লুৎফর রহমান : সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্েরর ত্রাণ বিতরনের নামে অনিযমের অভিযোগ উঠেছে। জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ উদযাপনের জন্য বরাদ্ধকৃত অর্থ থেকে অসহায় দুঃস্থদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরন করেন তাড়াশ হাসপাতাল কর্তপক্ষ। কিন্ত ত্রাণ সামগ্রী ক্রয়ে তারা ব্যাপক অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছে মর্মে প্রকাশ।
হাসপাতাল সুত্রে জানা যায়, জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ ২০২০ উদযাপন উপলক্ষে তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্ের ১ লক্ষ ২৮ হাজার টাকা বরাদ্ধ করা হয়। কিন্তু বর্তমান দেশে করোনা ভাইরাসের প্রভাবে কর্মহীন হয়ে পড়ায় বরাদ্ধকৃত ওই টাকা কর্মহীন দুঃস্থদের মাঝে বিতরণের নির্দেশ দেন উর্দ্ধতন কতৃপক্ষ। সেই মোতাবেক তাড়াশ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গত ২৯-০৪-২০২০ইং তারিখে ৮০জন কর্মহীন দুঃস্থদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন। কিন্ত ওই ত্রাণ সামগ্রী ক্রয়ে ব্যাপক অনিয়ম করা হয়েছে বলে পরিলক্ষিত হয়।
তথ্যানুন্ধানে জানা গেছে , তাড়াশ পৌর বাজারের মের্সাস লিমন ট্রের্ডাস থেকে ৪১ টাকা ৫০ পয়সা দরে ৮শ ৫০ কেজি চাউল ক্রয় করা হয়। কিন্ত ক্যাশ মেমোতে দেখা গেছে ৫৩ টাকা ৫০ পয়সা। এখাতে ১০ হাজার ২শ টাকার অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়েছে। পুষ্টি সপ্তাহের দুই দিন প্রচার ২৪ ও ২৮ এপ্রিল ২০২০ তারিখে বিদ্যুৎ মাইক সার্ভিস এর অনুকুলে ব্যয় দেখানো হয়েছে ১০ হাজার টাকা। বিদ্যুৎ মাইক সার্ভিস এর র্কতৃপক্ষের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের কাছে ওই দুই দিন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো প্রচার মাইক ভাড়া নেননি। জানা গেছে করোনা ভাইরাসের কারণে বাস্তবে কোন ধরনের প্রচারনাই হয়নি। মতবিনিময় সভার নামে ১টি ডিজিটাল ব্যানার তৈরীতে কম্পিউটার গ্রাফির্ক্রে নামে খরচ দেখানো হয়েছে ২ হাজার টাকা। কিন্তু কমম্পিউটার গ্রাফিক্্র এর স্বত্বাধিকারী আব্দুল হাকিম হিরো জানান, তার প্রতিষ্ঠান থেকে ওই তারিখে ৫শত টাকা মূল্যের ১ টি ব্যানার তৈরী করা হয়েছে। পুষ্টি সপ্তাহ পালন উপলক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভার ৪০ প্যাকেট নাস্তা বাবদ মৌ ফল ভান্ডারের নামে খরচ দেখানো হয়েছে ৪ হাজার টাকা। ওই সভায় উপস্থিত তাড়াশ উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদকের সাথে কথা বলে জানা যায়, সভা মাত্র ১১ সদস্য নিয়ে শেষ করা হয়। এখন প্রশ্ন হলো ১১জনের নাস্তা বাবদ ৪ হাজার টাকা কি করে ব্যয় হয় এ যেন বালিশ কান্ড। এছাড়াও দুঃস্থদের মাঝে বিতরণের জন্য ১শ টি ছোট লাক্স সাবান ১০ টাকা দরে ক্রয় করে বিল ধরা হয়েছে ৪০ টাকা এবং ২০ টাকা দরের ১শ টি মাস্ক ক্রয় করে বিল দেখানো হয়েছে ৫০টাকা। দোকান মালিক বিপুল আকন্দ জানান, আমার কাছ থেকে সাদা ভাউচার নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া ত্রাণ বিতরণের জন্য তেল, ডাউল, লবন, আলু ক্রয়েও ব্যাপক অনিয়ম ও বিল ভাউচার নয়ছয় পরিলক্ষিত হয়েছে। এবিষয়ে তাড়াশ উপজেলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের হিসাব রক্ষক ও প্রধান সহকারি সাহাদৎ হোেেসন বলেন, আমি ত্রাণ ক্রয়ের ব্যপারে কিছুই জানিনা টিএইচও স্যার যেভাবে কাজ করতে বলেছেন আমি সেই ভাবে কাজ করেছি।
এ ব্যাপারে ত্রান ক্রয় কমিটির সদস্য স্বাস্থ্য পরিদর্শক আতাহার আলীর বক্তব্য নিতে ফোন করলে বলেন ,আমি অসুস্থ কিছু বলতে পারবনা, সব বিষয়ে টিএইচও স্যার বলতে পারবেন। একই প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ জামাল মিয়া শোভন এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, কেনাকাটার বিষটি উর্দ্ধতন কর্তপক্ষকে জানাব। সাংবাদিকদের সাথে এবিষয়ে কোন কথা বলবনা।