আপনি কী সুস্থ থেকে আপনার জীবনকে বদলাতে চান?

Spread the love

অধ্যাপক ফজলুর রহমান

সুস্থতা মানুষের জীবনের সবচেয়ে বড় নিয়ামত। আমরা অসুস্থ মানুষকে কেউ ভালবাসিনা। পরিবারে ও সমাজে তার তেমন একটা গ্রহণযোগ্যতাও থাকে না। তাই সুস্থ থাকাটা এত জরুরী। একটু কষ্ট হলেও ঘুম থেকে ভোরে ওঠার অভ্যাস করুন। আর যারা নামাজ পড়েন তারা ফজরের নামাজটা মসজিদে গিয়ে পড়–ন কারণ মনীষীরা বলেছেন “সকাল বেলার হাওয়া-একশ পীরের দোয়া”, উর্দুতে বলা হয়েছে- সুবহে সাদিক কা হাওয়া সব রোগকা দাওয়া। বিখ্যাত ক্ষণজš§া নারী খনা বলেছেন, সকাল শয়, সকাল ওঠে, তার কড়ি বৈদ্য না লুটে।

এই কথাটাই খনা বলার অনেক পরে বেনজামিন ফ্লাংকলিন বললেন Early to bed and Early to rise make a man healthy wealthy and wiseএর অর্থ দাড়ায় আপনি যদি আগে ঘুমান এবং আগে ঘুম থেকে ওঠেন, তাহলে স্বাস্থ্যবান, সম্পদশালী ও বিজ্ঞ হবেন। এখানে লক্ষনীয় যে, সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠলেই সুস্থতার বড় সহায়ক শক্তি অর্জন করা সম্ভব।

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ)কে কুশল জিঙ্গেস করলে, তিনি বলতেন, শোকর আল-হামদুলিল্লাহ্ ভাল আছি, এই ভাল আছি বললে কী উপকার, বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে এর রহস্য বের করে ফেললেন। একজন মানুষ দিনে যদি কয়েক বার এ কথা বলতে থাকে। তাহলে তার ব্রেনে বার বার ভাল থাকার ম্যাসেজ যাওয়ার ফলে তার ব্রেনের ওর্য়াকিং ট্রাকচার বদলে যায়। এবং ভাল থাকার আকুতি বাড়ে। নিঃসন্দেহে দেখবেন তিনি ভাল থাকছেন। এর সঙ্গে আমরা যদি ঘুম থেকে উঠেই বার বার বলি সুস্থ দেহ, প্রশান্ত মন, কর্মব্যস্থ, সুখী জীবন। একটু অভ্যাস করুন আপনি অবশ্যই ভাল থাকবেন

এবার আসা যাক্ জীবন বদলের দিকে ! কী ভাবে নিজেকে বদলাবেন আপনি? প্রথমে বিশ্বাস করতে হবে আপনি কী নিজেকে বদলাতে চান? এই জীবন বদলের চাবিকাঠি কিন্তু আপনার হাতে। আপনি যদি চান জীবনকে বদলাবেন তবে-ই জীবনকে বদলাতে পারবেন। জীবনকে সুন্দর করতে পারবেন। এই বিশ্বাস দিয়ে কতজনই তো বদলেছেন নিজেকে। জšে§ছেন দরিদ্র পরিবারে। বেড়ে উঠেছেন অযতœ-অবহেলায়। পরিণত জীবনে হয়েছেন খ্যাতিমান-ক্ষমতাবান। প্রখ্যাত পন্ডিত শহীদ আল-বোখারীর জীবন বদলের চাবিকাঠি গ্রন্থের কিছু উর্দ্ধৃতি তুলে ধরা হলো। ভারতের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ও পরমানু বিজ্ঞানী এ পি জে আবদুল কালাম, হোন্ডা মোটরস-এর মালিক সইচিরো হোন্ডা, ব্রাজিলের রাষ্ট্রনায়ক লুলা দা সিলভা আর যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি বারাক হোসেন ওবামা-এই বদলে যাওয়া মানুষদেরই কয়েকজন। এরা জš§গ্রহণ করেছিলেন কুঁড়ে ঘরে। পরিণত জীবনে থেকেছেন প্রাসাদে। শুরু করেছিলেন শূন্য থেকে। পৌছেছেন পূর্ণতায়। বাইরে থেকে কেউ তাদের জীবনকে বদলে দেয় নি। তারা তাদের জীবন বদলেছেন বিশ্বাস দিয়ে। নিজের মনের শক্তিকে ব্যবহার করে। আপনিও বদলাতে পারেন আপনার জীবন। ভাবুন কোন কোন ক্ষেত্রে আপনার পরিবর্তন প্রয়োজন। কী বদলাতে চান। কোন ক্ষতিকর অভ্যাসচক্র থেকে আপনি বেরুতে চান। এটা হতে পারে শারীরিক কোনো অসুস্থতা, অহেতুক ভয়, মানসিক কোনো দুর্বলতা, হৃদয় ঘটিত কোনো জটিলতা, পরিবারে অবজ্ঞা, আর্থিক অক্ষমতা, শিক্ষায় আপাত ব্যর্থতা, সৃজনশীলতায় বন্ধ্যাত্ব, পেশাগত বা সামাজিক কোনো অচলাবস্থা। অবস্থা যা-ই হোক, এখান থেকে আপনি বেরিয়ে আসতে পারেন। আপনার আগে এসব জটিলতা থেকে অসংখ্য মানুষ বেরিয়ে এসেছেন, অবগাহন করেছেন সোনালী সাফল্যে: আপনি শুধু বিশ্বাস ও মনের শক্তিকে কাজে লাগাবেন। সব সময় বলতে চেষ্টা করবেন, আপনি বিশ্বাসী-আপনি সাহসী। কেননা বিশ্বাস ও সাহস দুটো এমন এক মোক্ষম হাতিয়ার যা আপনার মনের শক্তিকে বাড়িয়ে দিয়ে জীবনকে বদলীয়ে আপনার স্বপ্ন পূরণ করতে সহায়তা করবে। মনে রাখবেন, পৃথিবী বিশ্বাসী ও সাহসী মানুষের জন্য। পবিত্র ধর্ম গ্রন্থ আল কোরআনেও মহান সৃষ্টিকর্তা বার বার বলেছেন, হে বিশ্বাসী, তাই বিশ্বাস ও সাহস নিয়ে চলতে থাকুন । দেখবেন ধীরে ধীরে আপনার চাওয়াগুলো পাওয়ায় রূপান্তরিত হবে।

 

লেখক : প্রভাষক, কবি ও কলামিষ্ট, তাড়াশ, সিরাজগঞ্জ।

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD