লুৎফর রহমান : আজ ঐতিহাসিক নওগাঁ দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযুদ্ধে উত্তরবঙ্গের বেসরকারি সাব-সেক্টর কমান্ড পলাশডাঙ্গা যুবশিবিরের মুক্তিযোদ্ধারা পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়।
নওগাঁ শাহ শরীফ জিন্দানী ডিগ্রী কলেজ মাঠে মুক্তিযোদ্ধাদের মিলন মেলা উপলক্ষে এবার করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) পরিস্থিতির কারণে শুধু ছোট পরিসরে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় ।সভায় সভাপতিত্ব করেন মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের উপজেলা সভাপতি খলিলুর রহমান।
মুক্তিযোদ্ধাদের মিলন মেলায় প্রধান অতিথী হিসেবে বক্তব্য রাখেন পলাশডাঙ্গা যুবশিবিরের সহ সর্বধিনায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক সংসদ সদস্য ম.ম. আমাজাদ হোসেন মিলন।আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেজবাউল করিম,তাড়াশ থানা ওসি ফজলে আসিক, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার গাজী আরশেদুল ইসলাম,বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম আব্দুর রাজ্জাক, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের উপজেলা সাধারণ সম্পাদক জর্জিযাস মিলন রুবেল প্রমুখ।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সুত্রে জানা যায় ৭১ এর ১০ নভেম্বর রাতে পলাশডাঙ্গা যুব শিবিরের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক আব্দুল লতিফ মির্জার নেতৃত্বে পাঁচ শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা বিশ্রামের জন্য সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ বাজার এলাকায় অবস্থান নেয়। খবর পেয়ে পরদিন ১১ নভেম্বর ভোরে পাক বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসররা মুক্তিযোদ্ধাদের ঘিরে ফেলে। এ সময় মুক্তিযোদ্ধারা প্রতিরোধে গড়ে তুললে শুরু হয় গেরিলা যুদ্ধ। ভোর পাঁচটা থেকে শুরু হয়ে বিকেল তিনটা পযন্ত টানা ১০ ঘণ্টাব্যাপী যুদ্ধে প্রায় আড়ইশ’ পাকসেনা ও দেড়শতাধিক রাজাকার নিহত হয়। এক পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়ে পালিয়ে যায় পাক সেনারা। এ সময় একজন ক্যাপ্টেনসহ ৮ জন পাকিস্তানি সেনা সদস্য অস্ত্রসহ ধরা পড়ে পলাশডাঙ্গা যুব শিবিরের গেরিলা মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে। তবে পলাশডাঙ্গা যুবশিবিরের যোদ্ধাদের প্রাণপন লড়াই ও কৌশলে পাক সেনারা পর্যুদস্তু হলেও দু’জন মুক্তিযোদ্ধা সামান্য আহত হওয়া ছাড়া তাদের আর কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। নওগাঁ যুদ্ধে পরাজয়ের মাধ্যমেই মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানিদের পরাজয়ের পটভূমি রচিত হয়।