তাড়াশে মোস্তফা মেম্বারের মিথ্যা তথ্যে দুই নারীর পরিবার সমাজচ্যুত

Spread the love
স্টাফ রিপোর্টার : সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার তালম ইউনিয়নের গাবর গাড়ী গ্রামের বাসিন্ধা মোঃ আতাব আলীর ১০ম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে একই গ্রামের বর্তমান মেম্বার মোঃ মোস্তফা হোসেনের ভাইগ্না মোঃ আল মাহমুদ (২০) এর সাথে প্রায় এক বছর যাবত গোপন সম্পর্ক চলছিল। এরই সুত্র ধরে গত ১ আগস্ট ২০২৩ তারিখে তারা পালিয়ে যায়। এর সুষ্ঠ বিচার পাওয়ার জন্য মেয়ে পক্ষকে সহযোগিতা করতে থানায় যায় পাশের বাড়ীর বেলী খাতুন ও রেহেনা খাতুন। থানায় মেয়েকে পিরিয়ে পাওয়ার জন্য অভিযোগ করলে থানা পুলিশ ছেলেকে ও তার বাবাকে খোজতে থাকে। এই ভয়ে বিষয়টি মিমাংসা করার জন্য আল মাহমুদের মামা বর্তমান মেম্বার মোঃ মোস্তফা হোসেন তাদের গ্রামের সর্দারদের নিকট যোগাযোগ করেন। তাতে গ্রামের বিশিষ্ট সর্দার মোঃ আলতাফ হোসেন মিটিং ৩ আগস্ট ২০২৩ তারিখে রাত ১০টায় শালিসের দিন ধার্য্য করেন। যথা সময়ে মিটিং হয়।  মিটিংয়ে পালিয়ে যাওয়া ছেলে মেয়েকে মুসলিম আইন মোতাবেক বিয়ের কাজ সম্পন্ন হয়। তারপর এই মিটিংয়ে মেম্বার মোস্তফা বলেন আমাদের গ্রামে অবৈধ কাজ কর্ম চলছে তার একটা বিচার করা দরকার। তখন সর্দারগণ বলেন ঘটনাটি খোলে বলার জন্য। তখন মোস্তফা মেম্বার বলেন আমাদের গ্রামের বেলী খাতুন, বিউটি খাতুন অবৈধ ব্যবসা করে। এই কথা শুনে সর্দারগণ  ২৩ আগস্ট মিটিং বসে সেই মিটিংয়ে বিউটি ও বেলী খাতুনকে হাজির হওয়ার জন্য সকলের পক্ষ থেকে  সর্দার আলতাফ হোসেন নির্দেশ প্রদান করেন। নির্দেশ মোতাবেক তারা হাজির হন। মিটিংয়ে মেম্বারের কথাকে প্রাধান্য দিয়ে উপস্থিত সর্দার গণ রায় দেন তারা দুইজনে প্রত্যেকে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা দিবে। আর পরবর্তীতে যদি তাদের নামে কোন ঘটনা সর্দারগণ শুনতে পায় তাহলে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা হবে। এই রায় বেলী খাতুন রাজী না হওয়ায় তাকে সমাজচ্যুত করেন এবং তাদের গ্রামে একজনকে ভাড়া করে গ্রামের প্রত্যককে জানিয়ে দেন গ্রামের কেউ যদি বেলী খাতুনের সাথে কথা বলে এবং  সে যে ভ্যান বা রিস্কায় উঠবে সে গাড়ীতে উঠে তাহলে তাকেও ২০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। এই কড়া নির্দেশনা প্রদান করেন মোঃ আলতাফ হোসেন, প্রফেসর তোজাম্মেল হক সহ সর্দারগণ। এছাড়া সর্দারগণ বিউটি খাতুনের নিকট হতে ১০ হাজার টাকা নিয়ে তাকে ক্ষমা করে দেয়। এই ১০ হাজার টাকা গ্রহনকারী সর্দার মোঃ আলতাফ হোসেন মাস্টারের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন এই টাকা দিয়ে গ্রাম উন্নয়ন কাজে ব্যয় করবেন। যেমন রাস্তাঘাট, মসজিদ মেরামত ইত্যাদি। বিষয়টি মানবাধিকার লংঘন হওয়ায় সমকাল পত্রিকাসহ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয় এবং মানবাধিকার কর্মীগণের নজরে আসে এবং তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দৃষ্টিতে আসে। তারপর বিষয়টি দ্রুত সমাধান করার জন্য থানা পুলিশ ঘটনা স্থলে যায় এবং মেম্বারকে দ্রুত সমাধান করার জন্য পরামর্শ প্রদান করেন। তাই এই ঘটনাটি গত ১ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে গাবর গাড়ী গ্রামের মোঃ জুয়েল এর বাড়ীতে শালিস বসেন। সেই শালিসে তালম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সহ গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে মিথ্যা বাদী মেম্বার মোঃ মোস্তফা হোসেন বেলী খাতুনের নিকট সহ উপস্থিত সকলের নিকট ক্ষমা চায়। তারপর উপস্থিত সর্দারগণ মেম্বারকে ক্ষমা করে বেলীকে সমাজে তুলে নেয়।
Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD