আবুল কালাম আজাদঃ নাটোরে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী রিনা খাতুনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার দায়ে স্বামী রনি মোল্লাকে মৃত্যুদণ্ডসহ ৩০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত। গত বুধবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এই আদেশ দিয়েছেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত রনি মোল্লা গুরুদাসপুর উপজেলার পুরুলিয়া গ্রামের হাবিল মোল্লার ছেলে। আদালত ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালে হাবিল মোল্লার ছেলে রনি মোল্লার সাথে বিয়ে হয় নাটোর সদর উপজেলার শিবদুর গ্রামের মফিজ উদ্দিনের মেয়ে রিনা খাতুনের। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে রিনা খাতুনকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে তার স্বামী ও শ্বশুড়বাড়ীর লোকজন। বিষয়টি রিনা খাতুন তার বাবাকে জানালে মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে রনিকে এক লাখ টাকা দেন। পরে আবারো টাকা দাবি করে নির্যাতন করতে থাকে রনি। এরপর আরো তিনদফায় জামাইকে টাকা ও সোনার গহনা দেন রিনার বাবা। এরপরো আরো ২ লাখ টাকা দাবি করে রনি। একপর্যায়ে ২০১৮ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর রিনাকে ধারালো চাকু দিয়ে এলোপাথারি কুপিয়ে এবং পিটিয়ে জখম করে। খবর পেয়ে রিনার বাবা এসে মেয়েকে রক্তাক্ত অবস্থায় নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক রিনাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহত রিনার বাবা মফিজ উদ্দিন বাদি হয়ে রিনার স্বামী রনি মোল্লাসহ পাঁচজনের নামে গুরুদাসপুর থানায় হত্যা মামলা করে। পুলিশ তদন্ত করে একমাত্র রনি মোল্লাকে অভিযুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। দীর্ঘ পাঁচ বছর মামলার স্বাক্ষ্য-প্রমাণ গ্রহণ শেষে আদালতের বিচারক রনি মোল্লাকে বুধবার মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। বিচারক একইসাথে ৩০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন। আদালতের স্পেশাল পিপি আনিসুর রহমান জানান, জরিমানার টাকা নিহতের বাবা ও মা পাবেন বলে বিচারক রায়ে উল্লেখ করেছেন।