চাটমোহর প্রতিনিধি: বিস্ময়করই বটে! সৌদি আরবের মরুভূমির ফল খেজুর এখন চলনবিলের কর্দমাক্ত মাটিতেও ফলছে। পাবনার চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল ইউনিয়নের বল্লভপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক আবদুল জলিল এ অসাধ্যকে সাধন করেছেন। তার বাড়ির পাশে পরীক্ষামূলকভাবে লাগানো গাছে এবার আরবের খেজুর এসেছে। কিছু গাছে এসেছে খেজুরের বাদা। বিশ^াস, আবেগ আর ধৈর্যকে কাজে লাগিয়ে সেই অসম্ভব কল্পনাকে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন তিনি। খেজুর গাছকে এক নজর দেখতে প্রতিদিন শত শত মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন তার বাড়িতে। আবদুল জলিল এবার পুরো চলনবিল এলাকায় এ খেজুর চাষ ছড়িয়ে দিতে চান।
সরেজমিনে তার বাড়িতে গেলে আবদুল জলিল জানান, ২০১২ সালে শিক্ষকতা থেকে অবসরে যাওয়ার পর সৌদি আরবের মক্কা-মদিনায় হজ পালন করতে যান। সেখানে তিনি বেশ কিছু খেজুরের বাগান ঘুরে বেড়ান। এ সময় তার প্রবল ইচ্ছা হয় গ্রামের বাড়িতে সৌদি খেজুরের বাগান করার। পরে সেখান থেকে মরিয়ম জাতের কিছু বীজ সংগ্রহ করেন। হজ শেষে দেশে ফিরে এসে তিনি বাড়ির সামনের আঙিনায় বীজ থেকে উৎপাদিত ৩৪টি চারা লাগান। কিন্তু সব গাছের চারা মারা যায়। তবে দমে যাননি আবদুল জলিল।
২০১৩ সালে এক প্রতিবেশীকে দিয়ে আবারো কিছু মরিয়ম জাতের বীজ এনে বাড়ির আঙিনায় রোপণ করেন। শেষ পর্যন্ত ১৬টি গাছ বেঁচে থাকে। ছয় বছর ধরে গাছের পরিচর্যা করেছেন। ধীরে ধীরে গাছগুলো বড় হতে থাকে। সেই গাছগুলোতে এবার খেজুর ধরেছে। এসেছে খেজুরের বাদা। এবার কৃষিজমিতে বড় পরিসরে বাগান করার চিন্তা করছেন তিনি। এ পর্যন্ত বীজ, সার-কীটনাশকসহ সব মিলিয়ে তার খরচ হয়েছে প্রায় ৬০-৭০ হাজার টাকা। খেজুর চাষে সফলতার মুখ দেখায় এবার তিনি পুরো চলনবিলজুড়ে খেজুর চাষ ছড়িয়ে দেয়ার চিন্তা-ভাবনা করছেন। ইতোমধ্যে তার মালিকানাধীন বেশ কিছু জমিতে খেজুর চাষের জন্য প্রস্তুত করছেন।
চাটমোহর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসান রশীদ হোসাইনী বলেন, চলনবিল এলাকায় এই প্রথমবারের মতো কোনো ব্যক্তি সৌদি খেজুর চাষ করছেন। ইতোমধ্যে গাছগুলোতে ফল আসতে শুরু করেছে, যা সত্যিই বিস্ময়কর। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে তাকে সব রকম সহযোগিতা ও পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তিনি সফল হতে পারলে চলনবিল এলাকায় সৌদি খেজুর চাষ বিস্তার লাভ করবে।