ভাঙ্গুড়ায় তাবিজ করতে গিয়ে ভায়রাকে হত্যা স্বীকারোক্তি আসামী

Spread the love
চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি:  পাবনার ভাঙ্গুড়ায় গত ১৫ আগস্ট রাতে নিজ ঘরে হত্যাকাণ্ডের শিকার হাসুর (৫০) হত্যাকারী আসামিকে আটক করেছে পুলিশ। রোববার দুপুরে তাকে আটক করা হয় বলে জানিয়েছে ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশ। তাবিজ করতে গিয়ে ভায়রাভাই হাসুকে খুন করেন রিমন।
গ্রেফতার হওয়া আসামি রিমন (২৩) উপজেলার রাঙ্গালিয়া (পশ্চিমপাগা) গ্রামের আতিকুল ইসলামের ছেলে। সম্পর্কে তিনি ও হাসু একে অপরের ভায়রাভাই। তিনি পেশায় শ্যালোইঞ্জিনচালিত গাড়ির চালক। প্রাথমিকভাবে তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। রিমনের স্বীকারোক্তি অনুসারে, ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশ আসামিকে নিয়ে হাসুর বাড়ির টয়লেটের সেপটিক ট্যাংক থেকে হত্যায় ব্যবহৃত লোহার শাবল ও দা উদ্ধার করেছে।
ভাঙ্গুড়া থানার ওসি রাশিদুল ইসলাম বলেন, ধৃত আসামির স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র হাসুর বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। সোমবার সকালে প্রেস ব্রিফিং করে বিস্তারিত জানানো হবে।
পুলিশের একটি বিশ্বস্ত সূত্র থেকে জানা গেছে, হাসুর তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী সাজেদা পুনরায় ঘর করতে কবিরাজের কাছ থেকে একটি তাবিজ নিয়ে আসেন। কবিরাজের পরামর্শ মতে সাজেদা ওই তাবিজ হাসুর বাড়িতে মাটির নিচে পুঁতে রাখতে ছোট বোনের স্বামী রিমনের সাহায্য চান। সেই অনুযায়ী রিমন ১৫ আগস্ট মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার দিকে হাসুর বাড়িতে গিয়ে ওই তাবিজ মাটিতে পুঁতার সময় হাসু তাকে দেখে ফেলেন।
এরপর হাসু তাকে ডেকে তার ঘরে নিয়ে গিয়ে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেয় এবং রিমনকে জিজ্ঞেস করেন- সে কেন রাতে চুপিচুপি তার বাড়িতে এসেছেন। রিমন তার কথার জবাব না দিলে হাসু স্থানীয় কাউন্সিলর ও থানা পুলিশকে ঘটনা জানাতে চাইলে রিমনের সঙ্গে তার ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে রিমন পাশে থাকা লোহার শাবল দিয়ে হাসুর মাথায় আঘাত করেন। এতে হাসু মাটিতে লুটিয়ে পড়লে পাশে থাকা ধারালো লোহার দা দিয়ে মাথায় আরও তিন-চারটি কোপ দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। এরপর তিনি বাহির থেকে ঘর তালা দিয়ে হত্যাকাণ্ড ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে ঘরের বাহির থেকে সুড়ঙ্গ তৈরি করে চুরি সংঘটিত হয়েছে বলে প্রমাণের চেষ্টা করে।
ভাঙ্গুড়া থানার ওসি রাশিদুল ইসলাম বলেন, সুড়ঙ্গ কাটা শেষে রিমন পুনরায় ঘরে এসে হত্যায় ব্যবহৃত লোহার শাবল ও লোহার দা টয়লেটের সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেন। ফিরে যাওয়ার সময় তিনি হাসুর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি নিয়ে যান। তার নিজের ফোনের চার্জ না থাকায় হাসুর মোবাইল ফোনে নিজের সিমকার্ড ঢুকিয়ে ভোররাতে একটি কল করে। মূলত সেই ফোনকলের সূত্র ধরেই রিমনকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয় ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশ। ঘটনায় আরও কেউ সম্পৃক্ত আছে কিনা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।
Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD