চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি: পাবনার চাটমোহরসহ চলনবিল অঞ্চল ছেয়ে গেছে ভেজাল ও নিম্নমানের কীটনাশকে। এসব ভেজাল ও নিম্নমানের কীটনাশক জমি ও ফসলে প্রয়োগ করে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন কৃষকেরা। ভেজাল ও নিম্নমানের কীটনাশক সংরক্ষণ ও বিক্রির বিষয়টি স্বীকার করেছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মাসুম বিল্লাহ। তিনি জানান, ভেজাল ও নকল কীটনাশকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নামী-দামী কোম্পানীর কীটনাশক ওষুধ নকল করে বাজারজাত করছে একটি চক্র। চাটমোহর উপজেলার বামনগ্রাম বাজারের পাশে রেলগেট এলাকায় মেসার্স সাদেক এন্টারপ্রাইজ নামের একটি সার ও কীটনাশকের দোকানে অভিযান চালায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এই দোকান থেকে সম্প্রতি জব্দ করা হয় সিনজেনটা বাংলাদেশ লিমিটেডের বেশ কিছু নকল কীটনাশক। সিনজেনটার স্থানীয় প্রতিনিধি ওই দোকানে গিয়ে নকল ওষুধ সনাক্ত করেন। এরমধ্যে রয়েছে ভিরতাকো, নমিস্টার ট্রপ, থিয়োভিট, গ্রেজিন ও ডলিয়াম ফ্লেক্সি। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর পাবনার সহকারী পরিচালক মাহবুব হাসান রনি মঙ্গলবার ওই দোকানে অভিযান চালিয়ে ভোজাল ও নিম্নমানের কীটনাশক বিক্রি ও সংরক্ষণ করার অভিযোগে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
এদিকে সম্প্রতি উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের শিমুলতলা বাজারে ও ফৈলজানা ইউনিয়নের শরৎগঞ্জ বাজারে অভিযান চালিয়ে দুইটি দোকান থেকে মেয়াদ উত্তীর্ণ, ভেজাল, নিম্নমানের, নিষিদ্ধ ও অনুমোদনহীন ভারতীয় কীটনাশক জব্দ করেন ভ্রাম্যমান আদালত। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যজিস্ট্রেট মোঃ রেদুয়ানুল হালিম শিমুলতলা বাজারের মোস্তাফিজুর রহমানের মালিকানাধীন মেসার্স আবীর ট্রেডার্স নামের সার ও কীটনাশকের দোকানে অভিযান চালিয়ে নকল, অনুমোদনহীন ভারতীয় ও মেয়াদ উত্তীর্ণ কীটনাশক জব্দ করেন এবং দোকানীকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এছাড়া শরৎগঞ্জ বাজারের লোকমান হোসেনের মালিকানধীন লোকমান ট্রেডার্সে অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ, নকল ও মেয়াদ উত্তীর্ণ কীটনাশক জব্দ করেন এবং ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। চাটমোহরসহ আশপাশের উপজেলার হাট-বাজারে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে লাইসেন্সবিহীন কীটনাশকের দোকান। এসকল দোকানে সারও বিক্রি হচ্ছে চড়াদামে। এসব দোকানে অবাধে বিক্রি হচ্ছে ভারতীয় অনুমোদনবিহীন কীটনাশক, নকল, ভেজাল, নিম্নমানের ও মেয়াদ উত্তীর্ণ কীটনাশক। এসব কীটনাশক জমিতে ও ফসলে প্রয়োগ করে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন কৃষকেরা।
একটি অসার্ধ চক্র এ অঞ্চলে ভারতীয় কীটনাশকসহ সকল ও ভেজাল ওষুধ সরবরাহ করছে বলে একাধিক সূত্র জানায়। ব্যবসায়ীরাও অধিক মুনাফার আশায় এসব ওষুধ বিক্রি করছে। শুধু ভেজাল ও নকল কীটনাশকইনয়। এ অঞ্চলে তৈরি হচ্ছে হাঁস-মুরগী ও গরু-ছাগলের ওষুধ। চাটমোহর উপজেলার কুমারগাড়া গ্রামে জলোজিক্যাল এগ্রো ফার্মা নামের একটি ওষুধ তৈরির কারথানায় ভেজাল ও নিম্নমানের গরু-ছাগলের ওষুধ তৈরি করে বাজারজাত করা হচ্ছে মর্মে অভিযোগ রয়েছে।
নকল, ভেজাল ও নিম্নমানের কীটনাশক বিক্রি ও বাজারজাত করার বিষয়ে চাটমোহর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল্লাহ আল মাসুমবিল্লাহ বলেন, দামী-দামী কোম্পানীর নকল ওষুধ বাজারজাক করা হচ্ছে এটা সত্য। আমরা ভারতীয় অনুমোদনবিহীন, নকল, ভেজাল, নিম্নমানের ও মেয়াদ উত্তীর্ণ কীটনাশকের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছি। ইতোমধ্যে কয়েকটি বাজারে অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযান অব্যাহত রয়েছে।