সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে
অনাস্থা প্রস্তাব আইনের পরিপন্থি ও সাংঘর্ষিক
ছোটন আহমেদ ও আরিফুর রহমান, তাড়াশ : গত ২১ ডিসেম্বও ২০২৩ইং তারিখ বৃহস্পতিবার সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শরীফুল ইসলাম তাজফুলের বিরুদ্ধে সদস্যদের সঙ্গে সমন্বয়হীনতা, নিয়ম শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও অনিয়মের অভিযোগে যে ১০ জন সদস্য অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন তা জেলা পরিষদের আইনের পরিপন্থি ও সাংঘর্ষিক বলে প্রাথমিকভাবে জানা যায়।
জেলা পরিষদ আইনের ধারা ১০-এর উপ-ধারা ২-এর (১) এ বর্ণিত কোন কারণে তাঁহার (চেয়ারম্যানের) পদ হইতে অপসারণ করা যাইবে না, যদি বিধি অনুযায়ী তদুদ্দেশ্যে আহত পরিষদের বিশেষ সভায় মোট সদস্য সংখ্যার অন্যূন দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে তাহার অপসারণের পক্ষে প্রস্তাব গৃহীত এবং প্রস্তাবটি সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তদন্তের পর উহা সরকার কর্তৃক অনুমোদিত না হয়।তবে শর্ত থাকে যে, উপ-ধারা (১) এর দফা (গ) এ বর্ণিত কারণে চেয়ারম্যান বা কোন সদস্যকে অপসারণের জন্য উক্তরূপ প্রস্তাব গ্রহণের প্রয়োজন হইবে না:আরও শর্ত থাকে যে, উক্তরূপ সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে চেয়ারম্যান বা উক্ত সদস্যকে প্রস্তাবিত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কারণ দর্শাইবার জন্য যুক্তিসঙ্গত সুযোগ দান করিতে হইবে।উপরোক্ত আইনের বিধি অনুযায়ী জেলা পরিষদ, সিরাজগঞ্জ চেয়ারম্যান ও সচিবের উপস্থিতিতে পরিষদের বিশেষ কোন সভা না করে অনাস্থার প্রস্তাব বা প্রয়োজনীয় তদন্ত ছাড়া বা চেয়ারম্যানকে প্রস্তাবিত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর জন্য যুক্তিসঙ্গত কোন সুযোগ দান না করেই ১০জন সদস্য শুধুমাত্র তাদের স্বাক্ষর করে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আনিসুর রহমানের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবের কাছে অনাস্থা প্রস্তাবটি জমা দেন। যাহা সম্পূর্ণ অবৈধ, আইন পরিপন্থি এবং পরিষদের আইনের সাথে সাংঘর্ষিক। আইন অবজ্ঞা বা অমান্য করার সামিলও বটে। উক্ত অনাস্থা প্রস্তাবের ভিত্তিতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পরিষদের রেজুলেশন বইয়ে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত লেখা নেই। বাহির থেকে ক্রয়কৃত বইয়ে লিখে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শরীফুল ইসলাম তাজফুলের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব দাখিল করেন সদস্যবৃন্দ।
রেজুলেশন বইয়ে ১০ জনের শুধু নাম ও স্বাক্ষর থাকলেও ঐ পাতায় কোন সিদ্ধান্ত লেখা নেই। এমনকি প্রতিষ্ঠানের নাম, সভা অনুষ্ঠানের স্থান/ঠিকানা, সময় ও তারিখ কিছুই উল্লেখ নেই। এ ব্যাপারে সিনিয়র সদস্য মোঃ মোসলেম উদ্দিনকে অনাস্থা প্রস্তাবে স্বাক্ষর করেছেন কি না জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, পরিষদে উপস্থিতির স্বাক্ষর দিয়েছি। কোন অনাস্থা বা অপসারণের জন্য স্বাক্ষর দেইনি।৩০ নভেম্বর ১নং প্যানেল চেয়ারম্যান তাজফুল ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পাওয়ার পর তিনি ১৯ ডিসেম্বর মিটিং আহ্বান করে ১৪ ডিসেম্বর নোটিশ জারি করেন। সেই ১৯ ডিসেম্বর মিটিংয়ে কোরাম না হওয়ায় মিটিংটি স্থগিত করা হয়। এরপর ২১ ডিসেম্বর অনাস্থা প্রস্তাবে আমি মত না দিয়ে চলে আসি। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থার অভিযোগ যুক্তিসংগত হয়নি বলে আমি মনে করি। তাই আমি অনাস্থা প্রস্তাবের সাথে একমত নই। জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনিসুর রহমানকে জেলা পরিষদের বিশেষ সভা ও অনাস্থা প্রস্তাবের মিটিং সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, আমি উক্ত মিটিং-এ উপস্থিত ছিলাম না। ২১ ডিসেম্বর আমি অফিস শেষে আসার আগ মুহূর্তে আমার কাছে একটি অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিয়েছে। ছুটির পর আমি যাচাই বাছাই করে দেখবো।