চাটমোহরে শীত উপেক্ষা করে বোরো রোপণে ব্যস্ত

Spread the love

জাহাঙ্গীর আলম, চাটমোহর (পাবনা) :
কনকনে শীত উপেক্ষা করে পাবনার চাটমোহরের কৃষক এখন বোরো ধান আবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেউ জমি প্রস্তুতে ব্যস্ত, কেউবা চারা উত্তোলন করছেন, আবার কেউ জমিতে চারা রোপণ করছেন। সেচ যন্ত্রের মালিকরা ব্যস্ত জমিতে সেচ দিতে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলছে মাঠে মাঠে কৃষকদের এই কর্মযজ্ঞ।
এদিকে উপজেলা সেচ কমিটির সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে সেচ বাবদ সেচ যন্ত্রের মালিকরা চার ভাগের এক ভাগ ধান নিয়ে থাকেন কৃষকদের কাছ থেকে। এতে বছরের পর বছর ঠকছেন এলাকার কৃষকেরা।
তারা নির্ধারিত হারে টাকা পরিশোধ করতে চাইলেও অতিরিক্ত লাভের আশায় সেচ যন্ত্রের মালিকরা টাকা না নিয়ে কৃষককে উৎপাদিত ধানের চার ভাগের এক ভাগ দিতে বাধ্য করেন। সেচ যন্ত্রের মালিকদের সিকি (চার ভাগের এক ভাগ) ভাগ নেওয়ার এ প্রবনতায় কৃষকের মাঝে তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে চাটমোহরে ৯ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কয়েক দিন ধরে চলছে চারা রোপণের কাজ। এ পর্যন্ত প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে চারা রোপণ করা হয়েছে।
এ এলাকায় সাধারণত ব্রিধান-২৮, ২৯, ৫০. ৫৮, ৬৪, ৮১, ৮৪, ৮৯, ৯২, ৯৬ জাতের ধান চাষ হয়। এছাড়া হাইব্রিড এসএল ৮ এইচ, তেজ গোল্ড, দোয়েল, টিয়া ও ব্রাক জাতের ধান চাষ হচ্ছে।
উপজেলার বোয়াইলমারী গ্রামের কৃষক আফসার আলী জানান, দীর্ঘ দিন যাবত বোরো ধানের চাষ করে আসছেন তিনি। এ বছরও দুই বিঘা জমিতে ব্রিধান-২৯ জাতের বোরো ধান চাষ করছেন। চারা উৎপাদন, জমি প্রস্তুত, মই দিয়ে জমি সমান করা, চারা রোপন, সার, কীটনাশক,আগাছা পরিষ্কার এবং কাটা বাবদ প্রতি বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষে প্রায় ১১ হাজার টাকা খরচ হয়।
ধান ভাল হলে প্রায় ২৫ মন হারে ফলন পাওয়া যায়। তবে যারা অন্যের জমি ইজারা নিয়ে চাষ করেন তাদের প্রতি বিঘায় অতিরিক্ত আরো ৮ হাজার টাকা খরচ হয়। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, সেচ যন্ত্রের মালিককে চার ভাগের এক ভাগ ধান ক্ষেত থেকে দিয়ে যেতে হয়। তাদের অংশের ধান ও আমাদের কেটে দিতে হয়। উপজেলা সেচ কমিটির সিদ্ধান্ত মানেন না সেচ যন্ত্রের মালিকরা। এতে আমাদের অনেক লোকসান হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ.এ মাসুম বিল্লাহ জানান, চলতি মৌসুমে কয়েকদিন যাবত বোরো ধানের চারা রোপণ শুরু হয়েছে। ধানের দাম ভাল থাকায় বর্তমান সময়ে বোরো ধানের চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষক।
উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈকত ইসলাম জানান, চার ভাগের একভাগ ধান নেওয়ার কোন বিধান নেই। সেচ কমিটি সেচ চার্জ নির্ধারণ করে দিয়েছে। অনুমোদন দেওয়ার সময়ই সেচ মালিকদের নির্ধারিত সেচ চার্জ জানিয়ে দেওয়া হয়। কোন সেচ যন্ত্রের মালিক এ বিধান না মানলে আইননুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া কৃষকেরা অভিযোগ করলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

প্রেরক Ñ

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি
তারিখ ২৬ জানুয়ারী ২০২২ ইং
০১৭৩০১৮৫৬১০

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD