গুরুদাসপুরের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও উজ্জীবিত
আবুল কালাম আজাদ : বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ এর সংক্রমন প্রতিরোধে দীর্ঘ দেড় বছর দেশব্যাপী সকল শিক্ষা প্রতষ্ঠান বন্ধ থাকার পর সংক্রমন এবং মৃত্যুর হার কমে আসায় আগামি কাল ১২ সেপ্টেম্বর রবিবার রাত পোহালেই সারা দেশের ন্যায় নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার ২ শত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও আবারো বাজবে চির পরিচিত সেই ঘন্টা। দীর্ঘ পাঠদান বিরতির পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষনার দিন থেকে আনন্দে উজ্জী বিত হয়ে বিদ্যালয়ে যাওয়ার প্রস্ততিতের ব্যস্ত সময় পাত করছেন শিক্ষক – শিক্ষার্থীরা। অভিভাবকরাও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন সন্তানদের ভবিষ্যতের সম্ভাভবনার আশায়।রাত পোহালেই রবিবার সকাল থেকেই দীর্ঘ ১৮ মাস একটানা বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ থাকার পর উপজেলার প্রায় ৭ ০ হাজার শিক্ষার্থীর কোলাহলে মুখরিত হয়ে উঠবে ২ শত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ১৮ মাস তালাবদ্ধ থাকার কারবন জরাজীর্ন সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি ধোয়া মুছা করে পাঠদানের জন্য প্রস্তত করা হয়েছে বলে উপজেলা মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে জানানো হচ্ছে।
উপজেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে জানা যায়, উপজেলায় ৫ টি কলেজে শিক্ষার্থী ৯ হাজার ২২৯ জন, ৮ টি কারিগরি স্কুল এন্ড কলেজে শিক্ষার্থী ১হাজার ৭৪৯ জন, ১৬ টি মাদ্রাসায় শিক্ষার্হী ২হাজার ৩৭৬ জন,১৬ টি স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী ৩ হাজার, ৩১ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শক্ষার্থী ১৫ হাজার ৭৪২ জন ৯০ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ২৬ হাজার ৭৪২ জন এবং ৩০ টি কেজি স্কুলে শিক্ষার্থী ৫ হাজারসহ প্রায় ৭০ হাজার। আশংকা করা হচ্ছে করোনার কারনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১৮ মাস বন্ধ থাকায় প্রায় ২০ শতাংশ শিক্ষার্থী বাল্যবিবাহ,জীবীকার কাজে কর্মসংস্থানে জড়িয়ে পরাসহ নানা কারনে শিক্ষা জীবন থেকে ঝরে পড়েছে।উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ হাফিজুর রহমান শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার বিষয়ে কোন মন্তব না করে বলেন, দেড় বছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। অভিভাবকদের অসচেতনার কারনে বাল্যবিবাহের প্রবনতা বড়লেও প্রশাসনের কঠোর সচেতনতামুলক পদক্ষেপে বাল্যবিবাহ অনেকটাই নিয়ন্ত্রন সম্ভব হয়েছে। তবে ঝড়ে পড়ার হার খুব কম হবে বলে তিনি আশা করেন।
অতিমারি করোনাভাইরাসের সংক্রমন অপ্রতিরোধ্য হয়ে ছড়িয়ে পড়ার পর গত বছর ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। ১৮ মাস ধরে তালাবদ্ধ থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কপাট খুলতে সরকার কয়ক দফা চেষ্টা চলালেও প্রিস্থিতির বিজ্ঞাননির্ভর উন্নতি না হওয়ায় দফায় দফায় এ ছুট বাড়ানো হিচ্ছে। লকডাউন শেষে গত ১১ আগষ্ট সবকিছু চালু হলেও আজ ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ ছুটি বহাল আছে। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা নির্ভর করছিল করোনা সনাক্তের হারের উপর। শিক্ষার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে আক্রান্তের হার ১০ শতাংশের নীচে না আন্তর্জাতিক মানদন্ড অনুযায়ী ৫ শতাংশের নীচে নামলে খুলে দেয়া হবে সে সিদ্ধান্ত এখনও চুড়ান্ত হয়নি। সংশ্লিষ্টরা মতামত দিয়েছেন, মুলত সক্রমন ১০ শতাংশের নীচে একটানা ৭ দিন থাকাএবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের টিকাদান নিশ্চিতের ওপর নির্ভর করছে প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া। বিজ্ঞানীদের মতে সনাক্তের হার ৫ শতাংশের কম হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া বেশী নিরাপদ। তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় তা ১০ ও ৫ শতাংশের মাঝামাঝি অবস্থানে খুলে দেয়া যায়। সেক্ষেত্রে আজকের তথ্যে জানা যায়, সনাক্তের হার ৯ শতাংশের নীচে। তারপরও স্বাস্থ্য মন্ত্রি ঘোষনা দিয়েছেন , শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার পর সংক্রমন বাড়লে আবারো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হবে। ##