চলনবিলে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী কাঠের ঘানি

Spread the love

মো. আকছেদ আলীঃ পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলা সহ চলনবিলের সবগুলো উপজেলাতেই কালের গর্ভে হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী কাঠের ঘানি। ঘানিতে তেল ভাঙ্গানোর পরিবর্তে মানুষ এখন মেশিন নির্ভর হয়ে পড়ার কারণে জীবিকার তাগিদে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন ঘানির কারিগরেরা।
এলাকাবাসীরা জানান, একসময় কাঠের ঘানিতে সরিষা, তিল, নারকেল ভাঙিয়ে তেল উৎপাদন করা হতো। গাছের গুঁড়ি দিয়ে তৈরি ঘানির মাঝখানে ছিদ্র থাকে। ওই ছিদ্রে মোটা লাঠি সদৃশ একটি কাঠের যন্ত্রাংশ সংযুক্ত থাকে, যার নাম জ্যাট। জ্যাটের ওপর থাকে কাঠের তৈরি মাকড়ি। মাকড়ি জ্যাটকে ঘুরতে সাহায্য করে। জ্যাট ও মাকড়ির সঙ্গে যুক্ত করা হয় জোয়াল। জোয়ালটি গরু, মহিষ অথবা ঘোড়ার কাঁধে দিয়ে হাঁটালে জ্যাট ঘুরে। জ্যাট, জোয়াল ও মাকড়ির সঙ্গে সংযুক্ত থাকে কাঠের কাতাড়ি। কাতাড়ির ওপর বসে কারিগর তেল উৎপাদন করেন। কারিগর একজন সহকারীকে নিয়ে দিনে ২০ থেকে ২৫ কেজি তিল, সরিষা ও নারকেল মাড়াই করে ১০ থেকে ১২ কেজি তেল উৎপাদন করতে পারেন।
যারা ঘানিতে তেল উৎপাদন করেন তাদের বলা হয় কলু। এখন মানুষ কলুদের দিয়ে তেমন সরিষা, তিল বা নারকেল ভাঙান না। ফলে কলুদের পেশা বিলুপ্তির পথে। সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে যাচ্ছে কাঠের ঘানি। অচিরেই গ্রামবাংলার এ প্রাচীন পেশা দেখতে হয়তো যেতে হবে জাদুঘরে। তবে ভাঙ্গুড়া উপজেলার ছোটবিশাকোল.করতকান্দি.তেলিপাড়াাসহ কয়েকটি গ্রামের কিছু মানুষ কলুর এতিহ্য এখনও ধরে রেখেছেন। তবে ধীরে ধীওে তারাও জীবন-জীবিকার তাগিদে এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন ভাঙ্গুড়া পৌরসভার মেয়র গোলাম হাসনাইন রাসেল বলেন, ঘানি শিল্প বাঙালির আদি ঐতিহ্য। ঘানি শিল্পকে হারিয়ে যাওয়া থেকে বাঁচাতে আমাদেরই নজর রাখতে হবে।

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD