তাড়াশে শিশু পার্কের বেহাল দশা

Spread the love

নিজস্ব প্রতিবেদক
বছরের বিশেষ দিনগুলোয় হাজারো লোকজনের সমাগম ঘটে তাড়াশের একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র তাড়াশ শিশু পার্কে। কিন্তু এ পার্কটির উন্নয়ন কাজ দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। ফলে পার্কটির বেহাল দশার সৃষ্টি হয়েছে।এদিকে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, তাড়াশে খেলার মত মাঠ নেই। না আছে বিনোদন কেন্দ্র। শিশু পার্কই তাদের ভরসা। বিশেষ করে, শিশুদের মানসিক পরিপক্কতার জন্য বাইরের নির্মল প্রাকৃতিক পরিবেশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য পার্কটির উন্নয়ন কাজ পূনরায় শুরু করে তা বিনোদন উপযোগী করে গড়ে তোলা হোক।
তাড়াশ শিশু পার্কের নৈশ্য প্রহরী জামাল উদ্দীন বলেন, বাঁশের বেড়া দিয়ে গেট করে পার্কের সামনে (প্রবেশ পথে) রাতে চাবি দিয়ে রাখা হতো। এরই মধ্যে বাঁশের বেড়া ভেঙে গেছে। এখন যে কোনো সময়ে লোকজন ভেতরে ঢুকে পড়ে। নিষেধ করলেও মানেনা। পার্ক চত্বরের অধিকাংশ বৈদ্যুতিব বাল্ব নষ্ট। অন্ধকারে নিরাপত্তার ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। পাশের বন বিভাগের গাছের জঙ্গলের মধ্যে থেকে বড় বড় সাপ বেড়িয়ে রাতে পার্কের মধ্যে চলে আসে। পার্কের শিশুদের বেশিরভাগ বিনোদন উপকরণের ক্ষতি হয়ে গেছে দেখভালের অভাবে। দিনের বেলায় কেয়ার টেকার হিসেবে যার দায়িত্ব পালন করার কথা সে মাসের মধ্যে দুই থেকে চারদিন আসে, তাও অল্প সময়ের জন্য। পার্কটি সারাদিন অরক্ষিতই থাকে। পার্কের ভেতরে মাত্র চারটি ছাতা রয়েছে। যা লোকজন বসার জন্য একেবারেই কম। ভেক্যু মেশিন দিয়ে মাটি কেটে পার্কের লেক তৈরি করা হয়েছে বছর খানেক আগে। কিন্তু লেকের পানিতে ঘুরে বেড়ানোর জন্য নৌকা দেওয়া হলোনা এখনো।
তাড়াশ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ খান জয়সহ অনেকেই বলেন, বছরের দুই ঈদ, দুর্গা পূঁজা, পহেলা বৈশাখ ও বেশ কিছু জাতীয় দিবসেও পার্কে ঘুরতে আসেন তারা। ছেলে মেয়ে পার্কের হাতি, ঘোড়া, বাঘ, হরিণ দেখে খুব আনন্দ পায়। পার্কের মুক্ত পরিবেশে ইচ্ছেমত ছুটোছুটি করে। জনসার্থে এ পার্কটির উন্নয়ন কাজ পূনরায় শুরু করা উচিত।
সরেজমিনে গতকাল শনিবার বেলা ১১ টার দিকে দেখা গেছে, স্থানীয়দের পাশাপাশি প্রতিদিনই ভ্রমন পিপাসু লোকজন পার্কে ঘুরতে আসেন। পার্কের চারটি ছাতার নিচে মাত্র কয়েকজন বসতে পারেন। বাকিরা দাঁড়িয়ে থাকেন ঘন্টার পর ঘন্টা। অনেকে ক্লান্ত হয়ে পার্কের পশ্চিম পাশের এক কোণার দুর্বা ঘাসের উপর বসে পড়েন। তাছাড়া পার্কটির কেয়ার টেকার দায়িত্ব পালন না করায় শিশুরা হাতি-ঘোড়ার পিঠে চড়ে বসে থাকে। এতে পার্কের মূল্যবান বিনোদন উপকরণগুলোয় ফাটল ধরেছে। ছাতাগুলোর প্লাষ্টার ভেঙে ফেলেছে শিশুরা। উধাও হয়ে গেছে পার্কের প্যাডেলচালিত আনন্দতরী। পার্কের ফুলগাছগুলো মরে গেছে।
জানা গেছে, মরহুম সংসদ সদস্য গাজী ইসহাক হোসেন তালুকদার ২০১৪ সালের ২৯ জুলাই শিশু পার্কটির উদ্বোধন করেন। নাম দেওয়া হয় তাড়াশ শিশুপার্ক। তাড়াশ সদরের নিকটবর্তী পরিত্যক্ত হাঁস মুরগি খামার নামক স্থানে চার একর জায়গার ওপরে এ পার্কটি গড়ে তোলা হয়েছে। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক ইফ্ফাত জাহান ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের ৫ লাখ ৩১ হাজার টাকা ব্যয়ে পার্কের প্রয়োজনীয় উপকরণ ও পার্ক এলাকায় ৫০ টি আলোক সজ্জা বাতি বসিয়ে তা দৃষ্টিনন্দন করেন। এরপর এখনকার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক মো. মেজবাউল করিম পার্কের পুকুরে দুই পাশে গাইড ওয়ালসহ আরও কিছু উন্নয়ন কাজ করেন।দায়িত্বে অবহেলার জবাবে তাড়াশ শিশু পার্কের কেয়ার টেকার আকিম হোসেন বলেন, পার্কে তেমন কাজ নেই। তাই নিয়মিত আসার প্রয়োজন হয়না।এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক মো. মেজবাউল করিম বলেন, স্থানীয় নাগরিক হিসেবে চাহিদা দেওয়া হোক। সে মোতাবেক তাড়াশ শিশু পার্ক গড়ে তোলার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে।

 

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD