গোলাম মোস্তফা :
চলনবিলে বন্যার পানি কমে গেছে। এই সময়ে অবাধে বিলের শামুক বেচা-কেনা চলছে। চলনবিল অধ্যূষিত তাড়াশের কামারশন গ্রামের লোকমান সরদার, সিদ্দিক, রফিক, রবি ও কুশাবাড়ি গ্রামের ইয়ানুস আলী বলেন, তাদের মতো বিল অঞ্চলের বহু মানুষের সংসার চলে মাছ ধরে। কিন্তু এ বছর ভরা বর্ষায়ও বিলে পানি কম। অল্প পানিতে মাছের দেখা মিলছেনা। বাধ্য হয়ে শামুক ধরে বিক্রি করছেন। আর দৃশ্য শুধু তাড়াশে নয়, চলনবেিলর সর্বত্র।
জানা গেছে, তারা ভোর বেলাতে বিস্তীর্ণ বিলে শামুক ধরতে বেড়িয়ে পড়েন। দু থেকে তিনজনে মই জাল টেনে দুপুর হতেই এক নৌকা শামুক সংগ্রহ করেন।গতকাল সোমবার বিকেলে সরজমিনে দেখা গেছে, কামারশন গ্রাম এলাকার তাড়াশ-গুরুদাসপুর মৈত্রী সড়কের পাশে একটি স্থানে শামুক বেচা-কেনা চলছে। মানুষজন শ্যালো মেশিনের নৌকায় করে শামুক নিয়ে এসেছেন বেচার জন্য।
স্থানীয় শামুকের ব্যাপারী আব্দুল কাদের রিন্টু বলেন, তিনি প্রতিদিন কামারশন ও কুন্দইল ঘাটের দুই থেকে আড়াই হাজার বস্তা শামুক কিনে থাকেন। অনরূপভাবে হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহা সড়কের আট নং সেতুর পাশে ও নাদোসৈয়দপুর খেয়াঘাটসহ বিল অঞ্চলের বেশ কয়েকটি স্থান থেকে শামুক বেচা-কেনা হচ্ছে।জানা গেছে, চলনবিলের শামুক হাঁস ও মাছের খাদ্য হিসাবে ব্যবহার হচ্ছে। স্থানীয় খামারীদের চাহিদা মিটিয়ে কুষ্টিয়া, নোয়াখালি, বরিশাল, বাগেরহাট, যশোরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের খামারীদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। তাড়াশ ডিগ্রি কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক মর্জিনা ইসলাম বলেন, প্রাকৃতিকভাবে শামুক পানি পরিস্কার করে। যা মাছসহ অধিকাংশ জলজ প্রাণীর বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য। তাছাড়া অতিরিক্ত পরিমাণে শামুক নিধন হলে চলনবিলের জমির মাটির ক্যালসিয়াম কমে ফসলহানির আশঙ্কা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেজবাউল করিম বলেছেন, শামুক নিধন বন্ধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।