গোলাম মোস্তফা:
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাদরি ভাষার প্রশিক্ষিত শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। তাদের মাতৃভাষা পারিবারিকভাবে চর্চা করলেও বিদ্যালয়ে পড়ালেখার মাধ্যমে শিক্ষা লাভের সুযোগ থেকে বঞ্চিতই রয়ে যাচ্ছে। শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১শ’ ৩৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে এবছর ১৩টি বিদ্যালয়ে চার শতাধিক ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিশু শিক্ষার্থী পড়ালেখা করছে। ওই বিদ্যালয়গুলোতে সাদরি ভাষা জানা শিক্ষক নিয়োগ না দেওয়ায় বইগুলো যথা নিয়মে পড়ানো সম্ভব হচ্ছেনা। আর সাদরি ভাষায় লেখার চর্চা নেই বললেই চলে।
মাধাইনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থী বিপ্র কুজুর, দীপংকর কুজুর, অংকন তির্কী, বিপ্রোজিত উরাঁও, পপি কুজুর, সুস্মিমিতা কুজুর, কলি সিং, কামনা সিং জানায়, বছরের প্রথম দিনেই তাদের মাতৃভাষার (সাদরি ভাষা) পাঠ্যবইগুলো তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে পাঠদানের বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য। তবে শিক্ষকরা সাদরি ভাষা সম্পর্কে কিছুই জানেন না। জন্মের পর থেকে বাবা-মা’র মুখে বলতে শুনে তারা এই ভাষা শিখেছে। নিজেদের সম্প্রদায়ের মধ্যে সারাক্ষণ তারা এই ভাষায়ই সব কথা বলে। বিদ্যালয়ে সঠিকভাবে পাঠদান না হওয়ায় সাদরি ভাষার বই তারা পড়তে পারেনা, নাতো লিখতে পারে!
মাধাইনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্রী গোকুল চন্দ্র মাহাতো বলেন, সাদরি ভাষাটি বাঁচিয়ে রাখার জন্য ২০১২ সালে সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সাদরি ভাষার প্রাকপ্রাথমিক থেকে দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ করা শুরু হয়। তবে প্রশিক্ষিত শিক্ষক নিয়োগ না দেওয়ায় শিক্ষার্থীরা ভাষাটি শিখতে পারছে না। এ প্রসঙ্গে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আখতারুজ্জামান বলেন, তাড়াশে সাদরি ভাষায় শিক্ষাদানের মতো শিক্ষক একজনও নেই। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন বিভাগকে অবগত করা হয়েছে।