জাহাঙ্গীর আলম, চাটমোহর :
লকডাউনে নৌকা চললেও নেই তেমন উপার্জন। তাই নৌকার মাঝিদের সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে। করোনার প্রভাব পড়েছে চলনবিলের চাটমোহর উপজেলার মাঝিদের ওপর। উপজেলার ছাইকোলা, বওশাঘাট, ধর্মগাছা, মির্জাপুর, বোয়ালমারী, ধানকুনিয়া, বরদানগর, নুরনগর ঘাটে শতাধিক মাঝি নৌকা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। ভোরের আলো ফোটার আগে জীবিকার তাগিদে বড়াল, গুমানী, চিকনাইসহ চলনবিলের বুকে ভাসিয়ে দেন নৌকা।
মাঝিরা জানান, করোনায় তাঁরা ঠিকভাবে চলতে পারছে না। আগের মতো আর উপার্জন নেই। আছে শুধু হতাশা। তারপরও নৌকা চালিয়ে এখনো বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখেন তাঁরা। ইজারার টাকা, মালিকের টাকা, পাহারাদারের টাকা ও সিরিয়ালের টাকা সব মিটিয়ে যা থাকে তা দিয়ে সংসার চলে না। ছাইকোলা বাজার গুমানী নদীর ঘাটে গিয়ে দেখা যায়,সারি সারি নৌকা বাঁধা আছে। অপেক্ষা করতে হচ্ছে যাত্রীর জন্য। যেখানে একসময় ঘাটে নৌকা ভিড়লে যাত্রীতে ভরে যেত, আজ তা আর হয় না। ঘাটের মাঝি চরনবীন গ্রামের আকতার হোসেন বলেন,করোনার ভয়াবহতা তছনছ করে দিয়েছে আমাদের জীবন। কোনোভাবে পেটে ভাতে চলছে। আমরা যা আয় করি তা দিয়ে সংসারের খরচই হয় না। সঞ্চয় করে কিছুই রাখতে পারি না।’
মাঝি আসলাম উদ্দিন, মজনুর রহমানসহ অন্যরা জানান, করোনার আগে প্রতিদিন আমরা ৫০০-৬০০ টাকা আয় করতাম। কিন্তু করোনার জন্য সবকিছু বন্ধ থাকায় মানুষ আর ঘর থেকে বের হয় না। এখন আর আগের মতো আয় হয় না। এখন দিনে ১০০-১৫০ টাকা আয় হয়। বিভিন্ন মহলকে দিয়ে সংসার খরচের জন্য কিছুই থাকে না। তারা বলেন,সবকিছুর দাম বেড়েছে। বেড়েছে পরিবহনের ভাড়া। কিন্তু বাড়েনি নৌকা পারাপারের ভাড়া। এতে করে রোজগার তেমন হয় না। তা ছাড়া সরকার থেকে তেমন কিছু পাইনি। এমন অবস্থা চলতে থাকলে আমরা হয়তো না খেয়ে মারা যাব।এই বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান আঃ হামিদ মাস্টার বলেন, উপজেলার কোনো ব্যক্তি না খেয়ে থাকবে না। কেউ যদি খাদ্যকষ্টে থাকেন, তাহলে আমাদের অফিসে যোগাযোগ করতে পারেন। অথবা ৩৩৩ ফোন দিলে আমরা বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেব।