তাড়াশ উপজেলা আওয়ামীলীগ-গঠিত হয়নি পূর্ণাঙ্গ কমিটি

Spread the love

সম্মেলনের সাত মাস পেরিয়ে গেলেও

সাব্বির আহমেদ, তাড়াশ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা আওয়ামীলীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের সাত মাস পেরিয়ে গেলেও গঠিত হযনি পূর্ণাঙ্গ কমিটি। এ নিয়ে দলের মধ্যে বিভাজন থাকলেও জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, করোনা মহামারির কারণে পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেয়া সম্ভব হয়নি।দলীয় সূত্র জানাযায় ২০২১ সালের ১৪ ফেব্রয়ারী তাড়াশ উপজেলা আওয়মীলীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে কাউন্সিলারদের প্রত্যক্ষ ভোটে সভাপতি নির্বাচিত হন সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী ম.ম.আমজাদ হোসেন মিলন। আর সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন পূর্ববর্তী কমিটির সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিত কর্মকার।

কাউন্সিলের পর তাড়াশ উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যত: বর্তমান এমপি অধ্যাপক ডা: মো: আব্দুল আজিজ ও সাবেক এমপি গাজী ম.ম.আমজাদ হোসেন মিলনের সমর্থকরা দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পরে। কমিটিতে ঠাঁই পাওয়া নিয়ে চলে নানা তৎপরতা। এরই মাঝে ২০২১ সালের ১৮এপ্রিল ফুসফুসের জটিলতা নিয়ে গাজী ম.ম.আমজাদ হোসেন মিলন মারযান।
দলীয় সূত্র জানায়,মৃত্যুর পূর্বে নব নির্বাচিত সভাপতি আমজাদ হোসেন মিলন ও সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিত কর্মকার যৌথভাবে ৭১ সদস্য বিশিষ্ট একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে স্বাক্ষর করেন। ২০২১ সালের ১১ এপ্রিল সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিত কর্মকারের নেতৃত্বে ওই কমিটিটি জেলা আওয়ামী লীগের কাছে অনুমোদনের জন্য জমা দেয়া হয়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি ও সভাপতি গাজী ম.ম.আমজাদ হোসেন মিলনের মৃত্যুতে জেলা আওয়ামী লীগ পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দিতে পারেননি।
ওই কমিটি নিয়ে সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা: মো: আব্দুল আজিজ অভিযোগ তোলেন, তার সাথে কোনো প্রকার আলোচনা না করেই কমিটি গঠন করে, জেলা আওয়ামী লীগে জমা দেয়া হয়েছে। আলাপ আলোচনার ভিত্তিতে কমিটি গঠন করা হলে দল শক্তিশালী হবে। তবে তার এ অভিযোগ খন্ডন করে সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিত কর্মকার বলেন, এ অভিযোগ সঠিক নয়। বিগত দুটি কমিটি থেকে ৭৫ ভাগ নেতাকর্মী প্রস্তাবিত কমিটিতে ঠাঁই পেয়েছেন। অনেক নেতাকর্মী মারা যাওয়ায় তাদের পরিবার থেকে যোগ্য ব্যাক্তিদেও সদস্য পদ দেয়া হয়েছে। বিতর্কিত কাউকে এ কমিটিতে স্থান দেয়া হয়নি। তবে বিদ্রোহী বা দলের সঙ্গে যারা বেঈমানী করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট। তাদের কে কমিটিতে ঠাঁই দেয়া হবে না।
সিরাজগঞ্জ জেলা ও তাড়াশ উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানায়, সভাপতি গাজী ম.ম.আমজাদ হোসেন মিলনের মৃত্যুর পরপরই কে হবেন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এ নিয়ে চলে জেলা থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত জোর লবিং। ইতিমধ্যেই জেলা কমিটিতে জমা দেয়া ওই কমিটির ছায়ালিপি সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে, কমিটিতে ঠাঁই না পাওয়া নেতারা এসে ভিড় জমান সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা: মো: আব্দুল আজিজের কাছে। এদের নেতৃত্বে রয়েছেন উপজেলা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী, উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান মনি ও আগের কমিটির সভাপতি মো: আব্দুল হক। উভয় গ্রুপই জেলা ও কেন্দ্রে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন।, নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক নেতা জানিয়েছেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন না হলে এ সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়।এ প্রসঙ্গে সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিত কর্মকার বলেন, আওয়ামীগ একটি বৃহৎ দল। এ দলে প্রতিযোগিতা থাকলেও, গ্রুপিং নেই। পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন হলেই এ সাময়িক সমস্যা কেটে যাবে। সবগুলো ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কাউন্সিল হওয়ায়, দল তৃণমূল পর্যায়ে আরো গতিশীল রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে তাড়াশ উপজেলা আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা: মো: আব্দুল আজিজ বলেন, আমি চাই ত্যাগী নেতাকর্মীদের নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হোক। আমার লোক, তার লোক বলে কোন কথা নেই। যারা বিএনপি-জামায়াত জোটের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন, তারাই উপজেলা কমিটিতে ঠাঁই পাক। ব্যক্তি বিষেশের পছন্দের লোক নয়, বঙ্গবন্ধু আদর্শের বিশ্বাসীদের দিয়ে কমিটি করা হোক। এখন বিভেদের সময় নয়, দল গোছানোর সময়। ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সময় ।
সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো:আব্দুস সামাদ তালুকদার বলেন, করোনা মহামারির কারণে নিয়মিত সভা করতে না পারায়, পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেয়া সম্ভব হয়নি। অচিরেই এ কমিটির অনুমোদন দেয়া হবে এবং তাড়াশ উপজেলা আওমীলীগের কমিটি নিয়ে জটিলতা কেটে যাবে।

 

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD