cof

সিংড়ায় তিন ফসলী জমিতে অবৈধ পুকুর খননের মহোৎসব চলছে

Spread the love

সিংড়া প্রতিনিধি: শস্য ভান্ডারখ্যাত নাটোরের সিংড়া চলনবিলে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে তিন ফসলী জমিতে অবৈধভাবে পুকুর খননের মহোৎসব চলছে। ৩শ বিঘা বিল এখন পুকুর! আগে যেখানে বছরে ৩ ফসলের আবাদ হতো, এখন তা পুকুরে রুপান্তরিত হয়েছে। পাশাপাশি কয়েকটি পুকুর খননে সেচ সমস্যার কারনে অনেক কৃষক বিপাকে পড়ে জমি লিজ দিয়ে দিচ্ছেন। ধানের দাম নেই। তাই পুকুরে মাছ চাষের পাশাপাশি পুকুরের চারপাশে কলার আবাদে ব্যাপক লাভ এ কারনেই পুকুর খননের প্রতি ঝুঁকছেন উপজেলার কৃষকরা। তবে শ্রেণি পরিবর্তনের আবেদন ছাড়াই অধিকাংশ পুকুরই অবৈধ ভাবে খনন করা হচ্ছে। পুকুর খননের বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের নীরব ভূমিকায় জনমনে নানা প্রশ্ন ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে স্থানীয় প্রভাবশালীদের দখলদারিত্ব ও অবৈধভাবে পুকুর খননে দেশের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে চলনবিল। জলবায়ু পরিবর্তন ও বিলের মাঝে যত্রতত্রভাবে পুকুর খননের কারণে সংকুচিত হয়ে ঐতিহ্যবাহী চলনবিল তার যৌবন হারিয়ে ফেলছে। হুমকির মুখে পড়েছে চলনবিলের জীববৈচিত্র।
নাটোরের সিংড়া উপজেলায় তিন ফসলী জমিতে অবৈধ পুকুর খননে কমছে আবাদী জমির সংখ্যা। পুকুরের মাটিতে সড়কগুলো নষ্টের পাশাপশি যানবাহন চলাচল ও স্কুল-কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থীদের পথ চলাচল ঝুঁকিপূর্ন হয়ে উঠেছে। সরেজমিনে উপজেলার হাতিয়ানদহ ইউনিয়নে দেখা যায় ৩শ বিঘা বিল পুকুরে রুপান্তরিত হয়েছে। এছাড়াও শেরকোল, কলম, চামারী, সুকাশ, ও চৌগ্রাম ইউনিয়নে ব্যাপক হারে পুকুর খনন করতে দেখা যায়। তবে এসব অবৈধ খনন বন্ধে প্রশাসনের কোনো ভূমিকা নাই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, প্রশাসনের লোকজন টাকা নিয়ে পুকুর খননের অনুমতি দেন। এতে করে শ্রেণি পরিবর্তনের আবেদনের প্রয়োজন হয় না। প্রত্যেকটি পুকুর থেকে প্রশাসনের লোকজন টাকা নিয়ে যায়। চামারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রশিদুল ইসলাম মৃধা বলেন, চামারীর গুটিয়া বিলে একটি অবৈধ পুকুর খনন হচ্ছে, এই পুকুর খননে খাল বন্ধ হয়ে গেলে প্রায় ২ হাজার একর জমির বোরো, আমন, ইরি ধানসহ অন্যান্য ফসল আবাদে ব্যাপক ক্ষতি হবে। কৃষকদের আবাদী জমি নষ্ট হবে। চাষাবাদ করার মত অবস্থা কোন থাকবে না। উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিক জানান, ২০১৮ সালেই উপজেলা ব্যাপী ৬৬ হেক্টর জমিতে ১৬৫টি পুকুর খনন করা হয়েছে। উপজেলায় আর পুকুরের প্রয়োজন নাই তবুও নির্বিকারে খনন হচ্ছে। যেগুলো পুকুর আছে ভালভাবে সেগুলোতে মাছ চাষ করলে মাছের চাহিদা পূরণ হওয়া সম্ভব। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন জানান, এ উপজেলায় চাহিদার অতিরিক্ত পুকুর খনন করা হয়েছে। এখন আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ আছি কিন্তু এভাবে তিন ফসলী জমিতে পুকুর খনন করা হলে একসময় খাদ্যে ঘাটতি দেখা দিবে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুশান্ত কুমার মাহাতো জানান, উপজেলার কয়েক জায়গায় অবৈধ পুকুর খনন বন্ধের জন্য সহকারি কমিশনার ভূমিকে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD