ভাঙ্গুড়া(পাবনা)প্রতিনিধি: ভাঙ্গুড়ায় কচুরী পানা আর দুষণে এক সময়কার ঐতিহ্যবাহী প্রমত্তা বড়াল নদী বর্তমানে নদী না খাল তা দেখে বোঝার উপায় নেই। চাটমোহরের কিছু অংশ ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুরের কিছু অংশসহ প্রায় ১২/১৫ কি.মি জুড়ে কটুরীপানা আটকে রয়েছে মাসের পর মাস । সেই সাথে ময়লা ,আবর্জনা ও বাসাবাড়ির সুয়ারেজের লাইনে বড়াল নদের পানিতে মিশে প্রতিনিয়ত হচ্ছে পানি দূষণ। সেই সাথে পোকামাড়র ও মশার উপদ্রব বেড়েছে নদীর তীরবর্তী এলাকায়। স্থানীয়রা, বড়াল নদের কচুরীপানা অপসারণ ও দুষণ রোধে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষোপ সুদৃষ্টি কামনা করছেন।
দেখা গেছে, চাটমোহের কিছু অংশ ভাঙ্গুড়া উপজেলা ও পাশর্^বর্তী ফরিদপুর উপজেলার কিছু অংশসহ প্রায় ১২/১৫ কিলোমিটার জুড়ে বড়াল নদে অবস্থান নিয়েছে কচুরী পানা। মাসের পর মাস এই সব কচুরী পানা বড়ালে আটকে তিল পরিমান জায়গাও ফাঁকা রাখে নি। পাশপাশি ভাঙ্গুড়া পৌর এলাকাসহ ও আসপাশের বাসাবাড়ির সুয়ারেজ লাইন, গবাদী পশূর বর্জ্য , হাসপাতাল ক্লিনিকের ময়লা, মুরগীর উচ্ছিষ্ট অংশসহ নানান ধরণের ময়লা প্রতিনিয়ত মিশে দুষণ হচ্ছে নদীর পানি। একদিকে কচুরী পানায় সাপ, মশা ও পোকা মাকড়ের উপদ্রব বেড়েছে অন্য দিকে ময়লা অবর্জনায় দূষিত পানিতে মাছ পাওয়া ও নৌকা চলাচল করা দুস্বপ্নে পরিনত হয়েছে। নদী পাড়ের মানুষ নদীর পানি পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারছেন না। ফলে পরিবেশের ভারসাম্য মারাত্বকভাবে ব্যহত হচ্ছে। সাধারণ মানুষে মুখে মুখে প্রশ্ন এ থেকে পরিত্রানের উপায় কি?
অনুসন্ধানে জানা গেছে,বড়াল নদীর উৎপত্তি রাজশাহী জেলার চারঘাট থেকে পদ্মা নদীর শাখা নদী হিসেবে। রাজশাহীর চারঘাট থেকে বাঘা, নাটোরের বাগাতিপাড়া, বড়াইগ্রাম, পাবনার চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর উপজেলার মধ্য দিয়ে বাঘাবাড়ী হয়ে এটি হুড়া সাগরে মিশে নাকালিয়া নামক স্থানে যমুনা নদীতে পড়েছে। এটি পদ্মা-যমুনার সংযোগকারী নদী ছিল। এছাড়া এই নদী বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জলাভূমি চলনবিলের পানি প্রবাহের প্রধান সংযোগ নদী। চলনবিলঞ্চালের পানি প্রবাহ ও নিষ্কাশনে হাজার হাজার হেক্টার চলন বিল এলকার কৃষি জমিতে ফসল উৎপাদনে বড়াল নদ সবচেয়ে বড় ভুমিকা রাখে। তবে কালক্রমে বড়াল নদীতে পলিমাটি ও ময়লা আবর্জনা জুমে নদীর তলদেশ ফীত হওয়ার কারণে নদীর পানি প্রবাহ গেছে। অন্যদিকে নদীর তীর দখল ও এর জন্য কম দায়ী নয়।
বড়াল রক্ষা আন্দোলন কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব এস এম মিজানুর রহমান বলেন, বর্ষা মৌসুমের মতো সারা বছর বড়ালে পানি থাকলেই বড়াল নদীকে বাঁচানো সম্ভব। বড়াল যেভাবে দখল হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে, সেটি রোধ করা দরকার। একই সঙ্গে বড়াল এখন ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। বর্জ্য, ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে বড়ালে। বর্তমানে কচুরী পানা আটকে আরও এক বড় সমস্যা তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে প্রশাসনিক পদক্ষেপ প্রয়োজন।এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নদী রক্ষা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান জানান, বড়াল নদে আবদ্ধ কচুরী পানার বিষয়ে জনপ্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা হয়েছে কিভাবে এর একটা সুষ্ঠু সমাধান আনা যায় তা ভেবে দেখা হচ্ছে। তবে বন্যার পানি দ্রুতবৃদ্ধি পেলে কচুরী পানা হয়তো সড়ে যাবে।