চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি
পাবনার চাটমোহরে চলতি বোরো মৌসুমে সেচের জন্য বিঘাপ্রতি নির্ধারণ করে দেওয়া টাকা নিতে অনীহা প্রকাশ করেছেন সেচযন্ত্র মালিকরা। এদিকে নগদ টাকায় মৌসুম ভিত্তিক নির্ধারিত সেচ চার্জ ৩ ধাপে পরিশোধ ও উপজেলা সেচ কমিটির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন বোরো চাষীরা। এনিয়ে বোরো চাষী ও সেচযন্ত্র মালিকরা মুখোমুখি হয়ে পড়েছেন। কৃষকদের প্রতিবাদ সভাও অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জানা গেছে, বোরো মৌসুমে গভীর ও অগভীর সেচযন্ত্র মালিকরা আবাদকৃত ধানের সিকি অংশ সেচের মূল্য হিসেবে নিয়ে থাকেন। এজন্য কৃষকরা প্রতিবছরই লোকসান গোনেন। লাভবান হন সেচযন্ত্র মালিকরা।
বোরো চাষীরা অভিযোগ করেন, এক বিঘা জমিতে সেচ দিতে দেড় হাজার টাকার বেশি খরচ হয় না। সেখানে সিকি ভাগ ধান নিলে, তারমূল্য প্রায় ৪ হাজার টাকা। তারা অভিযোগ করেন, সেচযন্ত্র মালিকরা কোন নিয়মনীতি মানছেন না। নির্ধারিত জমির দ্বিগুণ জমি নিয়ে সেচ স্কীম করেছে। বিভিন্ন সেচ পাম্পে নগদ টাকার পরিবর্তে জোর পূর্বক ফসলের সিকি ভাগ (২৫ ভাগ) আদায় করা হচ্ছে। উপজেলা সেচ কমিটি সেচ চার্জ হিসেবে বিঘা প্রতি ১৯০০ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও সেচ মালিকরা তা মানছেন না। শুধু বোরো মৌসুমেই নয়,বর্ষা মৌসুমেও যেখানে সেচের দরকার নেই, সে সকল জমি থেকেও সেচ চার্জ নেওয়া হচ্ছে।
জমির মালিকরা জানান, সেচ পাম্প মালিকরা অনেকেই বহিরাগত। তাদের নিজস্ব কোন জমি নেই। অকৃষক বহিরাগতরা শুধু ব্যবসার জন্য সেচ মালিক হয়েছেন। তাদের কাছে কৃষকরা জিম্মি। কৃষকেরা নগদ টাকায় সেচ চার্জ গ্রহণ ও মাটির তৈরি ড্রেনের পরিবর্তে ভূগর্ভস্থ পাইপ লাইনে পানি সরবরাহের দাবি জানান। একাধিক সেচ মালিক বলেন,তারা দীর্ঘদিন ধরেই এই নিয়মে সিকিভাগ ধান নিচ্ছেন। এখন যদি টাকা নিতে হয়, তাহলে এক সাথে সব টাকা দিতে হবে। তাছাড়া অনেকেই টাকা দিতে পারেন না। তারা ধান দিতে সম্মত আছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সৈকত ইসলাম বলেন, সেচ চার্জ নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। গভীর ও অগভীর নলকূপ মালিকরা চলতি বোরো মৌসুমে বিঘাপ্রতি ১ হাজার ৯ শত টাকা নিবেন। বেশি নেওয়ার সুযোগ নেই। কোন সেচযন্ত্র মালিক পক্ষ তা না মানলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কৃষকদের সচেতন করা হচ্ছে ।