সাপ্তাহিক চলনবিল বার্তা

Spread the love

সংখ্যা ৩৩ বৃহস্পতিবার ২০ জুলাই ৫ শ্রাবন ২ মহররম

শান্তিপূর্ণভাবে তাড়াশ পৌরসভার প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত
লুৎফর রহমান, তাড়াশ: সিরাজগঞ্জের তাড়াশ পৌরসভার প্রথম নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে গত ১৭ জুলাই সোমবার। নির্বাচন কমিশন অফিস সূত্র জানায়, পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ১৯ হাজার ২৮৭ জন। এই নির্বাচনে শতকরা ৮১.৫৬ ভাগ ভোট পড়েছে। ৯টি ওয়ার্ডের ১০টি কেন্দ্রে ইভিএম এর মাধ্যমে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই নির্বাচনে প্রথম মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী মোঃ আব্দুর রাজ্জাক। তিনি ৯ হাজার ৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বদ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী বাবুল শেখ পেয়েছেন চার হাজার ২৫৮ ভোট ।পৌর নির্বাচনের ফলাফলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিরাজগঞ্জ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও তাড়াশ পৌরসভা নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার মোঃ শহিদুল ইসলাম। এই নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি চমক দেখিয়েছেন সংরক্ষিত মহিলা আসনে সদস্য পদে চশমা প্রতীকে তিনজন প্রার্থীই বিজয়ী হয়ে। এ নিয়ে তাড়াশে এখন টক অব দ্য টাউনে পরিণত হয়েছে।
নির্বাচিত তিন সংরক্ষিত মহিলা সদস্য হলেন ১,২ও ৩ নং ওয়ার্ডের বিশিষ্ট নারী নেত্রী ও সমাজকর্মী প্রভাষক রোখসানা খাতুন রুপা, তিনি মোট ভোট পেয়েছেন দুই হাজার ৫৭। ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের মোছাঃ জেসমিন খাতুন, তিনি পেয়েছেন ২১৪৮ ভোট। অপর দিকে ৭,৮ও ৯ নং ওয়ার্ডের মোছাঃ ফাতেমা খাতুন ১৯৪২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।সাধারণ পুরুষ কাউন্সিলর পদে ১নং ওয়ার্ডের মোঃ মোসলেম উদ্দিন পাঞ্জাবি প্রতীকে ৯০৪ ভোট। ২ নং ওয়ার্ডে মোঃ রব্বেল হোসেন উট প্রতীকে ৩৫৬ ভোট। ৩ নং ওয়ার্ডে বাবু তালুকদার টেবিল ল্যাম্প প্রতীকে ৮০২ ভোট , ৪ নং ওয়ার্ডে শামীম সরকার বøাকবোর্ড প্রতীকে ৮৬৩ ভোট, ৫ নং ওয়ার্র্ডে জাহাঙ্গীর আলম পাঞ্জাবি প্রতীকে ৭১৩ ভোট, ৬ নং ওয়ার্ডে মওদুদ আহমেদ মানিক উট পাখি প্রতীকে ৪৭৭ ভোট, ৭ নং ওয়ার্ডে হাসিনুর রহমান পাঞ্জাবি প্রতীকে ৪৯৫ ভোট, ৮ নং ওয়ার্ডে শরিফুল ইসলাম ডালিম প্রতীকে ৮৯৬ ভোট এবং ৯ নং ওয়ার্র্ডে শরিফুল ইসলাম খোকন ৩৮০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।

আব্দুর রাজ্জাক তাড়াশ পৌর মেয়র নির্বাচিত
ডেস্ক রিপোর্ট : সিরাজগঞ্জের তাড়াশ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক বিজয়ী হয়েছেন। গত সোমবার (১৭ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ শেষে জেলা নির্বাচন ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বেসরকারিভাবে তাকে বিজয়ী ঘোষণা করেন।নৌকা প্রতীক নিয়ে আব্দুর রাজ্জাক আট হাজার ৯৯২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বদ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী বাবুল শেখ জগ প্রতীকে পেয়েছেন চার হাজার ২৫৮ ভোট।মোট ভোটার সংখ্যা ১৯ হাজার ২৮৭ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ৯ হাজার ৮২০ জন, পুরুষ ৯ হাজার ৪৬৭ এবং একজন তৃতীয় লিঙ্গের। ৯টি ওয়াার্ডের ১০টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।মেয়র পদে প্রতিদ্ব›িদ্বতাকারী অন্যরা হলেন শহিদুল ইসলাম (নারিকেল গাছ) ও আল-আমিন (মোবাইল)। নির্বাচনে ৯টি ওয়ার্ডে ৪৫ জন কাউন্সিলর ও ১২ জন সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করেন।জেলা নির্বাচন ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বলেন, কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই নির্বাচন শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন হয়েছে। সূত্রঃ জাগো নিউজ।

হিরো আলমকে মারধর
দোষীদের বিচার আশা করে যুক্তরাষ্ট্র

ডেস্ক রিপোর্ট : সোমবার ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলমকে মারধরের ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র আশা করে বাংলাদেশ সরকার যে কোনো সংঘর্ষের ঘটনার সুষ্ঠু, পুঙ্খানুপুঙ্খ ও নিরপেক্ষ তদন্তের পাশাপাশি দোষীদের বিচার নিশ্চিত করবে।গত সোমবার রাতে ওয়াশিংটনে সংবাদ ব্রিফিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এ মন্তব্য করেন।হিরো আলমকে নৌকার ব্যাজধারীদের মারধর প্রসঙ্গে ম্যাথিউ মিলার আরও বলেন, ‘গণতান্ত্রিক নির্বাচনে এ ধরনের রাজনৈতিক সংঘর্ষের স্থান নেই।’বাংলাদেশের নির্বাচনগুলো ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে বলেও জানান তিনি।এর আগে গত ২৪ মে বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য যুক্তরাষ্ট্র নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করে। তার আগে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী র্যাব ও এর কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় মার্কিন সরকার। সূত্রঃ যুগান্তর।

অভিনন্দন
তাড়াশের প্রাণপ্রিয় নেত্রী আজীবন সমাজকর্মী রোখসানা খাতুন রুপার সদ্য অনুষ্ঠিত তাড়াশ পৌরসভার প্রথম নির্বাচনে সংরক্ষিত মহিলা আসনে কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার জন্য তাকে উষ্ণ অভিনন্দন ও প্রাণঢালা শুভেচ্ছা। তাড়াশ পৌরসভার উন্নয়নে ও সমৃদ্ধিতে আপনার কর্মজীবন নিবেদিত হবে এমনি প্রত্যাশা। আপনি আরো অনেক দূর এগিয়ে যান , আপনার মধ্যে অপার সম্ভাবনার এবং স্বপ্নের আলোক ছটা, আগামীতে কর্ম-কীর্তিতে নারী নেত্রী থেকে নন্দিত জননেত্রী হয়ে তাড়াশের মানুষের সেবা ও কল্যাণে জীবন উৎসর্গ করে অমূল্য অবদান রাখুন – এই প্রত্যাশা। আপনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করি।

তাড়াশ পৌরসভার পক্ষে ১,২,৩ নং ওয়ার্ডের জনসাধারণ।

তাড়াশের সাংবাদিকতা : একাল সেকাল
সনাতন দাশ
(শেষাংশ)
মাধাইনগর তা¤্রশাসনে তাড়াশের নাম উল্লেখ রয়েছে। রাজা লক্ষণ সেন পৌন্ড্্রবর্ধন ভূক্তির অন্ত:পাতী বরেন্দ্র মন্ডলে কিছু ভূমি কৌশিক গোত্রীয় শ্রীমান মাধব দেব শর্মাকে ৬৭১ শতাব্দীতে প্রদান করেছিলেন। আলোচিত তা¤্রশাসনে পাল্য ভূমির চৌহদ্দির বিবরণ এভাবে দেয়া হয়েছে-
‘পূর্ব্বে বপুশাসা যাপকাঃ পশ্চিমে ভূঃ সীমান্তা।
চন্দ্রকোণ বিরাটনগরো উত্তর ভূঃ সীমা, পশ্চিমে সপ্তক্ষীরা যাসুকঃ
পূর্ব্ব ভূঃ সীমা উত্তরৈঃ সর্ব্বং তারাসো অ¤্রসরো দক্ষিণ ভূঃ সীমা’
ভাবার্থ- অতএব চন্দ্রকোণ বিরাটনগর যার উত্তর সীমা, যে ভূভাগের পশ্চিমে সপ্তক্ষীরা,যাসুক, চন্দ্রকোণ ও বিরাটনগরই যার পূর্বসীমা, তাড়াশ, অ¤্রসর (আমশড়া) যে ভূমির দক্ষিণ সীমা। এই চতুঃসীমাবচ্ছিন্ন কানন. অশেষবিধ সজলস্থল ভূমি শ্রী মাধব ব্রাক্ষণের পাল্য ভূমি হলো।
রাম পালের রাজত্বকালে কৈর্বর্তনায়ক ভীম সিরাজগঞ্জের তাড়াশ হতে বগুড়া জেলার শেরপুর পর্যন্ত একটি মৃত্তিকা প্রাকার নির্মাণ করেন। যা ভীমের জাঙ্গাল নামে পরিচিত। সেন আমলের অনেক কীর্তি আজো বিদ্যমান, সুলতানী আমলের কীর্তি নওগাঁয়ের সুলতান নসরৎ শাহের নির্মিত শাহী মসজিদ, ভাগ্নে মসজিদ অন্যতম। সুলতান আলাউদ্দিন হুসেন শাহের পুত্র সুলতান নসরৎ শাহের আমলে ৯৩২ হিজরিতে এ শাহী মসজিদ নির্মাণ করান। মসজিদ প্রাঙ্গণে হজরত আবুল আলী বাকী শাহ্ শরীফ জিন্দানী (রহ:) এর মাজার রয়েছে। বাগদাদের জিন্দান শহর হতে তিনি ষোড়শ শতাব্দীতে এদেশে ইসলাম প্রচারের জন্য আগমন করেছিলেন। প্রতি বছর চৈত্র মাসের প্রথম শুক্রবারে এ উপলক্ষে পবিত্র ওরস শরীফ অনুষ্ঠিত হয়। সমাগত হন লাখ লাখ ভক্ত অনুরাগী।
মুঘল আমলে নওগাঁয় সদর আমিন কোর্ট ছিল। এবং এখানে একজন শাসনকর্তা ও কাজি থাকতেন। মুসলিম রাজত্বের শেষদিকে নওগাঁয় তহসীল বা থানা প্রতিষ্ঠা করা হয়। তাড়াশের প্রথম প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু হয় নওগাঁ থেকেই। এর কিছুকাল পর থানা উঠিয়ে দিয়ে পুলিশ আউটপোস্ট বা পুলিশ ফাঁড়ি প্রতিষ্ঠা করা হয়।এছাড়াও মুঘল আমলের বারুহাসের ইমামবাড়া,তথাকথিত বিনসাড়া গ্রামে পৌরাণিক নায়িকা বেহুলার স্মৃতিচিহ্ণ, বস্তুলগ্রামে চাঁদের ভিটা ও তালম গ্রামে অবস্থিত শ্রী শ্রী শ্যামসুন্দর দেব ঠাকুর শিব মন্দির অন্যতম পুরাকীর্তি।
তবে আধুনিক তাড়াশের সূত্রপাত হয় বাসুদেব তালুকদারের হাতে। কথিত আছে মুঘল আমলে ভূইয়াদের পরাস্ত করার পর ইসলাম খাঁন প্রাদেশিক রাজধানী রাজমহল থেকে ঢাকাতে স্থানান্তর করেন। বাসুদেব তালুকদার ইসলাম খাঁনের অন্যতম রাজ আমাত্য ছিলেন। তাঁর কাজে খুশি হয়ে তাঁকে তাড়াশে জায়গীর প্রদান করেন। যা চৌধুরাই তাড়াশ নামে পরিচিত। বাসুদেব তালুকদারের প্রশস্তি রয়েছে কৃষ্ণচরণ মজুমদারের ‘ মূল ঢাকুর ও সমালোচনা’-গ্রন্থের ৫৯ ও ৫০ পৃষ্ঠায়।
সেখানে উল্লেখ রয়েছে-
আর এক কহি শুন দেব অনুপম।
চড়িয়া গ্রামেতে বাস শুকদেব নাম।।
শুকদেবের পুত্র বাসুদেব তালুকদার।
তাহার যশের কথা শুনহ বিস্তার।।
ধনবান কীর্তিবন্ত বিষয় ব্যাপারে।
তাহার পুত্র চাকরি কৈলা নবাব সরকারে।।
সেই বংশে উদ্ভবিলা বলরাম রায়।
পিতামহ কার্য কৈলা বারেন্দ্র আশ্রয়।।
নিরাবিল কার্য সব করিতে লাগিল।
দাস নন্দী চাকী সবে অন্নভূক্ত হৈল।।
তাহার সন্তান সব বাড়িল সম্ভ্রমে।
বায়ান্ন লক্ষের কর্তা পুরুষানুক্রমে।।
তাড়াস-বাসী দেব করণের প্রধান।
সর্বঘর ব্যাপিত হইয়া পাইল সম্মান।।
তাড়াশের এই জমিদার বংশ মুঘল আমল থেকে শুরু করে ইংরেজ শাসনামল পর্যন্ত দোর্দন্ড প্রতাপে তাদের জমিদারী পরিচালনা করেন। এসব জমিদারদের অনন্যকীর্তি কপিলেশ্বর শিব মন্দির, রসিকরায়ের ত্রিদোল মঞ্চ, শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ নাট মন্দির, নকুলেশ্বর শিব মন্দির, সুবৃহৎ রাজবাড়ি ও নওগাঁয়ে জামাই বিনোদ মন্দির। এছাড়াও এ বংশের জমিদার বলরাম রায় সুবেদার আজিমুশ্বানের সময় চাটমোহর-রাণীরহাট-বগুড়া শাহীপথ নির্মাণ করান। বৃটিশ শাসনামলে জনহিতকর কাজের জন্য বনোয়ারী লাল রায় ও বনমালী রায় ‘রায় বাহাদুর’ খেতাবে ভূষিত হোন। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের ডামাডোলে তাড়াশের জমিদারগণ তাদের সম্পদের নিরাপত্তার জন্য তাড়াশ থানা গঠনের প্রস্তাব করেন। ১৯১৩ সালে রায়গঞ্জ থানার অংশবিশেষ নিয়ে গঠিত হয় তাড়াশ থানা।
তখন হতে আধুনিক প্রশাসন চালু হলেও ১৯৪৭ সাল পূর্ব পর্যন্ত শুধুমাত্র পুলিশ ষ্টেশন,কাজী অফিস,পোস্ট অফিস ও একটি দাতব্য চিকিৎসালয় ছাড়া কোনো অফিস ছিলোনা। মহামারী ,প্লেগ,কলেরা,ম্যালেরিয়ার ডিপো ছিলো এ অঞ্চল। তাড়াশ বলতেই চোখের সামনে ভেসে উঠতো বর্ষার তরঙ্গমালা,জলকাদায় ভর্তি মাঠ ঘাট,প্লেগ ম্যালেরিয়ায় জর্জরিত দুর্বল মানুষ। ডাক্তার বৈদ্য কবিরাজহীন জনপদ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এক বিপদ সংকুল আন্দামান। তাইতো তাড়াশের নামে আজও সবার হৃদয়ে ত্রাস জাগে।

(আপগ্রেড তাড়াশ -মো: রুহুল আমিন)।
নানা ভাঙ্গাগড়ার ইতিহাসের মধ্যেও ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন, পাকিস্তান আন্দোলন পরতর্তীতে ভাষা আন্দোলন থেকে মহান মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত এ জনপদের মানুষের ছিলো সক্রিয় অংশ গ্রহণ। ১৯৭১ সালে ৭ই মার্চে বঙ্গবন্ধুর দেয়া ঐতিহাসিক ভাষণের পরপরই তাড়াশের ছাত্র জনতা মুক্তিযুদ্ধের সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। ম.ম.আমজাদ হোসেন মিলন, ড. হোসেন মনসুর, এম. মোবারক হোসেন মিঞা, এ্যাডভোকেট আতাউর রহমান, মো: আব্দুর রহমান মিঞা, আফজাল হোসেন দারা, অধ্যাপক মোসলেম উদ্দিন, হাবিবুর রহমান তাড়াশী প্রমুখের নেতৃত্বে তাড়াশ থানার ১০৭টি সিভিল গান(বন্দুক) একত্রিত করে স্থানীয়ভাবে প্রশিক্ষণ শুরু হয়। পাক হানাদার বাহিনীর আক্রমনের মুখে ২০ মে ১৯৭১, বাংলা ৫ জ্যৈষ্ঠ তাড়াশের পতন ঘটে। মুক্তিযোদ্ধারা যোগ দেন ৭ নং সেক্টরের অধীনে সাব সেক্টর পলাশডাঙ্গা যুবশিবিরে। উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ এ গেরিলা বাহিনীর নেতৃত্ব দেন আব্দুল লতিফ মির্জা (সিরাজগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি)। তাড়াশের বীর সেনানীর মধ্যে অনেকেই ভারতে উচ্চতর প্রশিক্ষণ শেষে বিভিন্ন যুদ্ধে অংশ নেন। এর মধ্যে তাড়াশে নওগাঁ যুদ্ধ অন্যতম। ১৯৭১ সালের ১১ নভেম্বর। রমজান মাস। শেষরাতে পাকসেনারা স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় নওগাঁ আক্রমন করে। পাকবাহিনীর অতর্কিত আক্রমনের খবর জানতে পেরে অধিনায়ক আব্দুল লতিফ মির্জার নির্দেশে মুক্তিযোদ্ধারা পাল্টা জবাব দেয়। ভোর হতে বিকেল আড়াইটা পর্যন্ত একটানা যুদ্ধ চলে। কোনো প্রকার হতাহত ছাড়াই মুক্তিযোদ্ধাগণ বিজয় অর্জন করেন। নিহত হয় ১৫০ জন পাকসেনা। ক্যাপ্টেন সেলিম সহ বেশ কিছু পাকিস্থানী আর্মি মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে জীবিত বন্দি হয়।মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে নওগাঁর যুদ্ধকে বলা হয় উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় গেরিলাযুদ্ধ। নওগাঁ যুদ্ধের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে ১৩ নভেম্বর পাকসেনারা তাড়াশের অদূরবর্তী আমবাড়িয়া গ্রামে গণহত্যা চালায়। এর মধ্যে শিক্ষক ও সাংবাদিক ইয়ার মোহাম্মদ অন্যতম। যুদ্ধপরবর্তী এসব বীরমুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে তাড়াশের অন্তত দুজন নেতৃস্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐতিহ্যবাহী “তাড়াশ প্রেস ক্লাব” প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় ভূমিকা রাখেন; যা সিরাজগঞ্জ জেলায় এক অনন্য দৃষ্টান্ত।
তাড়াশের সাংবাদিকতার সেকাল:
তাড়াশের সাংবাদিকতার ইতিহাস মানেই গৌরবের ইতিহাস। অন্ধকারাচ্ছন্ন চলনবিল অঞ্চলে সাংবাদিকতার যে সূর্য একদিন উদিত হয়েছিল-তা আলোকিত করেছিল সমগ্র ভারতবর্ষকে। কাঁপিয়ে দিয়েছিল ইংরেজ শাসন-শোষণের ভিত। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম যাকে কাছে টেনে নিয়ে দায়িত্ব দিয়েছিলেন পত্রিকা সম্পাদনার-সেই আলোকিত ঐতিহাসিকরাজনীতিবিদ ও সাংবাদিকের নাম মাওলানা এম, সেরাজুল হক। তিনি ছিলেন বহু গুণে গুণান্বিত বহু মাত্রিক প্রতিভার এক বিশাল নক্ষত্র।তাঁর জন্ম ১৯০৩ সালের ১লা নভেম্বর বৃহত্তর পাবনা জেলার (বর্তমান সিরাজগঞ্জ জেলা) রায়গঞ্জ থানার (বর্তমান তাড়াশ উপজেলা) মাধাইনগর ইউনিয়নের মোরশেদগুণা ( এখন সেরাজপুর) গ্রামে।
তাঁর সম্পর্কে প্রখ্যাত সাংবাদিক (পরবর্তীতে সমকালের অতিরিক্ত বার্তা সম্পাদক) তপন দাশ মূল্যায়ন করতে গিয়ে লিখেছেন-তিনি শুধু একজন সাধারণ মানুষ নন,একজন মহামানব ; যিনি আজাদী সংগ্রামে নির্যাতিত যোদ্ধা, জাতির নিঃস্বার্থ ও ত্যাগবতী সেবক, তাড়াশ থানার স্বনামখ্যাত লোকনায়ক, হিন্দু¬ মুসলিম মিলন প্রয়াসী, একনিষ্ঠ ইসলাম প্রচারক, নির্ভিক রাজনীতিবিদ, অনলবর্ষী বক্তা, প্রতিশ্রæতিশীল সাহিত্যিক, নিষ্ঠাবান সাংবাদিক এবং সর্বোপরি একজন আদর্শ সমাজ সেবক; এইরুপ বহুমুখী গুণ ও প্রতিভায় প্রদীপ্ত যাঁর জীবন-তিনি হ’লেন মাওলানা এম,সেরাজুল হক (সূত্রঃ চলনবিলের চেরাগ: সম্পাদনা: শামসুল আলম সেলিম)। শৈশবে চেরাগ আলী নামে সম্বোধিত এ ক্ষণজন্মা পুরুষ, সর্বসাধারণে হক সাহেব হিসেবে সমধিক পরিচিত ছিলেন। তাঁর জীবন ও কর্ম নিয়ে “ কর্মবীর এম,সেরাজুল হক” নামে একখানা জীবনী গ্রন্থ রচনা করেন চলনবিলের আরেক কৃতি সন্তান সরদার এম.এ.হামিদ। পরবর্তীতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ আব্দুল জলিল বাংলা একাডেমী থেকে তাঁর আরেকটি জীবনী গ্রন্থ প্রকাশ করেন।
মাওলানা এম. সেরাজুল হকের রচিত সাহিত্যকীর্তির মধ্যে রয়েছে-‘মোসলেম সমস্যা’,‘সুধার পেয়ালা’,‘ শিরাজী চরিত’,‘ইসলামের বৈশিষ্ট্য’,‘টুটিল তিমির রাত্রি’,‘কেতাবুল ঈমান’,‘শেরেক ধ্বংস-ঈমান রক্ষা’,‘পাকিস্তানী গজলগীতি’,‘ আল্লারপানে ফিরিয়া চাও’,‘ইসলাম প্রভা’ ইত্যাদি। এছাড়াও তিনি ‘অমর জীবন কাহিনী’,বিদ্রোহী তিতুমীর’,‘প্রলয় বিষান’ প্রভৃতি ক’খানা বইয়ের অপ্রকাশিত পান্ডুলিপি রেখে মারা যান। সেরাজুল হকের উল্লেখযোগ্য কর্মকীর্তির মধ্যে রয়েছে-সাহিত্য সাধনা, সাংবাদিকতা ও সম্পাদনা,রাজনীতি, সমাজসেবা ও সমাজ সংষ্কার এবং জনপ্রতিনিধিত্ব। তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ ‘শিরাজী চরিত’ প্রকাশিত হয় ১০৩৫ সালে। অনলপ্রবাহের কবি গাজীয়ে বলকান সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজীর জীবনী নিয়ে রচিত বইটি প্রকাশের পর পরই বিভিন্ন পত্রিকায় ভূয়সী প্রশংসা করা হয়। কলকাতা থেকে প্রকাশিত ‘ ফরওয়ার্ড’ পত্রিকায় বলা হয়
ঞযব নড়ড়শ রং ৎিরঃঃবহ রহ ধ াবৎু ংরসঢ়ষব ষধহমঁধমব ধহফ রং সঁপয রহঃবৎবংঃরহম ভৎড়স নবমরহহরহম ঃড় বহফ. ডব পড়হমৎধঃঁষধঃব ঃযব অঁঃযড়ৎ ভড়ৎ ঃযরং ফরভভরপঁষঃ ঃধংশ যব ঁহফবৎঃড়ড়শ ধহফ ভড়ৎ ঃযব াধষঁধনষব পড়হঃৎরনঁঃরড়হ যব যধং সধফব ঃড় ঃযব ইবহমধষর ষরঃবৎধঃঁৎব.” (২হফ ঝবঢ়ঃ, ১৯৩৫) ।
সাংবাদিকতা ও সম্পাদনার ক্ষেত্রে তাঁর অবদানও অনস্বীকার্য। তাঁর অসংখ্য প্রবন্ধ,কবিতা,গজল দেশের বিভিন্ন নামীদামী পত্রিকায় এলোমেলোভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। তিনি ‘ নবযুগ’,‘বসুমতী’,‘নয়াবাংলা’,‘আনন্দবাজার’,‘মোহাম্মাদী’,‘ মোসলেম জগৎ’,‘আজাদ’,‘সংবাদ’,‘ইত্তেফাক’ সহ বিভিন্ন পত্রিকায় নিয়মিত লিখতেন। বিভিন্ন পত্রিকায় শুধু লিখেই তিনি তাঁর কর্তব্য শেষ করেননি। তিনি নানা সময় পত্রিকা সম্পাদনা করেছেন। সাপ্তাহিক ‘সোলতান’ ও ‘ প্রজারকথা’ পত্রিকার সহ-সম্পাদক ছিলেন। এবং ‘তরক্কী’,‘সেবক’ ও ‘প্রতিনিধি’ পত্রিকার সম্পাদনা বিভাগেও কাজ করেছেন। এছাড়াও তিনি বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম সম্পাদিত ঐতিহাসিক-‘লাঙল’ পত্রিকারও ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ছিলেন।
এখানে পাঠকের জ্ঞাতার্থে জানিয়ে রাখছি- ‘ লাঙল’ পত্রিকাটি ছিল ভারতীয় বামপন্থী রাজনৈতিক দল ‘শ্রমিক- প্রজা- স্বরাজ সম্প্রদায়’ পার্টির আনুষ্ঠানিক প্রকাশনা। কবি কাজী নজরুল ইসলাম সম্পাদিত এটি ছিলো দ্বিতীয় পত্রিকা। কবির প্রথম সম্পাদিত ‘ধূমকেতু’ পত্রিকাটি ব্রিটিশ সরকার বাজেয়াপ্ত করলে ১৯২৫ সালে ১৬ ডিসেম্বর ‘লাঙল’ পত্রিকার প্রকাশনা শুরু করে। এটি শ্রমিক শ্রেণী সম্পর্কে কবিতা এবং সে যুগের বিখ্যাত সমাজতন্ত্রী ও কমিউনিষ্টদের উপর নিবন্ধ প্রকাশ করেছিল। যার ফলে তাকে বারবার পরতে হয়েছিল ইংরেজ শাসকদের রোষানলে। কাটাতে হয়েছে কারাবন্দী-গৃহবন্দী জীবন।
রাজনীতি করতে গিয়েও মাওলানা এম. সেরাজুল হক ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নিয়েছেন। তিনি প্রথম জীবনে মহাত্মা গান্ধীর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে কংগ্রেসে যোগ দেন। পরবর্তীতে অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী শেরে বাংলা এ.কে. ফজলুল হকের কৃষক প্রজাপার্টিতে যোগ দিয়ে চলনবিল অঞ্চলের কৃষক শ্রমিক শ্রেণীর উন্নয়নে ব্রতী হন। এ সময় সুদখোর মহাজনের ঋণের জাল থেকে কৃষক শ্রমিককে মুক্তি দিতে ১৯৩৫ সালে ‘ঋণ সালিসী বোর্ড’ গঠনের জন্য সুপারিশ করা হয়। এবং পরবর্তীতে ১৯৩৬ সালের বেঙ্গল এগ্রিকালচার ডেটরস অ্যাক্ট (১৯৩৬-এর বেঙ্গল অ্যাক্ট ৭)-এর অধীনে ১৯৩৭ সালে সারা বাংলায় প্রায় ১১ হাজার ঋণ সালিসী বোর্ড স্থাপন করা হয়। এ ঋণ সালিসী বোর্ড গঠন ও প্রজাস্বত্ব আইন পাশের জন্য তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। নাটোরের গুরুদাসপুরে চাঁচকৈড়ে তিনদিন ব্যাপী কনফারেন্সের আয়োজন করেন। ওই কনফারেন্সে যোগ দেন খাজা নাজিমুদ্দিন ও হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার প্রাক্কালে(১৯৪৬) তিনি যোগ দেন মুসলিম লীগে।
মভওলানা এম. সেরাজুল হকের আরেক স্মরণীয় অমরকীর্তি ১৯৩২ সালে ৫ ও ৬ নভেম্বর সিরাজগঞ্জে ‘ বঙ্গীয় মুসলিম তরুণ সম্মেলন’। সে সময়ের সিরাজগঞ্জের নাট্য ভবনে অনুষ্ঠিত (বর্তমানে ভাসানী মিলনায়তন) ওই সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন কবি কাজী নজরুল ইসলাম। সম্মেলনের অভ্যার্থনা কমিটির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন মাওলানা এম.সেরাজুল হক। সেখানে কবি যে অভিভাষণ পাঠ করেন তা এখন একাদশ শ্রেণীতে ‘ যৌবনের গান’ নামক প্রবন্ধ হিসেবে পড়ানো হয়। হক সাহেব সিরাজগঞ্জ সালেহা-ইসাহাক গার্লস স্কুল প্রতিষ্ঠার সাহায্য কল্পে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে হাত পেতেছেন। তাড়াশ থানার বস্তুল এবং তাড়াশ হাইস্কুলেরও তিনি অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা।
১৯৬৩ সালে ১১ নভেম্বর কর্মবীর, অনলবর্ষী বক্তা তথা বৃহত্তর চলনবিল অঞ্চলের সাংবাদিকতার পথিকৃৎ ভারতবর্ষের অন্যতম মহাপুরুষ মাওলানা এম. সেরাজুল হকের জীবন প্রদীপ নিভে যায়। ছন্দপতন ঘটে তাড়াশের সেকালের সাংবাদিকতার উজ্জ্বল নক্ষত্রের। তাঁর মৃত্যুতে শোকবাণী দেন ব্যারিষ্টার এম.এ আব্বাস(লন্ডন), মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগীশ, কবি বন্দে আলী মিয়া, কবি আবুল হাশেম, কবি আ: কা:শ: নূর মোহাম্মদ বিদ্যা বিনোদ, ঢাকার পাবনা সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো: আব্দুল ওহাব, ঢাকার কান্ডারী সাহিত্য মজলীশ,কবি ইজাব উদ্দিন, অধ্যাপক এম,এ, সাত্তার প্রমূখ। এছাড়াও ১১ নভেম্বর সিরাজগঞ্জ বি.এল হাইস্কুল প্রাঙ্গনে মহকুমার বেসিক ডেমোক্রাটগণের সভায় প্রধান অতিথি গভর্নর আবদুল মোমেন খান মাওলানা এম, সেরাজুল হকের মৃত্যুর সংবাদ শুনে শোক প্রকাশ করে মোনাজাত করেন।
এই মহান সাংবাদিকের অনুপ্রেরণায় পাকিস্তান শাসনামলে সাহিত্য-সাংবাদিকতায় আসেন শহীদ সাংবাদিক ইয়ার মোহাম্মদ ও তোফায়েল উদ্দিন সিদ্দিকী। সম্পাদনায় আসেন বরেণ্য সাহিত্যিক ‘ মাসিক যমুনার’ নির্বাহী সম্পাদক এ্যাডভোকেট মো. ফজলুর রহমান খাঁন। এ আমলের শেষ উত্তরাধিকার দৈনিক ইত্তেফাকের চলনবিল সংবাদদাতা সাংবাদিক মওলানা মো: রুহুল আমিন। এই প্রাত:স্মরণীয় সাংবাদিক জীবনের শেষ নি:শ্বাস পর্যন্ত করে গেছেন সাংবাদিকতা। এবং আমৃত্যু তিনি ছিলেন আপাদমস্তক সাংবাদিক। বর্তমান প্রজন্মের অনেক সাংবাদিক মওলানা মো: রুহুল আমিনের সঙ্গে কাজ করে ঋদ্ধ হয়েছেন। এ লেখক তাদের মধ্যে একজন।মূলত: নীতি-আদর্শে ও ভাববৈশিষ্ট্যে রুহুল আমিন ছিলেন সেরাজুল হকের ভক্ত-অনুরক্ত তা তিনি বহুবার বিভিন্নভাবে ব্যক্ত করেছেন।
তাড়াশের সাংবাদিকতার একাল:
একালের সাংবাদিকতার ইতিহাস লেখাটা বেশ জটিল। সমকালে সবাইকে মূল্যায়ন করা অনেক কঠিন কাজ। সেই দুরুহ কাজ করতে গিয়ে প্রথমেই আমি ক্ষমা প্রার্থনা করে নিচ্ছি বর্তমান সময়ে তাড়াশে যারা সাংবাদিকতা করছেন, তাদের কাছে এ জন্য যে, সমভাবে মূল্যায়ন করার অক্ষমতার জন্য। মহান মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী এ পর্বে তাড়াশের সাংবাদিকতা আবর্তিত হয়েছে নাটোরের গুরুদাসপুরের “চলনবিল প্রেসক্লাব”কে কেন্দ্র করে। সে সময়ের তাড়াশে কর্মরত সাংবাদিকরা গুরুদাসপুরের চলনবিল প্রেসক্লাবে সদস্য হয়ে কাজ করতেন। কিন্তু গুরুদাসপুরের পথ দুর্গম হওয়ায় এখানকার সাংবাদিকরা অনুভব করেন তাড়াশে একটি স্থানীয় প্রেসক্লাব গঠনের।
১৯৮০ সালের ১৫ জুন। রোজ : রবিবার আসে তাড়াশের সাংবাদিকতার ইতিহাসের সেই মাহেন্দ্র ক্ষণ। ওই দিন দুপুর ১২ টায় তাড়াশ কলেজ চত্বরের কাঁঠাল গাছের ছায়ায় দুর্বাঘাসের উপর বসে প্রেসক্লাব স্থাপনের প্রথম মিটিং করা হয়। মো: রহুল আমিন কর্তৃক আহুত ওই মিটিংয়ে সভাপতিত্ব করেন চলনবিলের গুরুদাসপুর থানার বিশিষ্ট সাংবাদিক (পরবর্তীতে দৈনিক জনকণ্ঠে বার্তা বিভাগে কর্মরত) অধ্যাপক শামছুর রহমান। এ শুভমুহূর্তে আরো উপস্থিত ছিলেন, মো: জাকির হোসেন (দৈনিক আজাদ), মো: রহুল আমিন(ইত্তেফাক), মো: আব্দুর রাজ্জাক রাজু (কাঁকন/ রাজশাহী বার্তা), বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: সাইদুর রহমান সাজু (দৈনিক বার্তা), মো: সাইদুর রহমান সাঈদ ( দৈনিক দেশ/ শিক্ষানবিস) ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ্ আব্দুল কুদ্দুস (দৈনিক সংবাদ/ শিক্ষানবিস)। ওই সভায় ইত্তেফাক সংবাদদাতা মো: রহুল আমিনকে আহবায়ক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস কুদ্দুসকে যুগ্ন আহবায়ক করে একটি আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্যান্য সদস্য ছিলেন: মো: আব্দুর রাজ্জাক রাজু, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: সাইদুর রহমান সাজু, মো: জাকির হোসেন,অধ্যাপক শামছুর রহমান, মো: সাইদুর রহমান সাঈদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: আব্দুর রহমান ও শ্রী শংকর দাস প্রমুখ।
তাড়াশ প্রেসক্লাব প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতার জন্য স্মরণীয় হয়ে আছেন পলাশডাঙা যুবশিবিরের সহ সর্বাধিনায়ক (পরবর্তীতে সিরাজগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য) বীর মুক্তিযোদ্ধা ম.ম. আমজাদ হোসেন মিলন ও মাধাইনগর ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান শতবর্ষী বীরমুক্তিযোদ্ধা মো: আব্দুর রহমান। তাড়াশ প্রেসক্লাব বর্তমান স্থানে স্থায়ীভাবে আসার আগ পর্যন্ত বীরমুক্তিযোদ্ধা মো: আব্দুর রহমান সাহেবের তাড়াশ বাজারের ঘরে অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবে কার্যক্রম শুরু করা হয়। এ সময় আরো সহযোগিতা করেছেন বারুহাস ইউপির চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন ভাসানী, তাড়াশ সদরের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এম. মোবারক হোসেন মিঞা ও তাড়াশ উপজেলা পরিষদের প্রথম উপজেলা চেয়ারম্যান সরদার মো: আব্দুল জলিল সহ অন্যান্যরা। সস্মরণযোগ্য, জলিল সাহেব উপজেলা চেয়ারম্যান থাকাকালে তার প্রদত্ত উপজেলা পরিষদেও অনুদানেই তাড়াশ প্রেসক্লাবের সর্বপ্রথম টিনশেড ভবন নির্মিত হয়।
১৯৮০ সালের ৩১ আগস্ট রায়গঞ্জের নিজ গ্রাম হতে গরুর গাড়ীতে এসে বিকেলে তাড়াশ প্রেসক্লাবের আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন রায়গঞ্জ-তাড়াশ আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য মি. জামশেদ আলী এম.এ। ওই দিন বিকেলে তাড়াশ প্রেসক্লাবের ১৯৮০-৮২ সালের জন্য স্থায়ী কমিটি গঠন করা হয়। সভাপতি নির্বাচিত হন মো: রহুল আমিন ( ইত্তেফাক) ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন আব্দুর রাজ্জাক রাজু (কাঁকন/রাজশাহী বার্তা)। ১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দে তাড়াশ কলেজের উত্তর পাশে আট শতক জায়গা সরকারিভাবে লীজ নিয়ে বর্তমান স্থায়ী ভবনে প্রেসক্লাব স্থানান্তর করা হয়। সেই শুভ মুহূর্তে প্রতিষ্ঠাতাগণ শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন চলনবিলের সাংবাদিকতার পথিকৃৎ মওলানা এম. সেরাজুল হককে। শুভেচ্ছোবাণী পাঠিয়ে কৃতজ্ঞতা পাশে আবদ্ধ করেন সাহিত্যিক ও সমাজসেবক অধ্যক্ষ এম.এ.হামিদ, মাসিক যমুনা পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক বিশিষ্ট লেখক-সাহিত্যিক এ্যাডভোকেট মো. ফজলুর রহমান খাঁ।(তথ্যসূত্র: তাড়াশ প্রেসক্লাবের মুখপত্র: মাছ পাখীর দেশে)
তাড়াশে কর্মরত সাহিত্যিক- সাংবাদিকরা বিভিন্ন সময়ে বেশ কয়েকটি সাময়িকী প্রকাশ করেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য: তোফায়েল উদ্দীন সিদ্দীকী সম্পাদিত‘ চলনবিলের ঢেউ’, মো: রহুল আমিনের সম্পাদনায় তাড়াশ প্রেসক্লাবের মুখপত্র‘ মাছ পাখীর দেশে’,বীর মুক্তিযোদ্ধা সাইদুর রহমান সাজুর সম্পাদনায় ‘অভিষেক’, শামসুল আলম সেলিমের সম্পাদনায়‘ চলনবিলের চেরাগ’, মো: আবদুর রাজ্জাক রাজু/ তপন দাশের সম্পাদনায়‘ গ্রেনেড’, মো: আবদুর রাজ্জাক রাজুর সম্পাদনায়‘প্রয়াস’,‘বিলতরঙ্গ’, ও মো: আবদুর রাজ্জাক রাজু/ মো: সাইদুর রহমান সাঈদের সম্পাদনায় ‘ত্রিশূল’, মো: সাইফুল ইসলামের সম্পাদনায় ‘ চলন’, মো: আবদুর রাজ্জাক রাজু/ তপন দাশ/ বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: সাইদুর রহমান সাজুর সম্পাদনায়‘ ত্রিসীমানা’,জয়নুল আবেদীন মাহবুব/ মো: আবদুর রাজ্জাক রাজু সম্পাদনায়‘ রুপসী বাংলা’, মোশারফ হোসেন মল্লিক সম্পাদিত‘বর্ণ’, এম, রহমতুল্লাহ্/ মো: আবদুর রাজ্জাক রাজু সম্পাদিত ‘সাপ্তাহিক চলনবিল’, মো: জহুরুল ইসলাম সম্পাদিত‘ চলনবিলের নাও’, সনাতন দাশের সম্পাদনায় ‘ চলনবিল’ ও ‘ধ্রæপদী’, এম, আতিকুল ইসলাম বুলবুলের সম্পাদনায়‘ মৃত্তিকা’, মো: সাইদুর রহমান সাজুর সম্পাদনায়‘ এলো বৈশাখ’ ও ‘ ফাগুণের আগুন’, মো: হাদিউল হৃদয়ের সম্পাদনায়‘ হৃদয়ে চলন’ ইত্যাদি সাময়িকী বিচ্ছিন্নভাবে প্রকাশিত হলেও সাংবাদিকদের ও সাহিত্যিকদের কোনো নিয়মিত প্রকাশনা তাড়াশে ছিলো না।
৯ জুলাই ২০১৭ সালে তাড়াশ প্রেসক্লাবের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, বরেণ্য সাংবাদিক ও লেখক মো: আবদুর রাজ্জাক রাজুর সম্পাদনায় ও প্রকাশনায় ‘ সাপ্তাহিক চলনবিল বার্তা’ নিয়মিত প্রকাশ করে স্থানীয় বহুমুখী সমস্যার নানাচিত্র তুলে ধরছেন। নানা সীমাবদ্ধতার মাঝেও এ পত্রিকাটি নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে। এ জন্য তাড়াশবাসী তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ। উল্লেখ্য, তাড়াশের সমকালীন সাহিত্যিক সাংবাদিকদেন মধ্যে রাজুই একমাত্র সাহিত্যামোদী যিনি এযাবৎ চারটি বিচিত্র স্বাদের বই লিখে প্রকাশ করেছেন। এছাড়া তাড়াশে যারা সাংবাদিকতা করে অবসর নিয়েছেন অথবা প্রয়াত হয়েছেন তাঁরা হলেন- আবদুল লতিফ, মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা জামশেদ আলী, মরহুম মাওলানা আব্দুর রহমান, শামসুল আলম সেলিম, মো: সাইফুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম প্রমূখ।
২০০০ সালের পর থেকে তাড়াশের সাংবাদিকতা আর তাড়াশের মাঝে সীমাবদ্ধ থাকেনি। ঢাকায় তারা সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নেন। এর মধ্যে ড.মিঠুন মোস্তাফিজ (বর্তমানে কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের চেয়ারম্যান) একুশে টেলিভিশনে (ইটিভি) স্টাফ রিপোর্টর হিসেবে যোগ দেন। পরবর্তীতে তিনি বৈশাখী টেলিভিশনের এ্যাসাইমেন্ট এডিটর হিসেবে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি একজন ভালো ইংরেজী সংবাদ পাঠকও। মো: রফিকুল ইসলাম রনি যোগ দেন দৈনিক সংবাদে। বর্তমানে তিনি জনপ্রিয় দৈনিক ‘বাংলাদেশ প্রতিদিনের’ সিনিয়র রিপোর্টার, মো: হাসিবুল হাসান স্টাফ রিপোর্টর দৈনিক যুগান্তর, মুন্নি আহমেদ স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে যোগদেন ‘মাইটিভি’তে। বর্তমানে তিনি সংবাদ সংস্থা ‘আইবিএন’এ কর্মরত। মো: মাহমুদুল হাসান খোকন স্টাফ রিপোর্টার ‘ এসএ টিভি’ ও মো: রফিকুল ইসলাম স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে যোগ দেন ‘ দৈনিক আমার সংবাদ’এ। বর্তমানে তিনি ‘দৈনিক মানবকণ্ঠ’ পত্রিকায় স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত।
তাড়াশ উপজেলায় সাংবাদিক হিসেবে যারা বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন-( জেষ্ঠ্যতার ক্রমানুসারে নয়) তারা হলেন: মো: মেহেরুল ইসলাম বাদল (করতোয়া), এম, শফিউল হক বাবলু (মানবজমিন), এম,আতিকুল ইসলাম বুলবুল (সমকাল/৭১ টেলিভিশন), মো: মামুন হুসাইন(ভোরের কাগজ/ যুগের কথা), মির্জা ফারুক (যায়যায়দিন), মো: আব্দুল বারিক (ভোরের দর্পণ), মো: গোলাম মোস্তফা (ইত্তেফাক/মুসলিম টাইমস/গণকণ্ঠ), মো: শামিউল হক শামীম (এশিয়ান টিভি), মো: সাব্বির আহমেদ (আমাদের সময়), সাহেদ খাঁন জয় (আজকালের খবর), মো: লুৎফর রহমান (নয়াদিগন্ত), মো: আশরাফুল ইসলাম রনি (খোলা কাগজ/পরিবর্তন), মো: আলহাজ রনি (বিজয় টিভি), মো: আব্দুল মাজিদ (মানবজমিন), হাদিউল হৃদয় ( কালবেলা), মো: রফিকুল ইসলাম ( আজকের পত্রিকা), মো: লিটন আহমেদ (আমার সংবাদ), মো: রেজাউল করিম ঝণ্টু ( নয়াশতাব্দী) , মৃণাল সরকার মিলু( প্রতিদিনের সংবাদ), মো: সানোয়ার হোসেন সাজু (বাংলাদেশের আলো) , মোছা: হোসনেয়ারা নাসরীন দৌলা (সংবাদ), মো: সোহেল রানা সোহাগ( আনন্দটিভি/ মানবকণ্ঠ), শায়লা পারভীন( সময়ের আলো/ঢাকা টাইমস), আবু হাশিম খোকন (উত্তরবঙ্গবার্তা), মো: জাকির আকন (আমাদের নতুন সময়), মো: শাহজাহান আলী (সংগ্রাম), মো: সাইদুর রহমান (ঢাকার ডাক), মো: আরিফুল ইসলাম(জাবাবদিহী), মো: আসিফ (দেশবাংলা), সনজু কাদের (বিজিনেস বাংলাদেশ), নূর ইসলাম রোমান (সংবাদ প্রতিদিন), মো: মোহসীন আলী (সকালের সময়/ নিউ নেশন), মো: শামীম হোসেন (ইনকিলাব),সনাতন দাশ( কালের কণ্ঠ/মাইটিভি/এশিয়ান টিভি) ।
শেষ কথা:
তাড়াশ প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতাগণ আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন- তাড়াশ প্রেসক্লাব অমর হোক, অক্ষয় হোক। বাস্তবে তা আর হয়নি। নেতৃত্বের দ্ব›দ্ব, সংকীর্ণতা ও অনৈক্যের কারণে আরোও বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। যা অনাকাঙ্খিত। ভবিষ্যতে এর একটি ঐক্যবদ্ধ ¯্রক্রিয়ার জন্য কেউ না কেউ উদ্যোগ নিয়ে মহতী দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন। ঐক্য ছাড়া সাময়িক ব্যক্তিগত লাভ পাওয়া গেলেও সামগ্রিক পেশাগত মর্যাদা পাওয়া সম্ভব নয়। পরিশেষে অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌসের ভাষায় বলতে হয়-‘ বাংলাদেশের গণমাধ্যম শেষ বিচারে বাজার-অভিমুখীন,ধনিক- অভিমুখীন,এলিট-অভিমুখীন,মালিক শ্রেণি- অভিমুখীন, ও পুরুষ অভিমুখীন।’এ সীমাবদ্ধতার পরও তাড়াশের কতিপয় সাংবাদিকরা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে চলেছেন- এটিই এখন একমাত্র আশার কথা।
লেখক : বিশিষ্ট, সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও প্রাবন্ধিক। সভাপতি, তাড়াশ প্রেসক্লাব, সিরাজগঞ্জ।

তাড়াশের রোখসানা খাতুন রুপা
সমাজকর্মী থেকে জনপ্রতিনিধি

আরিফুল ইসলামঃ তাড়াশের সর্বজন পরিচিত রোকসানা খাতুন রুপা কলেজ ছাত্রজীবন থেকেই জড়িয়ে পড়েন বেসরকারী সমাজ উন্নয়ন কর্মে। দুউ দশকের অধিককাল ধরে তিনি কাজ করেছেন সমাজের দুঃস্থ ,অসহায় এবং শোষিত-বঞ্চিত মানুষের মাঝে। মানুষের জন্য কাজ করতে গিয়ে রুপা আপনভোলা তথা আতœভোলা হয়ে গেছেন এক পর্যায়ে। অর্থাৎ নিজের বৈষয়িক স্বার্থের দিকে নজর দিতে ভুলে গেছেন। গরিব ও মেহনতি মানুষের টানে তিনি নিজের জীবনের ভবিষ্যৎ উন্নতি ও সমৃদ্ধির কথা ভুলে গেছেন। বিস্মৃত হয়েছেন তার পরিবারিক জীবনের স্বাচ্ছন্দ্যের বিষয়। কখন নিরবে তার সরকারি চাকরীর বয়স অতিক্রম করে চলে গেছে খেয়াল রাখতে পারেন নি। কোন আফসোস বা অনুশোচনা করেননি যখন তা স্মরণে পড়েছে। আবার তিনি ডুবে গেছেন সমাজের উপেক্ষিত, অবহেলিত মানুষের নানা মুখী সেবা কর্মে।
তাড়াশে প্রতিবন্ধীরা ছিল দৃষ্টির আড়ালে। তিনি তাদের সমাজের সামনের মর্যাদার সারিতে নিয়ে এলেন। কত দৃষ্টিহীন মানুষকে দৃষ্টি আর কর্মহীন নারী-পুরুষকে কর্মময় করে তুলেছেন বিভিন্ন প্রশিক্ষণ, থেরাপি-ব্যায়াম, বিচিত্র সহায়ক উপকরণ ও নানা প্রকার সরকারি ভাতা ও বেসরকারি দান-অনুদানের সাথে যুক্ত করে দিয়ে। বিশেষত: আদিবাসী, প্রতিবন্ধী, তৃতীয় লিঙ্গ, দুঃস্থ ,নারী ও শিশুসহ অসংখ্য অসহায়, নিপীড়িত মানুষকে তিনি আলোর পথ দেখিয়েছেন সাহস ও প্রেরণা দানের মাধ্যমে। দেখিয়েছেন সমাজে অন্যদের মতোই সম অধিকার ও সমান সুযোগ সুবিধা পেয়ে বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রাম করতে, প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে।
তাদেরই একজন বীরাঙ্গনার স্বীকৃতির জন্য তিনি কত লড়াই ও দৌড়ঝাঁপ করেছেন তা একদিন ইতিহাস হয়ে থাকবে। তিনি ছিলেন দক্ষ ও আকর্ষণীয় প্রশিক্ষক। শত শত নানা শ্রেণী-পেশার মানুষকে প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের জ্ঞান চেতনা ও যোগ্যতাকে আরো শানিত ও উৎকর্ষ করেছেন। উন্নয়ন কাজের সূত্রে রুপা পেয়েছেন জাতীয় খেতাব ও পুরস্কার। কর্মসূত্রে তিনি বাংলাদেশে সাবেক মার্কিন ও ইউরোপিয়ান রাষ্ট্রদূতসহ কতিপয় জাতীয়-আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বের সান্নিধ্য লাভ করেন। সিরাজগঞ্জের নারী দিগন্তে রুপার মতো বর্ণাঢ্য নেত্রী ও সমাজকর্মীও দেখা পাওয়া প্রায় বিরল। তার ভেতর আছে মেধাবী নেতৃতের¡ গুণাবলী এবং সাড়া জাগানো সেবাব্রতীর বৈশিষ্ট্য যা তাকে আজ অনন্য করে উজ্জীবিত করেছে জনপ্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতে।
রুপা আজ সমাজকর্মী বা উন্নয়নকর্মী থেকে জনপ্রতিনিধি। প্রথমবারের মতো তাড়াশ পৌরসভার সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে তিনি ১,২ ও ৩ নং ওয়ার্ডে সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলরের আসনে নির্বাচিত হলেন। যা তাড়াশের প্রেক্ষাপটে ব্যতিক্রম এক ঘটনা, এক অর্থে ঐতিহাসিক। অনেকে অভিমত দেন যে, রুপা মেয়র হওয়ার যোগ্যতা রাখেন। তিনি যদি রাজনীতি করেন তবে ভবিষ্যতে তিনি সংসদে যাওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারেন। সেটা তার মতো বিশিষ্ট নারী নেত্রী ও সমাজসেবকের জন্য অস্বাভাবিক বা অসম্ভব নয়। কেননা তৃণমূল কাজের গভীর অভিজ্ঞতা থেকে সমাজ উন্নয়নের আধুনিক উর্দ্ধস্তর পর্যন্ত তার পূর্বে দেখা, জানাশোনা ও চেনা গন্ডির পরিচিতি ও পায়াচারি আছে। আত্মস্বার্থকে প্রাধান্য না দিয়ে ত্যাগের নির্দশন তাকে বিগত কর্মজীবনে খ্যাতিমান করেছে যা আজকের দিনে বেশী দেখা যায় না। অনেকটা বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের অধিকারী , প্রাণবন্ত, নিরঅহংকারী,ত্যাগী মানসিকতার এক অনন্য মেধা ও প্রতিভার উজ্জøল প্রতীক রোখসানা। আমরা আশা করব, তাড়াশ পৌরসভার অগ্রযাত্রায় তার চিন্তা ও ধ্যান-ধারণার সৃজনশীলতা সহায়ক হবে। কারণ, উন্নয়ন ও পরিকল্পনা বিষয়ে তার পূর্ববর্তী কাজের জ্ঞান-প্রজ্ঞা রয়েছে যা তিনি সুদীর্ঘ এনজিও কর্মজীবন থেকে অর্জন করেছেন। তা অত্র পৌরসভার শ্রীবৃদ্ধিতে,মননে ও অনুশীলনে কাজে লাগতে পারে বলে আমাদের ধারণা। জয়তু ! রোখসানা ।

গুরুদাসপুর পৌরসভার বাজেট ৮৫ কোটি টাকা 
গুরুদাসপুর প্রতিনিধি: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের ধারা অবাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করে গুরুদাসপুর পৌরসভার ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের জন্য ৮৫ কোটি ৩৪ লাখ ৪৪ হাজার ৯৬৭ টাকার বাজেট পেশ করেছেন পৌর মেয়র মো. শাহনেওয়াজ আলী।
গত রবিবার দুপুরে পৌর ক্যাম্পাসে টানা চৌদ্দবারের মত এ বাজেট পেশ করেন তিনি। বাজেটে মোট রাজস্ব আয় ৮৫ কোটি ৩৪ লাখ ৪৪ হাজার ৯৬৭ টাকা ও উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৪ কোটি ৭৬ লাখ ১২ হাজার টাকা এবং স্থিতি ধরা হয়েছে ৫৮ লাখ ৩২ হাজার ৯৬৭ টাকা। এসময় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সরকার এমদাদুল হক মোহাম্মদ আলী, উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, ভারপ্রাপ্ত পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হাসান আলী, হিসাবরক্ষক নূরুজ্জামান টিবলু, সাবেক অধ্যক্ষ ইব্রাহিম হোসেন, আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল বারী, গুরুদাসপুর পৌর জাপা (রওশন এরশাদ) সভাপতি মজিবুর রহমান মজনু, জেলা পরিষদ সদস্য সরকার মেহেদী হাসান, চলনবিল প্রেসক্লাবের সভাপতি আলী আক্কাছ, কাউন্সিলর শেখ সবুজ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। বাজেট পেশ ও উন্মুক্ত আলোচনা শেষে পৌরবাসীর বিভিন্ন অভিযোগ শুনেন এবং মতামত গ্রহণ করেন মেয়র শাহনেওয়াজ।

তাড়াশে লাম্পি স্কিনে আক্রান্ত শত শত গবাদী পশু
গাফিলতির অভিযোগ প্রাণিসম্পদ এর বিরুদ্ধে 

লুৎফর রহমান : সিরাজগঞ্জের তাড়াশে লাম্পি স্কিন রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। এতে শত শত গবাদী পশু আক্রান্ত হয়ে নি:শ্ব হচ্ছে ক্ষুদ্র খামারী ও গ্রামের কৃষক। দ্রæত গ্রাম থেকে গ্রামে ছড়িয়ে পড়ছে রোগটি। সুচিকিৎসা না মেলায় ধুকে ধুকে মারা যাচ্ছে গরু। গত এক মাসে উপজেলার অন্তত কয়েক শতাধিক গরু এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে। দিন দিন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে এই সংখ্যা। গরু প্রতি চিকিৎসায় ব্যয় হচ্ছে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। তারপরও সুস্থ করা যাচ্ছেনা আক্রান্ত গরুকে। ফলে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন গরু খামারি ও সাধারন কৃষক। ইতিমধ্যে বেশ কিছু গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
তাড়াশ উপজেলার তালম ইউনিয়নের শাহীপাড়া এলাকার বাসিন্দা আল মাহমুদ জানান, তার শাহিওয়াল জাতের বাছুর লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। একই গ্রামের কোবাদ ও লাবু মিয়ার দেশী জাতের গরু লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়েও মারা গেছে।তারা জানান, গাভী লাম্পিস্কিনে আক্রান্ত হলে প্রথমে স্থানীয় পশু চিকিৎসকের মাধ্যমে চিকিৎসা করাই। কিন্তু কাজ না হওয়ায় পরে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে যাই। সেখানে তাদের কোন সাড়া মিলে নাই।শুধু আল মাহমুদ কোবাদ ও লাবু মিয়া নয় তাড়াশ উপজেলায় লাম্পিস্কিন রোগে আক্রান্ত হয়ে গরু হারিয়েছেন অনেকেই।বর্তমানে উপজেলাতে অন্তত এক হাজারেরও বেশি গরু এই রোগে আক্রান্ত রয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় মারা গেছে অন্তত ১০ টি গরু। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্তের গরুর সংখ্যা। শুরুতে সারা শরীরে বসন্তের মতো গুটি গুটি উঠছে। তারপর পায়ের হাটু গোড়ালি ও গলা ফুলে যাচ্ছে। গলায় জমছে পানি। জ্বর ও প্রচন্ড ব্যথায় খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দেয় আক্রান্ত গরুগুলো। অনেক সময় মুখ দিয়ে লালা পড়ে। কেউ কেউ আক্রান্ত গরুকে অন্য গরু থেকে মশারি দিয়ে আলাদা করে রাখছেন। কিন্তু তারপরও সংক্রমণ ঠেকানো যাচ্ছে না। জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা.গৌরাঙ্গ কুমার তালুকদার বলেন, লাম্পিস্কিন ভাইরাস জনিত রোগ। এটি মশা মাছির মাধ্যমে ছড়ায়। লাম্পিস্কিন রোগের সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা না থাকলেও রোগের ধরণ অনুযায়ী চিকিৎসা দেয়া হয়ে থাকে। আতঙ্কিত না হয়ে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও মশা মাছি থেকে গরুকে নিরাপদ রাখতে হবে। কতগুলো গরু আক্রান্ত তার সঠিক পরিসংখ্যান আমাদের কাছে নেই। ইতিমধ্যেই আমরা জনসাধারণ কে সচেতন করতে উঠান বৈঠক, ভ্যাকসিনেসন,আক্রান্ত গবাদী পশুকে মশারীর মধ্যে রাখা ইত্যাদি পরামর্শ ইত্যাদি পরামর্শ দিচ্ছি।আমাদের অফিসের কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তাড়াশে খোলা ট্রাকে ইট-বালি বহন
জসস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি 

স্টাফ রিপোর্টারঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে পৌর শহরের ব্যস্ততম রাস্তায় খোলা ট্রাকে ওভার লোড দিয়ে ইট ও বালু বহন করা হচ্ছে। এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন পথচারী। দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সাধারণ লোকজন। সরেজমিনে গত মঙ্গলবার দুপুরের দিকে পৌর শহরের যানজট প্রবণ এলাকা চৌরাস্তার মোড়ে দেখা গেছে, একটি ট্রাকে এক পাশে ইট, আরেক পাশে বালি বহন করা হচ্ছে। কিন্তু ইট-বালির উপরে কোন ত্রিফল বা পেপার দিয়ে ঢেকে দেওয়া নেই। এটা জনস্বাস্থ্যেও জন্য হুমকি বটে।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকার জাহিদ খন্দকার নামের একজন দোকানদার বলেন, ইট ও বালুবাহী ট্রাকগুলো বেপরোয়াভাবে চলাচল করে। ট্রাকের বালি বাতাসে উড়ে দোকানের মধ্যে আসে। চোখের মধ্যে যায়।
পৌর এলাকার নিকারী পাড়ার শহিদুল ইসলাম নামে একজন মৎস্য খামারী বলেন, খোলা ট্রাকে যেভাবে ইট বহন করা হয় তাতে যে কোন সময় ট্রাকের ইট পড়ে লোকজন আহত হওয়া সম্ভাবনা রয়েছে।তাড়াশ মা হোটেলের মালিক আবু সাইদ বলেন, ট্রাকের বালি খাবারে এসে পড়ে। খোলা ট্রাকে ইট ও বালি বহনর দ্রæত রোধ করা প্রয়োজন। তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মোনায়ার হোসেন বলেন ধূলা-বালির কারণে মানুষ শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত অসুখসহ নানা রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।এদিকে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন সিরাজগঞ্জ জেলা কমিটির আহŸায়ক প্রবীণ সাংবাদিক দীপক কুমার কর বলেন, খোলা ট্রাকে বালু, ইটের গুঁড়া, পাথর কুচি ও সিমেন্ট বহন করায় পরিবেশের স্বাভাবিক ভারসাম্য নষ্ট হয়। অপরদিকে বায়ু দূষণের ফলে মানুষের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেজবাউল করিম বলেন, জান-মাল রক্ষার স্বার্থে খোলা ট্রাকে ইট-বালি বহনকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রায়গঞ্জে আওয়ামীলীগের শান্তি সমাবেশ 
স.ম. আব্দুস সাত্তার : রায়গঞ্জে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ ও উন্নয়ন শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আওয়ামীলীগ সরকারের অভূতপুর্ব উন্নয়ন-চিত্র তুলে ধরার লক্ষে ও বিএনপির চলমান অসাংবিধানিক দাবির নামে নৈরাজ্য সৃষ্টির চক্রান্তের বিরুদ্ধে রায়গঞ্জ পৌর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গত মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ হৃদয়ের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আব্দুল হাদি আলমাজি জিন্নাহ। প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন স্থানীয় এমপি অধ্যাপক ডা. আব্দুল আজিজ। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেদ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা ড. হোসেন মনসুর, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আব্দুল হান্নান খান, সদস্য এ্যাড. ইমরুল হোসেন তালুকদার ইমন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম তালুকদার, রহমত আলী সরকার, ফেরদৌস আলম তালেব, সাইদুল ইসলাম চান, আব্দুল হালিম খান দুলাল, যুগ্ম সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ঝটু, সাংস্কৃতিক সম্পাদক হাসানুজ্জামান সুলতান, সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম শিহাব, পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল-পাঠান, সাধারণ সম্পাদক জুয়েল মাহমুদ প্রমুখ। এছাড়াও আওয়ামীলীগসহ বিভিন অঙ্গ ও সহযাগী সংগঠনর ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্যায়র নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। বক্তারা আওয়ামীলীগ সরকারের বিপুল উন্নয়ন-চিত্র তুলে ধরে বিএিনপির অসাংবিধানিক দাবির প্রতিবাদ জানান। পরে একটি বর্ণাঢ্য উন্নয়ন শোভাযাত্রা পৌর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ কর।

উল্লাপাড়ায় প্রধান শিক্ষক কারাগারে
উল্লাপাড়া প্রতিনিধিঃ চাকরি দেয়ার কথা বলে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে অন্যজনকে চাকরি দেয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের দেয়া মামলায় প্রধান শিক্ষক এখন কারাগারে। এমন খবরে এলাকায় চলছে মিষ্টি বিতরণ। প্রতিবাদ আর অপসারনের দাবীতে স্কুল মাঠে হয়েছে বিক্ষোভ মিছিল। গত মঙ্গলবার সিরাজগঞ্জ কোর্টে হাজিরা দিতে গেলে বিজ্ঞ বিচারক জামিন না মঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন।
জানা গেছে, উল্লাপাড়া উপজেলার সলঙ্গা ইউনিয়নের চরবেড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে “নিরাপত্তা প্রহরী” পদে চাকরি দেয়ার প্রতিশ্রæতি দিয়ে সোলায়মান প্রামানিকের ছেলে তাজ উদ্দিনের কাছ থেকে ১৩ লাখ টাকা ঘুষ নেয় প্রধান শিক্ষক আকতার হোসেন। তাজ উদ্দিনকে চাকরি না দিয়ে নিকটতম একজনকে চাকরি দেয় সুচতুর প্রধান শিক্ষক। ঘুষ নিয়েও চাকরি না দেয়ার বিষয়টি জানাজানি হলে তোপের মুখে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ফেরত দিয়ে বাকী ৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা ফেরত দিবে মর্মে সময় দাবী করে। দীর্ঘ সময়কাল পরেও বাকী টাকা ফেরত না দেয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার কোর্টে অর্থ আত্মসাৎ মামলা দায়ের করেন। প্রধান শিক্ষকের দূর্নীতি,অনিয়ম,ইভটিজিং নানাবিধ অপকর্মের বিরুদ্ধে স্কুলের শিক্ষক,শিক্ষার্থী,কমিটির সদস্যদের একাধিক অভিযোগ উঠেছে। বিঘিœত হচ্ছে বিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠ পরিবেশ। অর্থ ও নারীলোভী প্রধান শিক্ষক আকতার কারাগারে যাবার এমন খবরে বুধবার (১২ জুলাই) বিকেলে বিদ্যালয় এলাকায় স্থানীয় প্রতিবাদী যুবকেরা শিক্ষক নামের কলঙ্ক আকতারকে অপসারনের জন্য মিছিল করেন।

বড়াইগ্রামে পোড়ানো হলো অবৈধ জাল 
বড়াইগ্রাম(নাটোর)প্রতিনিধি: নাটোরের বড়াইগ্রামে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান চালিয়ে অবৈধ চায়না জাল ধ্বংস করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার কৈখালী বিলে এ অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোসাঃ মারিয়াম খাতুন। এসময় অবৈধভাবে মা মাছ ও ছোট মাছ ধরার কারণে ৩৫টি অবৈধ চায়না জাল পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এসময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলেন, এখনও মাছ ধরার সময় হয়নি। ছোট মাছগুলো এখনই যদি আপনারা এভাবে ধরতে থাকেন, তাহলে সময় না হতেই সব মাছ ধ্বংস হয়ে যাবে। বরং এটাকে রক্ষা করুন। আর আমাদের সবার কিন্তু এ দায়িত্ব।

সিংড়ায় হাইটেক পার্ক পরিদর্শনে বিভাগীয় কমিশনার 

সিংড়া প্রতিনিধি: নাটোরের সিংড়ায় নির্মাণাধীন হাইটেক পার্ক পরিদর্শন করেছেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) ও সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (গ্রেড-১) জি এস এম জাফরউল্লাহ্। শনিবার (১৫ জুলাই) বেলা ১১টায় নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের পাশে শেরকোল ইউনিয়নে নির্মাণাধীন হাইটেক পার্ক পরিদর্শন করেন তিনি। এসময় উপস্থিত ছিলেন নাটোরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবু নাছের ভূঁঞা, সিংড়া পৌরসভার মেয়র মো. জান্নাতুল ফেরদৌস, সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. আল ইমরান, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আল-আমিন সরকার প্রমুখ। বিভাগীয় কমিশনার দ্রুত কাজ সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। উল্লেখ্য, এখানে প্রায় ৯ একর জমির ওপর ১৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ হচ্ছে আইটি/হাইটেক পার্ক, সিনেপ্লেক্স ও ডরমিটরি ভবন, স্টিল কাঠামোর সাততলা ভবন ও খেলার মাঠ নির্মাণাধীন।

চাটমোহরে অবৈধ সুদের ব্যবসা জমজমাট
চাটমোহর প্রতিনিধিঃ পাবনার চাটমোহরে নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত সমবায় সমিতির নামে অবৈধভাবে সুদের ব্যবসা জমজমাটভাবে চলছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঋণদান সমিতি কিংবা সমবায় সমিতি খুলে একটি চক্র যেমন চড়াসুদে টাকা লগ্নি করে ব্যবসা করছে, তেমনি সমবায় অধিদপ্তর থেকে ভোগ্যপণ্য কিংবা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির নামে নিবন্ধন নিয়ে সুদের ব্যবসা জমজমাটভাবে চলানো হচ্ছে। এতে গ্রামের হাজার হাজার দরিদ্র সাধারণ মানুষ নিঃস্ব হচ্ছে। এর কোন প্রতিকার মিলছে না। রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছে পরিণত হচ্ছে একটি অসাধু চক্র।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সমবায় অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধন নিয়ে চাটমোহর উপজেলায় বিভিন্ন সমিতি কর্মী নিয়োগ করে চড়াসুদে ঋণ দিয়ে প্রতিদিনই কিস্তি আদায় করছে। অথচ সমিতির নিবন্ধ নিতে নির্দিষ্ট পরিমাণ শেয়ার হোন্ডারের তালিকা দিতে হয়। ওই তালিকার বাইরে সদস্য করা যায় না। কিন্তু একটি সমিতির নিবন্ধন নেওয়ার পর যে কেউ একজন মালিক বনে যাচ্ছেন। তিনি মাঠকর্মী নিয়োগ করে এনজিও স্টাইলে ঋণ দিয়ে প্রতিদিন কিস্তি আদায় করছেন। যা সম্পূর্ণ অবৈধ। কিন্তু এনিয়ে কারো কোন মাথাব্যাথা নেই। সমবায় দপ্তরের কর্তারা এ কর্মকান্ডের মদদদাতা বলে জানা গেছে। এতে করে সরকার মোটা টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
এদিকে চাটমোহরে আনাচে-কানাচে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন সমবায় সমিতি।এসকল অবৈধ সমিতি থেকে লাখ লাখ টাকা ঋণ দিয়ে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে মোটা টাকা। এদেরও মাঠকর্মী রয়েছে। যারা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সদস্য সংগ্রহ করে ঋণ দিয়ে থাকেন এবং প্রতিদিন কিস্তি আদায় করেন। এসকল সমমির কর্ণধারা রাতারাতি লাখপতি বনে যাচ্ছেন আর নিঃস্ব হচ্ছে দরিদ্র সাধারণ মানুষ। এদের বিরুদ্ধে এখন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার বলে সচেতন মহলের অভিমত।
ভাঙ্গুড়ায় করোনার টিকা নিয়ে দুর্নীতি
ভাঙ্গুড়া প্রতিনিধি: কোভিট-১৯ এর ভ্যাকসিনেসন ক্যাম্প প্রাথমিক স্কুল শাখা (৫-১১)বছরের বয়সী শিশুদের করোনা টিকার ২য় ডোজ প্রদান কার্য্যক্রমে ৬২ জন অংশ গ্রহণ কারীদের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান (এনজিও) ব্র্যাক আর্থিক প্রণোদনা প্রদান করেছেন। ব্র্যাক আর্থিক প্রণোদনার নগদ ৩ লক্ষ ৯২ হাজার ১শত টাকা পেয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএইচও মোসাঃ হালিমা খানম গত জুন মাসের ২৫ তারিখে। স্বাস্থ্য কর্মীদের সেই প্রণোদনোর টাকায় উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ হালিমা খানমের হস্তক্ষেপে মোট অর্থ থেকে প্রায় দেড় লাখ টাকা স্বাস্থ্য পরিদর্শক আব্দুল মান্নানের মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ঊঠেছে। তিনি ওই টাকা সিভিল সার্জন অফিসের ওডিট ও ভ্যাট আইটি- বাবদ সকল কর্মচারীদের নিকট থেকে কেটে রেখেছেন মর্মে স্বীকার করেছেন। তবে সিভিল সার্জন পাবনা বলছেন,এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না এবং সিভিল সার্জন অফিস এ বিষয়ে কোনো অডিট করে না ।

উল্লাপাড়ায় খালুর বিরুদ্ধে ধর্ষনের অভিযোগ

উল্লাপাড়া প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় পাখি খাতুন নামে তরুণীকে (১৫) ধর্ষনের অভিযোগ উঠেছে আপন খালুর বিরুদ্ধে।এ ঘটনাটি ঘটেছে উল্লাপাড়া উপজেলার উধুনিয়া ইউনিয়নের পংখারুয়া গ্রামে আবুল কালামের মেয়ে পাখি খাতুনের সাথে। আবুল কালাম তার ছোট শালীকা মোছা: সিমা খাতুন কে প্রায় ১২ বছর পূর্বে সিরাজগঞ্জের শাহাজাদপুর উপজেলার নলুয়া গ্রামের জয়নাল ফকিরের ছেলে মোঃ বকুল হোসেন বকু এর সাথে বিবাহ দেয়, তারপর থেকেই লক্ষ করা যায়, বকুল মদখোর, গাজাখোর,হিরোইনসহ জুয়া ও নারী কেলেংকারীসহ সকল নেশায় আশক্ত তিনি। নেশা ও জুয়া খেলার জন্য আসবাবপত্রসহ স্ত্রীর গহনাগাটি বিক্রি করে দিত। স্ত্রী বাধা দিলে সে তার স্ত্রীকে মারধর করতো প্রতিনিয়তই এবং ঠিক মত ভাত কাপর দিতো না। মাঝে মধ্যে ভায়রা ও শোশুরের কাছে জুয়া ও নেশার টাকার জন্য চাপ দিতো এমনকি টাকা জোর করে নিতো হঠাৎ একদিন ভায়রা আবুল কালামের কাছে ৫০ হাজার টাকা চায়, দিতে অস্বীকার করলে বকুল বলে টাকা না দিলে তার পরিবারে ক্ষতি করবে।

রায়গঞ্জ প্রেস ক্লাবের এজিএম অনুষ্ঠিত 

রায়গঞ্জ প্রতিনিধি: গত বুধবার বিকেল তিনটায় ঐতিহ্যবাহী রায়গঞ্জ প্রেসক্লাবের এজিএম অনুষ্ঠিত হয় সংগঠনের ধানঘড়া বাসস্ট্যান্ডের নিজস্ব অফিসে কে এম রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে। এতে ক্লাবের বার্ষিক রিপোর্ট পেশ করেন সাধারণ সম্পাদক ও মাইটিভির সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি এইচ এম মোনায়েম। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ভাইস প্রেসিডেন্ট ও নিমগাছি অনার্স কলেজের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আলহাজ্ব এম এ হাশিম সরকার মনি, সিনিয়র সদস্য এবং বেগম নুরুন্নাহার তর্কবাগীস কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফজলুল হক খান, তাড়াশের নওগাঁ সিনিয়র মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এবং দৈনিক সংবাদ প্রতিনিধি ডঃ গোলাম মোস্তফা, ধানঘড়া মহিলা ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ, দৈনিক প্রথম আলো প্রতিনিধি সাজেদুল আলম আলামীন, ক্লাবের নতুন ভর্তিকৃত সদস্যগনের পক্ষে আলহাজ্ব নুরুল হক নয়ন প্রমূখ। উল্লেখ্য, ১৯৭৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এবং গতবার প্রনীত গঠনতন্ত্রের বিধি মোতাবেক এবার ৪ জন নতুন সদস্য ভর্তি করা হয় রায়গঞ্জ প্রেস ক্লাবে। যদিও ভর্তির জন্য আবেদন করে ১০ জন যাদের মধ্যে ৬ জন যাচাই বাছাইয়ে বাদ পড়েন, জানান সভার সভাপতি কে এম রফিক। এর আগে নুরুল হক নয়ন, শিহাবুল আলম সায়েম, ফয়সাল সহ নতুন ভর্তিকৃত ৪ জন সদস্যকে লাল গোলাপের শুভেচ্ছা জানিয়ে বরন করে নেন ক্লাবের নেতৃবর্গ। শেষে নতুনদের সুস্বাস্থ্য কামনা করে এবং সংগঠনের সবার মঙ্গলের প্রার্থনা জানিয়ে মোনাজাত করেন সাবেক জিএস আব্দুলাহ সরকার। উল্লেখ্য, ক্লাবের কোনো মিটিংয়ে নতুন – পুরান সকল সদস্যের উপস্থিত হওয়ার রেকর্ড বুধবারের সভায় প্রথম সংঘটিত হলো

ভাঙ্গুড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনিয়ম 
ভাঙ্গুড়া প্রতিনিধি : ভাঙ্গুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডায়ারিয়া আক্রান্ত এক শিশুকে মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন পুশ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডায়ারিয়া ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, শিশু মালিহা ডায়ারিয়ায় আক্রান্ত হলে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দিয়ে ভালো না হলে শিক্ষক মিজানুর রহমান গত বুধবার ভোর ৬টার দিকে ভাঙ্গুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। চিকিৎসক ব্যবস্থাপত্রে স্যালাইন দেয়ার কথা লিখলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে সরবরাহকৃত স্যালাইন পুশ করেন নার্স। কিন্তু স্যালাইন অর্ধেকের বেশি শরীরে প্রবেশ করার পর বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে শিশুর পিতা দেখতে পান স্যালাইনটি মেয়াদ মে মাসে শেষ হয়ে গেছে। তখনই তিনি স্যালাইন বন্ধ করে দেন। এ সময় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও নার্সদের সঙ্গে বেঁধে যায় হৈ চৈ। ঘটনার পরপরই আর এম ও ডা. আলামিন ওয়ার্ড পরিদর্শন করে শিশু মালিহাকে দেখে তার অবস্থা ভালো আছে বলে আশ্বাস্ত করেন। এ ঘটনায় চাটমোহর উপজেলার মহেলা এলাকার বাসিন্দা ও মহেলা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মিজানুর রহমান বাদী হয়ে ভাঙ্গুড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। এ ব্যাপারে জানতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্টোর কিপার মো. রেজাউল করিমকে ফোন দিলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আলামিন বলেন, মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন পুশ করার আগেই মেয়াদ আছে কিনা তা দেখা উচিত ছিল নার্সদের।

ভাঙ্গুড়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা দখল 
চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি: পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার পৌরসদরে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)র জায়গা অবৈধভাবে দখল করে অবাধে সেমিপাকা-থেকে শুরু করে বহুতল ভবন বিশিষ্ট কয়েক শত অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ কাজ অব্যাহত রয়েছে। দীর্ঘদিন যাবত পাউবোর ভাঙ্গুড়া উপজেলায় এ সব অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে চলেছেন অবৈধ দখলকারীরা। মাঝে মধ্যে পাউবোর পাবনা অফিস থেকে দু’একজন অবৈধ দখলকারী উচ্ছেদের নামে নোটিশ দিলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।
পাউবোর ভাঙ্গুড়া অঞ্চলের কোটি কোটি টাকার মুল্যবান ভূ-সম্পত্তি দিন দিন এ ভাবে স্থায়ীভাবে বেদখলে চলে যাচ্ছে। পৌরসদরের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দক্ষিণ-পুর্বস্থান থেকে পার-ভাঙ্গুড়া গ্রাম পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার বাঁধের উভয় পার্শ্বে (পাকাসড়কের গা ঘেঁষে) পাউবোর জায়গা দখল করে যে যার মতো অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে যাচ্ছেন। সম্পতি উপজেলার পাটুলিপাড়া গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে মোঃ আশিক আহম্মেদ (মটরসাইকেল মেকার) পাউবোর ভাঙ্গুড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দক্ষিণ পার্শ্বে প্রায় অর্ধবিঘা জায়গা অবৈধভাবে দখল করে স্থায়ী পাকা ভবন নির্মানের কাজ প্রায় শেষের পথে। অথচ দখলকারীর কাছে পাউবোর কোনো বৈধ কাগজপত্রই নেই। দখলের বিষয়ে স্থানীয়দের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মাদ নাহিদ হাসান খানকে জানালে, গত সোমবার (১০জুলাই) বিকালে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে (নির্বাহী কর্মকর্তা) এ অবৈধ নির্মাণ কাজ তাৎক্ষণিক বন্ধ করে দেন। এ সময় অবৈধ দখল কারী আশিক আহম্মেদ গং প্রশাসনের উপস্থিতি টের পেয়ে অন্যত্র পালিয়ে যায়।
তাড়াশ উপজেলায় পাট কাটার ধুম
তাড়াশ প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশের সোনালী আঁশ পাট। ফলন ও মানের দিক দিয়ে তাড়াশ উপজেলা সর্বোচ্চ স্থান অধিকার করেছে। বর্তমানে উপজেলায় পাট কাটার ধুম পড়েছে। পানির কোন অভাব নেই চারদিক তাকালে শুধু পানি আর পানি পাটের বাম্পার ফলনের আশা করেছে কৃষকরা। জানা যায়, উপজেলার অধিকাংশ মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল। কৃষকের পাট ও পিয়াজ অন্যতম ফসল। বীজ বপন করার ৪০/৫০ দিন পরেই পাটক্ষেতে বাচট দেওয়া হয় বা ছোট ছোট পাট কেটে পঁচানো হয়। এটা এই এলাকায় বাচপাট বলে পরিচিত। বাচপাট কাটার ১ মাস পরেই বড় পাট কাটা হয়ে থাকে। এবছরে এই উপজেলায় পাটের আবাদ প্রচুর চাষ করা হয়েছে। প্রথম দিকে আবহাওয়া ভাল থাকায় পাটের অনুকুলে ভাল থাকায় প্রচুর পাট হয়েছে বলে ধারণা করা হয়েছে। কৃষকরা তাদের প্রধান ফসল পাট উৎপাদনের জন্য সেলোমেশিন দিয়ে সেচের ব্যবস্থা গ্রহন করেন। বর্তমানে উপজেলার প্রতিটি গ্রামে পাট কাটার ধুম পড়ে গেছে। পাটের বীজ বপন করার আগে থেকে ১মাস পর্যন্ত কোন বৃষ্টি না থাকায় পাট চাষীরা চরম বিপাকের মধ্যে থাকলেও বর্তমানে পাটের বাম্পার ফলন হচ্ছে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন।

সিংড়া প্রেস ক্লাবের উদ্যোগে সাহিত্য আসর 

সিংড়া( নাটোর) প্রতিনিধি: নাটোরের সিংড়া প্রেসক্লাবের উদ্যোগে সাহিত্য আসর ও সাহিত্য বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। নবীণ প্রবীণ কবি ও লেখকদের অংশ গ্রহনে শনিবার(৮ জুলাই) বেলা ১১ টায় সিংড়া প্রেসক্লাব কমপ্লেক্স ভবনে এ সাহিত্য আসর ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সাহিত্য আসরে অন্যান্যদের মধ্যে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন কবি প্রকৌশলী আহমেদ রফিক, কবি মোঃ আবুল হোসেন, কবি রিক্তা বানু, বাবুল হাসান বকুল, কাওছার আহমেদ, জুয়েল প্রামাণিক, বাদশা শাকিল এসজি প্রমূখ।কবিতা পাঠ শেষে সিংড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি মোল্লা মোঃ এমরান আলী রানার সভাপতিত্বে ও সিংড়া প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক সৌরভ সোহরাবের সঞ্চালনায় সাহিত্য বিষয়ে তুলে ধরে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন, সিংড়া উপজেলা প্রকৌশলী আহমেদ রফিক, দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার সিংড়া উপজেলা প্রতিনিধি ও সিংড়া প্রেসক্লাবের নির্বাহী সদস্য মোঃ আনোয়ার হোসেন আলী রাজ, সিংড়া প্রেসক্লাবের অর্থ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম সুইট সহ অন্যরা।বক্তারা বলেন, বর্তমান সময়ে সাহিত্য চর্চা অনেকটাই কমে গেছে। সাহিত্য চর্চা নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছাতে হবে। নিয়মিত সাহিত্য আসর করে এই সংস্কৃতি সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। কারণ সাহিত্য সমাজের দর্পণ। সাহিত্য মানুষকে শুদ্ধ হতে শিখায় এবং সমাজের পরির্বতন ঘটায়।

দেশের উন্নয়নের সাথে চোরেরও উন্নয়ন হচ্ছে
বীরমুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ শুকুর মাহমুদ

বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেছিলো চোরেরাই। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, দেশ স্বাধীন করে মানুষ পায় স্বর্ণের খনি, আমি পেলাম চোরের খনি। সাড়ে সাত কোটি বাঙালি, আট কোটি কম্বল। আমার কম্বলটি গেল কোথায় ? তাঁর এই বক্তেব্যের সুত্রধরেই চোরেরা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেছিলো। আজ বাংলাদেশ যতই উন্নত হচ্ছে, চোর ও চুরির ধরণও ততই উন্নত হচ্ছে। চুরি দুর্নীতি সমার্থক হয়ে তা অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধুর সময়ে আট কোটি কম্বলের মধ্যে চোরেরা চুরি করার পরও কিছু বিতরণ করেছিলো। কিন্তু এবারে গবেষণার জন্য জাপান সরকার উন্নত জাতের ৩০০শ’টি মোড়গ দিয়েছিল। যার সবটাই চুরি হয়েছে। চোরেরা আধুনিক হয়েছে, এবারে সবটুকু চুরি করে খেয়েছে, তাই তাদের বিচারেও আধুনিকায়ন প্রয়োজন।

ওরা দেশের উন্নয়ন চায় না, দেশের জনগনের কল্যাণের বিরোধী, ওরা রাজাকারদের চেয়েও ভয়ংকর, সর্বগ্রাসী। মোড়গ চোরদের সাজা হবে ফাঁসি, তবে এবারের ফাঁসি হবে ব্যতিক্রম। গলায় নয়, ফাঁসির রশি পায়ে লাগিয়ে দীর্ঘ মেয়াদে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেয়া উচিৎ। প্রচলিত আইনে সর্বোচ্চ অপরাধে অপরাধীকে গলায় ফাঁসি দিয়ে প্রাণ দন্ড দেয়া হয়, কিন্তু এই আধুনিক যুগে আধুনিক চোরদের পায়ে ফাঁসি দিয়ে দীর্ঘ মেয়াদে ঝুলিয়ে রাখার আহŸান করা হচ্ছে।স্বল্প আয়তনের দেশ বাংলাদেশ জনসংখ্যার ঘনত্বের কারণে ফসলি জমি কমে যাচ্ছে, হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের জীববৈচিত্র, ভরাট হয়ে যাচ্ছে নদী-নালা, পুকুর- ডোবা, জলাশয় বসতি গড়ে উঠছে গো-চারণ ভুমিতেও।দখলে-দূষণে পরিবেশের বারোটা বেজে গেছে।
কৃষি খামারে বসত বাড়ি হওয়া, ডোবা-নালা, খাল-বিল ভরাট করে বাড়ি ঘর ও স্থাপনা নির্মাণে ফসলের ঘাটতি-খ্যদাভাব সৃষ্টি হচ্ছে। গো-চারন ভুমি বিনষ্ট হওয়ায় গো সম্পদের উৎপাদন কমে যাচ্ছে। গরু-মহিষ, ছাগল-ভেড়া উৎপাদন কমে যাচ্ছে। চরা মুল্যে কিনতে হচ্ছে গোস্তজাত পণ্য। নদী-নালা, ডোবা-খালবিল, জলাশয় ভরাট হওয়ায় বিলুপ্ত হচ্ছে দেশিয় জাতের মাছ। আমদানী করা হচ্ছে উচ্চ ফলনশীল জাতের মাছ-মাংস।

দ্রব্যমুল্যের উর্দ্ধগতি অর্থ থাকতেও পণ্যের অভাব বিশ্ব মানবতা বিপর্যয়ের বিবেচনা করে প্রতিবেশি দেশ জাপান সরকার এবারের কোরবানির ঈদের তার দেশে উচ্চ ফলনশীল মাংসজাত প্রাণী (হাইব্রীড) ৩০০টি মোড়গ উপহার দিয়েছিল বাংলাদেশকে। প্রাপ্ত উপহার সামগ্রী গ্রহণ করে সরকার হস্তান্তর করেছে প্রাণী সম্পদ গবেষণা কেন্দ্র, সাভারে। সরকারের হস্তান্তরকৃত ৩০০টি মোড়গ’ই চুরি হয়ে গেলো, নিছিন্দ্র নিরাপত্তা বেষ্টনির মধ্যে অবস্থিত সিসি ক্যামেরায় সংরক্ষিত এলাকা, হাজারও কর্মচারি-কর্মকর্তা যেখানে অবস্থিত সেখান থেকে এতবড় চুরি হয়ে গেলো কর্তৃপক্ষের কাছে এর কোন জবাব নেই। সাংবাদিকদের ক্যামেরার সামনে মুখ খুলতে রাজি হননি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

উল্লেখ করা যায় যে, কেউ আমাকে উচ্চ ফলনশীল ফলের গাছ উপহার দিলেন, গাছটি রোপন করে ফল পাওয়ার পরিবর্তে চারা গাছটি খেয়ে ফেলার মত হয়ে গেলো। এই আধুনিক চোরদের বিচার পূর্বের ন্যায় না করে আধুনিক নিয়মে গলায় ফাঁসি দেয়ার পরিবর্তে পায়ে ফাঁসি পরিয়ে দীর্ঘ মেয়াদে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখতে হবে।চোরদের উচিৎ শিক্ষা না দিলে যতই উন্নত হোক, এদেশে চোরের সংখ্যা বাড়বে বৈ কমরে না।

এদিকে বকুলের নামে ওয়ারেন্ট শাহজাদপুর থানায় এলে বকুল কে বাড়ীতে পুলিশ না পেয়ে ওয়ারেন্ট ফেরৎ পাঠিয়ে দেয় এস পি অফিসে। মেয়েটি অপহরণ হওয়ার পরের দিন মেয়েটির বাবা উল্লাপাড়া থানায় বকুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে, কিন্তু উল্লাপাড়া থানার পুলিশ অভিযোগ নথি ভুক্ত না করে পকেট কেচ হিসাবে রেখে দেয়। তিন মাসের মধ্যে ৬ টি অভিযোগ মেয়ের বাবা কালাম জমা দেয়। থানার পুলিশ শুধু সময় ক্ষেপন করতে থাকে এ ব্যাপারে বড় পাঙ্গাসী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হুমায়ন কবির লিটন ও উল্লাপাড়া সার্কেল অফিসার অবগত আছেন,। পরে যখন সি আই ডি গ্রেফতার করে আসামি বকুলকে আদালতে প্রেরন করেন তখন কোন থানায় অভিযোগ না থাকায় সেই দিনই আসামি ছাড়া পেয়ে যায়।এই দিকে সি আই ডির হাতে গ্রেফতার হওয়ার অনেক পূর্বেই মেয়ের বাবা বাদী হয়ে সিরাজগঞ্জ নারী- শিশু আদালতে একটি অপহরণ মামলা দায়ের করে মামলা নং ১১৭/২৩ সে মামলায় বিজ্ঞ বিচারক উল্লাপাড়া থানায় তদন্তের ভার দেয়।কিন্ত নথি উল্লাপাড়ায় আসে ততক্ষণে আমাসী ছাড়া পেয়ে বাহিরে ঘুরে বেড়াচ্ছে নির্ভয়ে নির্বিঘেœ, মেয়ে টা থানায় তিন মাসের ভয়াবহ বিবরণ দিয়ে কেদে কেদে বলে তিন মাসে শতাধিক বার ধর্ষন করা হয়েছে আমাকে এর কঠিন বিচার চাই। মেয়ের বাবাসহ এলাকাবাসী ধর্ষনকারী বকুলের ফাসির দাবি করেন।

মন্তব্য কলাম
ডেঙ্গু প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন দরকার
চলতি বর্ষা মৌসুমে দেশে ডেঙ্গু জ্বর মহামারীর আকার ধারণ করতে চলেছে। মাত্রই আমরা করোনার সাথে লড়াই করে তা সম্পূর্ণ শেষ না হতেই আবার ডেঙ্গুর আক্রমন শুরু হয়েছে। অবশ্য করোনার মৃদু সংক্রমন ও দু-একজনের মৃত্যু অব্যাহত আছে প্রায়শ:ই। এরই মধ্যে ডেঙ্গুর কবলে পড়ে রাজধানী ঢাকার নাকাল অবস্থা। ইতোমধ্যে ডেঙ্গুতে মৃত্যু শতাধিক ছাড়িয়ে গেছে। একদিনেই ৬-৭জনের মৃত্যুর খবর এসেছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে। ডেঙ্গু এডিশ মশা বাহিত এবং জীবানুঘটিত একটি রোগ। সুতরাং মশার আক্রমন থেকে নিরাপদে থাকা বিষয়ে সতর্ক এবং সচেতন থাকাই ডেঙ্গু থেকে বেঁচে থাকার উপায়। এ কথা ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে পরিবার এবং সমাজ তথা রাষ্ট্র অবধি সমানভাবে প্রযোজ্য। আগে নিজের শয়ন ঘর ও সেই সাথে পরিবারের গোটা অঙ্গন এবং প্রতিবেশীদের সমগ্র পরিবেশ যথাযথ পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন, ময়লা-আবর্জনামুক্ত আর জলাবদ্ধ জায়গায় মশার ডিম পারতে না দিয়ে ওষুধ ছিটিয়ে মশা মেরে ফেলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আসলে ডেঙ্গুতে আতংকিত না হয়ে মশা নিয়ন্ত্রণ ও এ রোগ প্রতিরোধে সম্যক পদক্ষেপ গ্রহণ অত্যাবাশ্যক। কারণ এর প্রতিষেধকের চেয়ে প্রতিরোধ অপরিহার্য। মনে রাখতে হবে, ডেঙ্গু রোগ শুধু বাংলাদেশের সমস্যা নয়, এটা গোটা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার উপমহাদেশীয় বা আঞ্চলিক সমস্যা রুপে আবির্ভূত হয়েছে। ভারত, মিয়ানমার, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়াসহ বিশে^র অনেকগুলো দেশে ডেঙ্গু মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। কোন কোন দেশ রেড এলার্ট পর্যন্ত জারি করেছে এ কারণে। অর্থাৎ সংক্রামক ব্যাধি হিসেবে ডেঙ্গু ক্রমান্বয়ে বিশ^ব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে। এই প্রেক্ষাপটে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা। তারা সব দেশেই ডেঙ্গু মোকাবেলায় সমন্বিত ব্যবস্থা গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। মোট কথা জনসচেতনতাই পারে এই সংক্রামক রোগ থেকে মুক্ত রাখতে।
আমাদের তাড়াশ উপজেলায় অদ্যাবধি ডেঙ্গু জ¦রের প্রাদুর্ভাব হয়নি মর্মে প্রশাসন বলছে। তবে এলাকার লোকজনের মধ্যে জ¦রের প্রকোপ চলছে অনেক দিন থেকেই। এটা মৌসুমী সর্দি-কাশি এবং ভাইরাস জনিত বলে শনাক্ত হয়েছে। তবে প্রশ্ন উঠতে পারে, এর মধ্যে কোথাও কারো ডেঙ্গু আছে কি না তা নির্ণয় করবে কে? কেননা উপজেলা সদরের একমাত্র হাসপাতালে তো ডেঙ্গু পরীক্ষার কীট বা যন্ত্রপাতি ও বিশেষজ্ঞ নেই। সেখানে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি করারও সুযোগ নেই। ওদিকে সিরাজগঞ্জ জেলা সদরে ডেঙ্গুর অস্তিত্ব ইতোমধ্যেই ধরা পড়েছে। তাই বিশেষত বিভিন্ন উপলক্ষে ঢাকা ও জেলা সদর থেকে তাড়াশ অঞ্চলে মানুষের গমনাগমন বৃদ্ধি অব্যাহত থাকার প্রেক্ষিতে যে কোন মুহুর্তে ডেঙ্গুর আশঙ্কা উরিয়ে দেয়া যায় না। সবশেষে বলার, তাড়াশ উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসন, পৌর কর্তৃপক্ষ, ইউনিয়ন পরিষদসহ সকল শিক্ষা ,সামাজিক, নাগরিক, সুশীল সমাজ ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সাথে দল-মত নির্বিশেষে সব রাজনৈতিক মহলের সম্মিলিত উদ্যোগ ও প্রচেষ্টায় আমরা ডেঙ্গুকে “নো” বলতে পারি। গ্রহণ করা দরকার পূর্ব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা। তবে মনে রাখতে হবে, এ ব্যাপারে ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক সতর্কতা ও সচেতনতার বিকল্প নেই।যেমন মশা নির্মূলকরণ ও মশারী ব্যবহার অপরিহার্য। বাংলাদেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে আর প্রাকৃতিক নানা দুর্যোগের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে লড়ে বার বার বিজয়ী হয়েছে। সরকার সবাইকে সাথে নিয়ে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ডেঙ্গুকে থামিয়ে দিতে, এর বিস্তার রোধ করতে । তাই ডেঙ্গুর নিকট পরাজিত হওয়ার কোন প্রশ্নই ওঠে না। করোনা যুদ্ধে আমরা জয়ী হয়েছি। এ লড়াইয়েও আমরা অবশ্যই বিজয়ী হবো ইনশাল্লাহ্ । আসুন, সবাই মিলে ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করি।

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD