চা খান পত্রিকা পড়েন বfল্যবিয়ে মাদক ও সস্ত্রী কর্মকান্ডকে না বলুন 

Spread the love
সিরাজগঞ্জ(সলঙ্গা)থেকে ফারুক আহমেদ
সিরাজগঞ্জ রায়গঞ্জ উপজেলা জেলা সলঙ্গা থানা ৩ নং ধুবিল ইউনিয়নে আমশড়া জোড়পুকুর বাজারে রবিউল ইসলামের চায়ের দোকানে দৈনিক সংগ্রাম,  দেশ রূপান্তর,  নয়া দিগান্ত, দৈনিক ইতিফাক,  প্রথম আলো, ইনকেলাব, যায়যায়দিন, বাংলাদেশ প্রতিদিন, করতোয়া, ভোরের দর্পণ, দেশের কন্ঠ, চাঁদনী বাজার যুগের কথা, কলম সৈনিক, সিরাজগঞ্জ প্রতিদিন, সাপ্তাহিক চলনবিল বার্তাসহ কম পক্ষে বিভিন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক স্থানীয় ২০ রকমের  পত্রিকা পড়ার সুযোগ মেলে। সলঙ্গা সদর থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে আমশড়া বাজার । এই বাজারে বেশ কয়েকটি চায়ের দোকান থাকলেও  তবে রবিউল ইসলামের দোকানটা একটু আলাদা। কারণ এই দোকানে টেলিভিশনে নাটক-সিনেমা দেখিয়ে ক্রেতা টানা হয় না। রবিউল ইসলামের দোকানে দুধ চা লেবু চা মালটা চাসহ ওস্তাদ ছাড়া সু স্বাদু তিন কালারের রং চা মানুষেেরা পান করতে আসেন  পত্রিকা পড়ার টানে। দৈনিক পত্রিকা পড়ার অভ্যাস বাড়ানোর জন্য তাঁর এই উদ্যোগ ২০ বছরের।
গত ১৯ শে জানুয়ারীতে তাঁর দোকানে গিয়ে রাত সাড়ে ৮টার সময় কথা হলো বেশ কয়েকজন ক্রেতা ও পাঠকের সঙ্গে। তাঁরা বললেন, রবিউল ইসলামের চায়ের স্বাদী আলাদা তার চায়ের রং হয় তিন ধারণের শুধু চায়ের জন্যই নয় এই রবিউলের চায়ের দোকানে কমপক্ষে ২০ ধারণের পত্রিকা পড়ার সুযোগ পাওয়া যায়। প্রত্যন্ত এলাকায় এক সাথে এতো পত্রিকা কোনো দোকানে পাওয়া যায় না।  তাছাড়া  পত্রিকা বিক্রেতারাও তেমন একটা আসেন না এদিকে। আগ্রহী মানুষেরা বাজারে বিভিন্ন দোকানে  এক ধরণের পত্রিকা পড়লেও । চা-বিক্রেতা রবিউল ইসলামের জন্য আমরা বিভিন্ন ধরণের  পত্রিকা পড়ার সুযোগ পাওয়ার মজাই আলাদা ।
৩২ বছর বয়সী রবিউল ইসলাম জানালেন, ২০০১ সাল থেকে তিনি তাঁর চায়ের দোকানে পত্রিকা রাখা শুরু করেন। শুধু মানুষদেরকে সেবা দেওয়ার জন্য আমার এই ব্যতিক্রম উদ্দোগ। তাছাড়া সমাজ থেকে মাদক, সন্ত্র, বাল্য বিয়ে থেকে শুরু করে নিয়ে সকল মন্দ কাজ রক্ষা উদ্দেশ্যই তার কাজ যেন পাঠকেরা পত্রিকা পড়ে তার মাধ্যমে জানতে পারে কোনটা ভালো আর কোনটা মন্দ নির্ণায়ে সাহায্যে করাই তার কাজ। তিনি আরে বলেন,   টেলিভিশ দ্বারা অন্যরা চা বিক্রি করলেও  আমি টেলিভিশন দ্বারা চা বিক্রি করবো না। তাছাড়া অনেক গ্রহক বলেন, রবিউল ইসলামের চায়ের দোকানে আসলে আসল খবর জানা যায়।
 এখানে দিন দিন পত্রিকার সংখ্যা এবং পাঠকের সংখ্যা বেড়েই চলছে। প্রতিদিন দুই শতাধিক পাঠক এসে পত্রিকা পড়েন রবিউল ইসলামের চায়ের দোকানে, এমনটাই জানালেন তিনি।স্থানীয়  সাংবাদিক মাছুম বিল্লাহ বললেন, দুপুরে পৌঁছায় প্রতিদিনের পত্রিকা। তখন থেকে শুরু হয় পাঠকের আনাগোনা। তবে বিকেল থেকে বাড়ে পাঠকের সংখ্যা। পাঠকের সংখ্যার দিকে নজর রেখে পত্রিকার সংখ্যা বাড়িয়েছেন রবিউল ইসলাম। প্রতিদিন তিনি স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকা চান্দাইকনা থেকে আসা হোকার কামাল পাসার কাছ থেকে কিনেন রবিউল ইসলাম।
 সিরাজগঞ্জ রোড, তাড়াশ,  মাধাইনগর, নিমগাছি, ঝুরঝুরি, লক্ষিপুর, বেতুয়া, নইপাড়া, চুনিয়াখাড়া, মাহমুদপুর, কালিকাপুর, চকনিহাল, ইছিদহ, সেমিরঘন, মালতিনগর, আগুরপুর, ক্ষুদ্রশিমলা রৌহদাহসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত ভক্ত বিন্দ প্রতিদিন বিকেলে এসে এই দোকানে পত্রিকা পড়েন। বললেন, ‘রবিউল ইসলাম  আসলে মানুষকে পত্রিকা পড়িয়ে মজা পান।’ সংবাদিক সাহেদ আলীর কথায়, ‘রবিউল ইসলামের মতো একজন চা-দোকানি নিজের টাকায় এত দিন ধরে মানুষকে পত্রিকা পড়িয়ে আসছেন, এটাই বড় কথা। তাঁর এই উদ্যোগ সত্যি প্রশংসনীয়।’গত মঙ্গলবার রাত ৮টা ৪৫মিনিটে একান্ত কথা হয় নিয়েমিত পাঠক সিরাজগঞ্জ কোর্টের মোহরী আব্দুল মালেক ও বাবুর সাথে কেন এতো রাতে পত্রিকা পড়েন জানতে চাইলে তারা এই প্রতিনিধিকে জানান, আমরা কোর্টে পত্রিকা পড়ি,  বিভিন্ন চায়ের দোকানেও পড়ি কিন্তুু রবিউল ইসলামের চায়ের দোকানে পত্রিকা পড়ার মজাই আলাদা। তারাা আরো বলেন, আমরা যতরাত্রিই আসি না কেন। এই চায়ের দোকানে এক কাপ চা না খেলে আমাদের পেটের ভাত হজম হয় না। চায়ের দোকানদার রবিউল ইসলামও চেয়ে থাকেন পথপানে আমাদের আসায়।
রবিউল ইসলাম  ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। কিছুদিন বাড়িতে দর্জির কাজ করলেও সাখানে ভালো না লাগায় ২০২১ সালে মানুষদের সেবার উদ্দেশ্যই সখের বসে  একসময় সে চা বিক্রি শুরু করেন। সেই থেকে সে চা বিক্রয়তা। সেই থেকে চা বিক্রির আয়ের টাকায় সংসার চলে তাঁর। সংসারে আছেন মা বাবা  স্ত্রী এবং  ছেলে সন্তান । চায়ের দোকানে পত্রিকা রাখতে মাসে ৬০০ টাকার মতো খরচ হয় রবিউল ইসলামের। কিছু টাকা বাঁচিয়ে পরিশোধ করেন পত্রিকার বিল। রবিউল ইসলাম বললেন, সংসারে অভাব থাকলেও মানুষকে পত্রিকা পড়ানোর কাজটি তিনি চালিয়ে যেতে চান।
ফারুক আহমেদ
সলঙ্গা/সিরাজগঞ্জ
Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD