সুজন কুমার মাল:
সুন্দর রিমঝিম ধারায় শুরু হয়েছে বৃষ্টি। হঠাৎ বৃষ্টি কারো জন্য বিরক্তের কারণও বটে। অনেক নিজ গন্তব্যস্থলে যেতে পারছেন না পথিমধ্যে আটকে পড়ে আশ্রয় নিয়েছেন পথের ধারে কোন টং চা’র দোকানে। এই রকম পরিবেশ পরিস্থিতির সন্মুখীন আজকে নিজেও।
যে টং দোকানে এক সময় ভীড় থাকতো জমজমাট বেচাকেনাও চলতো বেশ কিন্ত সে পরিবেশ আজ আর নেই ফাঁকা একদম পরিবেশ।
বেচা বিক্রির সুবাদে গোবরের ঘষি ও খড়ির জ্বালানি বাদ দিয়ে পরিবেশ বান্ধব গ্যাস সিলিন্ডার ব্যাবহার করা শুরু। গ্যাস সিলিন্ডার জ্বালানী বান্ধব, আগের ধোঁয়া নেই, নেই আগের ঝুল পড়ে নোংরা পরিবেশ। সবমিলিয়ে ভালই চলছিল সময়টা।
এদিকে প্রায় দেড় বছর ধরে করোনা প্রাদুভার্ব বৃদ্ধি, মৃত্যুর হার, আক্রান্তের সংখ্যা সব কিছুই যেন নিয়ন্ত্রনের বাহিরে না যায় সেজন্য বিভিন্ন সময়ে কখনো সীমিত আকারে, কখনো কঠোর লক ডাউন ইত্যাদি বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়। আর এতে করেই সকল ক্ষেত্রেই স্থবিরতা দেখা দেয়।
তারপরেও জীবন জীবিকার তাগিদে ছুটে চলতেই হবে। অভুক্ত থাকা কয়দিনই যায়?
সরকার তাই জরুরী সেবা ৩৩৩ নম্বর চালু করে একটি ফোন কল আর প্রয়োজনীয় তথ্যাদি দিলে দৌড়গড়ায় পৌছে যাচ্ছে খাবার।
এমনকি শিশু খাদ্য, স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রীও পৌছে দেয়া হচ্ছে বিনামুল্যে। আশা জাগানিয়ার মত টিকা প্রদান কার্যক্রমও শুরু ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকা সংকট, তথ্য জটিলতা সহ নানা কারনে সে কার্যক্রমও থেমে থেমে চলবে যতই সীমাবদ্ধতা থাকুক না কেন।
করোনা মহামারী আমাদের অনেক কিছু শিক্ষা দিয়ে গেল। যেমন স্বাস্থ্য সচেতনা, পারস্পরিক ভাতৃত্ব বৃদ্ধি একে অপরের বিপদের সময় পাশে থাকা, তথ্য প্রযুক্তির ব্যাবহার নিশ্চিত করণ ইত্যাদি। করোনাকালে পরিবেশ দুষণের ফলে প্রাণীকূলও ছিল বেশ সংকটে । তারপরে বিভিন্ন সময়ে প্রাকৃতিক বা মনুষ্য সৃষ্ট সমস্যা লেগেই আছে। ষড়ঋতুর এই দেশে সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষা, স্বাস্থ্য সহ ক্ষেত্রেই করোনা প্রভাব ছিল চোখে পড়ার মত। অনেকে পেশা পরিবর্তন, গ্রামে ফিরে যাওয়া, কর্মক্ষেত্রের পরিধি কমে যাওয়া সব কিছুমিলে অর্থনৈতিক ও মানসিক বিপর্যয় এনেছে আজ।
উৎপাদন প্রক্রিয়ায় এক সময় বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানের সাথে ব্যাবসায়িক প্রতিযোগীতায় টিকে থাকতো পারতো না ছোট ছোট হাজারও শিল্প প্রতিষ্ঠান এখন সেগুলো উৎপাদন চাহিদা ও বাজার অর্থনীতির কারনে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এই রকম প্রতিটি ক্ষেত্রেই পরিবর্তন কাজের গতি সবই বৃদ্ধি পেয়েছে।একটা কিছু সৃষ্টি করতে হলে আরেকটি বিলুপ্ত হতে হবে বা ধ্বংস হতে হবে। হয়তো করোনাও এ রকম সবকিছু ধ্বংস করে দিয়ে আবার নতুন কিছু সৃষ্টির জন্যই এসেছিল।
|
|