দ্বারে দ্বারে ঘুরছে গৃহবধূ রতœা

Spread the love

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি
পাবনার চাটমোহরে ধর্মান্তরিত হয়ে বিয়ে করেও গর্ভের সন্তান ও স্ত্রীর মর্যাদা পাচ্ছেন না এক গৃহবধূ। ইতোমধ্যে ওই গৃহবধূ ৯ মাসের অন্তঃস্বত্তা। কিন্তু তাঁর স্বামী তাকে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে ঘরে তুলে নিচ্ছেন না। এমতাবস্থায় ওই গৃহবধূ গর্ভের সন্তান নিয়ে স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। ঘটনাটি পাবনার চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল ইউনিয়নের বেজপাটিয়াতা গ্রামে।
জানা গেছে, হান্ডিয়াল বেজপাটিয়াতা গ্রামের আবদুস সামাদ (ঠান্টুর) ছেলে আবদুল হালিম (৩৫) এর সাথে ঢাকার গাবতলীতে পরিচয় হয় সাতক্ষীরা জেলার দেভাটা উপজেলার হিজলডাঙ্গা গ্রামের শ্রী সুভল চন্দ্রের মেয়ে রতœার (৩০)। আবদুল হালিম ২০১৭ সালে ঢাকায় গাবতলিতে পাথরের ব্যবসা করতো। সেই সুবাদে ঢাকার গাবতলিতে রতœা খাতুনের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে আবদুল হালিম নিজের পূর্বের বিয়ের কথা আড়াল করে ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে ইসলামি শরীয়া মোতাবেক রতœাকে বিয়ে করে এবং তার সঙ্গে তিন বছর ঢাকায় সংসার করে। রতœার নাম রাখা হয় মরিয়ম আকতার রতœা। হালিমের গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা বললেই শুরু করতো বিভিন্ন তাল-বাহানা। বিভিন্ন অজুহাত দিয়ে বার বার নিয়েছে মোটা অংকের টাকা।
২০২১ সালের অক্টোবর মাসে রতœ্ার কাছ থেকে আরো ১০ লাখ টাকা দাবি করে হালিম। রতœা টাকা দিতে অস্বীকার করলে রতœাকে রেখে সে পালিয়ে যায়। উপায় না পেয়ে স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে ও তার গর্ভের সন্তানের পিতৃ পরিচয়ের জন্য হাজির হন স্বামীর গ্রামের বাড়ি হান্ডিয়ালের বেজপাটিয়াতায়। কিন্তু পালিয়ে যায় আঃ হাীলম। হালিমের আগের স্ত্রী তাকে বাড়িতে উঠতে দেয়নি। কোন উপায় না পেয়ে রতœা অভিযোগও দিয়েছেন হান্ডিয়াল পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে। ধর্না ধরেছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, গ্রামের মাতব্বরদের কাছে, তবুও মিলছে না প্রতিকার। এনিয়ে হান্ডিয়াল ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল করিম মাস্টার সালিসের আয়োজন করলেও হালিম পলাতক থাকায় কোন ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। রতœা বর্তমানে তার চাচা শ্বশুর আঃ মান্নানের বাড়িতে রয়েছেন।
জানা যায়, আব্দুল হালিম পূর্বেও আরোও দু’টি বিয়ে করেছিল, বড় স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়েছে। সে পক্ষের ২টি সন্তান ও মেজ বউ আছে। তার ছোট বউ রতœা। গর্ভের সন্তান ও স্বামীর স্বীকৃতি চেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে ধর্ম পরিবর্তন করে বিয়ের পিঁড়িতে বসা নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা মরিয়ম আক্তার রতœা (৩০)। রতœার অভিযোগ তাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যান ও তার চাচা শ্বশুর আবদুল মান্নানসহ গ্রামবাসিকে জানিয়েছেন।
রতœা জানান, দুই বছর প্রেমের সম্পর্কের পরে ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে ৫০ হাজার টাকা কাবিন দিয়ে ইসলামি শরীয়া মাতাবেক ঢাকার গাবতলিতে হালিমের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। ঢাকা গাবতলি ভাড়া বাসায় হালিমের সাথে দীর্ঘ ৩ বছর তার সংসার হয়। বিয়ের পর আবদুল হালিম তার কাছ থেকে গ্রামের বাড়ি মেরামত ও তার ব্যবসার জন্য বিভিন্ন সময়ে সুকৌশলে প্রায় ৭ লাখ টাকা নিয়েছে।
রতœা বলেন, হালিম আরো টাকা চায়। আমার গর্ভে তার নয় মাসের সন্তান রয়েছে। হালিম আমাকে স্ত্রীর স্বীকৃতি না দিলে এ জীবন নিয়ে আমি কোথায় দাঁড়াব, এখানে স্বীকৃতি না পেলে আমার ও গর্ভের সন্তানের লাশ যাবে।
আব্দুল হালিমের চাচা আবদুল মান্নান বলেন, আমার ভাতিজা তাকে বিয়ে করেছে এটা আমরা জানি এবং তাদের কাবিন নামাও দেখেছি। এখন মেয়েটা অন্তঃসত্ত্বা। মেয়েটাকে রেখে বাড়ির সবাই পালিয়েছে। গত কয়েকদিন দিন যাবত মেয়েটা আমার বাড়িতে আছে। দ্রুত এটার ফয়সালা হলে মেয়েটার জন্য ভাল হয়। এদিকে হালিমের সঙ্গে বার বার মুঠোফোনে (০১৭৫৮৪৭৭৯৫১) যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে হান্ডিয়াল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবিউল করিম মাস্টার বলেন, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে বসে বিষয়টা স্থানীয়ভাবে সমাধানের চেষ্টা করেছি, তবে এখনো কোন সমাধান করতে পারিনি। এ বিষয়ে হান্ডিয়াল পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসএম নূরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মেয়েটি স্বামীর স্বীকৃতির দাবি চেয়ে লিখিত অভিযাগ দিয়েছে। বিষয়টা তদন্ত চলছে, তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD