সম্পাদকীয়
ঠিক ১৭ মার্চ ২০২২ বৃহস্পতিবার যে দিন বাঙ্গালী জাতি তথা গোটা দেশবাসী অত্যন্ত আনন্দঘন এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর ১০২তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করেছে সেদিনটিতেই তাড়াশে ঘটল ইতিহাসের এক লজ্জাজনক ঘটনা। শুধু তাই নয়, তাড়াশের অঙ্গনে এটা এক কলংকজনক অধ্যায় হয়ে থাকবে । তাড়াশেও এই দিবস উপলক্ষে আওয়ামীলীগ দলীয়ভাবে ও স্থানীয় প্রশাসন পৃথকভাবে বর্ণাঢ্য কর্মসূচির মধ্য দিয়ে উদযাপন করেছে। পালন করেছে বিভিন্ন শিক্ষা ও সামাজিক সংস্থা অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশে। এরই মাঝে তাড়াশে নব নির্মিত উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে স্থাপিত জাতির জনক বঙ্গন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুর্যালের ওপর ওয়াজ মাহফিলের পোস্টার সাঁটিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গত ১৭ মার্চ বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের জাতির জনক বঙ্গন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুর্যালে ওয়াজ মাহফিলের পোস্টারটি নজরে আসে স্থানীয়দের। লক্ষ্যনীয়, জন ও যান চলাচলপূর্ণ তাড়াশ -মহিসলুটি সড়কের ধার ঘেঁষা উক্ত ভবনের অদূরেই তাড়াশ থানা চত্বর এবং চারপাশে জনবসতিও বিদ্যমান। কাজেই যে বা যারাই রাতে নয়তো দিনের বেলা এ বেআইনী ও রাষ্ট্রবিরোধী কাজ করে থাকবে তারা খুব সুকেীশলে ও পরিকল্পিতভাবেই করেছে বলে অনুমান হয় । জানা যায়, এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতেই তাড়াশ থানায় বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেছেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আরশেদুল ইসলাম। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানাবার ভাষা খুঁজে পাই না। এই নীচুতা, সংকীর্ণতা ও হীনমন্যতা পোষনকারীদের কোন মানবতা নাই, কোন রুচি ও সভ্যতার লেশ নাই। কী উদ্দেশ্যে, কী ধরনের পরশ্রীকাতরতা বা প্রতিহিংসা বশত এই ঘৃন্য অমানবিক ও বর্বর কান্ড করা হয়েছে সে রহস্য উদঘাটিত হওয়া প্রয়োজন। এটা নিছক কোন দুষ্ট লোকের রাজনৈতিক বিরোধ কিংবা সংঘর্ষ বাধিয়ে দেবার কোন অপ কৌশল। না , এটা উগ্র সাম্প্রদায়িক, মেীলবাদ, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপন্থী কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠির অপকর্ম। আমরা যতদূর জানি, স্বাধীনতার পর এ যাবত তাড়াশে এ ধরনের ন্যাক্কারজনক, নগ্ন ও ইতরোচিত কর্মের নজির নাই। বরং তাড়াশের স্থানীয় রাজনৈতিক পরিবেশ দীর্ঘদিন হল বেশ শান্ত ও সৌহার্দপূর্ণ। তবে এ ক্ষেত্রে বিশেষ করে জাতির পিতাকে অবমাননা করে কোন বিশেষ মহলের এই পোষ্টার লাগানো কিছুতেই মেনে নেবার মত নয়। এরা পশু পদবাচ্যের নরাধম। এখন যেহেতু ঘটনার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে আইনী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে- তাই সবাইকে ধৈর্য, সহিষনুতা, ও দূরদর্শীতা দিয়ে আইনগতভাবে এর মোকাবেলা তথা প্রতিবিধান চিন্তা করতে হবে। এ থেকে কেউ যেন রাজনৈতিক ফায়দা, উস্কানি অথবা প্ররোচনার ইন্ধন না যোগাতে পারে সেদিকে সংশ্লিষ্ট সকলকে সজাগ,সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। আর উক্ত উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে সেখানে স্থায়ী পাহাড়াদার নিযুক্ত করা আশু জরুরী। কেননা, তাড়াশ সদরের এক প্রান্তে অবস্থিত ওই স্থাপনার সব সম্পদেরই সুরক্ষা দেয়া বিশেষ দরকার বলে আমরা মনে করি।