গোলাম মোস্তফা, ষ্টাফ রিপোর্টার: শুধুই ঈদের নামাজ নয়, জানাজার নামাজও অনুষ্ঠিত হয় তাড়াশ পৌর শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে। এ মাঠেই দেওয়া হয় স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসের তোপধ্বনি। জাতীয় দিবস পালনের অনুষ্ঠানগুলো এখানেই অনুষ্ঠিত হয়। হেলিপ্যাড মাঠ হিসেবেও এ মাঠকে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এ মাঠেই ফুটবল খেলা হতো, এখন নিয়মিত ক্রিকেট খেলা হয়। কিন্তু দূষণ ও দখলে বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে মাঠটির।
তাড়াশ পৌর শহরের ঘোষ পাড়া এলাকার বাসিন্দা ও উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি তপন কুমার গোস্মামী বলেন, পৌর শহর এলাকায় একটিও গণশৌচাগার নেই। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়ে যান স্থানীয় ব্যবসায়ি ও আগন্তক লোকজন। তারা দিগি¦দিক হয়ে কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠের ভেতর প্রসাব করেন। তাছাড়া শহরবাসীর প্রয়োজনের তুলনায় ডাস্টবিনের সংখ্যাও খুবই অপ্রতুল। যে কারণে শহরের বাজার এলাকার বেশিরভাগ ময়লা আবর্জনা ঈদগাহ মাঠের ভেতরেই ফেলা হয়।
পৌর শহরের থানা পাড়া এলাকার বাসিন্দা প্রভাষক সাইদুর রহমান বলেন, তাড়াশ গ্রামের সব মানুষের জানাজার নামাজ কেন্দ্রীয় ইদগাহ মাঠে আদায় করা হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরও গার্ড অব অনার এ মাঠেই দেওয়া হয়। কিন্তু মাঠের মধ্যে প্রবেশ করে মূত্র ও ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধে নাকে মুখে রুমাল চেপে থাকতে হয়।
সুমন ও সুকুমার নামে দুই কিশোর ছেলে বলেন, তাড়াশ গ্রামে কোথাও খেলার মাঠ নেই। কেন্দ্রীয় ইদগাহ মাঠে তারা নিয়মিত ক্রিকেট খেলেন। লোকজন প্রেসাব করে ও ময়লা আবর্জনা ফেলে মাঠের সৌন্দর্য ও পরিবেশ একেবারে নষ্ট করে ফেলেছেন। এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যক্তি অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠের ভেতরে তরিতরকারি বিক্রেতাদের অস্থায়ী দোকান করার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে পৌরসভার পক্ষ থেকে। তাছাড়া বাজারের তেলের ব্যবসায়িরা ডিজেল ভর্তি ড্রামগুলো ইদগাহ মাঠের ভেতরেই রেখে দিয়েছেন। অনেকে মাঠের সীমানা প্রাচীর ভেঙে তাদের বসতঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ঢোকার প্রবেশপথ বানিয়ে ফেলেছেন। তাড়াশ কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠের সভাপতি এস আলম বলেন, মাঠের পবিত্রতা ও সৌন্দর্য বজায় রাখার জন্য উত্তর-দক্ষিণের খোলামেলা দুপাশে সুরক্ষা গেট নির্মাণ করা অতিব জরুরি।
সরেজমিনে গতকাল বুধবার বিকেলে দেখা যায়, ঠিক তখনও কয়েকজন ব্যবসায়ি ও আগন্তক লোকজন মাঠের পশ্চিম পাশের সীমানা প্রাচীর ঘেষে প্রেসাব করছেন। মাঠের মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অংখ্য ময়লা আবর্জনা। এর মধ্যেই বেশ কয়েকজন কিশোর ছেলে ও তরুণরা ক্রিকেট খেলছেন। কয়েকজন ব্যবসায়ি মাঠের পূর্ব পাশে ছামিয়ানা টাঙ্গিয়ে তরিতরকারি বিক্রি করছেন। আর উত্তর-দক্ষিণের খোলা জায়গা দিয়ে মাঠে প্রবেশ করছেন অনেকেই। এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক মো. মেজবাউল করিম সাপ্তাহিক চলনবিল বার্তাকে বলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাড়াশ কেন্দ্রীয় ঈদগাহ দূষণ ও দখল মুক্ত করা হবে।