চাটমোহরে বড়াল নদী রক্ষা করা যচ্ছে না

Spread the love
চাটমোহর (পাবনা) :  পাবনার চাটমোহর বুক চিরে বয়ে গেছে ঐতিহ্যবাহী বড়াল নদী। এক সময় ব্যবসার কেন্দ্র বিন্দু ছিল এ নদী। রাজশাহী চারঘাট থেকে বাঘাবাড়ি প্রায় ২২০ কিলোমিটার বড়াল নদী।ফরিদপুর বাঘাবাড়ি পর্যন্ত কিছু অংশ চলমান থাকলে বর্তমান দখল দূষণে অনেকটা ভরাট হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে পৌর শহরসহ আশেপাশে পোল্ট্রি ফার্মে বর্জে বড়াল নদীতে সরাসরি ফেলে আবজর্নার ভাগাড়ে পরিণত করেছে এক শ্রেণির সুবিধাবাদি মহল। এদিকে উপজেলা প্রশাসন বলছেন বড়াল নদী রক্ষা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। নদীর পাড় দখল ও দূষণকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নদী পাড়ের বাসিন্দারা জানান, কচুরি পানা আর দূষণে এক সময়কার ঐতিহ্যবাহী প্রমত্তা বড়াল নদী বর্তমানে নদী না খাল তা দেখে বোঝার উপায় নেই। চাটমোহরের কিছু অংশ ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুরের কিছু অংশসহ কয়েক কিলোমিটার জুড়ে কটুরীপানা আটকে রয়েছে মাসের পর মাস । সেই সাথে ময়লা ,আবর্জনা ও বাসাবাড়ির সুয়ারেজের লাইনে বড়াল নদীর পানিতে মিশে প্রতিনিয়ত হচ্ছে পানি দূষণ। সেই সাথে পোকামাড়র ও মশার উপদ্রব বেড়েছে নদীর তীরবর্তী এলাকায়। স্থানীয়রা কচুরীপানা অপসারণ ও দুষণ রোধে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
দেখা গেছে বাসাবাড়ির সুয়ারেজ লাইন, গবাদী পশুর বর্জ্য , হাসপাতাল ক্লিনিকের ময়লা, মুরগীর উচ্ছিষ্ট অংশসহ নানান ধরণের ময়লা প্রতিনিয়ত মিশে দূষণ হচ্ছে নদীর পানি। একদিকে কচুরী পানায় সাপ, মশা ও পোকা মাকড়ের উপদ্রব বেড়েছে অন্য দিকে ময়লা অবর্জনায় দূষিত পানিতে মাছ পাওয়া ও নৌকা চলাচল করা দুস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। নদী পাড়ের মানুষ নদীর পানি পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারছেন না। ফলে পরিবেশের ভারসাম্য মারাত্বকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। সাধারণ মানুষে মুখে মুখে প্রশ্ন এত থেকে পরিত্রানের উপায় কি?
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বড়াল নদীর উৎপত্তি রাজশাহী জেলার চারঘাট থেকে পদ্মা নদীর শাখা নদী হিসেবে। রাজশাহীর চারঘাট থেকে বাঘা, নাটোরের বাগাতিপাড়া, বড়াইগ্রাম, পাবনার চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর উপজেলার মধ্য দিয়ে বাঘাবাড়ী হয়ে এটি হুড়া সাগরে মিশে নাকালিয়া নামক স্থানে যমুনা নদীতে পড়েছে। এটি পদ্মা-যমুনার সংযোগকারী নদী ছিল। এছাড়া এই নদী বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জলাভূমি চলনবিলের পানি প্রবাহের প্রধান সংযোগ নদী। চলনবিল অঞ্চালের পানি প্রবাহ ও নিষ্কাশনে হাজার হাজার হেক্টর চলনবিল এলাকার কৃষি জমিতে ফসল উৎপাদনে বড়াল নদী সবচেয়ে বড় ভুমিকা রাখে। তবে কালক্রমে বড়াল নদীতে পলিমাটি ও ময়লা আবর্জনা জুমে নদীর তলদেশ স্ফীত হওয়ার কারণে নদীর পানি প্রবাহ উভয়ই কমে গেছে। অন্যদিকে নদীর তীর দখল ও এর জন্য কম দায়ী নয়।
বড়াল রক্ষা আন্দোলন কমিটির সদস্য সচিব এস,এম মিজানুর রহমান বলেন, বর্ষা মৌসুমের মতো সারা বছর বড়ালে পানি থাকলেই বড়াল নদীকে বাঁচানো সম্ভব। বড়াল নদীর দুপাড় যেভাবে দখল হচ্ছে, দ্রুত রোধ করা দরকার। একই সঙ্গে বড়াল এখন ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে বর্জ্য, ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে বড়ালে। কচুরি পানা আটকে সমস্যা তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে প্রশাসনিক পদক্ষেপ প্রয়োজন। এব্যাপারে চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রেদুয়ানুল হালিম বলেন, বড়াল নদী রক্ষা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। নদীর পাড় দখল ও দূষণকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নদীর দুপাড়ে সরকারি উন্নয়ন মূলক প্রকল্পের মাধ্যমে নতুন রুপে সাজানো যেতে পারে।
Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD