ফারুক আহমেদঃবিকাল ৫ টার পর থেকে মৃদু হাওয়া সন্ধাপর থেকে হাড় কাপানো লেপ তোষের সেলাইয়ের বার্তা নিয়ে হাজির পেশাদার ধুনকেরা অনুভূতি জানান দিচ্ছে আসছে শীত। শীত পরশ মাখা ১১ অগ্রহায়ণ ২৬শে নভেম্বরের একরাশ সজীব স্বপ্ন নিয়ে প্রকৃতির সাথে লেপ তোষক সেলাইয়ে ব্যস্ত পেশাদার ধুনকররা। করোনা ও বন্যার ক্ষতিগ্রস্ত ঋণের জালে আটকে যাওয়া গ্রামগঞ্জের নিম্নআয়ের খেটে খাওয়া মানুষেরা। এমন সময় প্রকৃতি কষ্টের জালে আটকে রাখা দুঃখের গ্লানি ও কষ্টের দীর্ঘশ্বাস ফেলে আসছে যারা। তারাই আজ অনেকদিন নিরলস বসে থাকার সময় পেরিয়ে এখন হাতে অনেক কাজ জমেছে সিরাজগঞ্জ সলঙ্গার ধুনকরদের। ইতিমধ্যে ঠান্ঠা বাতাস বইতে শুরু করায় সিরাজগঞ্জের সলঙ্গার সর্বত্রই শীতের আমেজ ও ঘন কুয়াশা ছড়িয়ে পড়েছে। সন্ধা এবং সকালে হালকা কুয়াশায় ঢাকা পড়ে জনপদ। শীতের আগাম প্রস্ততি নিতে লেপ তোষক বানাতে পেশাদার ধুনকররা ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। শহর বন্দর গ্রামগঞ্জের পরিত্যক্ত খোলা মাঠে চলছে এই লেপ তোষাক তৈরির জনসমাগম। সলঙ্গা আমশড়া গ্রামের চাঁন মিয়া জানান, আমি বাড়ির জন্যই লেপ তোষক তৈরি করছি কারণ আমার টাকা পয়সা নেই। একটি লেপ মানাতে খরচ হয় ৪ থেকে ৫ শত টাকা।
সলঙ্গা বাজারের লেপ তোষক তৈরি করার কারিঘর আব্দুস সামাদ জানান, একটি লেপ তৈরির করতে তারা এখন মুজুরী নিচ্ছে ৩শ’ থেকে সাড়ে ৪শ’ টাকা। এছাড়া তোষক সর্বনিম্ন ২৫০ টাকা, বালিশ প্রতিটি ২৫ থেকে ৩০ টাকা এবং জাজিম তৈরিতে সাড়ে সাড়ে ৫শ’ টাকা হারে মুঞ্জুরী নেয়া হচ্ছে। এই মজুরীর হার অন্য সময়ের চাইতে কিছুটা বেশী । শীতের মৌসুম ছাড়া অন্য সময় চাহিদা কম থাকায় অর্থাভাবে তাদের পারিবারিক জীবন জীবিকা নির্বাহ করা অত্যন্ত দুর্বিসহ হয়ে ওঠে। এখন শিমুল এবং কার্পাস তুলার সরবরাহ অনেক কম হওয়ায় দাম যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে প্রতিকেজি সর্বনিন্ম শিমূল তুলা ২৮০ টাকা এবং কার্পাস তুলা সর্বনিম্ন ১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। লেপ তোষক বানানোর ক্ষেত্রে ক্রতারা গার্মেন্টেসেন ঝুট কাপুর এবং বিশেষ জাতের তুলা দিয়েই লেপ ও তোষক বানানোর দিকেই ঝুঁকে পড়েছে বেশী। প্রতিকেজি ব্লেজারের তুলার দাম পড়ে মাত্র ৩৫ থেকে ৫০ টাকা। এছাড়া গার্মেন্টেসের অন্যান্য তুলার দাম ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা। এতে লেপ ও তোষকের বানানোর খরচ পড়ে অনেক কম। সে কারণে মধ্যবিত্ত ও সিন্মবিত্ত পরিবারগুলো ও এই বিশেষ জাতের তুলা দিয়ে লেপ তোষক, বালিশ ও জাজিম বানানোর দিকে ঝুঁকে পড়ছে বেশী। সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা,তাড়াশ ও উল্লাপাড়া উপজেলা গুলির লরপ তোষক সেলাইয়ের ব্যস্ত পেশাদার ধুনকররা পরিতাক্ত এলাসহ পার্শ্ববর্তী রাস্তার ধারেই পাটি বিছিয়ে খোলা আকাশের নিচে তুলা ধুনা থেতে শুরু করে লেপ, তোষক,জাজিম তৈরি করে আসছে। বর্ষা মৌসুমে কোন কাজ করাই সম্ভব হয় না ফলে কর্মহীন হাত গুটিয়ে বসে থাকতে হয়। ফলে এই পেশা নির্ভর জীবন জীবিকা চালাতে গিয়ে পরিবার – পরিজন নিয়ে ধুনকরাদের মানবেতর জীবন যাপন করতে হয়।