৩ ডিসেম্বর তাড়াশ উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরী হলরুমে সকাল ১১টায় আগামী বছরের ফেব্রæয়ারিতে তাড়াশে একুশে বই মেলা ও সাহিত্য সম্মেলনের প্রস্তুতি উপলক্ষে প্রথম আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন সাপ্তাহিক চলনবিল বার্তা সম্পাদক ও কবি-লেখক আবদুর রাজ্জাক রাজু।
এতে স্থানীয় কবি-সাহিত্যিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মুত্তালিব শিশির, বরেন্দ্র গ্রæপের নির্বাহী পরিচালক সাইফুল ইসলাম, সনজু কাদের,আজগর আলী, জয়নাল আবেদীন জয়, সাইফুল ইসলাম, আসাদুজ্জামান, এনজিও কর্মী সাইফুল ইসলাম, ফিরোজা ইয়াছমিন, শহিদুল ইসলাম শাকিল, জহির উদ্দীন মাস্টার, গোলাপ হোসেন,শহিদুল ইসলাম, মাসুূদ পারভেজ,আব্দুল কুদ্দুস তালুকদার,সাইদুর রহমান সাইদ,আমানুল্লাহ আশরাফ,জহির উদ্দীন, হেলাল উদ্দীন, আবু সামা প্রমূখ। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে আবদুর রাজ্জাক রাজুকে আহবায়ক, সাইফুল ইসলাম ও মুত্তালিব শিশিরকে যুগ্ম আহবায়ক মনোনীত করে সাহিত্য সম্মেলন এবং বই মেলার আহবায়ক কমিটি গঠিত হয় যে কমিটির সদস্য থাকবেন সভায় উপস্থিত সবাই। এই বৈঠকে প্রাথমিকভাবে কিছু প্রস্তাব গৃহীত হয়। সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, আগামী ২৯ ডিসেম্বর শুক্রবার বিকাল ৩টায় একই স্থানে আবার মিটিংএ বসবে আহবায়ক কমিটি সাহিত্য সম্মেলন ও বই মেলার কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণ করার লক্ষ্যে। সংশ্লিষ্ট সকলকে ও আগ্রহী সবাইকে যথাসময়ে উক্ত সভায় উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে
অনাস্থা প্রস্তাব আইনের পরিপন্থি ও সাংঘর্ষিক
ছোটন আহমেদ ও আরিফুর রহমান, তাড়াশ : গত ২১ ডিসেম্বও ২০২৩ইং তারিখ বৃহস্পতিবার সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শরীফুল ইসলাম তাজফুলের বিরুদ্ধে সদস্যদের সঙ্গে সমন্বয়হীনতা, নিয়ম শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও অনিয়মের অভিযোগে যে ১০ জন সদস্য অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন তা জেলা পরিষদের আইনের পরিপন্থি ও সাংঘর্ষিক বলে প্রাথমিকভাবে জানা যায়।
জেলা পরিষদ আইনের ধারা ১০-এর উপ-ধারা ২-এর (১) এ বর্ণিত কোন কারণে তাঁহার (চেয়ারম্যানের) পদ হইতে অপসারণ করা যাইবে না, যদি বিধি অনুযায়ী তদুদ্দেশ্যে আহত পরিষদের বিশেষ সভায় মোট সদস্য সংখ্যার অন্যূন দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে তাহার অপসারণের পক্ষে প্রস্তাব গৃহীত এবং প্রস্তাবটি সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তদন্তের পর উহা সরকার কর্তৃক অনুমোদিত না হয়।তবে শর্ত থাকে যে, উপ-ধারা (১) এর দফা (গ) এ বর্ণিত কারণে চেয়ারম্যান বা কোন সদস্যকে অপসারণের জন্য উক্তরূপ প্রস্তাব গ্রহণের প্রয়োজন হইবে না:আরও শর্ত থাকে যে, উক্তরূপ সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে চেয়ারম্যান বা উক্ত সদস্যকে প্রস্তাবিত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কারণ দর্শাইবার জন্য যুক্তিসঙ্গত সুযোগ দান করিতে হইবে।উপরোক্ত আইনের বিধি অনুযায়ী জেলা পরিষদ, সিরাজগঞ্জ চেয়ারম্যান ও সচিবের উপস্থিতিতে পরিষদের বিশেষ কোন সভা না করে অনাস্থার প্রস্তাব বা প্রয়োজনীয় তদন্ত ছাড়া বা চেয়ারম্যানকে প্রস্তাবিত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর জন্য যুক্তিসঙ্গত কোন সুযোগ দান না করেই ১০জন সদস্য শুধুমাত্র তাদের স্বাক্ষর করে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আনিসুর রহমানের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবের কাছে অনাস্থা প্রস্তাবটি জমা দেন। যাহা সম্পূর্ণ অবৈধ, আইন পরিপন্থি এবং পরিষদের আইনের সাথে সাংঘর্ষিক। আইন অবজ্ঞা বা অমান্য করার সামিলও বটে। উক্ত অনাস্থা প্রস্তাবের ভিত্তিতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পরিষদের রেজুলেশন বইয়ে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত লেখা নেই। বাহির থেকে ক্রয়কৃত বইয়ে লিখে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শরীফুল ইসলাম তাজফুলের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব দাখিল করেন সদস্যবৃন্দ।
রেজুলেশন বইয়ে ১০ জনের শুধু নাম ও স্বাক্ষর থাকলেও ঐ পাতায় কোন সিদ্ধান্ত লেখা নেই। এমনকি প্রতিষ্ঠানের নাম, সভা অনুষ্ঠানের স্থান/ঠিকানা, সময় ও তারিখ কিছুই উল্লেখ নেই। এ ব্যাপারে সিনিয়র সদস্য মোঃ মোসলেম উদ্দিনকে অনাস্থা প্রস্তাবে স্বাক্ষর করেছেন কি না জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, পরিষদে উপস্থিতির স্বাক্ষর দিয়েছি। কোন অনাস্থা বা অপসারণের জন্য স্বাক্ষর দেইনি।৩০ নভেম্বর ১নং প্যানেল চেয়ারম্যান তাজফুল ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পাওয়ার পর তিনি ১৯ ডিসেম্বর মিটিং আহ্বান করে ১৪ ডিসেম্বর নোটিশ জারি করেন। সেই ১৯ ডিসেম্বর মিটিংয়ে কোরাম না হওয়ায় মিটিংটি স্থগিত করা হয়। এরপর ২১ ডিসেম্বর অনাস্থা প্রস্তাবে আমি মত না দিয়ে চলে আসি। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থার অভিযোগ যুক্তিসংগত হয়নি বলে আমি মনে করি। তাই আমি অনাস্থা প্রস্তাবের সাথে একমত নই। জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনিসুর রহমানকে জেলা পরিষদের বিশেষ সভা ও অনাস্থা প্রস্তাবের মিটিং সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, আমি উক্ত মিটিং-এ উপস্থিত ছিলাম না। ২১ ডিসেম্বর আমি অফিস শেষে আসার আগ মুহূর্তে আমার কাছে একটি অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিয়েছে। ছুটির পর আমি যাচাই বাছাই করে দেখবো।
“অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান” প্রকল্প
তাড়াশে শ্রমিকরা কাজ করেও টাকা পায়নি
গোলাম মোস্তফা : সিরাজগঞ্জের তাড়াশের আট ইউনিয়নে চলমান ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে “অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান” কর্মসূচির আওতায় ১ম পর্যায়ের প্রকল্প বাস্তবায়নে ৪০ দিনের কাজের ৩৪ দিন পেড়িয়ে গেছে (২৬ ডিসেম্বর) মঙ্গলবার। কিন্তু কোনো টাকা পাননি অতি দরিদ্র শ্রমিকরা। বিশেষ করে, নারী শ্রমিকরা কাজের মজুরি না পেয়ে খেয়ে না খেয়ে বহু কষ্টে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, তাড়াশের আট ইউনিয়নে ৩ কোটি ১১ লাখ ৬৮ হাজার টাকা ব্যয়ে ২৪ টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এসব প্রকল্পে কাজ করছেন ৯৭৪ জন শ্রমিক। এদের অধিকাংশই নারী শ্রমিক। সরেজমিনে গতকাল মঙ্গলবার তাড়াশ সদর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামে দেখা গেছে, বোয়ালিয়া কাঁচা সড়কে মাটি ফেলার কাজ করছেন এক দল নারী শ্রমিক। সড়কের বেশটা দূরের একটি গর্ত থেকে মাটি কেটে সড়কে ফেলছেন তারা।এ দলের সালমা খাতুন নামে এক জন শ্রমিক বলেন, আমার প্রতিদিন ওষুধ খেতে হয়। কিন্তু কাজের মজুরি না পেয়ে ওষুধ খেতে পারছিনা। দিনকে দিন অসুখ বাড়ছে।
ছাবিহা নামে আরেক জন শ্রমিক বলেন, আমার ডায়াবেটিস। টাকার অভাবে চিকিৎসা নিতে পারছিনা। সমস্ত শরীরে ঘা বেড়িয়ে পড়েছে। ফাতেমা খাতুন বলেন, এক দিনের ভাত খাওয়ার চাল আমার ঘরে নেই। যাদের সঙ্গে কাজ করছি একটু করে চাল হাওলাত দেন। তাই দিয়ে খাবার জোটে। এ মাটি কাটা দলের সর্দার মমতা খাতুন বলেন, ২১ জন নারী শ্রমিক কাজ করছি এক দলে। ১৬ই ডিসেম্বর ও বড় দিনের ছুটি বাদে ৩৪ দিন কাজ করা হয়ে গেছে। কিন্তু মজুরি পাইনি। আমাদের প্রায় সবার সংসারের অবস্থা দিন আনি দিন খাই।জানা গেছে, অন্যান্য ইউনিয়নের প্রল্পের শ্রমিকরাও ৪০ দিনের কাজের ৩৪ দিনের টাকা না পেয়ে বহু কষ্টে জীবনযাপন করছেন। তালম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক বলেন, কোনো কোনো ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিল জমা দিতে দিরে করে ফেলেছেন। এ প্রসঙ্গে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. ফরহাদ লতিফ বলেন, সমস্ত প্রকল্পের বিল জমা দেওয়া হয়েছে। শিগ্গিরই শ্রমিকদের মজুরির টাকা পাওয়া যাবে।
শুকুর মাহমুদ এর লেখা শেষ কবিতা
মেঘাচ্ছন্ন বিকেলের আকাশ
বীরমুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ শুকুর মাহমুদ
(মৃত্যুর পূর্বে কবির সর্ব শেষ লেখা কবিতা)
জীবনের সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত-
আকাশটা পরিষ্কার ছিলো।
ছুটেছি দিগন্ত পেরিয়ে-
সীমাহীন দৌড়-ধাপ আনন্দ বিনোদন
বাঁধহীন বেপরোয়া সারাক্ষণ।
ভাবিনি এমন বিকেল আসবে কখনো
দেখছি জীবনের দুপুর গড়িয়ে পড়ন্ত বিকেল।
ক্রমশ ধেয়ে আসছে অশুভ দমকা বাতাস
মেঘাচ্ছন্ন হয়ে যাচ্ছে বিকেলের আকাশ।
পাশে যারা ছিলো তারা অনেকেই নেই-
চলে গেছে ওপারে।
অদৃশ্য বিদ্যুতের চমকানি-
প্রাণটা দুরুদুরু শুধুই যন্ত্রণা দিচ্ছে।
এখন দৃষ্টিপাত পশ্চিম দিগন্তে-
সময় মত অস্তমিত হবে জীবনের সূর্যটা
মেঘাচ্ছন্ন বিকেলের আকাশ।
প্রত্যাশা
বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ শুকুর মাহমুদ
(মৃত্যুর অনেক আগে লেখা কবির কবিতা)
জগতের আশা লোভ মোহ লালসা – মানব জীবনে বেঁচে থাকার প্রত্যাশা
দম ফুরালেই শেষ হবে সকল আশা – তবুও থাকবে আমার যে প্রত্যাশা।
হে মুমিন মুসলিম দ্বীনি ভাই – মউতের আগে কিছু কথা বলে যাই
যদি কেউ আসতে করে দেরি – তার প্রতীক্ষায় না থেকে, সমাহিত করবে তাড়াতাড়ি।
গোসল করায়ে কাফন পড়াবে- দাফন করবে মউতের কল্যাণে
ভিন্ন এলাকায় কিংবা প্রবাসে যদি হয় মরণ- বহন করিও না লাশ জন্মস্থান করিতে স্মরণ।
অনতি বিলম্বে করিও দাফন- জোগায়ে মউতের কাফন
যদি উচ্চ স্বরে মউতের বিলাপ করে -ভালোবাসার ছলে বিপরীত হবে ওপারে।
স্বজোরে করিও না আওয়াজ মরদেহ বহনে- মনে মনে পড়িও কালেমা ওপারের কল্যাণে
বেগানা নারী যদি না দেখে মউতের মুখ- তাতে হতে পারে পরোকালের সুখ।
বাঁশ কাটবে-তালাই বহনে -ধুমপায়ী কেউ না আসুক কবরের আয়োজনে
জানাযা পড়াবে স্বজনে কিংবা আলেমে- জানাযা-ই দোয়া হয় মউতের কল্যাণে।
কোরআন ও সুন্নাহে কয় -মউতের জানাযা একবারই হয়
প্রীতিভোজ-জিয়ারত করবে না সামাজিকতায়- কোরআন সুন্নাহে যদি না কয়।
দান খয়রাত শোধিও দু’হাত ভরে- অভূক্ত জনেরে ভোজন করাবে উদর পূর্ণ করে
ইসলাম পরিপন্থি কিছু করবেনা মরণে- এই প্রত্যাশা আমার রাখিও স্মরণে।
কবরে পাকা কাজ সৌধ নির্মান যেন না হয় -চাদর আগর বাতি পুষ্পস্তবক দিও না আমায়
সমাধিতে মোম-আগরবাতি দিয়ে জ্বালায় আগুন – বাড়বে শাস্তি জ্বলবে দ্বিগুণ।
মুমিন মুসলিম আত্মীয়-স্বজন -করিও দোয়া কবরের পাশে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ
থাকবে না যেদিন কোন লোভ-লালসা -তখনো থাকবে আমার এ প্রত্যাশা।
তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ শুকুর মাহমুদ
আবদুর রাজ্জাক রাজু
আর শুনতে পাবোনা সেই দরদী কন্ঠস্বর
আসসালামু আলাইকুম, ভাই কেমন আছেন
লেখা পাঠালাম ধর্ম সম্পর্কে, মানবতা বিষয়ে–
দেখে মন্তব্য জানাবেন, পারলে ছাপাবেন
সাপ্তাহিক চলনবিল বার্তায়।
প্রায় প্রতিদিন তিনি মোবাইল করতেন
আর কথা শেষ হলে বলতেন-
আচ্ছা ভাই- দোয়া চাই।
কখনো আমি অফিসে কিংবা বাসায়
না থাকলে এবং ফোন রেখে গেলে
আমার সহধর্মিণী তার কল রিসিভ করলে
জিজ্ঞেস করতেন- কবি কোথায়, ফিরবে কখন?
তাড়াশের আরেক কবি আমানুল্লাহ আশরাফ
তাকেও যখন-তখন ফোন করতেন এবং
যেদিনই যে লেখাটা তিনি রচনা করেছেন তার
সারমর্ম ওকে শুনাতেন।
সর্বশেষ ২০ নভেম্বর তিনি আমানুল্লাহকে
রাত ৮ টার দিকে মোবাইল করে “প্রত্যাশা” কবিতা
লেখার কথা জানান যা তিনি পূর্বে ফেসবুকে পোস্ট
করেছিলেন – হায় – এমন আল্লাহওয়ালা লোক
সেই প্রত্যাশা কবিতায় তিনি তার জীবন,
মৃত্যু, কামনা-বাসনা,প্রত্যাশা এমনকি সুস্পষ্ট
বিদায়ের আভাস ইঙ্গিত করে ঐ রাতে
ভোর হওয়ার দিকে তিনি চলে গেলেন পরপারে।
তিনি শুধু নীতি কথা লিখেন নি
ছিলেন পুরোদস্তর নীতিবানও
যিনি শুধু আদর্শের বাণী লিখেন নি
ছিলেন আপাদমস্তক আদর্শের অনুসারী।
তিনি শাহজাদপুরের সৈয়দ শুকুর মাহমুদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা, কথাসাহিত্যিক, কলামিষ্ট, লেখক, চিন্তাবিদ, গবেষক
বহুমাত্রিক গুণীজন – চলনবিলের আর এক জ্যোতিষ্ক
চিরতরে খসে পড়লো জীবন ও লেখালেখির দিগন্ত থেকে ।
৩ দিনের ভোট বর্জনের প্রচার চালাবে বিএনপি ও সমমনারা
ডেস্ক রিপোর্ট: ভোট বর্জন ও অসহযোগের পক্ষে জনমত গড়তে আজ থেকে ফের তিন দিনব্যাপী রাজধানীসহ সারা দেশে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করবে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো। রাজধানীর বিভিন্ন স্পট, মার্কেট, দোকান, রেস্তরাঁ, গণপরিবহন ও জনসমাগম এলাকায় বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেবেন। এছাড়া যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সমমনা শরিক দল ও জোটের নেতারাও ভোট বর্জনের প্রচারপত্র বিলি করবেন। এদিকে জামায়াত ও বাম রাজনৈতিক দলগুলো ভোটবর্জনের দাবিতে রাজধানীর বিভিন্ন স্পটে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করবে।
বিএনপি’র সূত্র জানিয়েছে, একতরফা ভোট বর্জন ও অসহযোগের পক্ষে জনমত গড়তে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচিকেই গুরুত্ব দিচ্ছে হাইকমান্ড। তাই হরতাল অবরোধ না দিয়ে গত মঙ্গল, বুধ ও আজ বৃহস্পতিবার গণসংযোগ কর্মসূচি দিয়েছে। শুক্র ও শনিবারও একই কর্মসূচির ঘোষণা আসতে পারে। ১লা জানুয়ারি থেকে ৭ই জানুয়ারি ভোটের দিন পর্যন্ত চূড়ান্ত ধাপের কর্মসূচি দেবে বিএনপি। সেজন্য শীঘ্রই দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হবে।সূত্র: মানবজমিন।
পাকিস্তানে ফতোয়া জারি -টিকটক হারাম
ডেস্ক রিপোর্ট ঃ পাকিস্তানের করাচির ইসলামিক প্রতিষ্ঠান জামিয়া বিনোরিয়া টাউন, জনপ্রিয় শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটককে হারাম ঘোষণা করে ফতোয়া জারি করেছে। অ্যাপটি আধুনিক সময়ের সবচেয়ে বড় প্রলোভন আখ্যা দিয়ে এর ব্যবহারকে অবৈধ বলেও ঘোষণা করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
পাকিস্তান টেলিকমিউনিকেশন অথরিটি ২০২১ সালে অ্যাপটিকে পাঁচ মাসের জন্য নিষিদ্ধ করেছিল। পরে আপত্তিকর বা অনৈতিক বিষয়বস্তুর ওপর নিয়ন্ত্রণ জোরদারের বিষয়ে টিকটক কর্তৃপক্ষ প্রতিশ্রæতি দিলে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়।ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ পূর্বে অনৈতিকতার অভিযোগে টিকটক নিষিদ্ধ করার দাবি করেছিল। জামিয়া বিনোরিয়ার জারি করা অনলাইন ফতোয়া অনুযায়ী টিকটক শরীয়াহ অনুসারে হারাম ও আধুনিক যুগে ফিতনা (প্রলোভন) বাড়াচ্ছে।প্রদত্ত কারণগুলোর মধ্যে একটি হল, শরিয়া আইন অনুযায়ী পশুদের ছবি ও ভিডিও নিষিদ্ধ যা অ্যাপটিতে রয়েছে। নারীরা অ্যাপটিতে পর্নোগ্রাফিক ভিডিও বানিয়ে সেগুলো শেয়ার করে।
এছাড়াও টিকটকে নাচ ও গানের ভিডিও আপলোড করে থাকে নারী পুরুষ সকলেই যা শরিয়াহ মোতাবেক নিন্দনীয়। এই অ্যাপের কারণে সময় অপচয় ও নৈতিক অবক্ষয় ঘটে। এ ধরনের অভ্যাস অশ্লীলতা ও নগ্নতা ছড়ায়।জামিয়া বানোরিয়ার জারি করা ফতোয়ায় জোর দেওয়া হয়েছে যে টিকটক হল এমন একটি জায়গা যেখানে শিক্ষা ও ধর্মকে নিয়ে মজা করে ভিডিও বানানো ছাড়াও যে কোনো বিষয় নিয়ে উপহাস করে ভিডিও বানিয়ে আপলোড দেওয়া যায়।ফতোয়ায় আরও বলা হয়েছে, টিকটক ব্যবহার করার মাধ্যমে অবশ্যই শরিয়া মোতাবেক নিষিদ্ধ এমন কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়া স্বাভাবিক। এই ধরনের অপরাধ করা থেকে বিরত থাকা কার্যত কঠিন। তাই টিকটক ব্যবহার করা নিষিদ্ধ। সূত্রঃ ইত্তেফাক অনলাইন।
উল্লাপাড়া পৌরসভায় পানি প্ল্যান্ট ছবি
ডাঃ আমজাদ হোসেন ,উল্লাপাড়া প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া পৌরসভায় আগামী বছরের মাঝামাঝি চালু হবে বিশুদ্ধ পানি প্ল্যান্ট। এটি চালু হলে প্রথম ধাপে পৌর এলাকার প্রায় তিন হাজার পরিবার পাইপ লাইনের মাধ্যমে সুপেয় বিশুদ্ধ পানি পাবে। এই প্রকল্পে বরাদ্দ প্রায় সাড়ে ২৭ কোটি টাকা।
পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, প্রথম শ্রেণির পৌরসভা এলাকা উল্লাপাড়ায় বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ প্রকল্পের কাজ ২০২০ সালের নভেম্বরে শুরু হয়। প্রকল্পটি জিওবি, বিশ্ব ব্যাংক, এআইআইবি অর্থায়নে বাস্তবায়ন করছে উল্লাপাড়া জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। এর সারফেজ ওয়াটার টিট্রমেন্ট প্ল্যান্ট ঘাটিনা এলাকায় করতোয়া নদী পাড়ে এবং পৌরসভা এলাকার হাটখোলায় ওভারহেড ট্যাংকিসহ আরেকটি প্ল্যান্ট নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়। দুই ধাপে ব্যয় বরাদ্দের পরিমাণ প্রায় সাড়ে ২৭ কোটি টাকা।
জানা গেছে, পৌরসভার ঘাটিনা এলাকায় করতোয়া নদী থেকে পানি তুলে সেখানকার প্ল্যান্টে বিশুদ্ধ করা হবে। পরে সেই পানি পাইপলাইনের মাধ্যমে হাটখোলায় ওভারহেড ট্যাংকিতে সরবরাহ করা হবে। ট্যাংকি থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে পূনরায় পৌরসভায় বসতিদের বাসা বাড়িতে সরবরাহ দেওয়া হবে। উল্লাপাড়া পৌরসভায় এখন মোট বসতি পরিবার সংখ্যা প্রায় সাড়ে বারো হাজার। এর মধ্যে প্রথম ধাপে প্রায় তিন হাজার পরিবার পাইপ লাইনের মাধ্যমে সুপেয় পানি সরবরাহ পাবে।
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নির্বাচন
শাহজাদপুর প্রতিনিধি: ২০২৪ বর্ষে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. ফখরুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. রিফাত-উর-রহমান।
সমিতির সহ-সভাপতি পদে সহকারী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তানভীর আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ পদে মো. মাইনুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক পদে শারমিন সুলতানা নির্বাচিত হয়েছেন। নতুন কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন চার সহকারী অধ্যাপক। তারা হলেন, বরুণ চন্দ্র রায়, বিজন কুমার, নুসরাত জাহান, দেবশ্রী দোলন।প্রতিদ্ব›দ্বী কোন প্যানেল না থাকায় নির্বাচনে সকল পদেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফখরুল-রিফাত পূর্ণ প্যানেল বিজয়ী হয়।গত রোববার (১৭ ডিসেম্বর) নবনির্বাচিত সদস্যরা দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। এই কমিটি দায়িত্ব পালন করবেন আগামী ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।
সমর্থন প্রদানের জন্য কমিটির সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে নবনির্বাচিত সভাপতি ড. মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, সাংস্কৃতিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় তার অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখেছে। আদর্শ বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণে শিক্ষকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি প্রত্যাশা করে বলেন, আশা করি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের নামের প্রতি সুবিচার করা সম্ভব হবে। বিশ্বজনের নিকট রবীন্দ্রনাথকে চিরসমুজ্জ্বল রাখতে এই বিশ্ববিদ্যালয় সদা সচেষ্ট থাকবে।
উল্লাপাড়ায় নৌকার প্রার্থীর মাজার জিয়ারত
উল্লাপাড়া প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতিকের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম প্রতিক বরাদ্দ পেয়ে অগত সোমবার দুপুর পর গয়হাট্রা বার আউলিয়া মাজার শরীফ জিয়ারত করেছেন।
উপজেলার পূর্ণিমাগাতী ইউনিয়নের এ মাজার শরীফ জিয়ারত মাধ্যমে নির্বাচনী সভা ও দোয়া মাহফিল হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ-৪ (উল্লাপাড়া) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতিকের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম এর সাথে মাজার শরীফ জিয়ারতে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফয়সাল কাদের রুমি , নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মাহবুব সরোয়ার বকুল , পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি পৌর মেয়র এস এম নজরুল ইসলাম , উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা শফিউল আলম হেভেন , আওয়ামী লীগ নেতা আহসান আলী সরকার , আমিনুজ্জামান অলক , রাশেদুল ইসলাম প্রমুখ।
তাড়াশে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌয়ালরা
ভ্রাম্যমান প্রতিনিধিঃ বর্তমানে তাড়াশ উপজেলার মাঠ জুড়ে শোভা পাচ্ছে সরিষার হলুদ ফুলের বাহার। সরিষা ফুলের মৌ মৌ গন্ধে মুখরিত উপজেলার প্রতিটি সরিষার মাঠ। শীতের শিশির ভেজা সকালে কুয়াশার চাদরে ঘেরা বিস্তীর্ণ প্রতিটি মাঠ যেন কবির লেখা হলুদ গাঁদার একখানা চিঠি।
যতদুর দৃষ্টি যায় শুধু সরিষা ফুলের হলুদ রঙের চোখ ধাঁধাঁনো বর্ণীল সমারোহ। সরিষা ক্ষেতের মৌমাছির গুনগুন শব্দ প্রকৃতিতে অন্যমাত্রা যোগ করেছে। সরিষার ফুলের রেণু থেকে মধু সংগ্রহ আর প্রজাপতির এক ফুল থেকে আরেক ফুলে ছোটাছুটি এক অপরূপ প্রাকৃতিক দৃশ্য সত্যিই যেন মনোমুগ্ধকর এক মূহুর্ত। দিগন্তজোড়া সরিষার হলুদের সমারোহ দূরন্ত পথিকের কিছুটা হলেও ছবি তোলার তৃষ্ণা মিটাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুলাহ আল মামুন জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১০হাজার ২শত ১০হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছিলো। তবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রেকর্ড পরিমাণ জমিতে উন্নত জাতের সরিষা চাষের সম্ভাবনা রয়েছে। ইতিমধ্যেই বেশির ভাগ জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে। তবে আগাম জাতের সরিষায় ফুল আসাও শুরু করেছে। এমন লাভজনক তৈল জাতীয় ফসল চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে চলতি সরিষা চাষের মৌসুমে উপজেলার প্রান্তিক পর্যায়ের ১০ হাজার ২শত জন কৃষককে কৃষি প্রণোদনার অংশ হিসেবে বিনামূল্যে উন্নত জাতের সরিষার বীজ ও সার প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সব সময় পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। এবার সরিষার বাম্পার ফলনের সঙ্গে বাজারে দামও ভালো পাবেন সরিষা চাষীরা এমনটিই আশা করা হচ্ছে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে। বর্তমানে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৫হাজার ৫শত বক্সের মাধ্যমে সংগ্রহ করছেন মৌয়ালরা।
ভাঙ্গুড়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচনী অফিস উদ্বোধন
ভাঙ্গুড়া প্রতিনিধি: পাবনা-৩ (ভাঙ্গুড়া,ফরিদপুর ও চাটমোহর)আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল হামিদ মাস্টারের ট্রাক মার্কা প্রতীকের নির্বাচনী অফিস উদ্বোধন করা হয়েছে।গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ৭ টার দিকে ভাঙ্গুড়া পৌরসভার বড়ালব্রিজ ষ্টেশন বাজার এলাকায় এ অফিস উদ্বোধন করা হয়।
ভাঙ্গুড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেনের সভাপতিত্বে নির্বাচনী অফিস উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, পাবনা-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি আব্দুল হামিদ মাস্টার। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন,জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ডা: গোলজার হোসেন, ভাঙ্গুড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র আব্দুর রহমান প্রধান,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ,মন্ডতোষ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আফছার আলী মাস্টার,সাবেক অধ্যক্ষ আব্দুল জলিল, ভাঙ্গুড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মতিউর রহমান ফকির,ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম মেম্বার প্রমুখ। নির্বাচনী অফিস উদ্বোধন শেষে স্বতন্ত্র প্রার্থী
আব্দুল হামিদ মাস্টার আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে পৌরশহরের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন।
তাড়াশে শীতের সবজির দাম দ্বিগুণ
বিশেষ প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জের তাড়াশের হাট-বাজারে শীতের সবজির দাম বেড়েছে। গত দুই দিনের ব্যবধানে বেগুন, শিম ও ফুলকপিসহ বেশকিছু সবজি দ্বিগুণ দামে বেচাকেনা হচ্ছে। এদিকে কমেছে পিয়াজ ও আলুর দাম। বিশেষ করে, শীতকালীন সবজির হঠাৎ চড়া মূল্যে বিপাকে পড়েছেন নি¤œআয়ের লোকজন। অপরিবর্তিত রয়েছে মুলা, পটল ও কাঁচা মরিচের দাম।
প্রসিদ্ধ বিনসাড়া হাটের কাঁচামাল ব্যবসায়ী মন্টু, বকুল, আব্দুল গনি, মিলন ও জহুরুল ইসলাম জানান, গত রবিবার থেকে পাইকারী বাজারে সবজির দাম বেড়েছে। ফলে স্থানীয় হাট-বাজারে প্রভাব পড়েছে। সরবরাহ না বাড়লে দাম কমার সম্ভাবনা নেই। আলু, পিয়াজের দাম কিছুটা কমেছে। বিনসাড়া গ্রামের আসলাম মোল্লা, আব্দুল হান্নান, আলমগীর হোসেন ও পেঙ্গুয়ারি গ্রামের সবের আলী, ফারুক হোসেন জানান, দুই দিন আগেও ১০০ টাকায় ৫ ধরনের ৫ কেজি সবজি পাওয়া গেছে। সবজিতে বাজারের ব্যাগ ভরে যেত। শীত বাড়ছে, অথচ শীতকালীন সবজির দামও বাড়ছে। এতে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন তারা। সরেজমিনে বিনসাড়া হাট ও তাড়াশ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, হাটে-বাজারে সবজির সল্পতা রয়েছে। লোকজন সবজি কেনার জন্য এ দোকান-ও দোকানে দর কষাকষি করছেন।
কাঁচা মালের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গত শুক্র-শনিবার দিনও বেগুন ২৫, ফুলকপি ২৫ ও শিম ৪০ টাকা কেজি বিক্রি করেছেন। কিন্তু রবিবার থেকে শিম ৮০, বেগুন ৭০, ফুলকপি ৪০ টাকা কেজি বিক্রি করছেন। কদু, করল্লা, গাজরসহ আরো কিছু সবজির দামও বেড়েছে। নতুন আলু ও পিয়াজের দাম কেজিতে ২০ টাকা কমেছে। আলু বিক্রি করছেন ৬০ টাকা কেজি। পিয়াজ ১০০ টাকা কেজি।এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, স্থানীয় কৃষকদের আগাম চাষের সবজি শেষের দিকে। পাইকারি বাজারেও দাম বেড়েছে। এজন্য লোকজনের একটু বেশী টাকা গুণতে হচ্ছে সবজি বাজারে।
সলঙ্গায় গরম কাপড় কেনাবেচা জমজমাট
ফারুক আহমেদ ঃ ভোরের শিশির আর হিমেল হাওয়া জানিয়ে শীত এসেছে আবার বছর ঘুরে। তাইতো শীত নিবারণের ও উষ্ণতা পাওয়ার জন্য ফুটপাতে ভীর করছে নিম্ন আয়ের মানুষ। সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা সদরসহ বিভিন্ন হাট – বাজারে ফুটপাতে বসা গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে নিম্ন আয়ের ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। এই দোকানগুলি থেকে বেছে বেছে তারা তাদের পছন্দের পোশাক কিনছে। এখানে স্বল্পমূল্যে পাওয়া যাচ্ছে সোয়েটার, জ্যাকেট, মাফলার, কোট, প্যান্ট, কানটুপিসহ বিভিন্ন প্রকার শীতবস্ত্র।মূলত শীতের কারণে এই সমস্ত গরম কাপড়ের ব্যাপক চাহিদা বেড়েছে। এ কারণে ফুটপাতে দোকানিরা কম দামের কাপড়ের পসরা বসিয়েছে। এসব কাপড় ব্যবসায়ীরা ঢাকা থেকে ক্রয় করে নিয়ে এসে বিক্রি করছে বলে জানান। শীতের তীব্রতা বাড়লে চাহিদা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে জানিয়েছে ব্যবসায়ীরা।
দোকানদার আব্দুল কুদ্দুস মিয়া জানান গত ১১ বছর ধরে তিনি সলঙ্গাসদর বাজারসহ বিভিন্ন হাট-বাজারের ফুটপাতে কাপড় বিক্রি করছেন। বেচাকেনা মোটামোটি ভালোই হয়। রফিকুল ইসলাম নামের এক ক্রেতা বলেন ১০০ থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে শীতের কাপড় পাওয়া যায় এখানে।তিনি আরো জানান আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষ ফুটপাতে কম টাকায় কিনতে পেরে স্বস্তিবোধ করছে।
সভায় উপস্থিত থাকার অনুরোধ
তাড়াশে বইমেলা ও সাহিত্য সম্মেলন আয়োজনের উদ্দ্যেশ্যে প্রস্তুতি ও কর্ম পরিকল্পনা বিষয়ক পরবর্তী সভা আগামী ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ইং তারিখ রোজ শুক্রবার বিকাল ৩টায় তাড়াশ উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরীতে অনুষ্ঠিত হবে। সভায় সংশ্লিষ্ট সকল সদস্য এবং আগ্রহী সবাইকে যথাসময়ে উপস্থিত থাকার জন্য বিশেষ অনুরোধ জানানো হচ্ছে। – আবদুর রাজ্জাক রাজু, আহবায়ক।