সাঈদ সিদ্দিক, নাটোর থেকে :
নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলায় ২০২১সালে এসএসসি পরীক্ষায় নাইমুন্নাহার মিতু জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। সে উপজেলার ধারাবারিষা
উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে জিপিএ ৫ (গোল্ডেন) পেয়েছে। মিতু এবারের এসএসসি পরীক্ষায় ১৩০০ নম্বরের মধ্যে ১২৪৭ নম্বর পেয়ে
উপজেলায় প্রথম স্থান অধিকার করেছে। মিতু উপজেলার ধারাবারিষা গ্রামের মৃত মন্টু মিয়ার একমাত্র কন্যা। শিশু শ্রেণীতে পড়াকালীন সময়ে মিতুর বাবা মারা গেলেও লেখা পড়ার প্রতি অদম্য আগ্রহ এবং মনোবল থাকার জন্য বাবার মৃত্যুর পরও মা আসমা খাতুন অতি কষ্টে মিতুর লেখাপড়া চালিয়ে যান। ফলশ্রুতিতে মিতু লেখাপড়ার শুরু থেকেই তার মেধার সামল্যের প্রমাণ দিচ্ছে। মিতু ২০১৫ সালে পিইসি’তে জিপিএ ৫ এবং ২০১৮ সালে
জেএসসি’তে জিপিএ ৫ পেয়ে কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয়। সে প্রাথমিকে এবং জেএসসি’তে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি লাভ করে এবং উভয় পরীক্ষায়
উপজেলায় প্রথম স্থান অধিকার করে। মিতু জানায় সে অভাবের সংসারে বড় হয়েছে। মিতুর সম্পদ বলতে তার পিতার রেখে যাওয়া ১০ কাঠা জমি এবং নগদ ১লক্ষ টাকা। এইটুকু সম্পদ থেকেই মিতুর মা সাংসারিক খরচসহ মেয়ের লেখা পড়ার খরচ চালাচ্ছেন। বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বাজারে যা কল্পনা করাই বোকামি। মিতু জানান তার এই সাফল্যের পিছনে রয়েছে মহান আল্লাহর অশেষ রহমত, নিজের কঠোর অনুশীলন ও তার মাতার অক্লান্ত পরিশ্রম এবং শিক্ষকদের সহযোগিতা ও সঠিক দিকনির্দেশনা এবং ফুফাতো ভাই স্কুল শিক্ষক মোঃ মাসুদুর রহমান ও ব্যাংকার সোহেল রানা, জেঠাত ভাই শাহরিয়ার ইকবালসহ শুভাকাঙ্ক্ষীদের অনুপ্রেরণা । লেখাপড়ার এই ধারা বহাল রাখার জন্য মিতু দেশবাসীর দোয়া চায়। উচ্চ শিক্ষা শেষ করে ভবিষ্যতে মিতু প্রশাসন ক্যাডার হয়ে দেশ এবং সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর ভাগ্যোন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করতে চায়।
উপজেলার”দড়িকাছিকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাসুদুর রহমান জানান, আমরা মিতুর পরীক্ষার ফলাফলে অত্যন্ত খুশি। সে খুব মেধাবি আমরা যতটুকু পারি তার খোঁজখবর নেওয়ার চেষ্টা করি। সে ভবিষ্যতে বড় কিছু হোক এমনটাই আশা করি। মিতুর পরিবারের জন্যদেশবাসীর নিকট দোয়াও চেয়েছেন তিনি।