শামিউল হক শামীম ঃ সাবেক স্বরাষ্ট্র, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ও ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম বলেন, মুক্তিযোদ্ধারাই বঙ্গবন্ধুর ডাকে হাতে অস্ত্র তুলে নিয়ে ১৯৭১ সালে এ দেশ স্বাধীন করেছেন । অথচ সাড়ে ৩ বছরের মাথায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শত্রুরা ১৯৭৫ সালে ১৫ আগষ্ট নির্মমভাবে হত্যা করেছে। এতে রেহাই পায়নি শিশু শেখ রাসেলও। তেমনি বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ১৯ বার হত্যার চেষ্টা করা হয়। তারপর মুত্যুর মুখোমুখি হয়ে জীবন পেয়ে তিনি জীবনবাজী রেখে বাংলাদেশের গণ মানুষের সেবায় উৎসর্গ করেছেন নিজেকে। শেখ হাসিনাই একমাত্র নেত্রী যিনি ২১ বছর পর ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখেছেন। আর খালেদা জিয়ার শাসন আমলে বাংলাদেশ অন্ধকারে ছিল। শেখ হাসিনা সে অন্ধকার দুর করে উন্নয়নের বাতি জ্বালিয়েছেন বাংলার ঘরে ঘরে। তবে মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তির ষড়যন্ত্র এখনো থেমে নেই। বিএনপি, জামায়াত পরাজিত শক্তি আজো চক্রান্ত করছে। ৭১’র ঘাতকদের সহযোগীতা করছে এখনো । কিন্ত তা করে লাভ নেই। শেখ হাসিনা সরকারই বাংলাদেশকে জঙ্গী ও চরমপন্থি মুক্ত করেছেন। দেশ শিক্ষায় এগিয়ে যাচ্ছে, খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে । এখনো দুর্নীতি আছে যা বিএনপি জামায়াতের মদদদাতারা যারা এই দেশকে পিছিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে তারাই দুর্নীতি করছে। তিনি আরো বলেন , শেখ হাসিনাই একমাত্র নেত্রী যিনি দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের এক নম্বর নাগরিক হিসেবে সন্মান দিয়েছেন এবং বাংলাদেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন। গত সোমবার বিকাল ৩টায় নওগাঁ জিন্দানী ডিগ্রী কলেজ মাঠে ৭১র যুদ্ধাকালীন সংগঠন পলাশডাঙ্গা যুব শিবিরের উদ্যোগে ১১ নভেম্বর নওগাঁ মুক্তিযুদ্ধ দিবস উপলক্ষে আলোচনায় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোহাম্মদ নাসিম আরো বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি ড. কামালের সাথে ঐক্য করে নির্বাচনী মাঠ থেকে পালিয়ে যায়। খেলার মাঠে প্রতিপক্ষ না থাকলে গোল তো হবেই। স্বাধীনতা পরবর্তী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান সফল হয়েছিলেন বলেই তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। আমাদের নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সফল হচ্ছেন বলেই তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র থেমে নেই। এজন্য স্বাধীনতার স্বপক্ষের গণমানুষকে সতর্ক থাকতে হবে।
তাড়াশের গাজী আব্দুর রহমান মিঞার সভাপতিত্বে ঐতিহাসিক নওগাঁ দিবসের ওই আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন , নাটোর -৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল কুদ্দুস , সিরাজগঞ্জ -৩ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. আব্দুল আজিজ, সাবেক এমপি গাজী ম,ম আমজাদ হোসেন মিলন, পলাশডাঙ্গা যুবশিবিরের যোদ্ধা গাজী সোরহাব হোসেন, সিরাজগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার শফিকুল ইসলাম শফি,তাড়াশ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা গাজী আরশেদুল ইসলাম, সাঈদুর রহমান সাজু, এস এম আব্দুর রাজ্জাক, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. আব্দুল হক , সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিত কর্মকার প্রমুখ।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন তাড়াশ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আনিস প্রধান। এতে পাবনা , নাটোর ও সিরাজগঞ্জ জেলার জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধা ও জনতা অংশগ্রহণ করেন।পরে স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশনায় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।
উলে¬খ্য, ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর সাথে ৭১’র যুদ্ধকালীন সংগঠন পলাশ ডাঙ্গা যুব শিবিরের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সন্মুখ যুদ্ধে পাক বাহিনীর ১৩০ জন সৈন্য নিহত হয় এবং প্রচুর পরিমাণ সমরাস্ত্র হস্তগত হয় পলাশ ডাঙ্গা যুবশিবিরের। আর এর মধ্যে দিয়ে ৭১ সালে পাকবাহীনির শোচনীয় পরাজয় ঘটে নওগাঁ যুদ্ধে। তবে জাতীয়ভাবে এই রনাঙ্গনের স্বীকৃতি ও এখানে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধাদের খেতাব প্রদানের দাবীসহ এলাকার মুক্তিযোদ্ধাদের কতিপয় দাবি-দাওয়া পূরণে সরকারের আশু পদক্ষেপ গ্রহণের আশা করেন এলাকাবাসী।