বছর পর শাশুড়ি হত্যার বর্ণনা দিলেন পুত্রবধূ

Spread the love
মুফতি খোন্দকার আমিনুল ইসলাম আবদুল্লাহ।
জেলা প্রতিনিধি | সিরাজগঞ্জ |৭ বছর পর শাশুড়ি হত্যার বর্ণনা দিলেন পুত্রবধূ

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার দহকুলা দক্ষিণ পাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল গনির স্ত্রী মোমেনা বেওয়া (৭০)। তার এক ছেলে ও আট মেয়ে। ছেলে ও মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন বেশ আগেই। স্বামীর মৃত্যুর পর ছেলে আব্দুল মান্নানের সংসারেই থাকতেন মোমেনা বেওয়া। এমনকি ছেলের মৃত্যুর পরও পুত্রবধূ রিনা খাতুন (৫৫) ও নাতিদের সঙ্গে থাকতেন তিনি।কিন্তু মেয়েদের সংসারে অভাব অনটন থাকায় নিজের নামের কিছু জমি বিক্রি করে তাদের সহযোগিতা করতেন। এ কারণে পুত্রবধূ ও নাতিদের সঙ্গে মনমালিন্য সৃষ্টি হয় মোমেনার। এছাড়া রিনা খাতুন স্বামীর মৃত্যুর সুযোগে অন্য ছেলের সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। বিষয়টি শাশুড়ি জানতে পেরে পুত্রবধূকে শাসন করলে ঝগড়াও হয় তাদের।

এসব নিয়ে শাশুড়ির ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন পুত্রবধূ রিনা খাতুন। এক পর্যায়ে ২০১৬ সালের ২৭ মে সন্ধ্যা ৭টার দিকে শাশুড়ি মোমেনা বেওয়ার শয়নকক্ষে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন রিনা খাতুন। হত্যাকাণ্ডটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে শাশুড়ির শাড়ি দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে তার ছেলেদের সহায়তায় ভিকটিমের শয়নকক্ষের ধর্ণার (আড়া) সঙ্গে ঝুলিয়ে দিয়ে সবাইকে জানান তিনি ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।ঘটনার দিন পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করে। পরদিন ২৮ মে এ বিষয়ে মোমেনা বেওয়ার মেয়ের জামাই মাহবুবুল আলম বুলু বাদী হয়ে উল্লাপাড়া থানায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলাও দায়ের করেন। পরবর্তীতে ভিকটিমের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পর্যালোচনায় জানা যায় মোমেনা বেওয়াকে শ্বাস রোধ করে হত্যা করা হয়েছে।এ ঘটনায় মোমেনা বেওয়ার নাতি (মেয়ের ছেলে) আমিরুল ইসলাম বাবু তিনজনের নামসহ অজ্ঞাতনামা ২ থেকে ৩ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর উল্লাপাড়া থানা পুলিশ মামলাটি প্রথমে সাত মাস ও সিআইডি চার মাস তদন্ত করে। মামলাটির তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা চূড়ান্ত প্রতিবেদন বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করলে বাদীপক্ষ আদালতে নারাজির আবেদন করে। ফলে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআইকে আদেশ দেন আদালত।আদেশের প্রেক্ষিতে দীর্ঘদিন তদন্ত করার পর গত শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩) ঢাকার শাহ জাহান পুর থানাধীন রেলওয়ে কলোনী থেকে রিনা খাতুনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে গ্রেফতার আসামি ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে এমন রোমহর্ষক, বর্বরোচিত বিবরণ তুলে ধরেন।এর আগে রিনা খাতুনের বড় ছেলে আব্দুর রাজ্জাক রনিকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল।সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD