সিরাজগঞ্জ-৩ আসন ধরে রাখতে চায় আ.লীগ, পুনরুদ্ধারে মরিয়া বিএনপি

Spread the love

রাশিদুল হাসান, রায়গঞ্জ প্রতিনিধিঃ আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এখনো আর মাত্র দুই মাস বাকি। নির্বাাচনী এলাকায় বইতে শুরু করেছে ভোটের হাওয়া। চলনবিল অধ্যুষিত রায়গঞ্জ ও তাড়াশ উপজেলা নিয়ে সিরাজগঞ্জ-৩ আসন। এই আসনে নির্বাচনী উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে শহর থেকে প্রতান্ত গ্রামের পথে প্রান্তরে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা ভোটের মাঠ সরগরম করছে। সরকারের টানা তিনবারের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরতে সভা-সমাবেশ করে নিজেদের সাফল্যের কথা তুলে ধরছেন তারা। সেই সাথে নেতাকর্মীদেরকে সংগঠিত করছেন। আওয়ামী লীগের দাবি,এত উন্নয়ন দেখে টানা চতুর্থবারের মতো জনগন শেখ হাছিনাকেই ক্ষমতায় বসাবে। অপরদিকে বিএনপি নির্দলীয় তত্তাধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে অংশ নেবে না এবং নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না। সভা-সমাবেশের মাধ্যমে তারা নির্দলীয় তত্তাবধায়ক সরকার গঠনের দাবি জনগনের কাছে তুলে ধরছেন। হামলা- মামলা ও প্রশাসনিক চাপে কিছুটা কোণঠাসা থেকেও দলীয় কর্মকান্ডে অংশ নিচ্ছেন নেতা কর্মীরা। অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আদায়ের লক্ষ্যে রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রাম অব্যাহত রাখার পাশাপাশি নির্বাচনের প্রস্ততিও নিচ্ছে তারা। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দাবি, গত ১৫ বছরে এই নির্বাচনী এলাকার সার্বিক চিত্রও পাল্টে গেছে। উন্নয়নের ছোঁয়ায় এলাকার রাস্তা-ঘাট ও মানুষের জীবনমানও বদলে গেছে। এই আসনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতিয় পাটি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ দলীয় ব্যানারের বাইরেও জামায়াতে ইসলামের নেতা কর্মীরাও সক্রিয় রয়েছেন। আসন ভিত্তিক জাতিয় পাটি একক প্রার্থী এবং অওয়ামী লীগ-বিএনপির একাধিক প্রার্থীর ছড়াছড়ি। এর সাথে নতুন মুখের আনাগোনা পরীলক্ষিত হচ্ছে। রায়গঞ্জ উপজেলার নয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এবং তাড়াশ উপজেলার আটটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত এই আসন। এই আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ১৫ হাজার ৩৭১ জন। নির্বাচনের পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, এ আসনে ১৯৯১ থেকে ২০০১ সালের নির্বাচনে পর পর তিনবারই বিএনপি প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। ২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনেই পর পর আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বড় দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে রয়েছে মনোনয়ন নিয়ে অভ্যন্তরীণ কোন্দল। আওয়ামী লীগ আগামী নিরৃবাচনে বিজয় ধারা অব্যাহত রাখতে কাজ করছে। তবে এর আগে তিনবার নির্বাচন বিজয়ী বিএনপিও বসে নেই। তারাও আসনটি পুনরুদ্ধারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠ আসনটিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর মধ্যে হতে পারে হাড্ডা হাড্ডি লড়াই। এ আসনের বর্তমান এমপি আওয়ামী লীগের অধ্যাপক ডা:আবদুল আজিজ। তিনি ছাড়াও আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে রয়েছেন রায়গঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল হাসান তালুকদার ইমন, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সহ-সভাপতি কৃষিবিদ সাখাওয়াত হোসেন সুইট, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য ড. হোসেন মনসুর,ব্রিগেডিয়ার জেনারেল(অবসরপ্রাপ্ত) নজরুল হাসান মানিক, সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক এ টি এম লুৎফর রহমান দিলু, রায়গঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ হৃদয়। এ দিকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীর তালিকার শীর্ষে রয়েছেন চারবারের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ আব্দুল মান্নান তালুকদার। এ ছাড়া ওরিয়েন্টাল গ্রæপ অব কোম্পানির পরিচালক ও সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি রকিবুল করিম খাঁন পাপ্পু,রায়গঞ্জ উপজেলা পরিষদে সাবেক চেয়ারম্যান ভিপি আয়নুল হক, তাড়াশ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি খন্দকার সেলিম জাহাঙ্গীর, জার্মানি বিএনপির যুগ্ম আহŸায়ক এবং সমন্বয়ক, জিয়া সাইবার ফোর্স ইউরোপ, তরুণ উদীয়মান রাজনৈতিক ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ সাব্বির আহমেদ। সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি রকিবুল করিম খাঁন পাপ্পু বলেন, আমি তৃনমূল থেকে বিএনপির রাজনীতির সাথে জরিত। বিএনপির নির্যাতিত ও আহত প্রতিটি নেতাকর্মীর পাশ্বে থেকে আর্থিকসহ সব বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা করে আসছি। আমাকে মনোনয়ন দিলে তৃণমূলের সকল নেতাকর্মী আমার সাথে হাত মিলিয়ে আগামীতে এ আসনে বিএনপিকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করবেন। এ বিষয়ে চারবারের সাবেক সংসদ সদস্য বিএনপি নেতা আবদুল মান্নান তালুকদার বলেন, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আদায়ের লক্ষ্যে রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রাম অব্যাহত রাখার পাশাপাশি নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। বারবার এমপি নির্বাচিত হয়ে জনকল্যাণে যে কাজ করেছি, তার সাক্ষী এ অঞ্চলের জনগণ। আমি মনোনয়ন পেলে এ অঞ্চলের মানুষ আমাকেই জনপ্রতিনিধি হিসেবে বেছে নেবেন। বর্তমান সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা: আব্দুল আজিজ বলেন, বিগত নির্বাচনে দল আমাকে মনোনয়ন দেওয়ার পর নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে দলকে সুসংগঠিত করাতে কাজ করেছি। নির্বাচনে এলাকার উন্নয়নে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, তার সব গুলোই বাস্তবায়নে কাজ করেছি। আগামীতে চলনবিলকে একটি পর্যটন এলাকা হিসাবে গড়ে তোলার পরিকল্পনাও হাতে রয়েছে। আমি আবারও নৌকার মনোনয়ন পেলে প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের একজন কর্মী হিসেবে কাজ করব।

 

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD