রাকিবুল ইসলাম ঃ সিংড়া উপজেলার পূর্ব,দক্ষিণ অংশ জুড়ে চলনবিল। বাংলাদেশের বৃহত্তর বিল এটি। ৯টি উপজেলার ছোট বড় বিলের সমন্বয়ে গঠিত চলনবিল। প্রকৃতির অপরুপ সৌন্দর্য্য উপভোগে হাজার হাজার মানুষ এখন ছুটে আসছেন চলনবিলে। দেশের অন্যান্য বিল থেকে এ বিলের পার্থক্য হলো এটি খরস্রোতা। চলন নাম অনুসারেই এটির নামকরণ হয় চলনবিল। পাবনা, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ জেলার বিশাল অংশজুড়ে এ বিলের বিস্তৃিত। বর্ষা মৌসুমে অসংখ্য খাল দিয়ে এ বিলে পানি প্রবেশ করে। বর্ষাকালে জলরাশির বুকে নৌকায় পাল তুলে ঘুরতে মন কার না চায়। তাইতো অবসর পেলেই মানুষ ছুটে আসে এখানে। বিশেষ করে শুক্রবার দর্শনার্থীদের আগমনে মুখরিত হয়ে উঠে। দুর দুড়ান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসে। নাটোর,বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, পাবনা,রাজশাহী এমনকি রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ভ্রমণ পিপাসুরা ছুটে আসছেন চলনবিলে।
একসময় চলনবিল তাঁর সৌন্দর্য হারিয়ে ফেলেছিলো। কিন্তু চলনবিলের বুক চিরে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপির প্রচেষ্টায় ১৪ কি: মি: দৈর্ঘ্য সড়ক নির্মিত হয়েছে। যার ৯ কি:মি: সাবমার্সিবল অর্থাৎ নিচু বা ডুবন্ত সড়ক। বর্ষায় এ সড়ক দিয়ে যেমন মাইক্রো, বাইক, অটোসহ ছোট যানবাহন চলাচল করে তেমনি রাস্তার উপর দিয়ে নৌকা চলে যা সত্যিই মনোমুগ্ধকর। তাছাড়া চলনবিল সিংড়ায় পর্যটকদের চাহিদা মেটাতে গড়ে উঠেছে চলনবিল পর্যটন পার্ক। শিশুদের জন্য বিভিন্ন রাইড রয়েছে। রয়েছে ঝুলন্ত ব্রীজ। যেখান থেকে অপরুপ চলনবিলকে উপভোগ করা যায়। অপরদিকে চলনবিলের ইটালী ইউনিয়নে ঘাসি দেওয়ান রহ : এর মাজার রয়েছে। যেখানে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাউলদের গানের আসর বসে। শুক্রবারে মানত করতে আসে শত শত ভক্ত। বর্তমানে আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে চলনবিল।
পরিবেশ উন্নয়ন ও প্রকৃতি সংরক্ষণ ফোরামের সাধারন সম্পাদক রাজু আহমেদ জানান, চলনবিল এখন প্রতিদিনই পর্যটকদের সমাগম বাড়ছে। দুর দুরান্ত থেকে পর্যটকদের আগমনে মুখরিত এ বিল। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপির প্রচেষ্টার ফসল চলনবিলের ডুবন্ত সড়ক। এ কারণে দর্শনার্থীদের দৃষ্টি এখন চলনবিল সিংড়ায়। তারই প্রচেষ্টায় পর্যটকদের জন্য বসার সুব্যবস্থা করেছেন। অপরদিকে সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। সম্প্রতি প্রতিমন্ত্রী পলকের অনুদানে প্রায় ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সিংড়া-বারুহাস-তাড়াশ সড়কের পাশে নৌকা,মাছ ও শাপলার প্রতিকৃতি বাস্তবায়ন করেছে জেলা পরিষদ। যা নজর কাঁড়ছে দর্শনার্থীদের। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম ভোলা জানান, এক সময় চলনবিল এলাকাটি ছিল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, অবহেলিত। বর্ষা মৌসুমে এ বিলের মনোরম পরিবেশ দর্শকদের বেশি আকৃষ্ট করে। এ মৌসুমে চলনবিলের সুবিশাল জলরাশি, উত্তাল তরঙ্গ, পাল তোলা নৌকা দেখতে উৎসুক জনতা ছুটে আসেন। সিংড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) বিপুল কুমার জানান, দেশের ঐতিহ্যবাহী চলনবিলে পর্যটন শিল্প বিকাশে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। চলনবিলের সৌন্দর্য উপভোগের জন্য উলে¬খযোগ্য কোনো বিনোদন কেন্দ্র নেই। উপজেলার একটি অংশ এ বিলের সৌন্দর্য উপভোগের উপযুক্ত স্থান হিসেবে দর্শনার্থীদের কাছে আগ্রহ বেড়েছে।