সাপ্তাহিক চলনবিল বার্তা, সংখ্যা ১৩, ২০২৩

Spread the love

ও মানুষ! চলনবিলের নদ-নদীর কান্না শুনতে কী পাও ? 
মোঃ আবুল কালাম আজাদ
নদী আর প্রমত্তা চলনবিল মানুষের বর্বর নির্যাতনে মৃত্যুর প্রহর গুনছে। ও মানুষ,শুনতে কী পাও,নদী আর চলনবিলের কান্না? বড়াল-আত্রাই-নন্দকুঁজা-গুমানি নদীই হচ্ছে উপমহাদেশের বিখ্যাত ঐতিহাসিক চলনবিলের প্রাণ ।এই ‘চলনবিল’কে বাঁচাতে হলে সবার আগে বাঁচাতে হবে চলনবিলের প্রাণ সঞ্চালনকারি বড়াল-নন্দকুঁজা-আত্রাই ,গুমানি এবং শাখা-উপ শাখা নদ-নদী,জলা-জলাশয়কে।নাব্যতা ফিরিয়ে বাড়াতে হবে পানির প্রবাহ।আমরা কী পারি না নদী আর চলনবিলকে বাঁচাতে? উন্নয়নের নামে নদ-নদী,জলা-জলাশয় দখল-দূষণ নির্যাতনে নদ-নদীর নাব্যতা ও অস্তিত্ব হারিয়ে গুমরে গুমরে ভাষাহীন কান্না করছে। নদ-নদীর প্রবাহ না থাকায় উপমহাদেশের বিশাল জলাভূমি চলনবিলও পানিশুন্য মরুময়। হারিয়ে গেছে মাছ-পাখি,জলজ সম্পদ।পাল্টে গেছে জলবায়ু, পরিবেশ এবং মানুষের জীবনযাত্রা।ঝুঁকিতে চলনবিলের মানুষ ও পরিবেশ।
নদী না বাঁচলে মানুষ বাঁচবে না। তাই মানুষের জীবন রক্ষার্থেই নদীর জীবন বাঁচাতে হবে। বলা হয় নদীর সাথে জীবনের সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। পরিবেশবাদীরা বলছেন, নদী না বাঁচলে চলনবিল, হাওর-বাওর ও পরিবেশ বাঁচবে না। আর পরিবেশ না বাঁচলে মানুষ, প্রাণি , জীববৈচিত্র্য বাঁচবেন া। তাইতো নদীকে বাঁচাতে নানা প্রক্রিয়ায় চলছে আন্দোলন । গড়ে উঠেছে হাজারো সংগঠন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৪ ডিসেম্বর সোমবার নিজ মন্ত্রলায় কক্ষে ঢাকার চার পাশের নদীগুলোর নাব্যতা রক্ষা ও দূষণ রোধে প্রণিত মহাপরিকল্পনার আলোকে সমীক্ষা প্রতিবেদন উপস্থাপন এবং সংশ্লিষ্ট প্রকল্প গ্রহণের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে এক সভায় বলেন,’ দেশকে রক্ষ করতে হলে নদীগুলোকে রক্ষা করতে হবে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’ আমরা যদি বাংলাদেশকে রক্ষা করতে চাই তাহলে আমাদের নদীগুলোকে বাঁচাতে হবে’।এছড়াও তিনি নদ-নদী সুরক্ষায় কঠোর দিকনির্দেশনা দেন। (দৈনিক মানব জমিন,ভোরের ডাক,সময়ের আলো, প্রথম আলো সহ বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত-৫/১২/২০২৩) ।
মানব সভ্যতার উন্নয়ন, জীববৈচিত্র্য এবং পরিবেশই গড়ে উঠেছে নদী কেন্দ্রিক । ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় , পৃথিবীতে যত সভ্যতা গড়ে উঠেছে তা সবই নদীর তীরে।ব্যবসা-বাণিজ্য, শহর, নগর সবই নদীর অবদান। মানুষের আর্থ-সামাজিক, জীব বৈচিত্র্য, পরিবেশ, জলবায়ূ , কৃষি-শিক্ষা সবকিছুর মুলে নদী। দিনে দিনে মানুষ নিজের স্বার্থে নদীর দুই কুলে জেগে ওঠা সিকস্তি-পয়স্তি’ ভূমি বিভিন্ন সময়ে সরকার ,ভুমি খেকো প্রভাবশালী, রাজনৈতিক নেতারা বেপরোয়াভাবে দখল-দূষণ আর নির্যাতন করে নদীর টুটি টিপে মেরে ফেলছে। নদীর সাথে মেরে ফেলেছে ঐতিহাসিক ’চলনবিল’কে। কোন বাধাই মানছে না। আর এর সাথে জড়িত অসাধু ভুমি অফিসের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতা ও প্রভাবশালীরা।
নদী ও নারী নির্যাতন সমানভাবে চলছে। এই নির্যাতন থেকে নদীর জীবনী সত্তাকে রক্ষা করতে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন(বাপা), বেলা, নদীরক্ষা আন্দোলন, চলনবিল রক্ষা আন্দোলন, আত্রাই-গুমানি- নন্দকুঁজা ও বড়াল রক্ষা আন্দোলন ,নারোদ নদ রক্ষা আন্দোলন কমিটি এবং জাতীয় নদীরক্ষা কমিশনসহ বিভিন্ন সরকারি- বেসরকারি সংস্থ নানাভাবে আন্দোলন করে সরকারের প্রতি চাপ সৃষ্টি করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সরকার বিভিন্ন সময়ে আদালতের নির্দেশে কিছু কার্যকরি পদক্ষেপ নিলেও প্রভাবশালী ভূমিখেকোদের কাছে নদী দখল উচ্ছেদ আর দুষন রোধে সরকারের কর্মকর্তারা অসহায় হয়ে পড়েন। সম্প্রতি জাতীয় নদী কমিশনের চেয়ারম্যান নদি দখলে এক মহিলা মন্ত্রীকে ইংগিত করে কথা বলায় চেয়ারম্যানকে পদই হারাতে হলো।
নদীর সঠিক মালিকানা নিয়েও চলছিল টানাহ্যাঁচড়া।নদীর মালিকানা নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) হয়ে উঠেছিল দুর্নিতির রাঘব বোয়াল। কথিত আছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অপরিকল্পিত প্রকল্পের কারণেই নদ-নদীর অপমৃত্যু হয়েছে ও হচ্ছে। নাটোর (গুরুদাসপুর-বড়াইগ্রাম)-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য চলনবিলের কৃতিসন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আলহাজ অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস বড়াল রক্ষা আন্দোলন কমিটি এবং বিভাগীয় সরকারী কর্মকর্তাদের সভায় অত্যন্ত ক্ষোভের সাথে বলেছিলেন “ আমি যদি এক ঘন্টার জন্যেও প্রধানমন্ত্রী হতাম তাহলে সর্বপ্রথম পানি উন্নয়ন বোর্ড বিলুপ্তির ঘোষণা দিতাম।” উক্তিটি যথার্থই ছিল বলে নদী বিশেষজ্ঞদের অভিমত।
মহামান্য হাইকোর্ট নদ-নদীর দখল, দুষন,ভরাট,সংরক্ষন ও ব্যবস্থাপনার বিষয়ে একটি ঐতিহাসিক রায় ঘোষনা করেন যাতে নদীকে জীবন্ত সত্তা বলে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছে। একই সাথে মহামান্য আদালত নদ-নদী, খাল-বিল ও জলাশয়-জলাধারের অবৈধ দখল ও দুষনকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গন্য করার আদেশ জারী করেছেন।রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহন ও প্রজাস্বত্ব আইন ১৯৫০ এর ৮৬ ও ৮৭ ধারা এবং ১৪৯(৪)ধারা অনুসারে জাতীয় নদী কমিশনকে নদীর জীবনী স্বত্বা রক্ষার মালিকানা প্রদান করে ঐতিহাসিক রায় প্রদান করেন। বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাও নদী খেকোদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষনা করেছেন। চলনবিল অঞ্চলের খ্যাতনামা সাহিত্যিক প্রমথনাথ বিশি লিখেছেন. চারশত বছর পুর্বে এই বিলটি রাজশাহী,পাবনা, বগুড়ার অধিকাংশ স্থান জুড়ে বিরাজ করতো। ব্রম্মপুত্র ও পদ্মার সঙ্গমস্থলের পশ্চিম-উত্তোরাংশে চলনবিল বিরাজিত।অবস্থান, আকৃতি ও প্রকৃতিতে দেখা ও বোঝা যায়, চলনবিল প্রকৃতই উত্তর বাংলার নদ-নদী ¯œায়ুজলের নাভি কেন্দ্র। কিন্তু ১৯১৬ সালে পাকশি-সিরাজগঞ্জ এবং পাকশি-শান্তাহার রেল লাইন নির্মাণ করায় বড়াল , আত্রাই- নন্দকুঁজা-গুমানি সহ সংশ্লিষ্ট আরো নদ-নদীর প্রস্থ সংকুচিত হয়ে পড়ে। এখান থেকেই শুরু হয় চলনবিলের নদ- নদীর অপমৃত্যুর উদ্বোধন ।
চলনবিলের প্রান সঞ্চালনকারী (জীবনদায়িনী) অন্যতম প্রধান নদী আত্রাই-বড়াল-গুমানি এবং নন্দকুঁজা নদীর প্রবাহ পরিচিতি প্রজন্মের জানা দরকার। তা হচ্ছে-
আত্রাই নদী নাব্যতা হারিয়ে এখন জোলায় পরিনত ঃ আত্রাই তিস্তার শাখা নদী। দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার উত্তরে এ নদী করোতোয়া নদী নামে প্রবাহিত হচ্ছে। এ নদী ছোট যমুনায় মিশে দক্ষিন-পুর্বে প্রবাহিত হয়ে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চাঁচকৈড় ত্রি-মোহনায় নন্দকুঁজার সাথে মিলিত হয়ে গুমানি নাম ধারন করে পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলার নুননগর এসে বড়ালের সাথে মিশে বড়াল নামে ভাঙ্গুড়া ও বনানি নগর ফরিদপুর উপজেলা হয়ে বেড়া উপজেলার কাছে মুল যমুনায় মিশেছে। এইজন্য আত্রাই নদীকে বলা হয় যমুনার উপনদী।আত্রাই নদী ছোট যমুনা থেকে প্রবাহিত হয়ে, নওগাঁ হয়ে বৃহত্তর চলনবিলের বুকচিরে নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলা হয়ে গুরুদাসপুর উপজেলার পৌরসভার ত্রি-মোহনায় নন্দকুঁজা এবং গুমানি নদীর সাথে মিশেছে। আত্রাই নদীর নামকরনে নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলা নামে একটি উপজেলা এবং রেল ষ্টেশন স্থাপিত হয়েছে। আত্রাই নদীর পাড়ে ভাটরা পতিসরে বিশ্ব কবি রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরের জমিদার বাড়ি অবস্থিত। এখানে বসেই কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘ আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে, বৈশাখ মাসে তার হাঁটু জল থাকে’ কবিতাটি। আত্রাই নদীকে এক কথায় বলা হয় চলনবিলের মূল শিরা । কারন আত্রাই নদীর দীর্ঘ প্রবাহের মাধ্যমেই চলনবিলের উৎপত্তি হয়ে বিস্তীর্ন এলাকাজুড়ে প্রবাহিত হচ্ছে; যা এশিয়া মহাদেশের মধ্যে বৃহত্তর বিল বলে ইতিহাস খ্যাত।আত্রাই নদীর মুল প্রবাহেই চলনবিলের ¯্রােত চলমান আছে আজো। সেই আত্রাই নদীর দুই পাড়ে পলি জমে নাব্যতা হারিয়ে এখন জোলায় পরিনত হয়েছে।
আত্রাই নদীর বহু উপনদী বা শাখা নদী রয়েছে। নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার ডান তীরে ফকিরনি নদী, নাটোরের সিংড়া উপজেলার বাম তীরে গুড়নই নদী এবং গুরুদাসপুর উপজেলার বাম তীরে হরদমা গ্রামে বেশানী নদী বর্তমানে ভাসানী নদী এবং যোগেন্দ্র নগর বাম তীরে মরা আত্রাই নামে শাখা নদী প্রবাহিত। আত্রাই নদীর প্রত্যেক শাখা-উপশাখা দিয়ে পানির ¯্রােত গিয়ে পড়ছে চলনবিলের মধ্যে। এই শাখা-উপ-শাখার ¯্রােতধারার কারনেই চলনবিল চলমান। তাই নাম হয়েছে চলনবিল। আত্রাই নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় ২৫০ কিলোমিটার।
আত্রাই নদীর নাব্যতা উদ্ধারে ড্রেজিং কাজে দুর্নিতী ও অনিয়মের অভিযোগ ঃ পাবনা জেলার বেড়া উপজেলার যমুনা থেকে বড়াল,গুমানী এবং আত্রাই নদীর নাব্যতা উদ্ধারের জন্য অভ্যন্তরিন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের (বিআইডবিøউটিএ) উদ্যোগে ২০১৭ সাল থেকে ড্রেজিং এর কাজ চলছে। নৌপরিবহন মন্ত্রনালয়ের তথ্যমতে বেড়া থেকে শুটকিগাছা রাবারড্যাম পর্যন্ত ১৩৫ কিলোমিটার খনন সম্পন্ন হয়েছে। ড্রেজিং এর কাজে গুরুদাসপুরের নদীরক্ষা আন্দোলন কমিটি, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), সাংবাদিক মহল এবং সচেতন নগরিক সমাজ ব্যাপক দুর্নিতী, অনিয়মের অভিযোগ তুলে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে বিষয়টি দুদক,জাতীয় নদীরক্ষা কমিশন এবং বিআইডবিøউটিএর কর্তৃপক্ষ অভিযোগ আমলে নিয়ে ১১/৪/২০১৯ তারিখে গুরুদাসপুর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে তাঁদের ম্যাপিং জরিপের ভুল স্বীকার করেন এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আশ^াস দেন।
বড়াল নদী ভুমি খেকোদের দখলে ঃ চলনবিলের জীবন সঞ্চালনের অন্যতম প্রধান ধমনি হচ্ছে বড়াল নদী। রাজশাহী জেলার চারঘাট উপজেলার চারঘাট পদ্মা(গঙ্গা) থেকে বড়াল নদীর উৎপত্তি।চারঘাট পদ্মা থেকে বড়াল নদী প্রবাহিত হয়ে পুর্ব দিকে রাজশাহী জেলার বাঘা থানা এবং নাটোর জেলার লালপুর, বাগাতি পাড়ার দয়ারামপুর ক্যান্টনমেন্টের গা ঘেষে উত্তর-পুর্বদিকে প্রবাহিত হয়ে বড়াইগ্রাম উপজেলার আটঘড়িয়া এসে পুর্বদিকে বনপাড়া, জোয়ারী, মৌখাড়া, বড়াইগ্রাম, ল²িকোল, জোনাইল, চাটমোহর উপজেলার ওপর দিয়ে ধানকুনা,নুননগর-বিন্যাবাড়ি গিয়ে গুমানী নদীর সাথে মিশে বড়াল নামেই ভাঙ্গুড়া উপজেলা,বনানি নগর ফরিদপুর উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বেড়া উপজেলায় যমুনার সাথে মিশেছে। আশির দশক পর্যন্ত পদ্মার উর্বরা পলিযুক্ত পানির ¯্রােতের তীব্রতায় ছিল প্রমত্মা। সেসময় এই ¯্রােতস্বনী নদী দিয়ে চলতো বানিজ্যিক বড় বড় নৌকা, বজরা, লঞ্চ, স্টীমারসহ নানা কাঠামোর জলযান। পাওয়া যেত সুস্বাদু নানা প্রজাতির মাছ। এই নদীর তীরে গড়ে উঠেছে বনপাড়া, জোয়ারী, মেীখাড়া, লক্ষীকোল , জোনাইল, হরিপুর এবং চাটমোহর হাটবাজার এবং বানিজ্যিক কেন্দ্র।
প্রমত্মা বড়াল নদী আজ মৃত । পদ্মার শাখা নদী রাজশাহী জেলার চারঘাট উপজেলা থেকে শুরু হয়ে পাবনার বেড়া পর্যন্ত চলনবিলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে যমুনার সাথে সংযোগকারী বড়াল নদী। বড়াল নদীর দৈর্ঘ্য ২২০ কিলোমিটার। রাজশাহী, নাটোর, পাবনা ও সিরাজগঞ্জসহ ৪ টি জেলার চারঘাট, বাগাতিপাড়া, লালপুর,বড়াইগ্রাম, চাটমোহর,ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর,শাহজাদপুর ও বেড়া উপজেলাসহ ৯ টি উপজেলার মধ্যে দিয়ে বড়াল প্রবাহিত। বড়ালের অনেক শাখা, উপ-শাখা প্রবাহ আছে।
আশির দশকের পর সেই ¯্রােতস্বিনী বড়াল নদী পানি উন্নয়ন বোর্ডের সীমাহীন দুর্নিতী আর স্বেচ্ছাচারিতার কারনে আজ সম্পুর্ন মৃত।এর সাথে শাখা,উপ শাখাও মৃত এবং দখলদারদের দৌরাত্ম্যে বিলুপ্ত। ১৯৮২ সালে পদ্মা থেকে বড়ালের উৎসমুখ রাজশাহী জেলার চারঘাটে বড়ালের প্রসস্ততা সংকুচিত করে ৩০০ ফুট থেকে হ্রাস করে ৩৫ ফুট প্রস্থ ¯øুইসগেট নির্মান করে এবং ¯øুইসগেট থেকে উজানে পদ্মা পর্যন্ত সংকুচিত করে পানি প্রবাহের গতি কমানো হয়। ১৯৮৯ সালে চারঘাট থেকে ৪৬ কিলোমিটার ভাটিতে বাগাতিপাড়া এবং বড়াইগ্রাম উপজেলার সিমান্ত দয়ারামপুরের -আটঘড়িয়া এসে পুর্বদিকে প্রবাহিত বড়ালের মুখে দুইপাড় আরো সংকুচিত করে এবং বড়ালের শাখা নদী নন্দকুজা নদীর মুখে আরো দুইটি ¯øুইসগেট ও ৩টি ক্রসবাঁধ নির্মান করায় প্রমত্বা বড়াল ও নন্দকুঁজার জীবন প্রবাহের মৃত্যু ঘটে।চারঘাট থেকে প্রবাহিত বড়ালের শাখা নদীগুলিই হচ্ছে নারোদ নদ,নন্দকুঁজা, মির্জামামুদ ,মুসা খাঁ ,বোয়ালিয়া এবং তুলসিগঙ্গা নদী। এই নদিগুলিই চলনবিলের প্রাণ।
বড়ালের প্রধান শাখা নদী নন্দকুঁজা বড়াইগ্রাম উপজেলার আটঘড়িয়া থেকে উৎপত্তি হয়ে উত্তর দিকে বড়াইগ্রাম উপজেলার আহমেদপুর,নাটোর সদর উপজেলার হালসা,সিংড়া উপজেলার বাহাদুরপুর, হেলাইগাড়ি এবং গুরুদাসপুর উপজেলার চন্দ্রপুর,নাজিরপুর ,গুরুদাসপুর পৌরসভার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে চাঁচকৈড় ত্রি-মোহনায় এসে আত্রাই ও গুমানি নদীতে মিশেছে। আটঘড়িয়া থেকে চাঁচকৈড় ত্রি- মোহনা পর্যন্ত নন্দকুঁজা নদীর দৈর্ঘ্য ৬০ কিলোমিটার।
১৯৮৯ সালে আটঘড়িয়ায় বড়াল নদী থেকে উৎপত্তিস্থলে বড়াল- নন্দকুঁজা নদীর মুখে দুই পাড় সংকুচিত করে ¯øুইসগেট নির্মান করায় পানির স্বাভাবিক প্রবাহ নিয়ন্ত্রন করার ফলে মরা নদীতে পরিনত হয়েছে।নন্দকুঁজা নদী বড়ালের শাখা নদী বিধায় পদ্মার পানির প্রবাহ নন্দকুঁজা নদী দিয়ে প্রবাহিত হয়ে চাঁচকৈড় ত্রি-মোহনায় গুমানি নদীতে পড়ে। আটঘড়িয়ায় অ-প্রস্বস্থ ¯øুইস গেটের কারনে বড়ালের মুল ¯্রােত নন্দকঁজা দিয়ে প্রবাহিত হয়। কিন্ত নন্দকুঁজার মুখেও ¯øুইসগেট নির্মান করায় পানির স্বাভাবিক প্রবাহ কমে বর্ষা মওসুমে অর্ধেকেরও নীচে প্রবাহিত হচ্ছে। আটঘড়িয়া থেকে চাঁচকৈড় পর্যন্ত আহমেদপুর , হালসা, চন্দ্রপুর, হোলাইগাড়ি, নাজিরপুর , গুরুদাসপুর ও চাঁচকৈড় হাটবাজার ও ব্যবসায়িক বানিজ্য কেন্দ্র গড়ে উঠেছে।নাটোর সুগারমিল এবং যমুনা ডিষ্টিলারিজের বিষাক্ত বর্জ্য নারোদ নদ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে নন্দকুঁজা নদীতে পড়ে পানি দুষিত হচ্ছে। ফলে নারোদসহ নন্দকুঁজা নদীর মাছ ও জলজ সম্পদ মরে-পচে নদী এলাকার পরিবেশ মারাতœকভাবে দুষিত করছে। এছাড়াও নন্দকুঁজা নদীতে বেশীরভাগ সময় পানি না থাকায় এবং পলি জমে দুই পাড় ভরাট হওয়ায় প্রভাবশালী ভুমি খেকোরা দখল করে প্রমত্মা নদীকে নির্মমভাবে হত্যায় মেতে উঠেছে। বড়ালসহ এই নন্দকুঁজা নদীকে সকল প্রকার দখল-দুষন থেকে রক্ষা এবং চারঘাট ও আটঘড়িয়ার ¯øুইসগেট অপসারনের দাবীতে গুরুদাসপুরের নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি মানব বন্ধন, নদীপথে ৪০ কিলোমিটার নৌ র‌্যালীসহ বহু কর্মসুচি পালন করে আসছে।
মির্জামামুদ নদী বড়াইগ্রাম উপজেলার কাছুটিয়া বড়াল নদী থেকে উৎপত্তি। কাছুটিয়ার বড়াল নদী থেকে মির্জামামুদ নদীর প্রবাহ গুরুদাসপুর উপজেলার কান্দাইল, ধানুড়া, পুরুলিয়া, তুলাধুনা চন্দ্রপুর, চকআলাদত খাঁ, গোপিনাথপুর হয়ে চাকলের বিলের ভিতর দিয়ে সোনাবাজু ঝাঁকড়া হয়ে পুর্বদিকে প্রবাহিত হয়ে বড়াল নদীর আর এক শাখা তুলসিগঙ্গা নদীতে মিশেছে।
কথিত আছে একসময়ে এই মির্জমামুদ নদী দিয়ে বড় বড় বানিজ্যিক নৌকা ,বজরা , লঞ্চ চলাচল করতো।বর্তমানে এই ¯্রােতস্বিনী নদী সম্পুর্ন মৃত। নদীখেকোরা নদীর উৎসমুখ থেকে ধানুড়া পর্যন্ত দখল করে নিয়েছে।পুরুলিয়া থেকে গোপিনাথপুর হয়ে চাকলের বিলে ভিতর দিয়ে সোনাবাজু পর্যন্ত এখনও নদীর ধারা থাকলেও দখলদাররা চন্দ্রপুর এলাকায় নদীর মধ্যে পুকুর খনন করে মাছ চাষ করছে।বর্ষা মওসুমে এই নদী দিয়ে ধানুড়া , হালসা, রানিনগর , চন্দ্রপুর , গোপিনাথপুর, বৃকাশো ও চাকলের বিলের পানি নিস্কাশিত হয়। মির্জামামুদ নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় ১৫ কিলোমিটার।
তুলসিগঙ্গা এবং বোয়ালিয়া নদী মানচিত্র থেকেই বিলুপ্ত। বড়াইগ্রাম উপজেলার জোয়ারি বড়াল নদী থেকে উৎপত্তি। জোয়ারি বড়াল থেকে উত্তর-পুর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে নওদাজোয়ারি, গুরুদাসপুর উপজেলার চাপিলা, খামারপাথুরিয়া, নওপাড়া, ইদিলপুর , তেলটুপি, মকিমপুর ,রওশনপুর , ঝাঁকড়া, সোনাবাজু, পোয়ালশুরা পাটপাড়া, শিধুলি,ধারাবারিষা, বড়াইগ্রম উপজেলার ভিটাকাজিপুর হয়ে দক্ষিন চলনবিলের চেঁচুয়ার বিলের মধ্য দিয়ে পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলার কাটেঙ্গা কিনুর ধর গিয়ে গুমানি নদীতে মিশেছে। তুলসি নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় ৩৫ কিলোমিটার। দখলদারদের দৌড়াত্বে একসময়ের প্রমত্মা তুলসি নদী জোয়ারি উৎসমুখ থেকে রওশনপুর পর্যন্ত পুকুর খনন করে মাছ চাষ, বসতবাড়ি,মসজিদসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মান কেেরছে। এমনকি এই নদী প্রভাশালীদের মদদে মানচিত্র থেকেই হারিয়ে গেছে।
গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুরের মামুদপুর নন্দকুঁজা নদীর শাখা বোয়ালিয়া নদী।বোয়ালিয়া নদীর প্রবাহ উৎপত্তিস্থল নন্দকুঁজা থেকে মামুদপুর,জুমাইনগর, বিন্যাবাড়ি, দক্ষিন নারিবাড়ি, শিধুলি, উদবাড়িয়া, দাদুয়া, খাঁকড়াদহ এবং বড়াইগ্রাম উপজেলার কচুগাড়ি হয়ে ভিটাকাজিপুর তুলসিগঙ্গা নদীর সাথে মিশেছে। দখলদারদের দৌড়াত্বে নদীটির অস্তিত্ব মানচিত্র থেকেই হারিয়ে গেছে। উপজেলার নদীর তালিকায় বোয়ালিয়া নদীর কোন নামগন্ধই নাই। এই নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় ১৫ কিলোমিটার। তুলসিগঙ্গা,মির্জামামুদ এবং বোয়ালিয়া নদীর পানি দক্ষিন চলনবিলের প্রান সঞ্চালন করতো এবং বিশাল অঞ্চলের সবকয়টি বিলের পানি নিস্কাশিত হয়।
সুপারিশ ঃ নদী-জলা-জলাশয় রক্ষায় আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক সি এস রেকর্ড অনুযায়ী জরিপ করে সীমানা নির্ধারন পুর্বক অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও পুনঃখনন করে নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে হবে। বড়াল ও নন্দকঁজা নদীর তিনটি ¯øুইস গেটসহ সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে হবে।পৌরসভা, হাট-বাজার এবং কল-কারখানার সকল প্রকার বর্জ্য নদীতে ফেলা বন্ধ করতে হবে। নদীর উপড় স্থাপিত চারঘাট এবং আটঘড়িয়ার ¯øুইসগেটসহ সকল প্রকার অবৈধ স্থপনা অপসারন করতে হবে।নৌ পুলিশ গঠন করতে হবে।আর প্রতিবাদ নয়, প্রতিরোধে গনজোয়ার গড়ে তুলতে হবে।

# মোঃ আবুল কালাম আজাদ,সাংবাদিক ও কলামিষ্ট। প্রধান উপদেষ্টা,গুরুদাসপুর প্রেস ক্লাব, নাটোর। মোবা: ০১৭২৪০৮৪৯৭৩

এইতো মানব সভ্যতার মানুষ!!!

বীরমুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ শুকুর মাহমুদ

মানব সভ্যতার মানুষের মাঝে আলোচনায় উঠে আসে আদিম যুগের মানুষের কথা, তারা বসবাসের জন্য ঘর বাঁধতে জানত না। তাদের পরনের কাপড় ছিলো না, তারা খাদ্য-খাবার রান্না করে খেতে জানত না। পাহাড়ের গুহায় কিংবা বড় গাছের আড়ালে আশ্রয় নিয়ে থাকত। যখন বুঝতে শিখলো ইজ্জতের আবরণ করতে হবে, তখন গাছের ছাল-পাতা দিয়ে ইজ্জত আবরন করত। তাদের বুঝে ছিলো না কোনটা মানুষের খাবার, কোনটা পশুর খাবার তারা পশুর মত খাবার খেয়ে জীবন-যাপন করত।
বৈবাহিক সূত্রে জীবন-যাপন করনের কোনো নিয়ম ছিলো না, তারপরও তারা একে অপরের খাবার কেঁড়ে খায়নি, একে অপরের ভোগ্য নারী ভোগ করেনি। মানুষ ব্যতিত তারা পশুর সাথে যৌন মিলন করেনি, তাদের যুগে কোন শিশু ধর্ষণের শিকার হয়নি। আদিম যুগের মানুষেরা, মানুষ হত্যা করেনি, মানুষে-মানুষ ধোকা দেয়নি, তারা ছিলো আদিম যুগের অসভ্য মানুষ। আজ সভ্য যুগের মানুষেরা, মানুষ ছাড়াও পশুর সাথে যৌন মিলনের প্রমাণ উঠে আসছে। আজ অবদি কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি এক জাতের পশু অন্য জাতের পশুর সাথে যৌন মিলন ঘটাচ্ছে। পশুরা অপ্রাপ্ত কোনো পশুর সাথে যৌন মিলন করতে দেখা যায় না।
প্রবন্ধটির প্রথমাংশ ধর্মের সাথে সাংঘর্ষিক হলেও আদিকালে পৃথিবীর অনেক স্থানেই মানুষ ওই রূপ জীবন-যাপন করেছে, এখনো পৃথিবীর কোনো কোনো অঞ্চলের মানুষ আধুনিকতার ছোঁয়া থেকে বঞ্ছিত রয়েছে।

এখন মানুষের ইতিহাস সৃষ্টি হচ্ছে, রাষ্ট্র গঠন হচ্ছে মানুষ অনেক কিছুই আবিষ্কার করছে, আমাদের সভ্য যুগে মানুষের হাতের মুঠোয় বিশ্ব জগৎ ঘুরছে। মুহুর্তের মধ্যে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তের সাদৃশ্য খবর পাচ্ছে। মানব সভ্যতার সভ্য মানুষ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে মানুষ। একটু হিসেব মিলিয়ে দেখুন আদিম যুগের অসভ্য মানুষেরা যা করেনি এখন মানব সভ্যতার মানুষেরা তার কোনটাই বাদ রাখছে না। এই সভ্য যুগের মানুষেরা অনায়াসে মানুষ হত্যা করছে, মানুষেরা সহজেই মানুষকে ধোকা দিচ্ছে। মানুষের সমাজ থেকে প্রতিদিন খবরের কাগজে উঠে আসছে নারী-শিশু ধর্ষণ হচ্ছে। ঔরশজাত কন্যাকে ধর্ষণ করছে পিতা নামক আজকের সভ্য মানুষটি, প্রতিদিন বহুসংখক শিশু ধর্ষিতা হচ্ছে এই সভ্য যুগে। আজকের সভ্য সমাজে পিতা-পুত্রকে হত্যা করছে। পুত্র-কন্যা, পিতা-মাতাকে নির্মমভাবে হত্যা করছে, স্বামীকে হত্যা করে উধাও হচ্ছে স্ত্রী পরকীয়ার হাত ধরে। গর্ভজাত সন্তানকে হত্যা করে অন্যের হাত ধরে চলে যাচ্ছে মা, এই তো মানব সভ্যতার মানুষ।
মানব সভ্যতার এই সভ্য যুগে ধর্মীয় বিষয় নিয়ে যা চলছে, তা কলমে লিখতেই উঁচু মাথা নিচু হয়ে যাচ্ছে। নেশাপান করে মানুষ বেহুশ হয়ে যাচ্ছে। ওলি-আউলিয়াদের সমাধি চত্বরে মদ-গাজার দূর্গন্ধ আর ধোয়া দিয়ে পবিত্র সমাধি চত্বর অপবিত্র করছে, তারপরও এটি নাকি তাদের ফকিরি। জ্ঞান তাপন যুগের শ্রেষ্ঠ কবি ফকির লালন শাহ এর সমাধি চত্বরে প্রকাশ্যে তথাকথিত লালন ভক্তরা গাজা-মদ পান করছে, এটিকে তারা সিদ্ধি সেবন বলে চালিয়ে দিচ্ছে। তাদের উক্তি ফকির লালন শাহ সিদ্ধি সেবন করেছেন, তাই যদি হবে। তবে লালন শাহ এর একটি গানের দু’কলি আলোকপাত করা হলো লালন বলে..

শুকনা মধু রসে ভরা, ও মধু খাসনে তোরা।
খেলে ওই মধু পরবি ধরা, অকালে যাবি মারা।

এ গানের সূত্র ধরে বলা যায় যে, ওরা পবিত্র এই জ্ঞান তাপসকে অপবিত্রতার অপবাদ দিয়ে নেশার স্বর্গ রাজ্য গড়ে তুলেছে। আসলে ফকির লালন শাহ এটিকে ঘৃণা করেছেন। এই হচ্ছে মানব সভ্যতার মানুষ !!!

লেখকঃ বিশিষ্ট কলামিষ্ট, প্রাবন্ধিক ও কথা সাহিত্যিক। শাহজাদপুর, সিরাজগঞ্জ।

বিশ্বের প্রভাবশালী নারীর তালিকায় শেখ হাসিনা

ডেস্ক রিপোর্ট : মার্কিন সাময়িকী ফোর্বসের বিশ্বের প্রভাবশালী ১০০ নারীর তালিকায় আবারও স্থান পেয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফোর্বসের ওই তালিকায় এবার তিনি আছেন ৪৬ তম স্থানে। যদিও ২০২২ সালে শেখ হাসিনার অবস্থান ছিল ৪২ নম্বরে। বিশ্বজুড়ে রাজনীতি, মানবসেবা, ব্যবসা-বাণিজ্য, গণমাধ্যম, অর্থনীতি ও প্রযুক্তিখাতে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করে আসা প্রভাবশালী নারীদের মধ্য থেকে ১০০ জনকে বেছে নিয়ে এই তালিকা প্রকাশ করেছে ফোর্বস।এই বছরের ফোর্বসের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নারীদের তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন রাজনীতিবিদ ও আইন প্রণেতারা। চলতি বছরের তালিকায় ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লিয়েন ১ নম্বরে রয়েছেন। তারপরে আছেন ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন লাগার্ড, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস রয়েছেন তৃতীয় স্থানে। এছাড়া ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি রয়েছেন চতুর্থ অবস্থানে। আর তালিকার পঞ্চম স্থানে রয়েছেন টেইলর সুইফট। সূত্র: জনকণ্ঠ

বাংলাদেশের রিকশা পেল ইউনেসকোর স্বীকৃতি

ডেস্ক রিপোর্ট : জাতিসংঘের শিক্ষা বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা -ইউনেসকোর অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে ঢাকা শহরের ‘রিকশা ও রিকশাচিত্র’।আফ্রিকার দেশ বতসোয়ানার কাসানে শহরে অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ বিষয়ক ২০০৩ কনভেনশনের চলমান ১৮তম আন্তঃরাষ্ট্রীয় পরিষদের সভায় আজ বুধবার এ বৈশ্বিক স্বীকৃতি প্রদান করা হয়।

জামদানি বয়ন শিল্প, শীতল পাটি বয়ন শিল্প, বাউল গান ও মঙ্গল শোভাযাত্রার পর প্রায় ৬ বছরের বিরতিতে বাংলাদেশের পঞ্চম অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে ঢাকার রিকশা ও রিকশাচিত্র এ স্বীকৃতি লাভ করেছে। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ ও সচিব খলিল আহমদ এ অর্জনকে বাংলাদেশের জন্য বিরল সম্মান হিসাবে অভিহিত করেন। এছাড়াও নিবন্ধন ও স্বীকৃতি প্রক্রিয়ায় অগ্রণী ভূমিকা পালনের জন্য তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর ও প্যারিসস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসকে অভিনন্দন জানান। বাংলাদেশের রিকশাচিত্র ইউনেসকোর অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসাবে স্বীকৃতি পাওয়ার পর সভায় উপস্থিত আন্তঃরাষ্ট্রীয় পরিষদের সদস্যবৃন্দ, উপস্থিত মন্ত্রিবর্গ, রাষ্ট্রদূতসহ শতাধিক দেশের প্রতিনিধিবৃন্দ বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে অভিনন্দন জানান এবং এ চিত্রকর্মের বৈচিত্রপূর্ণ বহিঃপ্রকাশে তাদের সন্তুষ্টি ব্যক্ত করেন। এ অর্জনের মাধ্যমে ইউনেসকোতে বাংলাদেশের ধারাবাহিক সাফল্যের মুকুটে আরও একটি পালক যুক্ত হলো। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ১৫ নভেম্বর ৪২তম সাধারণ পরিষদের সভায় বাংলাদেশ ইউনেসকো নির্বাহী পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়। সূত্রঃ সমকাল

মির্জা ফখরুলকে জামিন দিতে রুল জারি
ডেস্ক রির্পোট : প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনায় পুলিশের করা মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জমিন না মঞ্জুর করে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তাকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। গত বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এ মামলায় মির্জা ফখরুলের জামিন আবেদনটি শুনানির জন্য গত সোমবারের (৪ ডিসেম্বর) কার্যতালিকায় ছিল। পরে বিষয়টি উপস্থাপন করে শুনানির জন্য আর্জি জানালে হাইকোর্টের একই বেঞ্চ বৃহস্পতিবার দিন ঠিক করেন। গত ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ চলাকালে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনায় পুলিশের করা মামলায় মির্জা ফখরুল হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেছিলেন গত ৩ ডিসেম্বর। বিএনপির আইনজীবীরা তার পক্ষে এ আবেদন জমা দেন। তার আগে গত ২২ নভেম্বর এ মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিন নামঞ্জুর করেন নিম্ন আদাল। সূত্র : কালবেলা।

প্রকৃত সাংবাদিকরাই শুধু কার্ড পাবেন’

ডেস্ক রিপোর্ট : নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর বলেছেন, যারা প্রকৃত সাংবাদিক তারাই শুধু কার্ড (পর্যবেক্ষক কার্ড) পাবেন। প্রকৃত সাংবাদিকের সংজ্ঞা কী তা আপনারা জানেন। সাংবাদিকদের মোটরসাইকেল ব্যবহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকতে হবে। গত বুধবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে জামালপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এক মতবিনমিয় সভার পর সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর তিনি বলেন, ভোটকেন্দ্রে গিয়ে কোনো অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন নেই। কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসারের রুমে গিয়ে পরিচয় দেবেন এবং সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারকে আপনার কার্ড দেখাবেন। আপনি ভোটকেন্দ্রে লাইভ, রেকর্ড ও সাক্ষাৎকার নিতে চাইলে লাইনে থাকা অবস্থায় করতে হবে। এছাড়া কক্ষের ভেতরে ঢুকতে পারবেন, ছবি তুলতে পারবেন তবে বক্তব্য নিতে পারবেন না, লাইভ করতে পারবেন না। এক রুমে ১০ মিনিটের বেশি থাকা যাবে না।
ইসি আলমগীর বলেন, বিদেশিরা নির্বাচন কমিশনে এসে দেখা করেছেন, কথা বলেছেন। আমরা সবসময় বলে আসছি তারা (বিদেশিরা) আমাদের ওপর কোনো চাপ দেননি। এছাড়া চাপ দেওয়ার অধিকারও তাদের নেই। সূত্রঃ ইত্তেফাক।

সরকার নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ কিনছে

ডেস্ক রিপোর্ট : ভারতের গ্রিড ব্যবহার করে নেপালের জলবিদ্যুৎ আনছে সরকার সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) ভারতের জাতীয় গ্রিড ব্যবহার করে নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ আমদানির একটি প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে সরকার। গত বুধবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের অধীন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক ভারতীয় জাতীয় গ্রিড ব্যবহার করে নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে আমদানির নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, ভারতের জাতীয় গ্রিড ব্যবহার করে নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ আমদানি করা হবে। এটি সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) আমদানি করা হবে। এতে বছরে সরকারের ব্যয় হবে ১৩০ কোটি টাকা। এটি আনতে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার এইচভিডিসি সাব-স্টেশন ব্যবহার করা হবে। এই সাব-স্টেশনটির এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করার সক্ষমতা রয়েছে। তবে বর্তমানে এ সাব-স্টেশনের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ৯৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা সম্ভব হচ্ছে।
সাব-স্টেশনটির অব্যবহৃত ক্ষমতা ব্যবহার করে নেপাল থেকে ভারতের সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে ৪০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ আমদানি করা সম্ভব। নেপালের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনায় এ প্রক্রিয়ায় বিদ্যুৎ আমদানিতে তা সাশ্রয়ী মূল্যে পাওয়া যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বর্তমানে ভারত থেকে তিনটি সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে দুই হাজার ৬৫৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করছে বাংলাদেশ।
আরও জানা গেছে, চলতি বছরের গত মে মাসে বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে একটি চুক্তি হয়। সেই চুক্তি অনুযায়ী, নেপালের ত্রিশুলি প্রকল্প থেকে ২৪ মেগাওয়াট ও অন্য একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ১৬ মেগাওয়াটসহ মোট ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আনবে বাংলাদেশ। ভেড়ামারায় জাতীয় গ্রিডে এই বিদ্যুৎ আসবে ভারতের বহরমপুর সঞ্চালন লাইন দিয়ে। সূত্র : যুগান্তর।

তাড়াশে বাস ও সিএনজি স্ট্যান্ড নির্মিত হবে কবে?
স্টাফ রিপোর্টার : সারা দেশের মধ্যে অদ্ভুত এক উপজেলার নাম তাড়াশ যেখানে খোদ সড়কের উপর চালু আছে বাস ও সিএনজি স্ট্যান্ড। এর ফলে ঘটনা- দুর্ঘটনা, দুর্ভোগ ও ভোগান্তি লেগেই আছে অহরহ। সড়কের ওই অংশে শঙ্কা-আশঙ্কা ও প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে চলতে হয় এলাকাবাসীকে।
উল্লেখ্য, তাড়াশ উপজেলা সদরে স্বতন্ত্র কোন বাসস্ট্যান্ড বা টার্মিনাল না থাকায় যুগের পর যুগ ধরে তাড়াশ উপজেলা পরিষদের উত্তরের পাশ ঘেষে সদরের প্রধান সড়কের উপর বাস-কোচ ও সিএনজি দাঁড়িয়ে থেকে নানা সমস্যার মধ্যেই যাত্রী উঠান-নামানো করা হয়। এতে বিভিন্ন প্রকার ঝুঁকি বিপদ-আপদরে সম্ভাবনা থাকে। ঘটে যায় আকর্ষিত নানা দুর্ঘটনা। বিশেষ করে সড়কের ঐ অংশে কোন যানবাহনই স্বাভাবিক ও দ্রæত গতিতে চলতে পারে না। পথচারীদেরও চলাচল করা মুশকিল। একটু অসাবধানতা কিংবা বেখেয়াল হলেই ঘটে যেতে পারে দুর্ঘটনা। এ ব্যাপারে স্বাধীনতার পর থেকে বহু লেখালেখি ও বলাবলি হলেও স্থানীয় প্রশাসন, পৌর কর্তৃপক্ষ সহ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও নাগরিক নেতৃবৃন্দ কার্যকর উদ্যোগ নিতে ব্যর্থ হয়েছেন। এটা তাড়াশবাসীর জন্য দুঃখজনক এবং একই সাথে লজ্জাজনক। ওদিকে উপজেলা পরিষদ ঘেষে বাস ও সিএনজি ডিপো বিশৃঙ্খল, উচ্চ শব্দ ও গণ গ্যাঞ্জাম সৃষ্টি করলেও উপজেলা প্রশাসনের কোন টনক নড়ে না। এমনকি বাস-ট্রাক-মাইক্রো-কোচ উপজেলা চত্বরের ভেতরেও পার্ক করে রাখে মাঝে মাঝে – তথাপি প্রশাসনের এতে কোন যায় আসে না। উপজেলা প্রাঙ্গণ যে একটি বিশেষ সংরক্ষিত ও নিরাপত্তা জোনের মতো সে ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসন উদাসীন বললে ভুল হবে না।
সম্প্রতি তাড়াশ পৌরসভার নব নির্বাচিত পরিষদ হয়েছে। উক্ত বাস ও সিএনজি স্ট্যান্ড পৌরসভার কেন্দ্রে অবস্থিত। তা সত্তে¡ও পৌর কর্তৃপক্ষের কোন পরিকল্পনা বা পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না এটাকে নিয়ে । সবচেয়ে বড় বিষয় হল, তাড়াশ পরপর দুই টার্ম নিজ উপজেলায় সংসদ সদস্য পেয়েছে। সেই সাংসদগণ উপজেলার অনেক ভালো কাজ করলেও বাস-কোচ ও সিএনজি স্ট্যান্ড বা টার্মিনাল করার জন্য কোন নজরই দেননি। তাই উপজেলা পরিষদ, উপজেলা প্রশাসন, পৌর কর্তৃপক্ষ ও সংসদ সদস্য কেউ এই ব্যর্থতার দায় এড়াতে পারেন না। চলনবিল বা সিরাজগঞ্জ জেলায় কোথাও এমন একটি উপজেলা নেই যেখানে এ ধরনের অনুন্নয়ন বা অভাবনীয় পশ্চাৎপদতার পরিবেশ-পরিস্থিতি দৃশ্যমান। হায় দুর্ভাগ্য তাড়াশের। স্বাধীনতারপর এই ৫২ বছরেও এখানে একটি বাস স্ট্যান্ড গড়ে তোলা সম্ভব হলো না। তা আর কবে হবে ? আর এটা কত দু:খজনক!

তাড়াশে বিজয় দিবস উদযাপনের ব্যাপক প্রস্তুতি
স্টাফ রিপোর্টার : তাড়াশ উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মহান বিজয় দিবস ২০২৩ উদযাপন উপলক্ষে ব্যাপক কর্মসূচি গৃহীত হয়েছে। সে উদ্দেশ্যে গত ২১ নভেম্বর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে উপজেলা পরিষদ সভা কক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিস্তারিত আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আসন্ন ১৬ ডিসেম্বর দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হবে মর্মে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। কর্মসূচির মধ্যে থাকবে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা ও শিশুদের মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক রচনা ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে তোপধ্বনি, আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সম্মিলিত কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে প্রদর্শন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা, আলোচনা সভা, বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা, প্রীতি ফুটবল ম্যাচ ও মহিলা ক্রিড়া অনুষ্ঠান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং বিকেলে মুজিব একটি জাতীয় রূপকার চলচ্চিত্র প্রদর্শন।
জনবল সংকটে তাড়াশে টিকাদান কর্মসূচি ব্যাহত
সাব্বির আহম্মেদ : সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় স্বাস্থ্য সহকারীর ৩৫টি পদের ১৪ টি প্রায় এক দশক ধরে শূণ্য থাকায় সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি ব্যহৃত হচ্ছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন শিশু, কিশোরী ও গর্ভবতী মায়েরা।
তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) আওতায় সরকার বিনামূল্যে ০-১৮ মাস বয়সের শিশু, কিশোরী, গর্ভবতী মাদের জন্য যক্ষা, ডিপথেরিয়া, ধনুষ্টংকার, হুপিংকাশি, পোলিও, হেপাটাইটিস বি, হিমো-ইনফ্লুয়েঞ্জা বি, হাম ও রুবেলা এই ৯ টি রোগের প্রতিষেধক টিকা সহ ১৫-৪৯ বছরের নারীদের নিধারিত ৫ ডোজ টিটি টিকা দিয়ে আসছে।
সে মোতাবেক তাড়াশ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের ৭২টি ওয়ার্ডে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি চালু আছে। কিন্তু বিগত প্রায় ১০ বছর যাবত টিকাদান কর্মসূচিতে দায়িত্ব পালন করা স্বাস্থ্য সহকারীর ৩৫ টি পদের অনুক‚লে ১৪ টি পদই শূণ্য রয়েছে। ফলে জনবল সংকটে পড়েছে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির কার্যক্রম।
এ দিকে মঙ্গলবার তাড়াশ ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টিকাদান কেন্দ্রে শিশুকে টিকা দিতে আসা তাড়াশ পৌর এলাকার আকলিমা আক্তার জানান, সকালে আমার শিশু কন্যাকে টিকাদানের জন্য নিয়ে এসেছি। টিকাদান কেন্দ্রে একজন মাত্র স্বাস্থ্য সহকারী টিকা প্রয়োগ করছেন। সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা আরো অনেক শিশু, মা ও কিশোরীরা টিকা নিতে এসেছেন। এতে ভীড় তৈরী হওয়ায় তাঁদের দুপুর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে। বিনসাড়া গ্রামের এশারত আলী জানান, ইউনিয়ন পর্যায়ে ৭২টি টিকাদান কেন্দ্রের অনেক গুলোতে স্বাস্থ্য সহকারী না থাকায় টিকা প্রদান কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে
তাড়াশ ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির স্বাস্থ্য সহকারী আবুল কালাম আজাদ বলেন, বর্তমানে জনসংখ্যা বেড়েছে। সেই সাথে বেড়েছে টিকা গ্রহিতার সংখ্যাও। কিন্তু বাড়েনি স্বাস্থ্য সহকারীর পদ। আর এ উপজেলায় ৩৫ জনের স্থলে আমরা ২৩ জন স্বাস্থ্য সহকারী কাজ করছি। জনবল সংকটের কারণে আমাদেরকে রেশনিং পদ্ধতিতে ওয়ার্ড পর্যায়ে টিকাদানের কাজ করতে হচ্ছে। এছাড়া স্বাস্থ্য সহকারীদের শুধু টিকাদানই নয় সপ্তাহে আবার দুই তিন দিন বিভিন্ন কমিউনিটি ক্লিনিকে দায়িত্ব পালন করতে হয়। এ প্রসঙ্গে তাড়াশ ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. মনোয়ার হোসেন সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচিতে জনবল সংকটের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ২০১৪ সালের পর সরকারী ভাবেই স্বাস্থ্য সহকারী পদে আর কোন নিয়োগ হয়নি। ফলে তাড়াশ উপজেলায় স্বাস্থ্য সহকারীর ১৪ টি পদও আর পূরণ হয়নি। তবে আশার কথা হলো আগামি জানুয়ারীতে স্বাস্থ্য সহকারীর পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে। নতুন জনবল এলে সংকট কেটে যাবে।
তাড়াশে এনজিও সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত
স্টাফ রিপোর্টার : গত ৬ ডিসেম্বও মঙ্গলবার সকাল ১১টায় তাড়াশ উপজেলায় কর্মরত বেসরকারি সংস্থা সমূহের মাসিক সমন্বয় সভা উপজেলা এনজিও বিষয়ক কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে উপজেলা পরিষদ সভা কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। সভা সঞ্চালনা করেন কমিটির সদস্য সচিব উপজেলা সমাজসেবা অফিসার এ.কে.এম মনিরুজ্জামান।
সভায় উপস্থিত এনজিও প্রধান ও প্রতিনিধিগণ নিজ নিজ সংস্থার চলমান কার্যক্রম বর্ণনা করেন। তারা হচ্ছেন: বিপিএস এর করিম বক্স, ব্যুরো বাংলাদেশ এর আব্দুল আলিম, দীপশিখার আমিনুল ইসলাম, জিইউকের নীলা জামান, বাসার আসাদুজ্জামান, উদ্দীপন এর বিলকিচ বানু এবং পরিবর্তন এর আবদুর রাজ্জাক রাজু ও রোখসানা খাতুন। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা তার বক্তব্যে উপজেলা প্রতিবন্ধী বিষয়ক কমিটি পূনর্গঠনের প্রস্তাব করেন। এছাড়া পরিবর্তন পরিচালক উপজেলা তামাক নিয়ন্ত্রণ “টাস্কফোসর্” কমিটি সক্রিয় করার আহ্বান জানান। পরে ইউএনও মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান তাড়াশ উপজেলা দারিদ্র্যের হার কেন কমছে না সে ব্যাপারে ভবিষ্যতে একটি সম্ভাব্য জিও-এনজিও সভার গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং তার সমাপনী ভাষনের মাধ্যমে সভা সমাপ্ত ঘোষণা করেন

তাড়াশে নীতিমালা বহির্ভূত সেচ
লাইসেন্স প্রদানের অভিযোগ

তাড়াশ প্রতিনিধি : তাড়াশ উপজেলা বি এ ডি সি’র উপ-সহকারী প্রকৌশলী অফিসে অনিয়মের মাধ্যমে বাতিল করা আবেদনকারী রুবেল রানাকে সেচের লাইসেন্স প্রদান করার লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। লিখিত অভিযোগ করার পরেও তদন্ত না করে বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে লাইসেন্স প্রদান করে সংযোগ দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানা যায়, পল্লী বিদ্যুত সমিতির -১ এর তাড়াশ জোনাল অফিসে এবং বি এ ডি সি তাড়াশ অফিসে একশ্রেণির দালাল সিন্ডিকেট এর মাধ্যমে মোটা অংকের লেনদেন ছাড়া সাধারণ কৃষকদের সংযোগ মিলছে না।
সরেজমিন সংশ্লিষ্ট সূত্রে ও ময়নুল হক এর লিখিত অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার গুড়পিপুল গ্রামের মৃত আবু মাসুদ এর পুত্র রুবেল রানা ও মইনুল হক একই মৌজায় ২০২১ সালে গভীর নলকূপের সেচ লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেন।দূরত্ব বজায় না থাকায় ২ টি আবেদন বাতিল করেন বি এ ডি সি উপ-সহকারী প্রকৌশলী। বাতিলকৃত আবেদনকারী রুবেল রানাকে ২০২৩ সালে যোগ্য বিবেচিত করে লাইসেন্স প্রদানের তালিকায় নাম দেখে এ বিষয়ে সেচ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ প্রদান করেন মইনুল। এ বিষয়টি তদন্ত করার জন্য উপজেলা পল্লী বিদ্যুতএ দায়িত্ব দেওয়া হলেও তদন্ত না করে ধামাচাপা দেওয়া হয়। অভিযোগকারী ময়নুল হক জানান, পল্লী বিদ্যুত অফিস থেকে তাকে বলেন, তদন্ত তারিখে আপনাকে জানানো হবে। কিন্তু কেউ যোগাযোগ করেন নি। তাড়াশ উপজেলা বি এ ডি সি অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মমিনুর রহমান জানান, বিষয়টি পল্লী বিদ্যুত অফিস থেকে তদন্ত করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কর্তৃক দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পল্লী বিদ্যুত অফিসের ডি জি এমকে জানালে তিনি এ বিষয়ে কোন কথা না বলে ফোন কেটে দেন।

তাড়াশে আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস পালিত
স্টাফ রিপোর্টার : গত ৩ ডিসেম্বর রবিবার “প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সাথে সম্মিলিত অংশগ্রহণ, নিশ্চিত করবে এসডিজি অর্জন” প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ৩২ তম আন্তর্জাতিক ও ২৫ তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস-২০২৩ উপলক্ষে র‌্যালী,আলোচনা সভা ও সুবর্ণ নাগরিক কার্ড বিতরণ করা হয়েছে।
ওই দিন সকালে তাড়াশ উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় ও পরিবর্তন সহ কয়েকটি বেসরকারী সংস্থার যৌথ আয়োজনে তাড়াশ উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে এক বিশাল বর্ণাঢ্য র‌্যালী বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।পরে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে তাড়াশ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) খালিদ মাহমুদ এর সভাপতিত্বে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন তাড়াশ উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মনিরুজ্জামান মনি। স্বাগত ভাষন দেন উপজেলা সমাজসেবা অফিসার একেএম মনিরুজ্জামান।
আরো বক্তব্য রাখেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হক, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন খান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মর্জিনা ইসলাম, উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মনোয়ার হোসেন, উপজেলা শিক্ষা অফিসার মুসাব্বির হোসেন খান, সাইটসেভার্স এর সিরাজগঞ্জ জেলা সমন্বয়কারী মো.মনিরুজ্জামান, তাড়াশ মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম, দোবিলা অটিষ্টিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিন, পরিবর্তন সংস্থার পরিচালক আবদুর রাজ্জাক রাজু, গণ উন্নয়ন কেন্দ্রের প্রকল্প ব্যবস্থাপক আতাউর রহমান, তাড়াশ পৌরসভার মহিলা কমিশনার রোখসানা খাতুন রুপা ও প্রতিবন্ধী সংগঠনের প্রতিনিধি মো. মোতাহার হোসেন প্রমূখ। সমাপনী ভাষন দেন আলোচনা অনুষ্ঠানের সভাপতি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) খালিদ মাহমুদ । আলোচনা পর্বে প্রতিন্ধীদের নিয়ে স্বরচিত কবিতা পড়ে শোনান পরিবর্তন পরিচালক। আলোচনা শেষে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), উপজেলা সমাজসেবা অফিসার সহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও এনজিও প্রতিনিধিগণ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মাঝে ৬০টি সুবর্ণ নাগরিক সনদ পত্র বিতরণ করেন।

তাড়াশের সুস্বাদু খেজুর গুড় রপ্তানি হচ্ছে সারা দেশে
সাব্বির আহম্মেদ : সিরাজগঞ্জের তাড়াশে শীত মৌসুমে তৈরী সুস্বাদু খেজুর গুড় এলাকার চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি হচ্ছে সারা দেশে। তাড়াশ উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানাগেছে, এ উপজেলায় প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার খেজুর গাছ রয়েছে। এ গাছ থেকে প্রতি বছর প্রায় ১ হাজার ৮০০ মে.টন রস সংগ্রহ হয়ে থাকে। আর ওই রস থেকে তৈরি হয় প্রায় ২০ থেকে ২২ মে.টন সুস্বাধু খেজুর গুড়।
সরেজমিনে এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এলাকার গাছিয়ারা ছারাও রাজশাহী জেলার বাঘা ও চারঘাট, নাটোর জেলার গুরুদাসপুর, বড়াইগ্রাম ও সিংড়া উপজেলা থেকে প্রায় ৫০ থেকে ৬০টি গাছিয়ার দল খেজুর রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরী করতে উপলোয় এসেছেন। তরা শীতের মৌসুমের জন্য এলাকার খেজুর গাছ মালিকদের কাছ থেকে গাছ প্রতি ৩ কেজি গুড়ের বিনিময়ে খেজুর গাছ গুলো লীজ নেন। বিকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি গাছ গুলো এক বিশেষ কায়দায় কেটে তাতে হাঁড়ি ঝুলিয়ে রাখা হয়। ভোর রাত থেকে রস সংগ্রহ করে সকালে বড় কড়াইয়ে করে আগুনে তাপ দেয়া হয়। পাতলা রস গাড় হলে বা বাটখাড়ায় ঢেলে তৈরী করা হয় খুড়ি গুড়, পাটালী গুড় ও ঝোল গুড়।উপজেলার মাধাই নগড় ইউনিয়নের ধাপ-ওয়াশীন গ্রামের গাছি ইছহাক আলী জানান, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকাররা এ উপলো থেকে সুস্বাদু থেজুর গুড় কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। প্রতি কেজি খেজুর গুড় ৯৫ টাকা থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ দিকে রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলার হরিপুর গ্রামের গাছি শামসুল ইসলাম জানান, আমরা ভেজাল মুক্ত সুস্বাদু গুড় তৈরী করি। তাই এ উপজেলার গুড়ের চাহিদা বেশী।তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, শীত মৌসুমে এ উপজেলায় খেজুরের রস থেকে প্রচুর গুড় তৈরী হয়। গুড় তৈরীর স্থান গুলো সার্বক্ষনিক কৃষি অধিদপ্তরের অধিনে মনিটরিং করা হয়। তাই তাড়াশের তৈরী সুস্বাদু খেজুর গুড় সারা দেশে রপ্তানি হয়।

সিরাজগঞ্জে বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশন দিবস উদযাপিত

স্টাফ রিপোর্টারঃ গত ২ ডিসেম্বর শনিবার বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে সিরাজগঞ্জ জেলায় ১৯ তম বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশন দিবস ২০২৩ উদযাপিত হয়েছে। সিরাজগঞ্জ জেলায় কর্মরত বিএনএফ এর সহযোগীর সংগঠন সমূহের উদ্যোগে জেলা সদরে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এ উপলক্ষে ওই দিন সকাল ১১ টায় আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রথমে আকাশে রঙিন বেলুন উড়িয়ে বর্ণাঢ্য র‌্যালি উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) গণপতি রায়। র‌্যালিটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে কালেক্টরেট ভবন চত্বরের অফিসার্স ক্লাবের সামনে এসে শেষ হয়। এ সময় সংশ্লিষ্ট এনজিওদের কর্মী-সদস্য সহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ র‌্যালিতে ও পরে আলোচনায় অংশ নেন।
পরে অফিসার্স ক্লাবের সম্মেলন কক্ষে প্রধান অতিথি কর্তৃক কেক কাটার মাধ্যমে আলোচনা সভার সূত্রপাত ঘটে। প্রাসঙ্গিক বিষয়ে আলোকপাত করে বক্তৃতা করেন প্রধান অতিথি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) গণপতি রায়। এছাড়া ফাউন্ডেশনের সহযোগী এনজিওদের মধ্যে থেকে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের সভাপতি মানব উন্নয়ন সংস্থার (এমইউএস) নির্বাহী পরিচালক লিয়াকত আলী। আরো বক্তৃতা করেন মল্লিকা মহিলা উন্নয়ন সংস্থার (এম এমইউএস) নির্বাহী পরিচালক শিরিন ফেরদৌসী সুমী, প্রগতিশীল নারী প্রচেষ্টার (পিএনপি) নির্বাহী পরিচালক নিস্কৃতি দাশ, কামারখন্দ পল্লী উন্নয়ন সংস্থার (কেপিইউএস) নির্বাহী পরিচালক আশরাফুল আলম, পল্লী রক্ষা সংস্থা (পরস) এর নির্বাহী পরিচালক নাসির উদ্দীন ও পরিবর্তন এর পরিচালক আবদুর রাজ্জাক রাজু। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সমতা উন্নয়ন সংস্থার (এসইউএস) নির্বাহী পরিচালক আব্দুল বাতেন ভূঁইয়া।
বক্তাগণ বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশনকে দেশের ক্ষুদ্র এনজিওদের অকৃত্রিম বন্ধু এবং ফাউন্ডেশনকে একটি অনন্য, উন্নয়নের মডেল প্রতিষ্ঠান হিসেবে আখ্যায়িত করে উক্ত প্রতিষ্ঠানের সুদীর্ঘায়ু কামনা করেন এবং আগামীতে সহযোগী এনজিওদের জন্য সহায়তা বৃদ্ধির আহ্বান জানান। উল্লেখ্য, বর্তমানে সিরাজগঞ্জ জেলায় উক্ত ফাউন্ডেশন এর ১২টি সহযোগী সংগঠন কর্মরত রয়েছে।এর মধ্যে গত বছর তাড়াশের পরিবর্তন ও সদরের এমএমইউএসকে উদ্ভাবনী ও বিশেষ কর্মসূচি বাস্তবায়নে অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ ফাউন্ডেশন হতে পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে বলে সভায় জানানো হয়।

চলনবিলে ঐতিহ্যবাহী মাছ ধরার “বাউত” উৎসব শুরু
জাহাঙ্গীর আলম, চাটমোহর : পাবনার চাটমোহরসহ চলনবিল অঞ্চলে চলছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী মাছ ধরার বাউত উৎসব। চাটমোহর উপজেলার রামের বিল, খলিশাগাড়ি বিল, ডিকশি বিল, বিলকুড়ালিয়া, গুমানী ও চিকনাই নদী,ভাঙ্গুড়ার রহুল বিলসহ বিভিন্ন বিলে চলছে এই উৎসব। চলনবিল অঞ্চলের ভাষায় এই উৎসবকে বলা হয় “বাউত উৎসব”। সপ্তাহের প্রতি শনিবার ও মঙ্গলবার নির্দিষ্ট একটি বিলে বাউত নামে। বিভিন্ন উপজেলার শত শত মানুষ ভোর হতেই নানা যানবাহনে মাছ ধরার হরেক রকম উপকরণ নিয়ে হাজির হয় বিলে। হৈ হৈ রৈ রৈ করতে করতে করতে আল্লাহ ও রাসুলের নাম নিয়ে নেমে পড়ে বিলের শীতল পানিতে। শত শত সৌখিন মৎস্য শিকারীর হাতে হাতে পলো। এছাড়া নানা রকমের জাল দিয়েও মাছ ধরা হয়। শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত মাছ ধরার এই উৎসবে যোগ দেয়।
গত শনিবার (২৫ নভেম্বর) সকালে চলনবিলের ভাঙ্গুড়া উপজেলার রহুল বিলে ও চাটমোহর উপজেলার খলিশাগাড়ি বিলে নামে বাউত। চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর, আটঘরিয়া, বড়াইগ্রাম, তাড়াশ, গুরুদাসপুর উপজেলার কয়েক শত মানুষ নেমে পড়ে বিলে। বিগত দিনে ডিকশি বিল ও বিল কুড়ালিয়াতেও বাউত নেমে মাছ ধরেছে। আগামী ২ সপ্তাহ এই মাছ ধরার উৎসব চলবে বলে জানান বাউতে আসা মৎস্য শিকারীরা। বাউতে আসা বড়াইগ্রাম উপজেলার জোনাইল এলাকার সৌখিন মৎস্য শিকারী আমের আলী জানান, এই মাছ ধরা উৎসবে বোয়াল, শোল, রুই,কাতলা ছাড়াও হরেক রকম দেশী প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। প্রতি বছরই চলনবিল অঞ্চলে নদী ও বিলে আগ্রহায়ন ও পৌষ মাসে বাউত নামে। এদিকে বাউত উৎসবের কারণে বিলের জীব বৈচিত্র চরমভাবে বিনষ্ট হচ্ছে। বিলের অসংখ্য ছোট মাছ মারা যাচ্ছে। চলনবিল রক্ষা আন্দোলন কমিটির সদস্য সচিব এস এম মিজানুর রহমান জানান, বাউত উৎসব চলছে দীর্ঘদিন ধরেই। এতে বিলে জীববৈচিত্র বিনষ্ট হচ্ছে। এ বিষয়ে সরকারি-বেসরকারিভাবে গণসচেতনতা বাড়ানো দরকার।

বিজয়ের মাসে মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়িতে বৃক্ষ রোপণ
ভাঙ্গুড়া প্রতিনিধি : লাখো শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের স্বাধীনতা।তাই জাতির এসকল শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণে তাঁদের বাড়ির আঙিনায় বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় ‘বন্ধু পরিবার’ নামের একটি সংগঠন । গত শুক্রবার দুপুরে উপজেলার তিনজন বীর মুক্তিযোদ্ধার বসত বাড়ির আঙিনায় বৃক্ষ রোপণের মধ্য দিয়ে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এর উদ্বোধন করেন।
এসময় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা মোকছেদ আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান আলী ও বন্ধু পরিবার পক্ষে মোস্তাফিজুর রহমান ও রাসেল হাসান বিপ্লব উপস্থিত ছিলেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান বলেন,বীর মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান।বিজয়ের এই মাসে তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে উপজেলার ৮০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়ির আঙিনায় বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষ রোপণ সম্পন্ন করা হবে।

সমুদ্র সৈকতে প্রাণ হারালেন নাটোরের এক দম্পতি
বড়াইগ্রাম প্রতিনিধিঃ কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে গোসলে নেমে এক দম্পতির মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন, নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া পৌর সদরের দিয়ারপাড়া মহল্লার মৃত বোরহান উদ্দিন মাস্টারের ছেলে আবুল কাসেম বকুল ও তার স্ত্রী সুলতান আলীর মেয়ে সাবিকুন নাহার সুমি।গত রোববার সকালে সী-সেইফ লাইফগার্ড কর্মীরা সমুদ্র সৈকতের লাবনী পয়েন্টে ভাসমান অবস্থায় তাদের মরদেহ উদ্ধার করেছে বলে জানা যায়।
সমুদ্র সৈকতে তাদের অবস্থানরত হোটেলের কর্মরত ম্যানেজার নুর মোহাম্মদ ও হোটেল সী-গাল সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকাল ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে হোটেলের ৩২৭ নম্বর কক্ষটি ভাড়া নেন তারা। সকালে সৈকতে গোসলে নামলে, দীর্ঘক্ষণ পরও যখন না ফিরেন তখন সী-সেইফ লাইফগার্ড কর্মীরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন এবং সৈকতের লাবনী পয়েন্টে তাদের দু’জনের মরদেহ উদ্ধারের খোঁজ পান তারা।
সী সেইফের লাইফগার্ড সুপারভাইজার ওসমান গনি জানান, এ ঘটনাটি শোনার পর আমরা লাইফ গার্ড কর্মীরা খোঁজাখুঁজি শুরু করি। একপর্যায়ে সমুদ্রের লাবনী পয়েন্টে ভাসমান অবস্থায তাদের মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। এবং সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।এবিষয়ে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার আশিকুর রহমান বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই তাদের মৃত হয়েছে। দু’জনের মরদেহ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।

সিংড়ায় ইউনিয়ন গণগ্রন্থাগারের উদ্যোগে সাহিত্য আসর 
সিংড়া প্রতিনিধি : নাটোরের সিংড়ায় হাতিয়ান্দহ ইউনিয়ন গণগ্রন্থগার উদ্দ্যোগে সাহিত্য আসর অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সন্ধায় কবি লেখক,সাহিত্য অনুরাগীদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানে কবি মাহাবুব মান্নান এর তাকে হত্যার পর, কবি আব্দুল মতিন এর লেখা ‘শান্ত নদ’ এবং সুনিল কুমার সরকার এর লেখা ‘অ আ স্বীকার’ বই হতে কবিতা পাট করা হয়।
হাতিয়ান্দহ ইউনিয়ন গণ- গ্রন্থাগারের সভাপতি আব্দুল মতিনের সভাপত্বিতে আলোচনা সভায় বক্ত্যব রাখেন সিংড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি কবি মোঃ এমরান আলী রানা, কবি খলিল মাহমুদ,এসময় উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক আলিফ বিন রেজা, কাবিল উদ্দিন কাফি সহ স্থানীয় সাহিত্য সংস্কৃতিমনা ব্যক্তিবর্গ। আলোচনা শেষে কবিরা তাদের প্রকাশিত বই উপস্থিত সবার মাঝে বিতারন করেন। এসময় হাতিয়ান্দহ গনগন্থাগারের সৌজন্যে রানা প্রকাশনির চয়েন বার্তার সৌজন্য কপি উপহার দেন সম্পাদক এমরান আলী রানা।

গুরুদাসপুরে আমন ধান-চাল সংগ্রহ উদ্বোধন
আবুল কালাম আজাদ : নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলায় ২০২৩-২৪ মৌসুমে আমন ধান ও চাল সংগ্রহ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়।উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অধিদপ্তরের আয়োজনে বৃহস্পতিবার ৭ ডিসেম্বর বেলা ১১ টায় খাদ্য গুদামে ফিতা কেটে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহি অফিসার শ্রাবনী রায়।বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পৌর মেয়র মোঃ শাহনেওয়াজ আলী, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মোঃ শরিফুল ইসলাম। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন মিল মালিক সমিতির সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ ইসমাইল হোসেন মাষ্টার , সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাহাংগির আলমসহ অনুমোদিত মিল মালিকগণ ও গণমাধ্যম কর্মীবৃন্দ। উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক মোঃ আসাদুজ্জামান জানান,চলতি ২০২৩-২৪ মৌসুমে এবারে উপজেলায় ৪৪ টাকা কেজি দরে ৯৭৮ মেট্রক টন চাউল এবং ৩০ টাকা কেজি দরে ২৬৭ মেঃ টন আমন ধান সংগ্রহের লক্ষমাত্রা ধার্য্য হয়েছে।
গত বছরে ২০২২-২৩ আমন মৌসুমে ১২৬২ মেঃ টন চাউল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও অর্জন মাত্র ৫৮ মেট্রিক টন। তবে ৩৬৭ মেঃ টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে অর্জন শুন্য। অর্জন ব্যর্থ হওয়ার কারণ সরকারের ধার্য্য দামের চেয়ে বাজারে বেশী দাম থাকায় মিলার এবং কৃষকরা গোডাউনে ধান-চাল দেন নাই। মিলারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এবারও বাজারের চেয়ে সরকারের ধার্য্য মুল্য কম হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশী। আসাদুজ্জামান আরো জানান,আমন চাল সরবরাহের জন্য উপজেলার ১০ জন মিল মালিকের সাথে চুক্তি করে যোগ্যতা ভিত্তিক বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে।

মৃত্যুও মূল্যবান
আবদুর রাজ্জাক রাজু

মৃত্যুকে ভাবলে লাগে এতই যে ভয়
তবুও কেউ মৃত্যুকে করে নাকো জয়।
মৃত্যুর কষ্ট-যন্ত্রনা সবাই শোনে-জানে
দুনিয়ার চলা ফেরায় কেউ তা না মানে।
মৃত্যু অমোঘ সত্য চিরকালের প্রথা
তথাপি ভাবে না বুঝি মৃত্যুর কথা।
চিন্তা ও কর্মে নেই মৃত্যুর ছোঁয়া
ডুবে আছে অপকর্মে কত বেপড়োয়া।
লোভ-ক্ষোভ-হিংসা- প্রতিহিংসায়
মায়া-মোহ-ছলনায় সব হারিয়ে যায়।
‘গাড়ী-বাড়ী-নারী’ মোহে এতই মগ্ন
দুনিয়াদারিতে ভুলে মৃত্যুর লগ্ন।
কোনই খেয়াল নেই কখন আসে ডাক
মৃত্যু ভিষন প্রলয় সম মহা দুর্বিপাক।
কখন যে ধরবে কষে আজরাইল
মুহুর্তও অবকাশ দেবে না এক তিল।
সবাই যাচ্ছে সবার চোখের উপর
তবুও হয় না হুঁশ থাকে বেখবর।
মৃত্যুকে ভুলে নেশায় পান করে মদ
আরও কত গড়ে তুলে সহায়-সম্পদ।
সব পড়ে থাকে যায় খালি দুই হাত
সকল গর্ব-দর্প মুহুর্তে নিপাত।
মৃত্যুকে মূল্যবান ভেবে পথ চলা
তা না হলে সব প্রয়াস স্রেফ নিস্ফলা।
জীবনের মূল্য যেমন দুনিয়ার তরে
মৃত্যুও মহা মূল্যবান এ জীবনের পরে।

 

 

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD