ডাঃ আমজাদ হোসেন উল্লাপাড়া প্রতিনিধিঃ
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে খামার ও গৃহস্থ পরিবারগুলোয় বহুসংখ্যক ষাঁড় গরু লালন-পালন করা হচ্ছে। এখন দিন যেতেই পালিত গরুগুলোকে খাদ্যের যোগান বাড়ানো হচ্ছে। এদিকে, পালিত পশুর প্রচার ও বিক্রিতে অনলাইন ইউটিউব চ্যানেলে ঝুঁকছেন খামারিরা।
বিগত বছরগুলোর মতো এবারেও উল্লাপাড়ার বিভিন্ন এলাকার গোখামারগুলোয় বহুসংখ্যক বড়-ছোটো পশু লালন-পালন করছেন। এছাড়া কয়ড়া, সদর উল্লাপাড়া, দুর্গানগর , পূর্ণিমাগাঁতী , সলপ , মোহনপুরসহ আরো কটি ইউনিয়নের গ্রামগুলোতে বহু গৃহস্থ পরিবারগুলোয় লালন-পালন করা হচ্ছে ষাঁড় গরু।উপজেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগের তথ্যে গোটা উপজেলায় মোট ২ হাজার ১৫০ জন গো-খামারি আছেন। খামারগুলোয় প্রায়? ১১ হাজার পশু লালন-পালন করা হচ্ছে। এর মধ্যে কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে পালিত পশুর সংখ্যা প্রায় ৯ হাজার। আর গাভী ও বলদ গরু মিলে প্রায় ২ হাজার।
এছাড়া প্রায় ২ হাজার ৩০০ ছাগল ও প্রায় দেড় হাজার ভেড়া পালন করা হচ্ছে। কোরবানি ঈদের আর মাস দেড়েক বাকি। খামার ও গৃহস্থ পরিবারগুলোয় পালিত গরুগুলোকে খাদ্যের যোগান দিন যেতেই বাড়ানো হচ্ছে। ষাঁড় গরু মোটাতাজাকরণে গমের ভুসি ছাড়াও ছোলা ও মসুর ভুসি খাওয়ানো হচ্ছে।উল্লাপাড়া গ্যাস লাইন এলাকায় বড়-ছোট বেশ কটি গোখামার আছে। সরেজমিনে একাধিক খামারে গিয়ে দেখা গেছে পালিত ষাঁড় গরুগুলো সবই দেশীয় জাতের। খান এগ্রো ফার্মে কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে ছোট-বড় মিলিয়ে ১৭টি লালন-পালন করা হচ্ছে।
এ ফার্মের বাবু মিয়া জানান, দিন যেতেই পালিত গরুগুলোকে খাদ্যের যোগান বাড়ানো হচ্ছে। আরেক খামারি আঃ মতিনের খামারে পালিত ২৫টি ষাঁড় গরুর অধিকাংশই দেশীয় বড় জাতের। তিনি বিভিন্ন এলাকা থেকে তার খামারে গরু কিনে এনে লালন-পালন করতে থাকেন।এই প্রতিবেদককে তিনি জানান, খামারে গরু বেশি দিন পালন করেন না৷ তার খামারে পালিত গরুগুলো একটু মোটাতাজা হতেই বিক্রি করে দেন। এসব গরু খামার থেকেই বিক্রি করে থাকেন। প্রতি সপ্তাহে একটি ইউটিউব চ্যানেলে খামারে পালিত গরুগুলোর ভিডিও প্রচার করা হয়। চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকার গরু ব্যবসায়ী ও খামারিরা সরাসরি খামারে এসে গরু কিনে নিয়ে যান বলে জানানো হয়।
সদর উল্লাপাড়া ইউনিয়নের পংরৌহা গ্রামের গৃহস্থ পরিবারের বেশ ক’জন বাড়িতে কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে ষাঁড় গরু লালন-পালন করছেন৷ এদের মধ্যে রেজাউল করিম নিজ বাড়িতে বড়-ছোট মিলিয়ে ১২টি ষাঁড় লালন-পালন করছেন৷ গত মাস দেড়েক আগে থেকে পালিত গরুগুলোকে খাদ্যের যোগান বাড়ানো হয়েছে৷ এখন আরো বেশি পরিমাণ খাদ্য খাওয়ানো হচ্ছে। তিনি পালিত গরুগুলো বাড়ি থেকেই বিক্রি করবেন বলে জানান। তাই গরুরগুলোর ভিডিও একটি ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারের উদ্যোগ নিয়েছেন।এদিকে গত দু’দিনে বেশ ক’জন খামারি ও গৃহস্থ পরিবার থেকে জানানো হয়, কোরবানিকে সামনে রেখে ষাঁড় লালন-পালনে এবারে খরচ অনেক বেশি পড়ছে। একেবারে দেশীয় জাতের মাঝারি মাপের তিনটি ষাঁড় পালনকারী আবু হান্নান মিয়া বলেন, এখন পুরোদমে খাদ্যের যোগান দিচ্ছেন।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকতা ডাঃ মোর্শেদ উদ্দীন আহম্মদ জানান, উল্লাপাড়ায় খামারগুলোয় কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে পালিত পশুর প্রায় সবই দেশীয় জাতের। এরইমধ্যে খামারিরা আরো বেশি মোটা-তাজাকরণে খাদ্যের যোগান বাড়িয়ে দিয়েছেন। তার বিভাগ থেকে বিভিন্ন এলাকায় খামারে ও গৃহস্থ পরিবারের গিয়ে প্রযোজনীয় পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে