পাটের আবাদ বেশি তবে পাট যাগের সমস্যা

Spread the love

ডাঃ আমজাদ হোসেন মিলন উল্লাপাড়া প্রতিনিধিঃ  আবাদ সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় এবারের মৌসুমে সরকারী লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০ হেক্টর বেশী পরিমাণ জমিতে পাট ফসলের আবাদ হয়েছে। কৃষকেরা পাটের ভালো হারে ফলনের আশা করছেন। অনেক এলাকার কৃষকেরা ভালো হারে ফলন পাচ্ছেন। এদিকে এখনো স্বাভাবিক বন্যা না হওয়ায় এলাকার বেশীর ভাগ মাঠ , খাল বিলে পানি নেই। এতে কৃষকেরা পাট কাটার আগে জাগ দেওয়ার জায়গা খোজ করছেন। নদীই এখন পাট জাগ দেওয়ার জায়গা ভরসা। পাট জাগ দিতে কৃষকদেরকে বাড়তি টাকা খরচ করতে হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে, এবারের মৌসুমে উল্লাপাড়া উপজেলায় ১ হাজার ৬শ হেক্টর পরিমাণ জমিতে  পাট চাষের সরকারী লক্ষ্যমাত্রা ধরা ছিলো। সেখানে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০ হেক্টর বেশী মোট ১ হাজার ৬২০ হেক্টর পরিমাণ জমিতে তোষা ও দেশী জাতের পাট ফসলের আবাদ হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে এবারের পাট চাষে ৪ শ ৭০ জন কৃষককে কৃষি প্রণোদনায় বিনামূল্যে এক কেজি করে উন্নত জাতের পাট বীজ দেওয়া হয়েছে। কৃষি প্রণোদনার বীজে বিভিন্ন এলাকায়  প্রায় ৪শ ৭০ বিঘা জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

উপজেলায় কয়ড়া, সদর উল্লাপাড়া, পূর্ণিমাগাতী, বড়হর, পঞ্চক্রোশী, সলপ, দুর্গানগর ইউনিয়ন এলাকার  বিভিন্ন মাঠে পাটের আবাদ করা হয়েছে। এবারের মৌসুমে তোষা জাতের মধ্যে কেনাফ মেছতা পাট বেশী পরিমাণ জমিতে আবাদ হয়েছে। এছাড়া দেশী  বি জে আর আই ওয়ান (আধুনিক জাত), বিএডিসি এক জাতের পাট আবাদ করেছেন কৃষকেরা।
এখন বর্ষাকালের শ্রাবণ মাস চলছে। এখনো স্বাভাবিক বন্যা হয়নি। উপজেলার নীচু অঞ্চলের উধুনিয়া, বড় পাঙ্গাসী, মোহনপুর, বাঙ্গালা ইউনিয়ন এলাকায় মাঠে বন্যার পানি উঠলেও তা কমে শুকিয়ে যাচ্ছে। উপজেলার বেশীর ভাগ মাঠ খাল বিলে বন্যার পানি নেই। এদিকে তেমন ভারী বৃষ্টি নেই। এই শ্রাবণে ভরদিন কড়া রোদ তাপ থাকছে। এদিকে মাঠের পাট ফসল কাটার সময় হয়ে এসেছে। কোনো কোনো এলাকার কৃষকেরা আগেই পাট কেটেছেন। তারা পাট ধোওয়ার পর আশা মতে  ভালো হারে ফলন পাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে পাট কাটার আগে পাট জাগ দেওয়ার জায়গা খোজ করছেন। কোন এলাকায় খালে নালায় পানি আছে তা খোজ খবর নিয়ে কাটা পাট সেখানে নিয়ে জাগ দিচ্ছেন বলে খোজ নিয়ে জানা গেছে। অনেক এলাকায় নদীই এখন পাট জাগ দেওয়ার ভরসা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকার কৃষকেরা দুরের বিভিন্ন মাঠ থেকে পাট বয়ে নদীতে নিয়ে জাগ দেবেন। উপজেলার পূর্ণিমাগাতী ইউনিয়নের পুকুরপাড় গ্রামের কৃষক গোলবার হোসেন পঞ্চাশ শতক জমিতে কেনাফ মেছতা পাটের আবাদ করেছেন। কদিন আগে পাট কেটে পাতা পচাতে মাঠেই ভুই জাগ দিয়ে রেখেছিলেন। আজ শুক্রবার সে কাটা পাট জাগ দিতে দুরের একটি নালায় বয়ে নিচ্ছেন। তিনিসহ দুজন মজুর পাট বয়ে নিচ্ছেন। প্রতিবেদককে গোলবার হোসেন বলেন স্বাভাবিক  বন্যা হলে জমির পাশের বড় নালায় পাট জাগ দিতে পারতেন। এখন দুরের খালে নিয়ে জাগ দিচ্ছেন। এর জন্য মজুরীতে বাড়তি খরচ হচ্ছে । এদিকে  সেখানেও পানি কম।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সূবর্ণা ইয়াসমিন সুমী বলেন, কৃষকদের মাঝে পাট চাষে আগ্রহ বেড়েছে। কৃষি বিভাগ থেকে ভালো জাতের পাট ফসলের আবাদে কৃষকদেরকে পরামর্শ ও নানা সহযোগিতা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে আগাম আবাদের পাট কাটা শুরু হয়েছে। এবারে এখনো স্বাভাবিক বন্যা না হওয়ায় পাট জাগ দিতে দুরের খাল বিল নদী নালায় বয়ে নিতে হচ্ছে । তিনি আরো বলেন, রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাটের আশ এড়ানোর পর তা বাড়ীর উঠোন আঙ্গিনায় কিংবা আশেপাশের কোথায় গর্ত করে পানিতে চুবিয়ে রাখা যেতে পারে

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD