আবুল কালাম আজাদ।।
নাটোরের গুরুদাসপুর-বড়াইগ্রামের কৃষকরা এবারে অনুকুল আবহাওয়ায় বিনা চাষে কম খরচে রসুনের বাম্পার ফলন ঘরে তুলে সেই জমি থকেই উপড়ি ফসল হিসেবে একই খুরচে রসালো বাঙ্গি-তরমুজেরও বাম্পার ফলন ও দাম পেয়ে অর্থনীতির চাকা বদলে ফেলেছে। বনপাড়া-হাটিকুমরুল ঢাকা মহাসড়কের মানিকপুর থেকে কাছিকাটাপর্যন্ত ২০ কিলোমিটার সড়কজুড়ে তরমুজ ও বাঙ্গীর বাজার বসেছে। মহাসড়কের ২০ কিলোমিটের জুড়ে দুই পার্শে তরমুজ-বাঙ্গি আর মিষ্টি কুমড়ার গাদা নিয়ে বসে আছেন কৃষকেরা। সড়কের ধারে গাড়ী থামিয়ে তরমুজ-বাঙ্গী কিনছেন দূর দূরান্তের মানুষ। জমি থেকে সড়কে স্তুপ করতেই খুচরা ক্রেতাদের পাশাপাশি পাইকাররা এসব তরমুজ-বাঙ্গী কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। বিভিন্নস্থানে রাত-দিন ট্রাক- লরি-পিকয়াপ ভ্যানে তরমুজ-বাঙ্গী -মিষ্টি কুমড়া লোড করা হচ্ছে। এতে কৃষক এবং পাইকারদের উভয়ের সুবিধা হচ্ছে। আবার সৌখিন ক্রেতারাও সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে টাটকা তরমুজ কিনতে পেরে অনেক খুশি হতে দেখা গেছে।
নাটোরের গুরুদাসপুর ও বড়াইগ্রাম উপজেলার এসব সড়ক এখন তরমুজের বাজারে পরিণত হয়েছে। শুধু এই সড়কেই নয় উপজেলার চরকাদহ, দাদুয়া, উদবাড়িয়া, ধারাবারিষা, সিধুলী, চলনালী, সোনাবাজু, বিন্যাবাড়ি ঝাউপাড়া এলাকায় বাড়ির সামনে কিংবা মোড়ে মোড়ে এসব বাঙ্গী তরমুজের হাট বসেছে। বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা এসে কিনে নিয়ে যাচ্ছে। গতবারের চেয়ে এবার চাহিদা বেশি থাকায় কৃষকরা দাম ভাল পেলেও খরায় ফলন ভাল না হওয়ায় তেমন পোষাচ্ছেনা বলে কৃষকরা জানান।মহাসড়কে দেখা গেছে, সিরাজগঞ্জ থেকে রাজশাহী যাওয়ার পথে আব্দুর রশিদ মাস্টার একটি তরমুজ কিনলেন ৩০০ টাকায়। বনপাড়ার জাহাঙ্গীর নামের আরেক ব্যক্তি কিনলেন ৩৩৫ টাকায়। অপেক্ষাকৃত ছোট আরেকটি তরমুজ একজনকে ১৯০ টাকা দিয়েও কিনতে দেখা গেছে। এতে ক্রেতারা ঠোকাজেতা মনে করছেন না।
টাঙ্গাইল থেকে আশা পাইকারী ব্যবসায়ীআহম্মদ আলী জানান, রমজান মাসে ইফতারীতে তরমুজের ব্যাপক চাহিদা থাকায় এখানে তরমুজ কিনতে এসেছি। ১০০ তরমুজ১৫০০ থেকে ১৭০০ টাকা দরে কিনেন তারা। এলাকায় তারা ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করবেন। এতে তারা লাভবান হচ্ছেন।অপরদিকে কৃষকের কাছ থেকে তরমুজ পাইকারী কিনলেও হাটেবাজারে বিক্রি হচ্ছে কেজি দরে। ৫৫ টাকা কেজি হওয়ায় সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে গেছে তরমুজের দাম। তাই ইফতারিতে ইচ্ছা থাকলেও অভাবী মানুষরা তরমুজ কিনে খেতে পারছেন না।
ধারাবারিষার কৃষক আব্দুল লতিফ, শাহিন হোসেন, সোনাবাজু গ্রামের কৃষক মোতাহার জানান, রসুনের গাছ বড় হওয়ার পর গাছের ফাঁকে ফাঁকে বাঙ্গি, তরমুজ ও মিষ্টি কুমড়ার বীজ লাগাতে হয়। এ ফসলের জন্য বাড়তি সার ও কীটনাশক লাগে না। এবছর বাঙ্গি ও তরমুজের ফলন ভাল হয়েছে। বাঙ্গী তুলতে শ্রমিকদের ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত মজুরি দিতে হচ্ছে। তবে রমজান মাসে বাজারে এসব ফলের চাহিদা থাকায় দামও ভাল পাচ্ছি। তাতে রসুনের চাষে লোকসান হলেও এসব সাথী ফসলে আমরা লাভবান হচ্ছি।
উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, এবছর গুরুদাসপুরে বাঙ্গি ৭২০ হেক্টর, তরমুজ ৫৫৫ হেক্টর ও মিষ্টি কুমড়া ২৫ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। খরায় ফসলের ফলন ভাল হওয়ায় বাঙ্গিতে ২২ হাজার মেট্রিক টন, তরমুজ ২৩ হাজার মেট্রিক টন ও মিষ্টি কুমড়ায় ১৭৫ মেট্রিক টন উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারন ধরা হয়েছে।
# আবুল কালাম আজাদ ,০১৭২৪ ০৮৪৯৭৩ #
|
|
|
|