ডাঃ আমজাদ হোসেন মিলন উল্লাপাড়া প্রতিনিধিঃ
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার সমতল ভূমির ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর (আদিবাসী) ঘাশীমালো ১৮ পরিবার শত বছর ধরে বসতভিটাহীন অবস্থায় জীবন অতিবাহিত করছেন।
ওইসব পরিবার স্থানীয় প্রতাপ হাটের সরকারি জায়গায় কোনোরকম বংশ পরম্পরায় বসবাস করে আসছেন।সাম্প্রতিক সময়ে সরকারি জায়গা থেকে তাদেরকে উচ্ছেদ করা হতে পারে, এমন আতংকে পরিবারগুলো ভুগছেন।ঘাশীমালো পরিবারের বেশ কয়েকজন জানান, তারা প্রতাপ হাটের যে সরকারি জায়গায় বংশ পরম্পরায় বাস করছেন সেই জমির পরিমাণ প্রায় ২৫ শতক। কিন্তু পরিবার ও সদস্য সংখ্যা বাড়ায় সেখানেও তাদের স্থান সংকুলান হচ্ছে না।বসতি পরিবারগুলোর প্রধান হলেন সুবল সরদার, বিপিন সরদার, ফুলমালা বালা, রমেন সরদার, লক্ষী বালা, গোপেন সরদার।
তারা জানান, উল্লাপাড়া উপজেলার বাঙ্গালা ইউনিয়নের অতি পুরানো প্রতাপ হাটটির একপাশে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর (আদিবাসী) ১৮টি পরিবার বসবাস করছেন। তারা সমতল ভূমির ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী এবং কাগজপত্রে সরদার পদবীর হলেও আসল পদবী ঘাশীমালো।
লক্ষী বালা জানান, তাদের পূর্ব পুরুষরা সরকারি এ জায়গাতেই বসবাস শুরু করেন।এরপর বংশ পরম্পরায় তারাও বসবাস করছেন। তাদের হিসেবে প্রায় দেড়শো বছর আগে নিজস্ব বসতভিটা না থাকায় তাদের পূর্ব পুরুষরা সরকারি এ জায়গায় মাথা গোজার ঠাঁই করে নেন।
তিনি বলেন, ১৮টি পরিবার প্রত্যেকে গড়ে দেড় শতকেরও কম জায়গায় তাদের মাথা গোজার জায়গা পেয়েছেন। কিন্তু এখন পরিবার ও সদস্য সংখ্যা বাড়ায় ভোগান্তিতে পড়ছেন। তাছাড়া সরকারি এ জায়গা থেকে তাদের উচ্ছেদ করা হতে পারে এমন গুঞ্জনে আতংকে ভুগছেন।
সরেজমিনে জানা যায়, বসতির পরিবারগুলোর দিনমজুরী করে তাদের সংসার চলে । তাদের নারী ও পুরুষরা একসাথে মাঠের কৃষিকাজে মজুরী খাটেন। মাঠে কাজ না থাকলে পুরুষরা নানা পেশায় দিনমজুরী করেন।
এখানকার বসতি পরিবারগুলোর সবাই জানান, তাদের দিনমজুরী করে পেটের খাবার জোটে। বাড়তি টাকা জমে না। যে টাকা দিয়ে অন্য কোথায়ও জায়গা কিনে বসবাস করবেন।ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী (আদিবাসী) সেবা উন্নয়ন সমিতির সভাপতি চন্দ্র সরদার ও সাধারণ সম্পাদক রমেন সরদার বলেন, পরিবার সংখ্যা বাড়লেও এ জায়গার মধ্যেই কোনোমতে তারা ঘর তুলে বসবাস করছেন। নানা সমস্যা আর অভাবের মাঝে অনেকেই সন্তানদের পড়ালেখা করাচ্ছেন। তাদের জন্য সরকারিভাবে জায়গা বরাদ্দ ও বসতঘর করে দেওয়া হলে সন্তানদের পড়ালেখায় তারা আত্মনিয়োগের সুযোগ পাবেন।বাঙ্গালা ইউপি চেয়ারম্যান সোহেল রানা সোহেল বলেন, এখানকার বসতি পরিবারগুলো নিয়ে চিন্তা ভাবনা রয়েছে। তাদের স্থায়ী বাসস্থান বিষয়ে পরিকল্পণা রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) দেওয়ান মওদুদ আহমেদ প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, এলাকাটির ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জমি আছে, ঘর নেই এমন কটি পরিবারকে বসতঘর করে দেওয়া হয়েছে। প্রতাপের ঘাশীমালো পাড়ার ১৮ পরিবারকে এক জায়গায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে পুনর্বাসন করার বিষয়টি দেখা হচ্ছে