তাড়াশে ২ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ অনিশ্চিত

Spread the love

সাব্বির আহম্মেদ তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) ঃ শস্য ভান্ডার খ্যাত সিরাজগঞ্জে তাড়াশে ধাপের খাল নামের একটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি খাল দখল করে পুকুর খনন করায় পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে চারটি গ্রামের ফসলী মাঠে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। আর জলাবদ্ধতার কারণে ওই চারটি গ্রামের কৃষকদের প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে আসন্ন আমন আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
এ দিকে খাল বন্ধ করে পুকুর খননকারীদের কবল থেকে খাল রক্ষার পাশাপাশি জলাবদ্ধ ফসলী জমিতে কৃষকেরা যাতে আমনের আবাদ করতে পারে সে ব্যবস্থা নিতে চার গ্রামের কৃষক গন স্বাক্ষরিত লিখিত আবেদন তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মেজবাউল করিমসহ বিভিন্ন সরকারী দপ্তরে দিয়েছেন।
স্থানীয় কৃষকেরা জানান, ১৯৮০ সালে ফসলী জমির পানি নিস্কাষন এবং শুল্ক মৌসুমে সেচ সুবিধার জন্য উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়নের কাস্তা গ্রাম খেকে উত্তর মথুরাপুর গ্রামের ধাপের ব্রীজ পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ধাপের খালটি সরকারি ভাবে খনন করা হয়। খাল খননের পর থেকেই ওই এলাকার ফসলী জমির জলাবদ্ধতারোধ, সেচ সুবিধা, বর্সা মৌসুমে নৌ- চলাচলের মত নানা সুবিধা পাচ্ছিলেন এলাকাবাসী। আর সে সুবিধা স্থায়ী করতে পরবর্তীতে সরকারী অর্থায়নে আরো দুই দুই বার খালটি পুনঃ খনন করে পানি প্রবাহ সচল রাখা হয়।
কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে উত্তর মথুরাপুর গ্রামের মৃত দৈয়ম আলীর প্রভাবশালী দুই ছেলে তালিম উদ্দিন ও আব্দুল আলিম তাদের বাড়ির পূর্ব পাশ দিয়ে বয়ে চলা ওই ধাপের খালটির বেশ কিছু অংশ দখল করে পুকুর খনন করেন। ফলে কাস্তা, বেত্রাশিন, ওয়াশীন ও উত্তর মথুরাপুর গ্রামের ফসলী মাঠের পানি প্রবাহের পথ স্থায়ী ভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। এতে ওই ৪ গ্রামের ফসলী মাঠের প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে ভয়াবহ জলাবদ্ধত সৃষ্টি হয়ে বর্ষাকালীন বোনা আমন ও রোপা আমন চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
ওয়াশীন গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান জানান, সরকারি খাল দখল করে পুকুর খনন করায় ওই সকল মাঠের প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে হাটু পানি জমে আছে। ফলে আমরা জমি গুলোতে কোন ভাবেই আমন ধানের আবাদ করতে পারছিনা এবং পানি নিস্কাষন ছাড়া আবাদ করাও সম্ভব না।
এ ছাড়া কৃষক ইউনুছ আলী, ইসমাইল হোসেন, গোলাপ হোসেন,বাচ্চু সরকারসহ ভুক্তভোগী কৃষকেরা খাল দখলদারদের উচ্ছেদ করে খালের পানি প্রবাহের পথ নিশ্চিত করে তাদের শত শত হেক্টর ফসলী জমি জলাবদ্ধতা নিরসন করে তাঁদের জমি চাষ যোগ্য করার দাবী জানান।
এ দিকে কৃষকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে সোমবার দুপুরে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান, তাড়াশ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) নূরী তাসনিম উমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
অবশ্য খাল দখল সম্পর্কে আব্দুল আলিম বলেন, ওখান দিয়ে খাল থাকলেও জায়গাটি আমাদের জমা জায়গা। তাই পুকুর খনন করেছি।
এ প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো, মেজবাউল করিম বলেন, সোমবার সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীসহ একটি টিম সরেজমিনে ওই এলাকা পরিদর্শন করেছে। আর কৃষকদের ফসলী জমিতে জলাবদ্ধতা নিরসনে দ্রæত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD