ডাঃ আমজাদ হোসেন মিলন : সিরাজগঞ্জের সলঙ্গার ধুবিল ইউনিয়নের সাতকুর্শি গ্রামে মায়ের পরকিয়া প্রেমিককে আপত্তিকর অবস্থায় আটক করে স্থানীয়দের হাতে তুলে দিয়েছেন মেয়ে। এ ঘটনায় দিনভর আটক অবস্থায়,স্থানীয় প্রধানগন শালিস বৈঠক করে। খবর পেয়ে সলঙ্গা থানার পুলিশের একটি দল ঘটনা স্থলে উপস্থিত হয়ে স্থানীয়দের হাত থেকে পরকিয়ার দায়ে আটক,নৈপাড়া গ্রামের প্রবাসী আয়ান আলীর স্ত্রী হাছিনা খাতুন (৩০) ও সাতকুর্শি গ্রামের আব্দুল মজিদ এর ছেলে কলেজ ছাত্র মেরাজুল ইসলামকে উদ্ধার করেন।
স্থানীয়রা জানান,প্রবাসী আয়ান আলীর (৩৫) স্ত্রী হাছিনা খাতুন (৩০) সাতকুর্শি গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে মেরাজুলের (২৪) সাথে বিগত আট মাস ধরে অবৈধ স¤পর্ক চলে আসছিল। আর এই সম্পকের সূত্রে একাধিকবার গোপন মিলন হয় পরকীয়া প্রেমিক-পেমিকা যুগলের। আয়ান আলীর স্ত্রী হাছিনা খাতুনের বিয়ের উপযোগী একটি মেয়ে ও ১০ বছর বয়সী ১টি ছেলে সন্তান আছে। অপরদিকে আব্দুল মজিদের ছেলে মেরাজুল সলঙ্গা থানাধীন সলঙ্গা ডিগ্রি কলেজের অনার্স ২য় বর্ষের ছাত্র। স্বামী দীর্ঘদিন বিদেশে থাকার সেই সুযোগ নিয়ে গড়ে তোলেন নিবিড় যোগাযোগ। দুজনই শুরু করেন এক অবৈধ প্রেমের সম্পর্ক “পরকীয়া”।
এ নিয়ে একাধিকবার দরবার শালীশ হয়েছে তারপরও মেরাজুল বারবার এই মেয়ের সাথে অবৈধ সম্পর্ক সৃষ্টি করছে। অবৈধ সম্পকের কারর্ণে হাছিনার পেটে সন্তান জন্ম নিয়েছে বুঝতে পেরে ওষুধ খাইয়ে তা নষ্টও করে ফেলেন মেরাজুল।এ-বিষয়ে ধর্ষিতা হাসিনা খাতুন এর মেয়ে জান্নাতি খাতুন (১৫) বলেন-আমার মায়ের সাথে মেরাজুলের অনেক দিনের সম্পর্ক সেটা জানতাম। কিন্তু কোন দিনই বুঝতে পারিনি এতদূর গড়িয়েছে। গতকাল রাত্রিতে আমি প্রতিদিনের মতো খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পরি। মাঝ রাত্রিতে ঘুম থেকে জেগে দেখি মার পাশে কেউ একজন পুরুষ মানুষ শুয়ে আছে। আমি কোনো কিছু বুঝতে না পেরে বাইরে গিয়ে দরজা লাগিয়ে চিৎকার করে লোকজন ডাকি।
এ বিষয়ে হাছিনা খাতুন বলেন,আমার স্বামী বিদেশে থাকায়,আমি দুই ছেলে মেয়েকে নিয়ে পুরুষ শূন্য বাড়িতে একাই থাকি। সেই সুযোগ নিয়ে মেরাজুল আমার বাড়িতে এসে বিভিন্ন কিছুর লোভ বা প্রলোভন দেখিয়ে আমার সাথে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করে। আর এই সম্পর্কের ফলে আমার পেটে সন্তানের জন্ম হয়। আমি আমার পেটে জন্ম নেওয়া সন্তানের কথা মেরাজুলকে বললে সে রাগান্বিত হয়ে ডাক্তারের কাছ থেকে ওষুধ এনে আমাকে জোড় করে খাইয়ে আমার পেটের সন্তানটি নষ্ট করতে বাধ্য করে। এই বিষয়গুলো টের পেয়ে এলাকায় শালিশ বসে এবং একটা সমাধান করে দেয়। কিন্তু মেরাজুল বারবার আমাকে হুমকি দিয়ে রাতের অন্ধকারে আমার ঘরে আসে। গত ২১ জানুয়ারী আমার ঘরে এলে আমার বড় মেয়ে বিষয়টি বুঝতে পেরে বাইরে থেকে ঘরে দরজা লাগিয়ে এলাকাবাসীকে খবর দেয়। যেহেতু এই ঘটনা এখন আমার স্বামী জেনে গেছে সে আর আমাকে রাখবে না। আর যার কারণে আমার সংসার ভেঙ্গেছে সমাজে আমি এখন কলংকিত। তাই আমি এখন তাকে বিয়ে করে তার সাথে সংসার করতে চাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত পরকীয়া প্রেমিক মেরাজুল ঘটনার সত্যতা অকপটে স্বীকার করে বলেন,তার সাথে আমার আট মাসের সম্পর্ক। তার সাথে আমার শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে। গতরাতে আমি ঘরে ঢুকেও তার সাথে আমার শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে। কিন্তু এ মুহুরর্তে তাকে বিয়ে করা আমার পক্ষে সম্ভব না। এবিষয়ে উপস্থিত স্থানীরা জানান,হাছিনার সাথে মেরাজুলের অনেক দিনের সম্পর্ক। আমরা এর আগেও ঘটনা সমাধান করার চেষ্টা করেছি কিন্তু মেরাজুলের বাবা মজিদ বিভিন্ন কৌশলে পার পেয়ে যান। আমরা এখন আইনের কাছে এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
এ ঘটনার বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে,সলঙ্গা থানার ভারপাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী প্রতিবেদককে বলেন-এ বিষয়ে প্রবসশীর স্ত্রী হাসিনা খাতুন ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযুক্ত মেরাজুল কে আটক করা হয়েছে । তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।