ডাঃ আমজাদ হোসেন উল্লাপাড়া প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় কৃষকেরা বছরের দ্বিতীয় প্রধান সরিষা ফসলের আবাদ শুরু করেছেন। কৃষকেরা আধুনিক প্রযুক্তির বড় ট্রাক্টর ও পাওয়ার টিলারে জমিতে হালচাষ করে সরিষা বীজ বুনছেন। গত বছরের চেয়ে এবারে ২১ হাজার ২৩৫ হেক্টর বেশী পরিমাণ জমিতে সরিষা ফসল আবাদের সরকারী লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। কৃষি প্রণোদনায় সরিষা বীজ পেয়েছেন প্রায় ১৩ হাজার কৃষক
উপজেলা কৃষি অফিস থেকে জানানো তথ্যে এবারে গোটা উপজেলায় ২১ হাজার ১৩৫ হেক্টর পরিমাণ জমিতে সরিষা ফসল আবাদের সরকারী লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। গত বছর আবাদ হয়েছিলো ২০ হাজার ১২৫ হেক্টর পরিমাণ জমিতে।
উপজেলার পাথার প্রান্তরের উধুনিয়া , বড় পাঙ্গাসী ও মোহনপুর ইউনিয়ন এলাকায় সবচেয়ে বেশী পরিমাণ জমিতে সরিষা ফসলের আবাদ হয়। এছাড়া বাকী ১১ ইউনিয়নের প্রায় সব মাঠেই কম বেশী পরিমাণ জমিতে সরিষা ফসলের আবাদ হয়ে থাকে। কৃষকেরা হলুদ সেতি বারী সরিষা -১৪ ও ১৭ এবং দেশীয় সেতি ও কালো মাঘি জাতের সরিষা ফসল আবাদ করেন। এর মধ্যে বারী -১৪ ও ১৭ জাতের সরিষার বেশী হারে ফলন মেলে বলে জানানো হয়।
সরেজমিনে গত দিন তিনেক সময়ে উপজেলার সলঙ্গা ইউনিয়নের আঙ্গারু , শহরিয়ারপুর , বাঙ্গালা ইউনিয়নের ভয়নগর, চরপাড়া, ধরইল , মালিপাড়া , আফার , সিমলাসহ আরো বহু মাঠে সরিষা ফসলের আবাদ শুরু করেছেন কৃষকেরা। আবাদী মাঠগুলোয় কৃষকেরা বড় ট্রাক্টর ও পাওয়ার টিলার মেশিনে হালচাষ করে সরিষা বীজ বুনছেন।
উপজেলার ভয়নগর মাঠে বড় একটি ট্রাক্টর মেশিনে হালচাষ করাকালে প্রতিবেদককে চালক ও মালিক আনিছুর রহমান বলেন, একবিঘা জমিতে দুবার হালচাষে আটশো টাকা নিচ্ছেন। আর সরিষা বীজ বুনে আরো একবার হালচাষ ও মই টানায় এক হাজার দুইশো টাকা করে নিচ্ছেন। তিনি বলেন দিনের আট থেকে দশ ঘণ্টায় প্রায় চল্লিশ বিঘা জমিতে হালচাষ করে সরিষা বীজ বোনার পর মই টানা যায়।
কৃষক জামাল বলেন বড় ট্রাক্টর কিংবা পাওয়ার টিলারে জমিতে হালচাষ ও সরিষা ফসলের বীজ বুনে মই টানায় খুবই সুবিধা হয়েছে।
সলঙ্গা ইউনিয়নের শহরিয়ারপুর ও আঙ্গারু মাঠে সরিষা ফসলের আবাদকারী কজন কৃষক বলেন তারা বারী সরিষা ১৪ জাতের সরিষা ফসলের বীজ জমিতে বুনেছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সূবর্ণা ইয়াসমিন সূমী বলেন উল্লাপাড়া উপজেলার প্রায় সব মাঠেই সরিষা ফসলের আবাদ হয়। কৃষকেরা এরই মধ্যে এর আবাদ শুরু করেছেন । গত বছর সরিষা ফসল আবাদের সরকারী লক্ষ্যমাত্রা ধরা ছিলো ১৮ হাজার ৮৮০ হেক্টর পরিমাণ জমিতে। সেখানে ২০ হাজার ১২৫ হেক্টর পরিমাণ জমিতে আবাদ হয়েছিলো। বেশী হয়েছিলো ১ হাজার ২৪৫ হেক্টর পরিমাণ জমিতে। এবারে ১ হাজার ১১০ হেক্টর পরিমাণ জমিতে বেশী আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। কৃষি প্রণোদনায় এবার গোটা উপজেলার ১২ হাজার ৯৫০ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষককে বিনামূল্যে সরিষা বীজ ও রাসায়নিক সার দেওয়া হয়েছে। তার বিভাগের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ মাঠ পর্যায়ে সরাসরি কৃষকদেরকে এর আবাদে দরকারী পরামর্শ দিচ্ছেন। এবারের মৌসুমে সরিষা ফসলের আবাদ গত বছরের চেয়ে এক হাজার দশ হেক্টর বেশী পরিমাণ জমিতে হবে বলে তিনি আশা ও লক্ষ্যমাত্রা ধরেছেন