বিচারের আশায় জমিরন

Spread the love

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে জমিরন খাতুন (৫০) নামে এক গৃহিনীর উপর ঘটে যাওয়া নির্যাতন ও টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার বিচার পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন প্রায় দেড় মাস অবদি। (৮ মার্চ) মঙ্গলবার সকালে তাড়াশ মডেল প্রেসক্লাবে এসে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সাংবাদিকদের সহযোগিতা চান তিনি। এ সময় বলেন, তার দায়ের করা একটি মামলা আদালতে বিচারাধীন। কিন্তু আসামিরা তাকে আদালত পর্যন্ত পৌঁছাতে বাধা দিচ্ছেন। জমিরন খাতুন তাড়াশ পৌর এলাকার খান পাড়ার জমির উদ্দীনের স্ত্রী।
জমিরন খাতুন বলেন, গত জানুয়ারি মাসের ২০ তারিখ বৃহস্পতিবার বেলা সারে এগাড়টার দিকে সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকার ঢাকা বাসস্ট্যান্ডে ঢাকাগামী বাসের জন্য তিনি দাড়িয়ে ছিলেন। তখন রিমু এক্সপ্রেস বাসের চালক ও হেলপার তার চালের বস্তা ও কাপরের ব্যাগ বাসের বক্সে তুলে নেন। এরপর তার কাছ থেকে বাসের মালিক ও চালক রফিকুল ইসলাম ওরফে রফিক ৬শ টাকা ভাড়া ও মালামালের জন্য আরো ১শ টাকা অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করেন। কিন্তু ৭শ টাকা দিয়ে ঢাকা যেতে অস্বীকৃতি জানান তিনি। শুরু হয় বাকবিতন্ডা। তাকে টেনে হেচরে বাসে তোলার চেষ্টা করেন। তিনি মাটিতে পড়ে মাথায় গুরুতর আঘাত পান। একপর্যায়ে তার ভিটা বেচার ৭৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন বাসের মালিক ও চালক রফিকুল ইসলাম ওরফে রফিক।
সেই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, হাটিকুমরুল ট্রাক শ্রমিক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন ও হাজী ইমাম আলী মসজিদ মার্কেটের ইমাম মোজাফফর হোসেন বলেন, তারা দেখতে পান ঢাকা বাসস্টপেসে এক গৃহিনীর সঙ্গে রিমু এক্সপ্রেস বাসের হেলপার ও দালালদের ধস্তাধস্তি হচ্ছে। ঐ গৃহিনীকে চর থাপ্পরও দিচ্ছে। প্রথমে তারা ভেবেছিলেন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝামেলা হচ্ছে। এরপর মানুষজন জমায়েত হলে রফিকুল ইসলাম ওরফে রফিক সটকে পড়েন। এই দুইজন প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তি এহেন কান্ডর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক আব্দুল্লাহেল বাকি বলেন, ৯৯৯ এর কল পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ভুক্তভোগী নারী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার সত্যতা পান। তারপর ভুক্তভোগী গৃহিনী জমিরন খাতুনকে সলঙ্গা থানায় অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন।
এদিকে জমিরন খাতুন অভিযোগ করেন, জানুয়ারি মাসের ২৬ তারিখে আমি সলঙ্গা থানায় মামলা করি রফিকুল ইসলাম ও অজ্ঞাত আরো দুজনের বিরুদ্ধে। কিন্তু থানা পুলিশ আসামি ধরতে গড়িমসি করেন। এরই মধ্যে আসামিরা জামিন নিয়ে নেন। তারপর থেকে আমাকে মামলা তুলে নিতে হুমকী দিচ্ছেন। আদালত পাড়াতে পৌঁছালে জোরপূর্বক ধরে একটি ঘরে আটকে রেখে দেন।
তিনি আরো বলেন, আমার মেয়ে বর্ণা খাতুন অসুস্থ। ঢাকায় তার জরুরি অপারেশন করাতে হবে। আমি ভিটা বেচে সেই টাকা নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছিলাম। টাকাগুলে ছিনিয়ে নেওয়াতে আমার মেয়ের অপারেশন করা বন্ধ রয়েছে।আদালত পাড়ায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির কথা অস্বীকার করেন অভিযুক্ত বাসের মালিক ও চালক রফিকুল ইসলাম ওরফে রফিক। তিনি আরো বলেন, ঘটনার সত্য-মিথ্যা আদালতের মাধ্যমেই প্রমান হয়ে যাবে। এ প্রসঙ্গে সলঙ্গা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আঃ কাদের জিলানী বলেন, মামলাটি আদালতে বিচারাধীন। আসামিরা জামিনে আছেন।

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD