ভাঙ্গুড়া(পাবনা)প্রতিনিধি: অবৈধ কারেন্ট জাল প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে। প্রতি বছর বৃষ্টি ও জোয়ারে এলাকার হাজার হাজার মাছের পুকুর ও ঘের প্লাবিত হয়ে নদী, খালে মাছ চলে আসে। এছাড়া মাছ উৎপাদনে সরকারিভাবে জলাশয়ে মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়। প্লাবন পানিতে সব মাছ ছড়িয়ে পড়ে। তখন মাছ শিকারিরা অবৈধ জালে সেই মাছ ধরতে তৎপর হয়ে ওঠে। তাদের মধ্যে কারেন্ট জাল কেনার ধুম পড়ে যায়। কিন্তু মাছের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর এই জাল আইনে নিষিদ্ধ। সেই আইন উপেক্ষা করে সেখানে ব্যবসায়ীরা অবৈধ কারেন্ট জাল বিক্রি করছে প্রকাশ্যে।কারেন্ট জাল একধরনের বিশেষ জাল। এই জালের বিশেষ সুতা অতিসূক্ষ্ম। যা জলাশয়ে পাতার পরে সাধারণত মাছেরা দেখতে পায় না এবং বিদ্যুতের মতো সব মাছ আকর্ষিত হয়ে ফাঁসে আটকে যায়। এজন্য এর নাম ‘কারেন্ট জাল’। এই জাল ক্রয়-বিক্রয় অবৈধ। এটি বন্ধে সরকারি হস্তক্ষেপ কামনা করেন এলাকার সচেতন মহল।শনিবার উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রকাশ্যে অবৈধ কারেন্ট জাল বিক্রি করছে দোকানিরা। বিক্রেতারা জানান, প্রতি কেজি কারেন্ট জাল প্রায় চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। উল্লাপাড়া উপজেলায় বেশির ভাগ কারেন্ট জাল উৎপাদিত হয়। এখান হতেই কারেন্ট জাল আনা হয় বলে জানা যায়। ভাঙ্গুড়া উপজেলার বিভিন্ন বাজারে এই অবৈধ জাল বিক্রি হচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানান। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কারেন্ট জালে ছোট-বড় সব মাছ ধরা পড়ে।
সরকারি নিয়মে ৯ সেন্টিমিটারের ছোট মাছ ধরা নিষেধ। কিন্তু এখানে কোনো নিময় মানা হচ্ছে না। এসব জাল দিয়ে জেলেরা বিভিন্ন নদী-খাল-বিলে দেশি প্রজাতির ডিমওয়ালা ও জলাশয়ে সদ্য অবমুক্ত করা পোনা মাছ নিধন করে চলেছে। যা জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকি। জাল ক্রেতা হযরত আলী জানায়, প্যাটের তায়ে জাল কিনছি। আইন দেকলি তো প্যাট বড়বো না। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, মৎস্য সুরক্ষা ও সংরক্ষণ আইনের ৪ (১) ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি কারেন্ট জালের উৎপাদন, বুনন, আমদানি, বাজারজাতকরণ, সংরক্ষণ, বহন বা ব্যবহার করতে পারবেন না। আইন ভঙ্গকারী পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা বা এক থেকে দুই বছরে কারাদণ্ডে বিধান রয়েছে। কিন্তু প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে এই অবৈধ কাজের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে একটি মহল। ভাঙ্গুড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. এনামুল হক জানান, কারেন্ট জাল বিক্রির বিষয়টি তিনি শুনেছেন। এ ব্যাপারে অচিরেই প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।