লুৎফর রহমান : সিরাজগঞ্জের তাড়াশে প্রায় ২৩ বছর ধরে তেলের ঘানি টানছেন জাকির হোসেন ও রাবেয়া খাতুন দম্পতি। অর্থ নেই গরু কেনার। তাই বাধ্য হয়ে এ দম্পতি কষ্টের বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছেন বছরের পর বছর। সারাদিন ঘাটি টেনে ৩ লিটার তেল তৈরি করা যায়। প্রতিদিন সেই তেল ও খৈল বিক্রি করে আয় আসে ১৫০-২৫০ টাকা। সেই অর্থ দিয়ে ৩ জনের সংসার চলে নানা টানা পোড়নের মধ্যে দিয়ে। থাকে না কোন সঞ্চয়। এদিকে অর্থের অভাবে বিয়ে দিয়ে পারছে না ছোট মেয়ে খুশি খাতুকে।
সরেজমিনে উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়নের প্রতন্ত গ্রাম মাদারজানি গিয়ে দেখা যায় জাকির হোসেন ও তার স্ত্রী সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘানি টেনে সরিষা মাড়াই করছে চলছে। কথা হয় ঘানি টানা ৭০ বছর বয়সের জাকির হোসেন সাথে তিনি বলেন গরু কেনার সামর্থ না থাকায় ২৩ বছর ধরে স্বামী-স্ত্রী মিলে ঘানি টেনে আসছি।সহায় সম্বল বলতে পৈতৃকভাবে পাওয়া ৩ শতক জমি সেই ভিটায় দুইটি টিনের ঘরে তার বসবাস। এক মেয়েকে নিয়ে সংসার।
তিনি আরো বলেন, প্রতিদিন ১০ কেজি সরিষা ঘানি টেনে ৩ কেজি তেল পাওয়া যায়। সেই তেল বিভিন্ন গ্রামে বিক্রি করে লাভের সামান্য টাকা দিয়ে ছোট মেয়ের পড়ালেখার খরচ এবং নিজেরা খেয়ে না খেয়েই কষ্টে দিন পার করছি। একসময় দেশের শতভাগ মানুষ সরিষার তেল দিয়ে রান্না করা খাবার তৈরি করে খেত। এছাড়া ও সরিষার তেল শরীরে মাখার কাজেও ব্যবহার হতো। সরিষার তেল দিয়ে তৈরি করা হতো আচার, ভর্তাসহ নানা রকম খাবার। এমন কি হোটেলগুলোতেও সরিষার তেলের খাবার তৈরি করা হতো। এখন আর সেই দিন নেই। যুগ বদলেছে মানুষ শরিষার তেল তেমন আর ব্যবহার করে না। এ বিষয়ে তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেজবাউল করিম বলেন, আপনার মাধ্যমে তাদের বিষয়ে আমি জানতে পারলাম কোনভাবে তাদের সহযোগিতা করা যেতে পারে।