খোন্দকার আমিনুল ইসলাম আবদুল্লাহ ।
প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক :
মারকাযুদ্ দাওয়াহ উচ্চতর গবেষণা ও সেবা কেন্দ্র । চান্দাইকোনা শেরপুর জেলা বগুড়া ।
১. সন্তান ভূমিষ্ঠ হলে আল্লাহর প্রসংশা করা, তার শুকরিয়া আদায় করা ও সন্তানের জন্য দোয়া করা-
পবিত্র কুরআনে ইবরাহিম আলাইহিস সালাম সম্পর্কে এরশাদ হয়েছে, সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর তিনি বলেন,
সকল প্রশংসা আল্লাহর, যিনি বৃদ্ধ বয়সে আমাকে ইসমাঈল ও ইসহাককে দান করেছেন। নিশ্চয় আমার রব দোআ শ্রবণকারী। হে আমার রব, আমাকে সালাত কায়েমকারী বানান এবং আমার বংশধরদের মধ্য থেকেও, হে আমাদের রব, আর আমার দোআ কবুল করুন। (সূরা ইবরাহিম : ৩৯-৪১)
২. তাহনিক করা- ইমাম নববি রহ. বলেন, সন্তান ভূমিষ্ঠ হলে খেজুর দিয়ে তাহনিক করা সুন্নত। অর্থাৎ খেজুর চিবিয়ে নবজাতকের মুখের তালুতে আলতোভাবে মালিশ করা এবং তার মুখ খুলে দেয়া যাতে তার পেটে এর কিছু অংশ প্রবেশ করে। আনাস রাদিআল্লাহু আনহু বলেন, আব্দুল্লাহ ইবনে আবু তালহা ভূমিষ্ঠ হলে আমি তাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লামের নিকট নিয়ে গেলাম, তিনি বলেন, তোমার সঙ্গে কি খেজুর আছে? আমি বললাম, হ্যাঁ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম খেজুর চিবালেন, অতঃপর তা বের করে বাচ্চার মুখে দিলেন। বাচ্চাটি জিব্বা দিয়ে চুসে ও ঠোটে লেগে থাকা অংশ চেটে খেতে লাগল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম এ দৃশ্য দেখে বলেন, দেখ, আনসারদের খেজুর কত প্রিয়! (মুসলিম)
৩. সপ্তম দিন মাথা মুণ্ডন করা ও চুলের ওজন পরিমাণ রুপা সদকা করা- আনাস ইবনে মালেক রাদিআল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সপ্তম দিন হাসান ও হুসাইনের চুল কাটার নির্দেশ দেন এবং চুলের ওজন পরিমাণ রৌপ্য সদকা করেন।(তিরমিজি) ছেলে কিংবা মেয়ে হোক জন্মের সপ্তম দিন চুল কাটা সুন্নত।
৪. আকিকা করা- বুরায়দা রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম বলেন, সপ্তম দিন, অথবা চতুর্দশ দিন অথবা একুশতম দিন আকিকা কর। (তিরমিজি)
উম্মে কুরজ আল-কাবিয়া বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লামকে আকিকা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছি, তিনি বলেন, ছেলের পক্ষ থেকে দুটি আর মেয়ের পক্ষ থেকে একটি পশু, নর-মাদি যে কোন এক প্রকার হলেই চলে, এতে কোন সমস্যা নেই। (আবু দাউদ, নাসায়ি) (ছাগল বা ভেড়া)
অধিকাংশ আলেম আকিকার গোস্ত পাকানো মুস্তাহাব বলেছেন, এমনকি সদকার অংশও। হ্যাঁ, পাকানো ব্যতীত বণ্টন করাও বৈধ। আরো জ্ঞাতব্য যে, কুরবানির পশুর ক্ষেত্রে যেসব শর্ত রয়েছে আকিকার পশুর ক্ষেত্রেও তা প্রযোজ্য। অর্থাৎ পশুর কোন অংশ মজদুরি হিসেবে দেয়া যাবে না, এর চামড়া বা গোস্ত বিক্রি করা যাবে না বরং এর গোস্ত খাবে, সদকা করবে ও যাকে ইচ্ছে উপহার হিসেবে প্রদান করবে। এবং এ গোস্ত যার আকিকা সে, তাঁর পিতা-মাতা আত্মীয় স্বজন সবাই খেতে পারবে।
৫. ভূমিষ্ঠ হওয়ার প্রথম দিন বা সপ্তম দিন নাম রাখা সুন্নাত- রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, আজ রাতে আমার একটি সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়েছে, আমি তার নামকরণ করেছি ইবরাহিম, আমার পিতা ইবারাহিমের নামানুসারে। (মুসলিম)
৬. খাৎনা করানো- সপ্তম দিন খাৎনা করানো সুন্নত। জাবের রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম হাসান এবং হুসাইনের সপ্তম দিন আকিকা দিয়েছেন ও খাৎনা করিয়েছেন। (বায়হাকি)
মূলত খাৎনার বয়স জন্মের ১সপ্তাহ পর থেকে শরু হয়,তবে ৭বছর পুরো হওয়ার আগেই তা সেরে নেয়া ভাল,
মানুষ যে ভুলগুলো করে- ১। কুরবানির সাথে আকিকা করা, ২। জন্মের সময় বাচ্চার কানে আজান বা একামত দেওয়া, শাইখ আলবাণী (রঃ) আজান দেওয়া প্রথমে সহিহ বললেও তাঁর শেষ তাহকিকে জয়ীফ বলেছেন।
মহান আল্লাহ্ তায়ালা আমাদের কে কোরআন ও সুন্নাত মোতাবেক জীবন পরিচালনা করার তৌফিক দান করুন
।
|